![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১. ভাল স্বাস্থ্য আল্লাহ তাআলার নে’আমত এবং আমানত। তাই সুস্থতার মর্যাদা রক্ষা করবে এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় কখনও অবহেলা করবে না। একবার স্বাস্থ্য নষ্ট হলে পুনঃ তা উদ্ধার করা বড়ই কঠিন ব্যাপার। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উইপোকা যেমন বড় বড় পাঠাগারের পুস্তক (অল্পদিনের মধ্যে) খেয়ে ধ্বংস করে দয়ে তেমনি স্বাস্থ্যের ব্যাপারেও সামান্যতম অবহেলায় ক্ষুদ্র একটি রোগ জীবনকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়। স্বাস্থ্যের প্রতি অলসতা ও অবহেলা করা আল্লাহ তাআলার প্রতি অকৃতজ্ঞতাও বটে।
মানব জীবনের মূল রত্ন হলো জ্ঞান, চরিত্র, ঈমান ও উপলদ্ধি শক্তি। জ্ঞান, চরিত্র, ঈমান ও অনুভূতি শক্তির সুস্থতা ও অধিকাংশ সময় শারীরিক সুস্থতার উপর নির্ভরশীল। জ্ঞান-বুদ্ধির ক্রমবিকাশ, মহৎ চরিত্রের আবশ্যকতা এবং দীনি কর্তব্যসমূহ আদায় করার জন্য শারীরিক সুস্থতা একটা মৌলিক বিষয়ের মর্যাদা রাখে। অসুস্থ ব্যক্তির জ্ঞান-বুদ্ধিও দুর্বল হয়, আর তার কাজ কর্মও অত্যন্ত উদ্যমহীন হয়। জীবনের উচ্চশা, উচ্চাকাঙ্খা উৎসাহ-উদ্দীপনা থেকে মানুষ যখন বঞ্চিত হয় এবং ইচ্ছা শক্তি দুর্বল হয়, আর উত্তেজনা শক্তি লোপ পায় ও নিস্তেজ হয়ে যায়, তখন এমন চেতনাহীন জীবন দুর্বল শরীরের জন্যে রীতিমত বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
একজন মুমিনকে খেলাফতের যে মহান দায়িত্ব পালন করতে হবে তার শারীরিক শক্তি, জ্ঞান, মস্তিষ্কের শক্তি, ইচ্ছা শক্তি এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা অপরিহার্য। তার জীবন উদ্যম, উচ্চাশা ও আবেগে পরিপূর্ণ হতে হবে। সুস্থ ব্যক্তিদের দ্বারাই শক্তিশালী আদর্শ জাতি সৃষ্টি হয়। আর এরূপ জাতিই জীবনের কর্মস্থলের মহান কোরবানী পেশ করে নিজের আসন সুদৃঢ় করে নেয় এবং জীবনের মর্যাদা ও মহত্ব প্রকাশ করে।
২. সর্বদা হাসি-খুশি, কর্ম চঞ্চল ও সক্রিয় থাকবে, স্বচ্চরিত্র, মৃদু হাসি এবং সজীবতা দ্বারা জীবনকে সার্থক, আবেগময় ও সুস্থ রাখবে। চিন্তুা, রাগ, দুঃখ-হিংসা, কুচিন্তা, সংকীর্ণমনা, দুর্বলমনা ও মানসিক অস্থিরতা পাকস্থলীতে খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে আর পাকস্থলীর অসম অবস্থা স্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক শত্রু। রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “সাদাসিদে ভাবে থাক, মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং হাসি-খুশিতে থাক।“ (মেশকাত)
একবার রাসূল (সাঃ) দেখতে পেলেন যে, এক বৃদ্ধ ব্যক্তি তার দু’ছেলের কাঁধের ওপর ভর দিয়ে তাদের মাঝখানে ছেচঁড়াতে ছেচঁড়াতে যাচ্ছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “এ বুড়োর কি হয়েছে?” লোকেরা উত্তর দিল যে, লোকটি পায়ে হেঁটে বায়তুল্লাহ যাওয়ার মান্নত করেছিল। এজন্য পায়ে হাঁটার কসরত করছে। রাসূল (সাঃ) বললেন, “আল্লাহ তাআলা এ বুড়োর কষ্টভোগের মুখাপেক্ষী নন এবং ঐ বুড়ো লোকটিকে নির্দেশ দিলেন যে, সওয়ারীতে করে তোমার সফর সম্পন্ন কর।”
