নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ

ভাবতে থাকি

আমি বাংলাদেশের

ভাবতে থাকুন

আমি বাংলাদেশের › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা প্রতিষ্ঠিত সত্য ঘটনা

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:২৮



সব সময় আনন্দদায়ক লাগে ট্রেন ভ্রমণটা আমার কাছে। কিছু দিন আগের কথা আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসতেছি , চিন্তা করলাম ট্রেনয়ে করে বাড়িতে যাব। তখন বেলা ১১টা , ট্রেনের টিকেট নেওয়ার জন্য কাউনটারে গেলাম। গিয়ে শুনলাম উপকূল এক্সপ্রেস ৪টায় ছাড়বে। তারপর খাওয়া সারলাম নামায পরলাম । এবাবে ২.৩০ টা বাজলো , তারপর আবার কাউন্তারে পৌছালাম। এসে দেখি অনেক বড় লাইন যারা ট্রেনের টিকেট নিতে এসেছে। আমিও দাঁড়ালাম লাইনয়ে টিকেটের জন্য। টিকেট নিচ্ছে যাত্রীরা, অনেক মানুষই দেখি দাঁড়ানোর(স্ট্যান্ডিং) টিকেট পাচ্ছে। যারা বসার টিকেট পায় তারা টিকেটের মূল্য দেয় টিকেটে দেওয়া মূল্যের চেয়ে অধিক দামে। এবার টিকেট নেবে আমার সামনের জন।হটাৎ কাউন্টার থেকে টীকেট নেই। ভাই দয়া করে একটা টিকেট দিননা। আমি গিয়ে বললাম দাঁড়ানোর হলেও একটা টিকেট দিন প্লিজ। না ভাই হবে না। পরে আসেন তখন হবে। মনে মনে ভাবলাম এখন হবে না পরে কীবাবে টিকেট পাওয়া সম্ভব । তাই মন খারাপ করে চলে গেলাম । কিছুক্ষণ পর স্টেশনে গিয়ে বসলাম। কি করা যায়। ঐ দিকে গাড়িও চলে না। কারন রোড সংস্কারের কাজ চলছে। তাই আমি এক কথায় আমি হতাশ। একটা লোকের সাথে কথা হল, তখন সে এরা কালবাজারির কাছে টিকেট বিক্রয়ের পর এবং অবিক্রিত টিকেট যা থাকে তাই আবার পরে বিক্রি করে। পরে আবার আরও বেশি দামে টিকেট বিক্রি হয় কারন শেষ মুহূর্ত। তাই মানুষ বাধ্য হয়ে টিকেট কেনে।

এবার অপেক্ষা অনিশ্চিত পথের যাত্রা। টিকেট ছাড়া যেতে হবে গন্তব্যে। করার কিছুই নেই ঢাকা থাকার মত আমার কোন জায়গা নেই। এরই মধ্যে যে রাত ঢাকায় থাকলাম টা কেটে গেল গনজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের সাথে। ঢাকার আবহাওয়া সহ্য হয় না তাই বাধ্য হয়ে বাড়ি ফেরা।

আমার প্রেমিকা অদেখা। দু দিন পর সে ফোন করল আমাকে। আমি প্রথম রাগ করব বলে ভাবছি কিন্তু সে ফোন করলে আমি আর রাগ ধরে রাখতে পারি না। সত্যি সে অসাধারন সে আমার হৃদয়টাকে অসাধারন ভাবে জয় করে নিয়েছে। ফোন করে আমার দুর্বলটা অনুভব করে আমাকে উল্টো রাগ দেখাচ্ছে। রাগ করে কিন্তু অন্য দিনের মত ফোন কাটে না। এখন আবার হুট করেই আমাকে সন্দেহ করা শুরু করে দিয়েছে। সে জানে আমি কেন ঢাকায় এসেছি। তারপরও সে বলে আমি নাকি কোন মেয়ের সাথে দেখা করার জন্য ঢাকায় এসেছি। ওহ এই মুহূর্তে কি করে বুজাই আমার ব্যাথা। আমার পাসে কোন মেয়ে আছে তার সন্দেহ। এখন সে একটা চুমু চাইছে, দিতে হবেই ফোনে।চুমু না হলে সন্দেহ আরও বেগবান হবে। যদি চুমুটা দিতে দেরি হয় কিম্বা আসতে শোনা যায় তবে আর রক্ষা নাই। তার রাগ ভাঙ্গাতে ভাঙ্গাতে শতটা কবিতা লিখতে হবে, আবেগ প্রবন ভালবাসার কথায় ভরাতে হবে তার মন। এই মুহূর্তে এসব সম্বব কি! যাই হোক চুমু দিতে হল কিন্তু তাতেও অদেখার মন ভরে নি। কলও কেটে দিচ্ছে না অন্য দিনের মত। মনে মনে চাই কলটা যেন কেটে দেয়। কিন্তু মুখে তো আর বলা সম্বব না। এ দিকে ট্রেনও এসে গেছে। কত চিন্তা মাথায়, হাতে নেই টিকেট। এতো যাত্রীর ভিড়ে আসন পাব কি পাব না এ নিয়ে শঙ্কা।

