![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কয়েক দিন ধরে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির অনেকগুলো হ্মমতার মধ্যে একটা হচ্ছে মানুষকে নষ্টালজিক করে দেওয়া। বৃষ্টির শব্দ আমাদের
সম্মহিত করে অনেক দুর অতীতে নিয়ে যায়। আমার জীবনের সবথেকে সুন্দর বৃষ্টি দেখেছিলাম যখন আমি প্রাইমারী স্কুলে পরি। একদিন ক্লাস
করছি এমন সময় শুরু হল প্রবল বর্ষণ । আমাদের স্যারটা কেমন জানি অন্য টাইপের মানুষ ছিলেন। ক্লাস ছুটি দিয়ে বললন, কে কে আমার সাথে
ভিজতে যাবি!!...আমি হাত তুললাম।
অন্ধকার আকাশ থেকে নেমে আসছে বর্ষার প্রবল ধারা। আমি আর স্যার তার মদ্ধ্যে হাটছি । বৃষ্টি দেখছি । মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া অনুভব
করছি। স্যার বললেন বৃষ্টি মানুষের ঘু্মন্ত আত্মাকে জাগিয়ে তোলে । সেই বাল্যকালে স্যার এর কথার মর্ম বুঝতে পারিনি । বুঝেছিলাম স্যার অনেক
ভাল কথা বলছেন। কিন্তু কথাটা যে সত্য সেটা বঝেছিলাম অনেক পরে । এখনো মন খারাপ থাকলে মনে মনে প্রার্থনা করি যেন বৃষ্টি হয় ।
বৃষ্টি আমার কাছে অনেকটা টনিকের কাজ করে । হয়তো অনেকের কাছেও তাই। আমার মদ্ধ্যে বৃষ্টির একটা আবেদন জাগিয়ে দিয়েছিলেন
স্যার । স্যার বলেছিলেন দোয়া করি বৃষ্টির প্রতি তোর ভালবাসা সারাজীবন যেনো থাকে।স্যার এর কথা মিথ্যা হয়নি। বৃষ্টি যেকোন অবস্থায় আমাকে
মুগ্ধ করতে পারে। বন্ধুর বাবা মারা গেছেন । মন খুবই খারাপ । এমন সময় বৃষ্টি শুরু হলো। আমার আর কোন কিছুই মাথায় নাই। ভিজতে
বের হয়ে গেছি। এই হোল অবস্থা।
বৃষ্টির নেশাটা থেকেই গেল । একট ঘটনা আমার খুব মনে পরে । ক্লাস নাইনে পড়ি । সেদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল । ক্লাস হবার
কোন সম্ভাবনাই নাই তবুও কি মনে করে যেন স্কুলে গেলাম ।এখানে সবাই হয়তো আমাকে অনেক সিরিয়াস ছাত্র ভাবতে পারেন । তাদের
জন্য বলছি আমার আগ্রহ শুধু স্কুলে যাওয়া পর্যন্তই ছিল । পড়াশুনা খুব একটা হতো না । যাই হোক গিয়ে দেখি একটা পোলাপান ও নাই ।
আমাদের বিল্ডিং এর বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি আর বৃষ্টিটা উপভোগ করছি । এমন সময় কে যেন ডাকলো । স্কুল গেটে দেখি জ্যোতি দাড়িয়ে আছে ।
ওরে দেখেই আমার হার্টবিট স্লো থেকে স্লো হয়ে যাচ্ছে । পাঠক আশা করি বুঝে গেছেন । ও কি ডাকলো নাকি !!... সেটা কি সম্ভব!!!
আবার ডাকলো। আসলেই তো জ্যোতি ডাকছে । খুশিতে উসাইন বোল্টের মতো দৌর দিলাম । একটু পরই আবিষ্কার করলাম আমি এমনিতেই
যাচ্ছি আমাকে দৌড়াতে হচ্ছে না !!...... দ্রুতগতির পুরষ্কার একদম হাতে হাতে পাইলাম । প্রায় ৪ ফু্ট পিছলা গিয়া ধপাসসসসস...নিচে
একটা কাচের টুকড়া ছিল । কুনুই এর নিচে প্রায় ২ ইঞ্চি চিরে গেল । সারা শরীর রক্তে মাখামখি । ব্যাথা এর থেকেও লজ্জা পাইছি বেশি ।
কাদা ঝাড়তেছি এমন সময় জ্যোতি সামনে এসে দাড়াল । একি!!!ও কাদছে নাকি!!!......তারপর ওর কথা শুনে আমার হাত পা সারা শরীর সব
থান্ডা হয়ে গেল.........ফোপাতে ফোপাতে বলল..."এই বোকা...এভাবে দৌড় দিয়ে যদি পা ভাংতো তাহলে আমাকে তো খোড়া জামাই নিয়ে ঘর করতে হতো...
আমি তো পালাইয়া যাচ্ছি না..."
আমি একদম ভাষা হাড়াইয়া ফেললাম । ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম । চারপাশের সব কিছু ভুলে গেছি । বৃষ্টি হচ্ছে...দুজনেই ভিজতেছি...
এরপর অনেক ঢেও বয়ে গেছে । সেদিনের স্কুল পড়ুয়া ছেলেটি এখন ভার্সিটিতে পড়ে ।দুটো জিনিস এখন পর্যন্ত আমাকে খুবই আপন করে নিয়েছিল ।
এক বৃষ্টি, দুই জ্যোতি। বৃষ্টি এখনো আমার সাথেই আছে । জ্যোতি নেই ।
বৃষ্টি নিয়ে আমার সৃতিচারন চলবেই.........একটা গান খুব মনে পরছে......
তোমাকে মনে পরবে.........
যখনি আকাশ ভেঙে.........
বর্ষা নামে............
©somewhere in net ltd.