হযরত ওমর (রাঃ) এক যুবককে দেখতে পেলেন যে, সে দূর্বলে যে, সে দূর্বলের মত পথ চলছে। তিনি তাকে থামালেন এবং জিজ্ঞেস করলেন যে, “তোমার কি রোগ হয়েছে?” যুবকটি উত্তর দিল যে, কিছু হয়নি। তিনি (তাকে বেত্রাঘাত করার জন্য) বেত উঠালেন এবং ধমক দিয়ে বললেন, “রাস্তায় চলার পূর্ণ শক্তি নিয়ে চলবে।”
রাসূল (সাঃ) পথে হাঁটার সময় দৃঢ় পদক্ষেপে হাঁটতেন, এমন শক্তি নিয়ে হাঁটতেন (যে মনে হতো) যেন তিনি কোন নিম্নভূমির দিকে যাচ্ছেন।
হযরত আবদুল্লাহ বিন হারেস (রাঃ) বলেন, “আমি রাসূল (সাঃ) এর চেয়ে মৃদু হাসিসম্পন্ন আর কাউকে দেখিনি।” (তিরমিযি)
রাসূল (সাঃ) নিজ উম্মতদেরকে যে দোআ শিক্ষা দিয়েছেন তা পড়বে। দোয়াটি হলোঃ
اَللّٰهُم إِنِّي أَعُوْذُ بِك مِنَ الْهَمِّ وَالْحُزْنِ والْعَجْزِ والْكَسْلِ وَضَلْعِ الدَّيْنِ وغَلَبَةِ الرِّجَال (بخارى ومسلم)
“হে আল্লাহ!আমি অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, নিরুপায় অবস্থা, অলসতা, দুর্বলতা, ঋণের বোঝা থেকে এবং লোকদের দ্বারা আমাকে পরাজিত করা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” (বুখারী, মুসলিম)
৩. শরীরে সহ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেবেনা, শারীরি শক্তিকে অন্যায়ভাবে নষ্ট করবে না, শারীরিক শক্তির অধিকারীর দায়িত্ব হলো এই যে, তাকে সংরক্ষণ করবে এবং তার থেকে তার ক্ষমতা অনুযায়ী মধ্যম পন্থায় কার্য হাসিল করবে। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন ‘কাজ ততোটুকু করবে যতটুকু করার শক্তি তোমার আছে,কেননা আল্লাহ তাআলা সে পর্যন্ত বিরক্ত হননা, যে পর্যন্ত তোমরা বিরক্ত না হও। (বুখারী)
হযরত আবু কায়েস (রাঃ) বলেন যে, তিনি রাসূল (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে দেখলেন তিনি খুৎবা দিচ্ছেন, এমতাবস্থায় হযরত আবু কায়েস রৌদ্রে দাঁড়িয়ে গেলেন, রাসূল (সাঃ) তাকে ছায়ায় চলে যেতে নির্দেশ দিলে তিনি ছায়ায় চলে গেলেন। (আল আদাবুল মুফরাদ)
রাসূল (সাঃ) শরীরের কিছু অংশ রৌদ্রে এবং কিছু অংশ ছায়ায় রাখতেও নিষেধ করেছেন।
বাহেলা গোত্রের মুজীবাহ (রাঃ) নাম্মী এক মহিলা বর্ণনা করেন যে, একবার আমার পিতা রাসূল (সাঃ) এর দরবারে দীনী ইলম শিক্ষা নেওয়ার জন্য গেলেন এবং দীন সম্পর্কিত কিছু জরুরী বিষয় অবগত হয়ে ফিরে এলেন। এক বছর পর তিনি আবার রাসূল (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হলেন। এবার রাসূল (সাঃ) তাঁকে মোটেই চিনতে পারেননি। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আপনি কি আমাকে চিনতে পারেননি? রাসূল (সাঃ) বললেন, “না। তোমার পরিচয় দাও।” তিনি বললেন, “আমি বাহেলা গোত্রের একজন লোক, গত বছর আপনার খেদমতে উপস্থিত হয়েছিলাম।” তখন রাসূল (সাঃ) বললেনঃ তোমার এ কি অবস্থা হয়েছে! গত বছর যখন তুমি এসেছিলে তখন তোমার ছুরত ও অবস্থা বেশ ভাল ছিল। তিনি উত্তরে বললেন, আমি আপনার দরবার থেকে যাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত নিয়মিত রোযা রেখেছি শুধু রাতে খাবার খাই। রাসূল (সাঃ) বললেন, তুমি অনর্থক নিজকে শাস্তিতে রেখেছ,নিজের স্বাস্থ্যের খ্সতি করেছ। অতঃপর তিনি বললেন, তুমি পুরো রমযান মাসের ফরয রোযাগুলো রাখবে আর প্রতি মাসে একটি করে রোযা রাখবে। লোকটি আবারও বলল, হুযুর (সাঃ)! আরো কিছু বেশীর অনুমিত দিন! হুযর (সাঃ)বললেন, আচ্ছা প্রতি বছর সম্মানিত মাসসমূহে রোযা রাখবে এবং মাঝে মাঝে ছেড়ে দিবে। এরূপ প্রতি বছর করবে।” বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল (সাঃ)একথা বলার সময় নিজের তিন আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করেছেন ঐ গুলোকে মিলায়েছেন এবং ছেড়ে দিয়েছেন। (এর দ্বারা এটা বুঝাতে চেয়েছেন যে, রজব, শাওয়াল, যিলক্বদ এবং যিলহজ্ব মাসের রোযা রাখবে এবং ছেড়ে দিবে আবার কোন বছর মোটেও রাখবে না।)