৪টার ট্রেন আসল না , আসল ৪.৫৫এ।যাই ফোন না কেটেই গেলাম ট্রেনে দিকে। এবার ট্রেনে উঠার পালা, অনেক যাত্রী উঠল ট্রেনে। এখানে সীট পাওয়া কঠিন ব্যাপার। তারপরও মাথায় একটা শঙ্কা গুরপাক খায় তা হচ্ছে কোন সময় আমার আসনে বসা যাত্রী চলে আসে। যা হোক এল পরবর্তী স্টেশন। তেজগাঁও স্টেশন হতে যাত্রী উঠা শুরু হল। জানালা থেকে একজন যুবক জিজ্ঞেস করল ভাই এটা কত নম্বর আসন। উত্তর দিলাম ১২,১৩,১৪,১৫ । তারপর সে চলে গেল। এভাবে আরও কয়েক জন এল ফিরে গেল। এবার ৬০বৎসর বয়সী একজন মুরব্বি এল । তারও একই প্রশ্ন আর আমাদের একই উত্তর। তাপর সে বলল, এটাই আমাদের সীট । তারপর থেকে আমাদের দুর্দশা শুরু। যাত্রী এতো বেশি উঠছে যে একটু খালি জায়গাও নেই। যতই স্টেশন আসতে থাকে ততই যাত্রী বাড়তে থাকে। আর সাথে সাথে আমাদের বসার আশা মরীচিকার মত দূরে পালিয়ে যায়। স্টেশনের পর স্টেশন নরসিংদী, ভৈরব, জয়দেভ পুর, ব্রহ্মনবাড়িয়া, চাঁদপুর আরও কত স্টেশন। যাত্রী যত নামে তার ছেয়ে উঠে। এ দিকে ক্ষুদায় পেটে জ্বালা শুরু হয়ে গেছে, খাবার পানিও শেষ। স্টেশনে ট্রেন থামলে গিয়ে যে কিছু খাব সে সুযোগও নেই। মানুষ আর মানুষ গরম গাম চোখে গুম। দাড়িয়ে থাকতে থাকতে মাঝমধ্যে হেলে পড়া।

একটা বাচ্চা মেয়ে শিশু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। যখন মুখ দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বেংচি দেই তখন সে তার আম্মুর দিকে তাকায়। তার হাসিটা অনেক সুন্দর ছিল ঠিক নতুন চাঁদের বাঁকা হাঁসির মত তারপর তার গালের টোপ । জানালা খোলা ট্রেনের গতির বিপরীত দিক হতে আসা শীতল বাতাসগুলো সত্যি শান্তি এনে দেয়। আর ঘরের টিনের চালের উপরে পড়া বৃষ্টির শব্দের মত ঝুম ঝুম শব্দ সংগীতে ট্রেন চলে।

পরবর্তি স্টেশানে নতুন যাত্রী উঠল আর আসনে বসা যাত্রী ছেড়ে দিল নির্ধারিত সময়ে বাধা আসন। তারপর আর কি করা বেচারা মুখে হাসি মেখে বিনয়ের সাথে আসন ছেড়ে দাঁড়াল। ট্রেন চলছে তার আপন গতি নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। হটাৎ মুখ বাঁধা একটা ব্যাগ ঐ ছোট বাচ্চা মেয়েটির মাথার এক পাশে পড়ল, ভয়ে মেয়েটি কাঁদতে লাগল তাছাড়া মাথায় আঘাতও লাগল। সবাই ভাবল উপর থেকে ব্যাগটি পড়ল। তবে ব্যাগটি কার, না কারও না, তবে !? বাচ্চাটির মা ক্ষেপে গেল। কোন কাণ্ড জ্ঞানহীন মানুষ এই কাজটি করল। মা তাই নিজের কোলে নিজের বাচ্চাটিকে লুপে নিল আদর করে। আর ব্যাগটি দূরে পেলে দিল। অন্য একজন ব্যাগটা খুলে দেখতে না দেখতে ব্যাগের ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে চাইল একটি কুকুরের বাচ্চা। যথারীতি বাগের মুখটা আবার বদ্ধ করে আবার জানালা দিয়ে বাহিরে পেলে দেয়া হল। কি অমানবিক ব্যাপারটা ঘটে গেল মানুষ দ্বারা। কাণ্ড জ্ঞানহীন মানুষ ভাবতেও খারাপ লাগে নিজেও তো একটা মানুষ।

এই ভিড়ে চানাচুর ওয়ালাও চটপডি বিক্রি করে চলছে। ও ভাই চানাচুর একটা চানাচুর দাও । না সে সুযোগ নেই তার দ্বারা আমি যে চানাচুর পাব। তার কাস্টমার বেশি। খুজে খুজে হয়রান হলেও আমার চানাচুর পাওয়ার সম্বাবনা নেই। এক পা বাড়িয়ে যে সামনে যাব সে সুযোগও নেই।

