![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভারতের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে শাহবানু মামলাটি বিখ্যাত। প্রৌঢ় বয়সে শাহবানু তাঁর পতিগৃহ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। শাহবানু ভরণ-পোষণের জন্য খোরপোশ চেয়ে মামলা করেছিলেন। কিন্তু শরিয়তি আইনে তালাকপ্রাপ্তা মহিলার ভরণ-পোষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। শরিয়তি আইনের সুযোগ নিয়ে শাহবানুর স্বামী তাঁকে পত্রযোগে তালাক দেন। আদালত সমগ্র বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে সংবিধানের ১২৫ নং ধারায় শাহবানুকে ভরণ-পোষণ দেওয়ার পক্ষে রায় দেয়। এ দেশের কট্টর মৌলবাদী ইসলামি নেতৃত্ব এবং মোল্লা-মৌলবিরা এই রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে একে ‘মুসলিম ধর্মের উপর হস্তক্ষেপ’ বলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
একবিংশ শতাব্দীতে ভারতকে যিনি প্রগতির পথে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন, সেই রাজীব গান্ধী তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই তরুণ প্রধানমন্ত্রীটি অবশ্য মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহস দেখাননি। বরং, উগ্র মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে রাজীব সংসদে একটি আইন প্রণয়ন করে আদালতের রায়কে অমান্য করেছিলেন।
একটু খুঁটিয়ে ঘটনাগুলি দেখুন | শাহবানু মামলায় আদালত খোরপোষ দেবার বিধান দিয়েছিলেন | কিন্তু রাজীব গান্ধী মোল্লাদের জুলুমবাজির সামনে মাথা নিচু করে আদালতের রায়কে অমান্য করেছিলেন | কিভাবে অমান্য করেছিলেন ? কোর্ট তো তাঁকে আদেশ দেননি | দিয়েছেন শাহবনুর স্বামীকে | তাহলে ? উনি Muslim Women (Protection of Rights on Divorce) Act, 1986 চালু করেছিলেন যা কিনা ডিভোর্সী মেয়েদের খোরপোষ দিতে দেয় নি | কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী বহু মামলায় শাহবনুর আদেশকেই প্রয়োগ করেছিলেন | এবং Muslim Women (Protection of Rights on Divorce) Act, 1986 আইনটি প্রায় অগ্রাহ্য করা হয়েছিল | এইরকম মামলাগুলি হলো :
However, in the later judgements including Daniel Latifi case and Shamima Farooqui versus Shahid Khan case, the Supreme Court of India interpreted the act in a manner reassuring the validity of the case and consequently upheld the Shah Bano judgement and The Muslim Women (Protection of Rights on Divorce) Act 1986 was nullified.[10][11][12][13] Many Muslims including All India Shia Personal Law Board supported the Supreme Court's order to make the right to maintenance of a divorced Muslim wife absolute.[14][15][16]
শাহবানু কেস
তাহলে গল্পটা কি দাঁড়ালো ? শাহবানু মামলা কি বিচারব্যবস্থা তথা আইনের কোনো সমস্যা ? না, তা নয় | শাহবানু যে খোরপোষ পায় নি সেটা রাজীব গান্ধীর ভোটের রাজনীতির জন্য পায় নি | তাহলে শাহবনুর প্রতি অন্যায়ের জন্য রাজনীতি দায়ী, বিচারব্যবস্থা নয় | আজও ভোটের রাজনীতির কারণে অনেক বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে | নতুন অভিন্ন আইনেও একই গল্প হবে | ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি এভাবেই হয় | সংখ্যালঘুদের ভোট পাবার জন্যই রাজনীতিকরা কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে | এখন যেমন নরেন্দ্রভাই মোদী বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে নাটক করছে |
অথচ, পৃথিবীর বহু মুসলিম দেশ কিন্তু কোনও না কোনও সময়ে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন বর্জন করেছে। তারা বুঝেছে দেশকে এবং মুসলিম সমাজকে যদি শিক্ষার আলোকে আলোকিত করতে হয়— তাহলে সর্বাগ্রে শরিয়তি আইনটি বর্জন করতে হবে। ১৯৫৭ সালে তিউনিসিয়া ‘ল অব পার্সোনাল’ প্রণয়ন করে। এই আইনে বহুবিবাহ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইনে এক স্ত্রী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি দ্বিতীয়বার বিবাহ করে তাহলে তার আর্থিক জরিমানা এবং জেল হবে। মরক্কো সেই ১৯৫৮ সালে আইন প্রণয়ন করে বলেছিল পুরুষকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি নিতে হবে আদালত থেকে। আদালত সন্তুষ্ট না হলে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দিতে নাও পারে। আয়াতোল্লাহ খোমেইনির মতো কট্টর ইসলামিকরা ক্ষমতা দখলের আগে, ১৯৫৯ সালে ইরান ল অব পার্সোনাল স্টেটাস প্রণয়ন করেছিল। এই আইনেও প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে বিচারকের অনুমতি নিতে হবে বলা হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়া তো আদালতের বাইরে তালাক দেওয়াকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।
মুসলিম দেশগুলির ব্যাপার তাদের নিজস্ব | সেখানে মুসলিমরা সংখ্যালঘু নয় | মুসলিম আইন না মানলেও তাদের সাথে অন্যায় হবে না | কিন্তু ভারতে মুসলিমরা সংখ্যালঘু | মুসলিম আইন না থাকলে তাদের সাথে অন্যায় হতে পারে |
©somewhere in net ltd.