রাসূল (সাঃ) বলেন, “নিজেকে অপমানিত করা ঈমানদারের উচিত নয়।” সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, “ঈমানদার ব্যক্তি ভিাবে নিজেকে নিজে অপমানিত করে? তিনি উত্তরে বললেন, “(ঈমানদার ব্যক্তি)নিজেকে নিজে অসহনীয় পরীক্ষায় ফেলে। (তিরমিযি)
৪. সর্বদা ধৈর্য্য, সহনশীলতা, পরিশ্রম, কষ্ট ও বীরত্বের জীবন যাপন করবে, সব ধরনের বিপদ সহ্য করার এবং কঠিন থেকে কঠিনতর অবস্থার মোকাবেলা করার জন্য অভ্যাস গড়তে হবে এবং দৃঢ়তার সাথে সাদাসিধে ভাবে জীবন যাপনের চেষ্টা করবে। আরাম প্রিয়, পরিশ্রম বিমুখ, কোলতা প্রিয়, অলস, সুখ প্রত্যাশী, হীনমনা ও দুনিয়াপূজারী হবেনা।
রাসূল (সাঃ) যখন হযরত মুআয বিন জাবাল (রাঃ) কে ইয়ামানের গভর্নর নিযুক্ত করে পাঠাচ্ছিলেন তখন উপদেশ দিচ্ছিলেন যে, “মুআয! আরামপ্রয়তা থেকে বিরত থাকবে! কেননা আল্লাহর বান্দাগণ সব সময় আরামপ্রিয় হয় না। (মেশকাত)
হযরত আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ)বলেছেনঃ সাদাসিদে জীবন যাপন করা ঈমানের বড় নিদর্শন।“ (আবু দাউদ)
রাসূল (সাঃ)-সর্বদা সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন এবং সর্বদা নিজের বীরত্বপূর্ণ শক্তিকে বর্দ্ধিত করার চেষ্টা করতেন। তিনি সাঁতার কাটতে পছন্দ করতেন। কেননা, সাঁতার কাটায় শরীরের ভ্যায়াম হয। একবার এক পুকুরে তিনি ও তাঁর কতিপয় সাহাবী সাতাঁর কাটছিলেন, তিনি সাঁতারুদের প্রত্যেকের জুড়ি ঠিক করে দিলেন, প্রত্যেকে সাঁতার কেটে আবার তার জুড়ির নিকট পৌঁছাবে। তাঁর জুড়ি নির্বাচিত হলেন হযরত আবু বকর (রাঃ)। তিনি সাঁতার কেটে আবু বকর (রাঃ) পর্যন্ত পৌঁছে তাঁর ঘাড় ধরে ফেললেন।
রাসূল (সাঃ) সওয়ারীর জন্যে (বাহন হিসাবে) ঘোড়া পছন্দ করতেন, নিজেই নিজের ঘোড়ার পরিচর্যা করতেন, নিজের আমার আস্তিন দ্বারা ঘোড়ার মুখ মুছে পরিষ্কার করে দিতেন,তার গ্রীবাদেশের কেশরসমূহকে নিজের পবিত্র আঙ্গুলী দ্বারা ঠিক করে দিতেন এবং বলতেন, “কয়ামত পর্যন্ত এর কপালের সাথে সৌভাগ্য জড়িত থাকবে।“
হযরত উকবা (রাঃ) বলেছেনঃ “তীরন্দাজী করা শিখো, ঘোড়ায় চড়ে তীর নিক্ষেপকারীগণ আমার নিকট ঘোড়ায় আরোহণ কারীদের থেকে প্রিয় এবং যে ব্যক্তি তীর নিক্ষেপ করা শিক্ষালাভ করার পর ছেড়ে দিল, সে আল্লাহর নেআমতের অমর্যাদা করল। (আবু দাউদ)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিপদের সময় মুজাহিদদেরকে পাহারা দিল তার এ রাত লাইলাতুল কদরের রাত অপেক্ষা অধিক উত্তম।
