নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাহিরুল ইসলাম

আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যকুল ...

জাহিরুল ইসলাম

কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি।

জাহিরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিকট থেকে দূরে দেখা

১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:১০

এবারের ঈদ বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ‘পাখি জামা’।

ঈদের সময় বিশেষ কোনো পোশাকের জনপ্রিয়তা পাওয়ার এ প্রবণতা আমরা আগেও লক্ষ করেছি। সে অনুযায়ী এ জামা জনপ্রিয়তা পাওয়ার ঘটনাকে ‘স্বাভাবিক’ই বলতে হবে। তবে ‘অস্বাভাবিক’ হলো পাখি জামা না পেয়ে দুটি মেয়ের আত্মহত্যা। বলা বাহুল্য, প্রিয়জনের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যার ঘটনা দেশে প্রায় প্রতিদিনই ঘটে। কিন্তু এ ঘটনাকে নিছক ‘অভিমান করে আত্মহত্যা’ হিসেবে দেখা কি উচিত হবে?



সন্দেহ নেই, পাখি জামার সঙ্গে এ দেশের মানুষের পরিচয় ভারতীয় টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সিরিয়াল সূত্রে। যে দুটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, তারা এ ধরনের সিরিয়ালের প্রত্যক্ষ দর্শক ছিল কিনা, জানিনা। তবে এও ঠিক, প্রত্যক্ষ দর্শক না হলেও পাড়া-প্রতিবেশীর পরিহিত পোশাক দেখেও কারও কারও মনে সৃষ্টি হয় আগ্রহ। তাই ভারতীয় সিরিয়াল না দেখলেও পাখি জামার প্রতি এবার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে অনেকের। আর এভাবেই জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় জামাটি। আমাদের দেশের নাটক-সিনেমার নায়ক-নায়িকারাও নতুন ফ্যাশন ও স্টাইলের পোশাক পরেন। নিকট অতীতে তাদের কারও ফ্যাশন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে জানা নেই। তাদের ফ্যাশনে যে নতুনত্ব কিংবা আধুনিকতার ছোঁয়া নেই, সেটাও ঠিক নয়। এক সময় পেলেও এ দেশের এখনকার নায়ক-নায়িকাদের ফ্যাশন তাহলে কেন পাচ্ছে না জনপ্রিয়তা? বিজ্ঞাপনের বাহুল্যের কারণে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর প্রতি দর্শকদের বিরক্তির কথা কারো অজানা নয়। বিজ্ঞাপন সংবাদমাধ্যমের ‘ব্লাড’।

তবে এও ঠিক, এর বাহুল্য মানুষ পছন্দ করে না। বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে অনুষ্ঠান দেখতে চায় না মানুষ।



অনস্বীকার্য, এর মধ্য দিয়ে আমরা বিনোদন তো বটেই পণ্যের বাজারও তুলে দিচ্ছি ভারতের হাতে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে দোকানিরাও অতিরিক্ত মুনাফার লোভে আমদানি করছেন সেসব। তাতে আসল ও ফসল- উভয়ই হারাচ্ছি আমরা। আমদানি হচ্ছে নি¤œ মানের ভারতীয় পণ্য। কোনো জিনিস কিনতে গিয়ে ক্রেতাদের নজর চলে যাচ্ছে ভারতীয় সিরিয়ালের নায়ক-নায়িকার দিকে। গুণগত মান যাচাই করছেন না তারা। মান যাচাইয়ে ক্রেতাদের উৎসাহী না হওয়াটাও কি ভালো লক্ষণ? এতে একই স্টাইলের মান সম্পন্ন দেশীয় পোশাক বাজার হারাবে না? অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে এটি প্রচারের আসল উদ্দেশ্যও কিন্তু ব্যাহত হচ্ছে। টিভির সামনে বসে কেউ কি শুধু বিজ্ঞাপন দেখে? অন্য দিকে এসব পণ্য বিক্রির জন্য ভারতীয়দের আলাদা বিজ্ঞাপন করতে হচ্ছে না। অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই তারা পণ্যের বিজ্ঞাপনও করছে পরোক্ষভাবে। আর বিজ্ঞাপন কম প্রচার করায় অনুষ্ঠানের দর্শক যেমন বাড়ছে, একইভাবে বাড়ছে পণ্যের বাজার। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ব্যবধান এমনিতেই অনেক বেশি। এ অবস্থায় ভারতীয় পণ্যের বাজার বিস্তারের সুযোগ যদি নিজেরাই করে দেই, তাহলে আমাদের ঘাটতি আরও বাড়বে না?



বড় কথা হলো, বিজ্ঞাপন দেয়া হয় প্রচারণার জন্য। দর্শকরা দেশীয় চ্যানেলবিমুখ হলে বিজ্ঞাপন দাতারাও কি ঝুঁকবেন না ভারতীয় টিভি চ্যানেলের দিকে? বিজ্ঞাপন দাতারা ভারতীয় চ্যানেলমুখী হলে এ দেশের টিভি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপন পাবে কোত্থেকে? বিজ্ঞাপন না পাওয়াটা কি তাদের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে? সে অবস্থায় টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের অভাব কি ওই সেক্টরে অস্থিরতা বাড়বে না? অতীতে দেখা গেছে,কোনো হাউজে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে তার প্রভাব অন্যান্য হাউসেও পড়ে। চাকরির জন্য সংবাদকর্মীরা ছোটাছুটি করেন। টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বাহুল্য কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকরা কি বিষয়টি ভাবছেন?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.