নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্ত আকাশের নীচে পালিত হউক শারদীর দূর্গা উৎসব ।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৪

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত আর আড়াই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রের বিনীয় অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা । আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিলো ধর্মরিপেক্ষত । প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ ধর্ম , সংস্কৃতি, সামাজিক রীতি নীতি সুষ্ঠ নিশ্চিন্তে পালন করবে এটাই সাংবিধানিক অধিকার । তবে স্বাধীনতার দীর্ঘ চৌচল্লিশ বছর পাড় হয়ে গেলে ও বাংলাদেশে আজো কোন ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘু তাদের কোন ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠান নিশ্চিন্তে নিবঘ্নে পালন করা কষ্ঠকর হয়েছে । কোন না কোন ভাবে বিশেষ কোন মহল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় বার বার আঘাত করে আসছে । ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাবে হামলা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে নিজেদের ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল করছে । অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার " ইন্টারন্যশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম ইন ২০১৪ " শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে ২০১৪ সালে বিশ্বের কোন দেশের মানুষ কেমন ধর্ম পালনের সুযোগ পেয়েছে, কোন দেশের সংখ্যালঘুরা কেমন অধিকার ভোগ করেছে তার বিশদ বিবরন ও অসংগতি গুলি তুলে ধরা হয়েছে ।ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রসঙ্গে মূলত তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে :- এক, বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ২০১৪ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার কাজে উল্লেখ যোগ্য দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি৷ দুই,ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর বিভিন্ন হামলার ঘটনা তদন্তে সরকারি প্রশাসনকে অনিচ্ছুক বলে মনে হয়েছে৷ এবং তিন, এসকল হামলা প্রতিরোধে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ আগাম ব্যবস্থা তো নেয়নি এমন কি হামলার পর অনেক জায়গায় তারা মামলাও নেয়নি৷ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে , স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত হিন্দুদের প্রায় ২৬ লক্ষ একর জমি অর্পিত সম্পত্তি আইনের আওতায় দখল হয়েছে৷ দশ লক্ষেরও বেশি মামলা হয়েছে৷ কিন্তু কোন মামলার ই আইনী নিষ্পত্তি হয়নি৷
বার্ষিক এই প্রতিবেদনে ২০১৪ সালে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বেশ কিছু কিছু চাঞ্চল্যকর ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে৷
গত ৬ আগস্ট ২০১৫ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সারাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, সম্পত্তি দখল এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে, নির্যাতন চালিয়ে উচ্ছেদের ঘটনার চিত্র তুলে ধরে৷ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাসগুপ্তের দখলদার তালিকা থেকে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের নামও বাদ যায়নি । যাই হউক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রাণের উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা আসন্ন । সাম্প্রতি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় বলেছে নির্বিঘ্নে যাতে আমাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই বোনেরা তাদের এই প্রাণের উৎসব উৎযাপন করতে পারে সে ব্যপারে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যাবস্হা নিয়েছে সরকার । নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে প্রতিটি পূজো মন্ডব খুব ভাল কথা শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ই নয় আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের ধর্মীয় উৎসব নিরাপদে নির্বিঘ্নে পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশ । কিন্তু কোন উৎসব বা আনন্দের ভিতর যদি কোন জুজুর ভয় থাকে সেই উৎসব বা আনন্দ থেকে মানুষ কত টুকু তৃপ্তি পায় সেটাই বড় প্রশ্ন ? আমারা প্রায় ই দেখে থাকি আমাদের দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের আগে পরে বা উৎসবের সময় তাদের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা করা হয় ভাংচুর করা হয় পূজনীয় দেব-দেবীর মূর্তি যা কখনো ই কারো কাম্য নয় বা গ্রহন যোগ্য নয় ।তার পর ও প্রতি বছর ই ঘটছে এ ধরনের নিন্দনীয় ঘটনা । কয়েক মাস আগে ও এবারের জন্মাষ্টমীর আগের রাতে মুন্সিগঞ্জ মরিচা গ্রামে মূর্তি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় মন্দিরে ৷যা নিয়ে ভৃতির সৃষ্টি হয় ঐ এলাকার সমগ্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের মনে । তাই প্রশ্ন কেন ঘটে এধরনে ঘটনা ? নিজের ধর্মকে পূজি করে কেন অন্যের ধর্মের বিশ্বাসে অন্তরে আঘাত হয় বার বার ? বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের বিখ্যাত সেই গান " আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান, মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম.....................।" ই মনে করে দের আমাদের পূর্বের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কথা । কিন্তু যে চেতনা কে আরো সুদৃয় করার জন্য আমাদের অগ্রজদের যে আত্মত্যগ তা ক্রমে ই ধুলিশ্বাত হয়ে আসছে । আমরা চাই না আমাদের স্বাধীন দেশে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা নিয়ে কেউ ছিনি মিনি খেলুক । আমরা চাই আইন শৃংখলা বাহীনির কড়া নজরদারিতে নয় প্রতি টা মানুষ অন্তরে অন্তর মিলয়ে একে অপরের ধর্মীয় উৎসবে শরিক হউক ভাগা ভাগি করে নেউক একে অপরের আনন্দ । তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন শারদীয় দূর্গা উৎসব নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে নয় মুক্ত আকাশের নীচে অন্তরে অন্তর মিলয়ে পালিত হউক এটাই প্রত্যাশা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.