রাসূল (সাঃ) সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে বললেনঃ আমার উম্মাতের এপর ঐ সময় অত্যাসন্ন যে সময় অন্যান্য জাতির লোকেরা তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে, যেমন খাবারের ওপর লোকেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন কোন এক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! তখন কি আমাদের সংখ্যা এতই কম হবে যে, ধ্বংস করার জন্য অন্য জাতির লোকেরা একত্রিত হয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে? আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, না, সে সময় তোমাদের সঙখ্যা কম হবেনা বরং অনেক বেশী হবে। কিন্তু তোমরা বন্যায় ভাসমান খড়কুটার মত হালকা হয়ে যাবে। তোমাদের শত্রুদের অন্তর থেকে তোমাদের প্রভাব কমে যাবে এবং হীনমন্যতা ও কাপুরুষতা তোমাদেরকে ঘিরে ধরবে। অতঃপর জনৈক সাহাবী জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ হীনমন্যতা কেন আসবে? তিনি বললেনঃ এই কারণে যে, ঐ সময় তোমাদের দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা বেড়ে যাবে এবং মৃত্যুকে বেশী ভয় করতে থাকবে।”
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “ উত্তম জীবন ঐ ব্যক্তির, যে নিজের ঘোড়ার লাগাম ধরে আল্লাহর পথে দ্রুতবেগে দৌঁড়িয়ে চলে, বিপদের কথা শুনলে ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে সেখানে দৌঁড়িয়ে চলে,বিপদের কথা শুনলে ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে সেখানে দৌঁড়িয়ে যায় এবং হত্যা ও মৃত্যু থেকে এমন নির্ভীক হয় যেন সে মৃত্যুর খোঁজেই আছে।” (মুসলিম)
৫. মহিলার বিপদে ধৈর্য্যশীল, পরিশ্রমী ও কষ্টের জীবন যাপন করবে। ঘরের কাজ-কর্ম নিজের হাতেই করবে। কষ্ট সহ্য করার অভ্যাস গড়ে তুলবে এবং সন্তান-সন্ততিকেও প্রথম থেকে ধৈর্য্যশীল, সহনশীল ও পরিশ্রমী হিসাবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করবে। ঘরে চাকর-নকর থাকা সত্বেও সন্তান-সন্ততিকে কথায় কথায় চাকর-নকরের সাহায্য নিতে নিষেধ করবে এবং সন্তান-সন্ততিকে নিজের কাজ নিজেদের করে নিতে অভ্যস্থ করে তুলবে। মহিলা সাহাবীগণ বেশীর ভাগ সময় নিজেদের করে নিতে অভ্যস্থ করে তুলবে। মহিলা সাহাবীগণ বেশীর ভাগ সময় নিজেদের কাজ নিজেদের হাতেই করতেন, পাকঘরের কাজ নিজেরাই করতেন, চাক্কি পিষতেন। পানি আনা, কাপড় ধোয়া, এমনকি কাপড় সেলাইরও কাজ করতেন। পরিশ্রম ও কষ্টের জীবন-যাপন করতেন, প্রয়োজন বোধে লড়াইয়ের ময়দানে আহতদেরকে সেবাযত্ন করতেন। ক্ষতস্থানে ঔষধ লাগাতেন এবং যোদ্ধাদেরকে পানি পান করাবার দায়িত্ব পালন করতেন। এর দ্বারা মহিলাদের স্বাস্থ্য ও চরিত্র ভাল থাকে এবং সন্তান-সন্ততির উপরও এর শুভক্রিয়া প্রতিফলিত হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে উত্তম মহিলা সেই, যে ঘরের কাজ কর্মে এতা ব্যস্ত থাকে যে, তার চেহারা ও কপালে পরিশ্রমের চিহ্ন ফুটে উফে এবং পাক ঘরের ধোঁয়া-কালির মলিনতা প্রকাশ পায়।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “কাল কিয়ামতের দিন আমি এবং মলিন চেহারার মহিলাগণ এভাবে হবো।” (একতা বলার সময় তিনি নিজের শাহাদাত অঙ্গুলী ও মধ্যমা অঙ্গুলী মিলিয়ে দেখিয়েছেন।)
৬. ভোবে উঠার অভ্যাস করবে, নিদ্রায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে। যাতে করে শরীরের আরাম ও শান্তিতে ব্যঘাত না ঘটে এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ক্লান্তি ও অশান্তি অনুভূত না হয়। খুব বেশীও ঘুমাবেনা আবার কমও ঘুমাবে না যাতে করে দুর্বল হয়ে পড়। রাত্রে তাড়াতাড়ি নিদ্রা ও ভোরে তাড়াতাড়ি উঠার অভ্যাস গড়ে তুলবে।
