নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ জাকির হোসেন লাভলু

মোঃ জাকির হোসেন লাভলু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্বিয়ামত দিবসের সর্বশেষ অবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ.❤নবীদের কাহিনী ❤

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১২

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! ক্বিয়ামতের দিন কি আমরা আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে তোমরা সূর্য দেখতে কি কষ্ট পাও? আমরা বললাম, না। তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে তোমাদের যতটুকু কষ্ট হয়, তোমাদের রবকে দেখতেও তোমাদের ততটুকু কষ্ট হবে মাত্র।



তারপর তিনি বললেন, সেদিন (ক্বিয়ামতের দিন) একজন ঘোষক ঘোষণা করে বলবে যে, যারা যে জিনিসের ইবাদত করতে, তারা সেই জিনিসের সাথে হয়ে যাও। সুতরাং ক্রুশধারীরা ক্রুশের সাথে চলে যাবে, মূর্তিপূজকরা মূর্তির সাথে হয়ে যাবে। এভাবে প্রতি মা‘বূদের অনুসারীরা তাদের উপাস্যের কাছে যাবে। তারপর যারা একমাত্র আল্লাহ্র ইবাদত করত, তারাই শুধু অবশিষ্ট থাকবে। তারা গোনাহগার বা নেককার যাই হোক না কেন। সাথে সাথে আহলে কিতাবদের অবশিষ্ট কিছু লোকও থাকবে। এরপর জাহান্নামকে সামনে আনা হবে। তা মরীচিকার মত মনে হবে।



তখন ইহুদীদের বলা হবে, তোমরা কিসের ইবাদত করতে? তারা বলবে আমরা আল্লাহ্র বেটা উযায়েরের ইবাদত করতাম। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা কথা বলছ। আল্লাহ্র তো কোন স্ত্রী বা সন্তান ছিল না। (তাদেরকে পুনরায় বলা হবে) তোমরা এখন কি চাও? তারা বলবে, আমরা চাই আপনি আমাদের পানি পান করতে দিন। বলা হবে ঠিক আছে, পানি পান করে নাও। তারপর তারা জাহান্নামের মধ্যে পড়ে যাবে। এরপর নাছারা (খৃষ্টান)-দেরকে বলা হবে, তোমরা কিসের ইবাদত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহ্র বেটা (ঈসা) মসীহের ইবাদত করতাম। তাদের বলা হবে, তোমরা মিথ্যা কথা বললে। আল্লাহ্র তো স্ত্রী বা সন্তান ছিল না। (তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে) তোমরা এখন কি চাও? তারা বলবে, আমরা চাই আপনি আমাদেরকে পানি পান করতে দিন। তাদেরকে বলা হবে, ঠিক আছে পান করে নাও। তারপর তারা জাহান্নামের মধ্যে পড়ে যাবে।



শেষ পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকবে একমাত্র আল্লাহ্র ইবাদতকারীরা। তাদের মধ্যে নেককারও থাকবে, গোনাহগারও থাকবে। তাদের বলা হবে, সব লোক তো চলে গেছে, কিন্তু তোমাদেরকে কিসে বসিয়ে রেখেছে? তারা বলবে, আমরা তো তখনই তাদেরকে বর্জন করেছিলাম, যখন আজকের চাইতে তাদের বেশী প্রয়োজন ছিল। আমরা এমর্মে একজন ঘোষকের ঘোষণা শুনেছি যে, যে কওম যার জিনিসের ইবাদত করত, সেই কওম তার সাথে হয়ে যাও। আমরা (সেই ঘোষণা অনুসারে) আমাদের রবের জন্য অপেক্ষা করছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, এরপর মহাপ্রতাপশালী আল্লাহ তাদের কাছে আসবেন। কিন্তু প্রথমবার ঈমানদারগণ যে আকৃতিতে তাঁকে দেখেছিলেন তিনি সেই আকৃতিতে আসবেন না।



তিনি (এসে) বলবেন, আমি তোমাদের রব! সবাই বলবে, হ্যাঁ, আপনিই আমাদের রব। (সে সময়) নবীগণ ছাড়া আর কেউ তাঁর সাথে কথা বলবেন না। তোমরা কি তাঁর কোন চিহ্ন জান? তারা বলবে, সাক বা পায়ের নলার তাজাল্লী। সেই সময় সাক খুলে দেয়া হবে। তখন সব ঈমানদারই সিজদায় পড়ে যাবে। তবে যারা প্রদর্শনীর জন্য আল্লাহকে সিজদা করতো তারা থেকে যাবে। তার সেই সময় সিজদা করতে চাইলে, তাদের মেরুদন্ডের হাড় শক্ত হয়ে একটি তক্তার ন্যায় হয়ে যাবে। (তাই তারা সিজদা করতে পারবে না)।



