নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মো: সেলিম মাহমুদ

মো: সেলিম মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাসপাতাল

২৫ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩০

হাসপাতাল জায়গাটা আমি সব সময় পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করি। কদাচিৎ আমি হাসপাতালে গিয়েছি যার বেশিরভাগ সময় হয় রক্তদানের জন্য নতুবা অসুস্হ কাউকে দেখতে।
হাসপাতালে রোগীদের ক্লেশাবিষ্ট চেহারা, স্বজনদের চিন্তিত বিরস মুখ আর ফিনাইলের ঝাঁঝাল গন্ধে আমার মন সংকুচিত হয়ে যায়।
জীবনে মাত্র একটি পূর্ন রাত 'যশোর জেনারেল হাসপাতালে' কাটিয়েছি, সাথে ছিল আমার বন্ধু 'ক্লোজআপ ওয়ান' তারকা মোল্লা বাবু।
সারাটা রাত আমরা কাটিয়েছিলাম হাসপাতালের বারান্দায় তাস খেলে। যেহেতু আমাদের রোগীর অবস্হা নিশ্চিত ভালোর দিকে তাই আমাদের মন প্রচ্ছন্ন ছিল। বাবু খুবই প্রানচ্ছোল একটা ছেলে। নিজে সবসময় আনন্দ নিয়ে থাকে এবং পাশের সবাইকে আনন্দে মাতিয়ে রাখে। ওর সাথে থাকলে মন খারাপ ভাবটা ধরে রাখা যায়না। অনেক মজার মজার স্মৃতি আছে বাবুর সাথে আমার বিশেষ করে মনিকা শিশু ক্লিনিক এলাকায় আমাদের দুষ্টুমি গুলো ছিল অনেক মজার , সেগুলো অন্য সময় বলা যাবে।

এখন আমি "লন্ডন ইনডিপেনডেন্ট হাসপাতাল" এর ওয়েটিং রুমে । কিছুক্ষন আগে আমার স্ত্রীকে ডাক্তার নিজে এসে ওটি তে নিয়ে গেছে আর আমি এখানে অপেক্ষা করছি। না না ঘাবড়ানোর কিছু নেই , ঘাড়ে শুধু দুইটা ইনজেকশন করবে যা কিনা আমাদের দেশের পল্লী চিকিৎসকরা চোখ বন্ধ করে দিয়ে ফেলতে পারে। আর এর জন্য গত দুই সপ্তাহ ধরে এদের তোরজোর ছিল চোখে পড়ার মত । বাসায় দুটি চিঠি পাঠিয়েছে, কয়েকবার ফোন করে মনে করিয়ে দিয়েছে।
সকাল আটটায় যখন
চেকইন করলাম তখন মনে হচ্ছিল যেন অনেকদিন পর এদের বাড়ীতে নিকটাত্নীয়ের আগমন হয়েছে। আন্তরিকতার সাথে খুব দ্রুতই প্রি এ্যাসেসমেন্ট শেষ করে ফেলল। ডাক্তার নিজে এসে প্রিএ্যসেস্মেন্টের তদারকি করল। দুইদফায় ডাক্তার আমার স্ত্রীর সাথে কথা বলল, তারা কি করতে যাচ্ছে পরিস্কার ইংরেজীতে সেটা ব্যাখ্যা করল।
অপেক্ষা করতে মন্দ লাগছে না। পরিপাটি করে সাজানো বসার জায়গার চারপাশ। এইমাত্র একজন সুদর্শন নারী স্টাফ মুচকি হেসে জানতে চাইল আমার কিছু লাগবে কিনা? আমি কফি চাই কিনা? আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা? চাইলে টেলিভিশন অন করতে পারি । ইত্যাদি ইত্যাদি । এখানে সেল্ফ সার্ভিস সিস্টেম তাই তাকে না করে দিয়ে নিজেই ক্যান্টন থেকে কফি আনলাম।
কফির ধোঁয়ার সাথে পাক খেতে খেতে আমার চিন্তাগুলো এখন গুলশান ট্রাজেডী ও ফ্রান্স - জার্মানীতে আটকে যাচ্ছে।
যে বিদেশিরা এমন পরম মমতা নিয়ে আমাদের সেবা করে, দেশের মাটিতে কিছু কুলাঙার কিভাবে তাদেরকে হত্যা করল!
যে জার্মান ও ফ্রান্স গভীর আবেগে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীদের আশ্রয় দিল সেই শরণার্থীর কেউ কেউ আবার জার্মান - ফ্রান্সে হামলা চালাল!

আমি অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি । ডাক্তার বলে গেল ইনজেকশন করার আগে ওরা ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিবে। আর পোস্ট অপারেশন প্রসিডিউর সম্পন্ন শেষে আজই আমার স্ত্রী আমার সাথে বাসায় ফিরতে পারবে। চাইলে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরতে পারবে যেহেতু আমার বাসা পাশেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.