ভোরে উঠে আল্লাহ তাআলার ইবাদাত করবে। অতঃপর বাগানে অথবা মাঠে পায়চারী করা ও ভ্রমণ করার জন্য বের হবে। ভোরের টাটকা বাতাস স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। দৈনিক নিজের শারীরিক শক্তি অনুযায়ী হালকা ব্যায়াম করারও চেষ্টা করবে।
রাসূল (সাঃ) বাগানে ভ্রমণ করাকে পছন্দ করতেন এবং কখনো কখনো তিনি নিজেই বাগানে চলে যেতেন। এশার পর জাগ্রত থাকা ও কথা বলতে নিষেধ করতেন। তিনি বলেন, “এশার পর এমন ব্যক্তি-ই জেগে থাকতে পারে যার দীনি আলোচনা করার অথবা ঘরের লোকদের সাথে জরুরী কথা বলার প্রয়োজন আছে।”
৭. নিজের নফস বা অহং আত্মাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার অভ্যাস গড়ে তুলবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা, চিন্তা ভাবনা ও কামনা-বাসনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। নিজের অন্তরকে বিপথে পরিচালিত হওয়া, চিন্তাধারা বিক্ষিপ্ত হওয়া এবং দৃষ্টিকে অসৎ হওয়া থেকে রক্ষা করে চলবে। কামনা-বাসনার অসৎ ভাব ও কুদৃষ্টি দ্বারা মন মস্তিষ্ক শান্তি ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। এ ধরনের লোক চেহার, সৌন্দর্য্য ও সুপুরুষসুলভ গুণ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। অতঃপর সে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভীরু ও কাপুরুষ হিসাবে প্রমাণিত হয়।
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “চোখের যেনা হলো কুদৃষ্টি আর মুখের যেনা হলো অশ্লীল আলোচনা, অতঃপর মন উহার আকাংখা করে এবং গুপ্তাংগ উহাকে সত্যে পরিণত করে অথবা মিথ্যায় প্রতিফলিত করে।”
এক বিজ্ঞ ব্যক্তি বলেছেন- মুসলিমগণ! তোমরা কুকাজের ধারেও যেয়োনা। কুকাজে ছয়টি ক্ষতি নিহিত আছে, তিনটি হলো দুনিয়ায় আর তিনটি হলো পরকালে।
দুনিয়ার তিনটি হলো-
(ক) এর দ্বারা মানুষের চেহারার সৌন্দর্য্য ও আকর্ষণ কমে যায়।
(খ) এর দ্বারা মানুসের উপর অভাব-অনটন পতিত হয়।
(গ) এর দ্বারা মানুষের বয়সও কমে যায়।
৮. নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে দূরে থাকবে। নেশা জাতীয় দ্রব্য মস্তিষ্ক ও পাকস্থলীকে ক্রমশ ধ্বংস করে দেয়। মদ তো হারাম, কাজেই তা থেকে বিরত থাকবেই আর অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকেও বিরত থাকবে।
৯. প্রত্যেক কাজেই মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে। শারীরিক পরিশ্রমে, মস্তিষ্ক পরিচালনায়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে, পানাহারে, নিদ্রায় ও বিশ্রামে, দুঃখে-কষ্টে ও হাসি-খুশীতে, আনন্দ-উল্লাস ও ইবাদতে, চলাফেরা ও কথা-বার্তায় অর্থাৎ জীবনের প্রত্যেক কাজেই মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে।
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ স্বচ্ছল অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা কতই না সুন্দর! দরিদ্রাবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা কতইনা ভাল! ইবাদতের ক্ষেত্রেও মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা কতই না উত্তম।”
(মুসনাদে বাযযার, কানযুল উম্মাল)
১০. খাবার সর্বদা সময় মত খাবে। পেট পূর্ণ করে খাবে না। সর্বদা পানাহারে মগ্ন থাকবে না। ক্ষুধা লাগলেই খাবে আবার ক্ষুধা একটু বাকী থাকতেই খাবার থেকে উঠে যাবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কখনো খাবে না।
