![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত রবিবার শঙ্খচিল ছবিটি দেখলাম | প্রসেনজিতের আরেকটা দুর্দান্ত পারফরমেন্স | কিন্তু একই সঙ্গে ছবিটা অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে | প্রথমে ছবিটা নিয়ে আলোচনা করি তারপর তার প্রশ্নগুলি নিয়ে আলোচনা করব |
ছবির বিষয়বস্তু
ছবিটা শুরু হয়েছে দুদেশের সীমানা বা বর্ডার দিয়ে | প্রথম দৃশ্যে দেখানো হলো বর্ডার পার হতে গিয়ে মানুষদের কি কি ঝামেলা পোহাতে হয় | একটি শিশুর মৃত্যুও দেখানো হয়েছে | তারপর দেখানো হলো বর্ডারের শোচনীয় অবস্থা | একই বাড়ির অর্ধেকটা ইন্ডিয়ায় আর অর্ধেকটা বাংলাদেশে | একটা নারকেলগাছের গোড়াটা ইন্ডিয়ায় আগাটা বাংলাদেশে | এইসব দৃশ্য দিয়ে ছবি শুরু |
তারপরে প্রসেনজিত ও তার সংসার | রূপসার জীবন আর তার ছেলেবেলা দেখানো হয়েছে | তার সাথে বিএসএফের জওয়ানদের বন্ধুত্ব ও বর্ডার পারাপারের ঘটনা দেখানো হয়েছে | শঙ্খচিলের ঝাঁক দেখে রূপসার প্রশ্ন : ওদের কোনো দেশ নাই আর মানুষেরই বিভিন্ন দেশ আছে ?
তারপর রূপসার অসুস্থতা ও বর্ডার পারাপার হবার গপ্প | বিএসএফের সাথে বোঝাপড়ার দৃশ্য | মুসলমানের হেনস্থা তথা হিন্দু সাজা | এইসব পর পর চলে এসেছে | শেষে রূপসার মৃত্যু দিয়ে বই শেষ |
ছবির ওপর প্রশ্ন :
ছবিটা যেসব প্রশ্ন তুলেছে সেগুলো খুবই অস্বস্তিকর | আমার কেমন যেন মনে হলো যে গোটা ছবিটার মেরুদন্ড হলো বর্ডার এরিয়া | কারণ ছবিটার শুরু , মধ্যভাগ আর শেষে এই বর্ডারই আছে | গোটা ছবিটার মূল বক্তব্য কি বর্ডার অঞ্চলের অপ্রাসঙ্গিকতা আর অমানবিকতা ? এইটা প্রথম প্রশ্ন | ছবিটার নামও তাত্পর্যপূর্ণ | শঙ্খচিল | শঙ্খচিলের কোনো বর্ডার নেই | ছবির নামের সাথেও বর্ডার জড়িয়ে আছে |
আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো : ছবিটার ব্রেকের সময় দেখাচ্ছে যে বর্ডার যেন ভেঙ্গে উড়ে যাচ্ছে | এটাই কি ছবিটার আসল বার্তা ?
আচ্ছা এইরকম বর্ডার ভাঙ্গা ছবির আইডিয়া এখন কেন নির্মাতাদের মাথায় এলো ? আগে কেন কখনো আসেনি ? প্রশ্নের অর্থ হলো এখন যখন বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের দাপট বাড়ছে, যখন দুই বাংলা এক করে বাংলাস্তান বানিয়ে শরিয়া আইন চালু করার কথা উঠছে, তখনি কেন বর্ডার ভাঙ্গার মুভি আসছে ? প্রশ্নটা পারিপার্শিকতাকে নিয়ে | অদ্ভুত না ?
আরো দেখুন দেশভাগের আবেগ হলো বাঙালিদের মধ্যে সবচেয়ে ডেঞ্জারাস আবেগ | এই বইটা সেই আবেগে সুড়সুড়ি দিচ্ছে | কেন ? বর্ডার এরিয়া ভেঙ্গে বাংলাস্তান গড়ার ব্যাপারে জনমত তৈরির কাজ চলছে নাকি ? আমার মাও বাংলাদেশী | তিনিও দেশভাগের সময় ভিটা ছেড়ে এখানে এসছিলেন | তিনি তো বইটা দেখে মুগ্ধ | তাহলে কি বইটা বাঙালিদের দেশভাগের আবেগে সুড়সুড়ি দেবার জন্যই তৈরী ? বলা বাহুল্য যে রাজ কাহিনিও এমনই একটি মুভি যা দেশভাগের আবেগে সুড়সুড়ি দেয় | এরকম মুভি কি জনমত তৈরির জন্যই বানানো হচ্ছে ?
তাহলে কি দাঁড়ালো ? শঙ্খচিল বইটা ঠিক কি বার্তা দিচ্ছে ? দুই বাংলার বর্ডার ভেঙ্গে উড়িয়ে দেয়া উচিত ? প্রসেনজিতের একটা সংলাপ মনে পড়ছে : আমাদের পরিচয় মুসলমান নয়, আমরা বাঙালি | এইসব আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে দুই বাংলা এক করার চক্রান্ত হচ্ছে নাকি ? আমরা যদি বাঙালিই হব তাহলে অভিজিত রায় ও মুক্তমনাদের মরতে হলো কেন ? তারা কি বাঙালি নয় ? সুফি সাধক, বাউল সাধকদের মরতে হয় কেন ? কেনই বা ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি শুনতে হয় ? এরাও কি বাঙালি নয় ?
আসলে আমরা ভালো করেই জানি বাংলাদেশীরা আমাদের কি চোখে দেখে | তারা আমাদের বাঙালি ভাবে না মুসলমান ভাবে , সেটাও আমরা জানি | যতই তারা আমাদের ভোলাক না কেন, যতই আবেগে সুড়সুড়ি দিক না কেন , কোনদিনই পশ্চিমবাংলা ইন্ডিয়া থেকে আলাদা হবে না | আমাদের পরিচয় হিন্দু , বাঙালি না |
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩৯
সুমন কর বলেছেন: রিভিউ ভালো হয়েছে। মুভিটি দেখার ইচ্ছে আছে।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২০
দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: ছবিটা দেখি নি।দেখতে হবে।
আপনার কাছ থেকে প্রিভিউ পেয়ে ভালো লাগলো।