এবার পিছনে ফিরতেই দেখি মোটা প্রক্রিতির একজন পেটু ভদ্র লোক। বুজাই যায় তার টাক মাথা এবং পৃথিবীর মত গোলাকার পেটটায় অনেক চর্বি আছে। উনি আসা মাত্রই জ্যাম আরও বেড়ে গেল। তাছাড়া পেটু মাষ্টারের দু পাশে দুটা আদি যুগের দারোয়ান অথচ তাদের কাজটা যেন পুলিশের।

এক মৌলবি আর তার বিবি সহ আরও ৬জন, বসে আছে সাড়ে ৩জন দাঁড়িয়ে আছে বাঁকিরা। পেটু মাস্টার টিকেট চেক করতে এল। হুজুর টিকেট দেখি। স্যার টিকেট পাই নাই। এই নেন ভাড়া। লোক কত জন ? এই তো ৬জন। ৬ জন তো ৬০০টাকা আর ১০০ কই। দেখেন স্যা্র ৩জন দাঁড়িয়ে আছি আর এভাবে বহু কষ্টে ঢাকা থেকে এই পযন্ত। আচ্ছা ঠিক আছে। স্যা্র যাওয়ার পথে, মাওলানা বলল স্যা্র টিকেট দেবেন না। না টিকেট লাগবে না। যদি স্টেশনে টিকেট চায়? না এখন আর টিকেট চেক করবে না।

মাওলানার টিকেট চাওয়ার দৃশ্য দেখে আমার চিন্তা মাথায় গুরপাক করল কেউ তো আর এই পেটু ভদ্র লোকের কাছে টিকেট চাইল না আর উনিওত টিকেট কাউকে দেয় নাই। তবে কতৃপক্ষ কি করে এই টাকার হিসাব পাবে।

ভাবতে ভাবতে চানাচুর ওয়ালা এল নিলাম চানাচুর, মুঠ করে মুখে নিয়ে চিবাচ্চি চানাচুর। গুম গুম চানাচুরের শব্দে সব ভুলে গেলাম। এই যে ভাড়া দেন? ভাড়ার জন্য ব্যাগে হাত দিয়ে ভাড়া নিলাম। পিছনে তাকিয়ে দেখি তারা অন্য দিক হতে ভাড়া তুলছে।ডাক দিলাম কিন্তু তারা ব্যাস্ত তাই টাকাটা পকেটে নিলাম পরে দেব। এই ভাই আরেকটা চানাচুর দাও। চানাচুর হাতে নিলাম আর পেছন থেকে উনি ভাড়াটা চাইল। আমি আবার ব্যাগে হাত দিলাম কিন্তু টাকা আমার পকেটে!!!!!! এর মধ্যে তারা চলে গেল । অবশেষ পকেট থেকে টাকা হাতে নিলাম। আবার ডাকলাম ভাড়া নিয়ে যান। না তাতে সায় নেই তাদের। আমার পাশের জন বলল, রেখে দিন ভাড়া দিতে হবে না। এই টাকা এদের পকেটে যাবে। এই টাকা সরকার পাবে না। পরে দেখি আরও কয়েক জনই বলল আমিও টিকেট ছাড়া এসেছি, এখনও ভাড়া দিই নাই।

এই ঘটনার গভীরে যাওয়া যাক। আমি তো অপরাধী কারন আমি ভাড়া পরিসৌধ ছাড়া ট্রেন ভ্রমন করেছি, আমার এই পাপের ভর কে নেবে, কে দায়ী আমার সহ আরও যারা এমন পাপ করে????????????

এই পাপ করতে আমারা কেন আগ্রহ দেখিয়েছি? আমাদের ভেতর এমন দুর্নীতির মত পাপ ঢুকল কি করে? এই পাপ ভবিষ্যতে জন্য কেমন ভয়াবহ ? এটা কি পাপের মূল/বীজ সৃষ্টি নয়?

কে এই পাপের জন্ম দাতা/ জন্ম দাত্রী??????????????????

টিকেট চেকার ?! কাউনটারে বসা লোকটি ?! রেল কতৃপক্ষ ?! মন্ত্রি ?! সচিব ?! প্রধান মন্ত্রি ?!

যাত্রীর কাছে দোষী টিকেট চেকার, কউনটার ।

টিকেট চেকার, কউনটার এর কাছে দোষটি কতৃপক্ষের ।

কতৃপক্ষের কাছে দোষটি মন্ত্রির ।

মন্ত্রির কাছে দোষটি গুসের । মানে কমিশন ।

সব দোষ নন্দ ঘোষ???????

কে এই কমিশন ???

সব কানা নাকি?

কাণ্ডারি হুসিয়ার ???!/১/!/১/১?!?!?!?!?!?!?!?!?!?!?!?!!?!??!!??!?!!??!?!?!!??!!?!??!?!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.