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “মুমিনগণ এক অন্ত্রনালীতে খায় আর কাফের সাত অন্ত্রনালীতে খায়।” (তিরমিযি)
পাকস্থলীর সুস্থতার উপর স্বাস্থ্য নির্ভরশীল আর অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পাকস্থলী রুগ্ন হয়ে যায়।
রাসূল (সাঃ) একটি উদাহরণের মাধ্যমে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
“পাকস্থলী শরীরের জন্য হাউজ স্বরূপ এবং রগগুলো ও হাইজ থেকে আর্দ্রতা গ্রহণ কর থাকে। সুতরাং পাকস্থলী সুস্থ ও সবল হলে রগগুলো সুস্থ হবে আর পাকস্থলী রুগ্ন ও দুর্বল হলে রগগুলোও রোগে আক্রান্ত হবে।”
কম খাওয়া সম্পর্কে উৎসাহ দিতে গিয়ে রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “একজনের খাবারই দুজনের জন্য যথেষ্ট হবে।”
১১. সর্বদা সাদাসিধে খাবারই খাবে। চালনী বিহীন আটার রুটি খাবে, অতিরিক্ত গরম খাদ্য এবং স্বাদ ও রুচির জন্য অতিরিক্ত গরম মসলা ব্যবহার করবেনা। যা সাদাসিধে ও দ্রুত হযম হয় এবং স্বাস্থ্য ও শরীরের পক্ষে কল্যাণকর হয় তা খাবে। শুধু স্বাদ গ্রহণ ও মুখের রুচির জন্য খাবেনা।
রাসূল (সাঃ) না চালা আটার রুটি পছন্দ করতেন, মিহি ময়দার পাতলা চাপাতি পছন্দ করতেন না, অতিরিক্ত গরম যা থেকে ধোঁয়া বের হয় এরূপ খাবার খেতেন না, একটু ঠান্ডা করে খেতেন। গরম খাবার সম্পর্কে কখনও বলতেন, “আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কখনো আগুন খাওয়াননি” আর কখনও বলতেন, “গরম খাদ্যে বরকত নেই।” তিনি গোস্ত পছন্দ করতেন। মূলতঃ শরীরকে শক্তি যোগানোর জন্য গোস্ত একটি প্রয়োজনীয় খাদ্য। মুমিনের বক্ষ সব সময় বীরত্বের উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত থাকা উচিত।
রাসূল (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ না করে মৃত্যু বরণ করল এমনকি তার অন্তরে জিহাদের আকাংখাও ছিলনা, সে ব্যক্তি মুনাফিকীর এক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করল।” (মুসলিম)
১২. খাবার অত্যন্ত স্থিরতা ও রুচিসম্মতভাবে খাবে। চিন্তা, রাগ দুঃখ ও ভয়ের মধ্যে খাওয়া-দাওয়া করবে না। খুশী ও শান্ত অবস্থায় স্থিরতার সাথে যে খাদ্য খাওয়া হয় তার দ্বারা শরীরে শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং দুঃখ-চিন্তা ও ভয়ের সাথে যে খাদ্য খাওয়া হয় তা পাকস্থলীর উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এতে শরীরের চাহিদানুযায়ী শক্তি সৃষ্টি হয় না। খেতে বসে নির্জীব ও চিন্তিত ব্যক্তির ন্যায় চুপ-চাপ খাবেনা আবার হাস্য-রসে উল্লসিত হয়েও উঠবে না। খেতে বসে অট্ট হাসিতে মত্ত হওয়া অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
খাবার সময় মৃদু হাসি ও কথা-বার্তা বলবে, খুশী ও প্রফুল্লতা সহকারে খাবার খাবে এবং আল্লাহ তাআলার দানকৃত নেআমতের শুকরিয়া আদায় করবে। রুগ্নাবস্থায় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য থেকে বিরত থাকবে।
