![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুখ দুঃখ ব্যক্তিভেদে আলাদা হয় | প্রকৃত সুখ ও দুঃখ বলে কিছুই নেই | সুতরাং জগত মায়াময় |
শেষের দুটো যুক্তি পন্ডিত মহাশয় ব্যক্তিগত অনুভুতি থেকে দিয়েছেন | প্রথম চারটে যুক্তি জগতের বস্তুদের পর্যবেক্ষণ করলে বুঝা যায় |
যুক্তিগুলি এবার বিস্তারিত ভাবে বলি |
কেন জগত মায়া ?: সুখ দুঃখ ব্যক্তিভেদে আলাদা হয় | প্রকৃত সুখ ও দুঃখ বলে কিছুই নেই | সুতরাং জগত মায়াময় |
একজনের কাছে যা সুখ অন্যের কাছে তাই দুঃখ | অপরের যুক্তিটারী এটা বিবর্ধিত রূপ | যা পুরুষের কাছে সুখ নারীর কাছে তা-ই দুঃখ | আবার নারীর কাছে যা সুখ পুরুষের কাছে তা-ই দুঃখ | তোমার অঙ্ক ভালো লাগে | আমার অঙ্ক খারাপ লাগে | আমার সাহিত্য ভালো লাগে , তুমি আবার সাহিত্যে কাঁচা ইত্যাদি | তাহলে জগতে প্রকৃত সুখ দুঃখ বলে কিছুই নেই |
তাহলে জগতের চেহারাটা কি দাঁড়ালো ? পরিবর্তনশীল, অনির্বাচ্য, দুর্বোধ্য, সুখ দুঃখ হীন এক অদ্ভুত প্যারাডক্স বা প্রহেলিকামাত্র | তাই এই জগতের মায়া নাম অতীব যুক্তিসঙ্গত |
তাহলে সত্য কি ?
জ্ঞান বা সেন্স | কেন ? কারণ এটা চিরকাল একভাবে থাকে | জগত এতে প্রতিফলিত হয় যেভাবে আয়নায় মুখ প্রতিফলিত হয় | কিন্তু তাহলে অজ্ঞান বা অচৈতন্য অবস্থা যা চিকিত্সাশাস্ত্র স্বীকৃত এবং আমরাও দেখি , সেটা কি ? তখন কি জ্ঞান থাকে না ? থাকে | কারণ আমরা জানি আমরা অজ্ঞান অবস্থায় আছি | আমরা জানি আমাদের কিছু মনে নেই, আমরা জানি আমরা মড়ার মত ঘুমিয়েছি | এই জ্ঞানটি তখনি আসে যখন জ্ঞান থাকে | সুতরাং ওই অজ্ঞান অবস্থাতেও জ্ঞান থাকে কিন্তু জ্ঞানে কিছু প্রতিফলিত হয় না | কেন ? কারণ ইন্দ্রিয় আহত হয় যেমন মাথায় চোট লাগা, বা মানসিক শক ইত্যাদি | এটা প্রমান করে জ্ঞেয় বস্তু থেকে জ্ঞান একটা আলাদা বস্তু | যখন জ্ঞানের বিষয় থাকে না তখনও জ্ঞান থাকে |
মৃত্যুর পরেও যে জ্ঞান থাকে তারও প্রমান আছে | কার্ডিয়াক ফেইলিওর হয়ে অনেকে অপারেশন টেবিলে মারা যায় | তারপর ডাক্তারদের চেষ্টায় হার্টে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হার্টকে আবার চালু করে তাকে বাঁচানো যায় | ঐটুকু সময়ে ওই ব্যক্তি জীবনের পরপার দর্শন করে | সেই দেখার স্মৃতি তার জীবিত হবার পরেও থাকে | একে নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স বা নিকট মৃত্যুর অভিজ্ঞতাও বলে | কার্ডিয়াক ফেইলিওর হলে লোকে সাধারনত মারাই যায় | তাই একে আমি ডেথ এক্সপেরিয়েন্স বলব | এটা প্রমান করে যে মৃত্যুর পরেও মানুষের জ্ঞান থাকে | আর সেই জ্ঞানে জগত প্রতিফলিত হয় | পাঠক গুগুল সার্চ করলে নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স-এর অনেক তথ্য পাবে | সুতরাং জ্ঞান যে একমাত্র অপরিবর্তনীয় সত্য, তা অনস্বীকার্য |
জ্ঞান দেহ জন্মাবার আগেও ছিল | এর প্রমান পাওয়া যায় মানুষের জন্ম থেকে হওয়া প্রতিভার থেকে | অন্তর্জালে খোজ নিলেই পুনর্জন্মের ভুরি ভুরি কেস পাওয়া যাবে | বুজরুকি বলে উড়িয়ে দেবার আগে কেন বুজরুকি সেটা একটু দয়া করে অধম লেখককে জানালে বাধিত হব |
নাস্তিকেরা বলে যে জ্ঞান রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফল | এটা দেহের সাথে উত্পন্ন হয়েছে আবার দেহের সাথেই শেষ হয়ে যাবে | তারা কিভাবে এই নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স-এর ব্যাখ্যা দেবে ? এটাকে তারা বুজরুকি বলে উড়িয়ে দেয় কিন্তু পাঠক আন্তর্জালে খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন যে এটা বুজরুকি নয় কারণ এর ভুরি ভুরি কেস আছে |
সুতরাং বেদের এই মর্মবাণী অতিব সত্য যে ব্রহ্ম সত্য আর জগত মিথ্যা | এটাই শংকর আচার্যের মায়াবাদ নাম প্রসিদ্ধ |
মায়াবাদের ব্যবহারিক মূল্য :
এর ব্যবহারিক মূল্য অপরিসীম | এই জগতকে যদি কেউ সত্যি বলে মনে করে তাহলে এর অগণিত দুঃখ তাকে দুঃখিত করবে আর এর চঞ্চল সুখ তাকে ক্ষণকাল সুখী করবে | সুখ আর দুঃখের টালমাটালে তার মন বিচলিত হবে | মনে কখনো শান্তি সে পাবে না | কিন্তু যদি এই জগতকে মিথ্যা বলে মনে করা যায় তাহলে সুখ দুঃখ মনকে স্পর্শ করে না | মন শান্ত থাকে | দীর্ঘ অভ্যাসে মনে অপার শান্তি আসে | মন নির্বিকার থাকবে | তবেই মানুষ শান্তি পাবে | রাতে ঘুমের স্বপ্ন যেমন মানুষ পরের দিন মনে রাখে না, তেমনি এই জগতের ঘটনাবলী তাকে আর বিচলিত করবে না | সে শান্তি পাবে |
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:১৪
মহসিন ৩১ বলেছেন: নাস্তিকেরা বলে যে জ্ঞান রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফল | এটা দেহের সাথে উত্পন্ন হয়েছে আবার দেহের সাথেই .................................................................................................................................................................
কিন্তু যদি এই জগতকে মিথ্যা বলে মনে করা যায় তাহলে সুখ দুঃখ মনকে স্পর্শ করে না
..........................................................
মানুষ সহজাতভাবেই স্ববিরোধী ! কারণ সে কখনোই নিজ সংগ্রাম , নিজ ভুল , নিজ সুখান্বেষণ কে নিজ চোখে দেখতে চায় না ; ... তথাকথিত জ্ঞানপ্রাপ্ত হবার------- ও সেহেতু বৈধ হবার আগে।