তারপর পুলছিরাত এনে জাহান্নামের উপরে পাতা হবে। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! পুল বা পুলছিরাত কি? তিনি বললেন, পিচ্ছিল জায়গা, যার উপর লোহার হূক এবং চওড়া ও বাঁকা কাঁটা থাকবে যা নজদের সা‘দান গাছের কাঁটার মতো। মুমিনগণ এ পুলছিরাতের উপর দিয়ে কেউ চোখের পলকে, কেউ বিদ্যুৎ গতিতে, কেউ বাতাসের গতিতে এবং কেউ দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে অতিক্রম করবে। কেউ ছহীহ-সালামতে বেঁচে যাবে, আবার কেউ এমনভাবে পার হয়ে আসবে যে, তার দেহ জাহান্নামের আগুনে ঝলসে যাবে। এমনকি সর্বশেষ ব্যক্তি হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে কোন রকমে অতিক্রম করবে। আজ তোমরা হকের দাবীতে আমার তুলনায় ততখানি কঠোর নও, যতখানি কঠোর সেদিন (ক্বিয়ামতের দিন) ঈমানদারগণ প্রতাপশালী আল্লাহ্র কাছে হবে।



(আর তোমরা যে হকের দাবীতে আমার চাইতে বেশী কঠোর নও তা তো) তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। যখন তারা (ঈমানদারগণ) দেখবে যে, তাদের ভাইদের মধ্যে তারাই শুধু নাজাত পেয়েছে, তখন তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের সেই সব ভাইয়েরা কোথায়, যারা আমাদের সাথে ছালাত পড়ত, ছিয়াম পালন করত ও নেক আমল করত? আল্লাহ বলবেন, যাও, যাদের অন্তরে এক দীনার পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদের (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত করে আনো। আল্লাহ তাদের আকৃতিকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিবেন। তাদের কারো দু’পা ও পায়ের নলা পর্যন্ত জাহান্নামের আগুনে ডুবে থাকবে। তারা (ঈমানদারগণ) যাদেরকে চিনতে পারবে তাদেরকে (জাহান্নাম থেকে) বের করে আনবে। তারপর ফিরে আসলে আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, যাও যাদের অন্তরে অর্ধ দীনার পরিমাণ ঈমান দেখতে পাবে তাদেরকেও বের করে আন।



সুতরাং তারা যাদেরকে চিনতে পারবে তাদেরকে মুক্ত করবে এবং তারপর ফিরে আসলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বলবেন, যাও যাদের হৃদয়ে একবিন্দু পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে বের করে আনো। সুতরাং (এবারও) তারা যাদেরকে চিনবে তাদেরকে মুক্ত করে আনবে। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তোমরা যদি আমাকে বিশ্বাস না করো তাহ’লে ইচ্ছা করলে কুরআন মজীদের এ আয়াতটি পাঠ করো (তাতে একথার সত্যতার সমর্থন পাবে)। আল্লাহ (কারো প্রতি) একবিন্দু পরিমাণ যুলুমও করেন না। বরং কোন নেকীর কাজ হ’লে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন। এভাবে নবী, ফেরেশতা এবং ঈমানদারগণ শাফা‘আত বা সুপারিশ করবেন।



তারপর পরাক্রমশালী আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, এখন একমাত্র আমার শাফা‘আতই অবশিষ্ট আছে। তিনি এক মুষ্টি ভরে জাহান্নাম থেকে একদল লোককে বের করবেন, যাদের গায়ের চামড়া পুড়ে কাল হয়ে গেছে। তারপর তাদেরকে জান্নাতের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত ‘হায়াত’ নামক একটি নহরে নামানো হবে। তারা এর দু’তীরে এমনভাবে তরতাজা হয়ে উঠবে, যেমন তোমরা পাথর বা গাছের পাশ দিয়ে প্রবাহিত স্রোতের কিনারে বীজকে দ্রুত অঙ্কুরোদ্গম করতে দেখ। এর মধ্যে যেটা রোদে থাকে সেটা সবুজ হয়, আর যেটা ছায়ায় থাকে সেটা সাদা হয়।



তাদেরকে সেখান থেকে বের করা হবে। তখন তাদেরকে মোতির দানার মত মনে হবে। তাদের গলায় সীলমোহর লাগান হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করলে জান্নাতবাসীরা বলবে, এরা পরম দয়ালু আল্লাহ্র মুক্ত করা লোক। আল্লাহ তাদেরকে জান্নাত দিয়েছেন, অথচ (এজন্য) তারা কোন আমল বা কল্যাণের কাজ করেনি। (জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে) তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যা দেখছো তা তোমাদেরকে দেয়া হ’ল এবং অনুরূপ পরিমাণ আরও দেয়া হ’ল’ (বুখারী)।



ক্বিয়ামতের উপরোক্ত বিবরণ পড়ে আমাদের উচিত এখনই সাবধান হওয়া। সেই দিনের জন্য যথাসাধ্য প্রস্ত্ততি নেওয়া। যাতে ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে আমরা নাজাত লাভ করতে পারি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৩

ইমরান আশফাক বলেছেন: ধন্যবাদ। +++++

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫

মোঃ জাকির হোসেন লাভলু বলেছেন: ইমরান আশফাক ভাই,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.