উম্মে মানফার (রাঃ) বলেন যে, একবার রাসূল (সাঃ) আমার ঘরে তাশরীফ আনলেন। আমার ঘরে ছিলো খেজুরের ছড়া লটকানো, হুজুর (সাঃ) ওখান থেকে খেতে আরম্ভ করলেন, হুজুরের সাথে হযরতআলী (রাঃ)ছিলেন, তিনিও খেতে আরম্ভ করলেন, হুজুরের সাথে হযরত আলী (রাঃ) ছিলেন, তিনিও খেতে আরম্ভ করলেন। তখন রাসূল (সাঃ) তাঁকে বললেন, আলী! তুমি মাত্র রোগ শয্যা থেকে উঠে এসেছো, তাই খেজুর খেয়োনা। সুতরাং হযরত আলী (রাঃ) বিরত রইলেন এবং রাসূল (সাঃ) খেজুর খেতে থাকলেন। উম্মে মানযার (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি কিছু যব ও বীট নিয়ে রান্না করলাম। রাসূল (সাঃ) হযরত আলীকে বললেন, আলী এবার খাও এটা তোমার জন্য উপাদেয়। (শামায়েলে তিরমিযি)
রাসূল (সাঃ) যখন মেহমান নিয়ে খেতে বসতেন তখন মেহমানকে বার বার বলতেন, “খান আরো খান।” মেহমান তৃপ্ত হয়ে গেলে এবং খেতে অস্বীকার করলে তিনি আর একাধিকবার বলতেন না।
অর্থাৎ নবী করিম (সাঃ) অত্যন্ত পছন্দনীয় পরিবেশে ও হাসিখুশী অবস্থায় কথাবার্তার মাধ্যমে খাবার খেতেন।
১৩. দুপুরে খাবার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম করবে। রাত্রের খাবার পর কিছুক্ষণ পায়চারি করবে। খানা খাবার সাথে সাথে শারীরিক বা মানসিক কোন কঠিন কাজ করবে না।
আরবীতে একটি প্রবাদ আছে-
تَغْدُ تَنْمُوْ تَعْشُ تَمْشِ
অর্থঃ দুপুরের খেয়ে লম্বা হয়ে যাবে-রাতে খেয়ে পায়চারি করবে।
১৪. চোখের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রাখবে। তীক্ষ্ম আলোর দিকে দৃষ্টি দেবে না। সূর্যের আলো স্থির দৃষ্টিতে দেখবে না। অত্যন্ত ক্ষীণ বা তীক্ষ্ম আলোতে পড়া-লেখা করবে না। পরিষ্কার ও স্বাভাবিক আলোতে লেখাপড়া করবে। অতিরিক্ত রাত জাগা থেকেও বিরত থাকবে, ধুলাবালি থেকে চক্ষুকে নিরাপদ রাখবে। খেত-খামার, বাগান ও শস্য-শ্যামল পরিবেশে ভ্রমণ করেব, সবুজ-শ্যামল বস্তুর প্রতি দৃষ্টিপাত চোখের জ্যোতি বাড়ে, চোখকে সর্বদা কুদৃষ্টি থেকে বিরত রাখবে। এর দ্বারা চোখের সৌন্দর্য্য নষ্ট হয় এবং স্বাস্থ্যের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। রাসূল (সাঃ) বলেন, “তোমাদের চোখেরও অধিকার আছে।” মুমিনের উপর কর্তব্য যে, সে যেনো আল্লাহ তাআলার ও নেআমতের মর্যাদা রক্ষা করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক তাকে ব্যবহার করে। এমন ধরনের কাজ করবে যার দ্বারা চোখের উপকার হয়। চোখের ক্ষতি হয় এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকবে। তদ্রূপ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শক্তি রক্ষায়ও খেয়াল রাখবে। রাসূল (সাঃ) বলেন, “হে লোকেরা! তোমরা চোখে সুরমা ব্যবহার করবে, সুরমা চোখের ময়লা দূর করে এবং ভ্রু জন্মায়।” (তিরমিযি)
১৫. দাঁত পরিষ্কার ও সুরক্ষার চেষ্টা করবে। দাঁত পরিষ্কার রাখলে তৃপ্তি বোধ হয়, হযম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও দাঁত শক্ত থাকে। মেসওয়াক ও মাজন ইত্যাদির ব্যবহার করবে, পান-তামাক ইত্যাদি বেশী ব্যবহার করে দাঁত নষ্ট করবে না। খাদ্য খাবার পর অবশ্যই দাঁত ভালভাবে পরিষ্কার করবে। দাঁত অপরিষ্কার থাকলে বিভিন্ন প্রকার অসুখ সৃষ্টি হয়। নবী করীম (সাঃ) এর অভ্যাস ছিল যে, তিনি ঘুম থেকে জেড়ে মেসওয়াক দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করে নিতেন। (বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (সাঃ)-এর জন্য সব সময় অজুর পানি ও মেসওয়াক প্রস্তুত রাকতাম, যখনই তিনি আল্লাহর নির্দেশ পেতেন তখনই উঠে বসতেন ও মেসওয়াক করে নিতেন। অতঃপর অজু করে নামায আদায় করতেন। (মুসলিম)
হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেনঃ “আমি তোমাদেরকে মেসওয়াক করা সম্পর্কে অনেক গুরুত্ব প্রদান করছি।” (বুখারী)
হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সাঃ) বলেছেনঃ “মেসওয়াক মুখ পরিষ্কার ও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে।” (নাসায়ী)
তিনি আরো বলেন, “যদি আমার উম্মতের কষ্ট হবে বলে মনে না করতাম তবে প্রত্যেক ওয়াক্তে মেসওয়াক করার জন্য নির্দেশ দিতাম।” (আবু দাউদ)
একবার কয়েকজন সাহাবী রাসূল (সাঃ) এর দরবারে উপস্থিত হলেন, তাদের দাঁত পরিষ্কার করার অভাবে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছিল, তিনি তা দেখতে পেয়ে বললেনঃ “তোমাদের দাঁত হলুদ বর্ণ দেখাচ্ছে কেন? মেসওয়াক করবে।” (মুসনাদে আহমাদ)
১৬. পায়খানা-প্রসাব আবশ্যক হওয়ার সাথে সাথেই তা সম্পন্ন করবে। এগুলোকে দমন করতে গেলে পাকস্থলী ও মস্তিষ্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
১৭. পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার চেষ্টা করবে। কুরআনে আছে, “আল্লাহ তায়ালা ঐ সকল লোকদেরকে ভালবাসেন, যারা সর্বদা পবিত্র ও পরিষ্কার থাকে।” (সূরায়ে তওবা)
রাসূল (সাঃ) বলেন, “পবিত্রতা ঈমানের অর্দ্ধেক।” পরিষ্কার ও পবিত্রতার গুরুত্বের ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) বিস্তারিত নির্দেশনা দিয়েছেন। মাছি বসা ও পড়া খাবার খাবেনা, হাড়ি-পাতিল পরিষ্কার রাখবে। পোশাকাদি ও শোয়া-বসার বিছানাসমূহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। উঠা-বসার স্থানসমূহ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে। শরীর, পোষাক ও আবশ্যকীয় সকল কিছু পরিষ্কার ও পবিত্রতার দ্বারা আত্মার প্রশান্তি ও প্রফুল্লতা অর্জিত হয় এবং শরীরে আনন্দ ও সজীবতা অনুভূত হয় এবং মানসিক সুস্থতার ওপর সুফল প্রতিফলিত হয়।
একবার রাসূল (সাঃ) হযরত বেলাল (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, গতকাল কিভাবে তুমি আমার আগে বেহেশতে প্রবেশ করলে? তিনি জবাবে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ। যখনই আযান দিই তখনই দুই রাকয়াত নামায আদায় করি আর যখনই অযু ছুটে যায় তখনই আবার অযু করে নেই।
হযরত আবু হোরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ সকল মুসলমানের উপর আল্লাহর একটা হক আছে। সেটা হচ্ছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত পক্ষে একদিন গোসল করবে এবং মাথা ও শরীর ধৌত করবে।” (বুখারী)
২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৫০
মাহিরাহি বলেছেন: ধন্যবাদ পোস্টের জন্য। হাদিসের নির্ভরযোগ্যতার জন্য লিংক দিলে ভাল হত।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:২২
নকীব কম্পিউটার বলেছেন: আমাদের নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলায় এক ‘মামু’ মানে সবাই মামু ডাকে। তিনি ১২বছর যাবৎ ভাত খান না। তাকে বললাম- আপনার কাছে আপনার শরীরের হক আছে। তাকে ভাল পোশাক পরানোর, ভাল খাবার খাওয়ানোর। এতটুকু সামর্থ তো আপনার আছে। একদিন তো তাঁর দরবারে জবাব দিতে হবে আপনাকে। আপনার প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আপনার বিরুদ্ধে নালিশ করবে। কেননা আপনি আপনার শরীরকে কষ্ট দিচ্ছেন। আল্লাহ তো বলেন নি আপনি এমন কষ্ট করে জীবন পরিচালনা করুন।