![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আর দশজন সাধারণ বাঙালি যুবকদের মতো একজন। তবে আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেক সাধারণের মাঝে অসাধারণ কিছু একটা লুকিয়ে আছে। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি নিজের ভেতরের সেই অসাধারন সত্ত্বাটিকে খুঁজে বের করে আনার।
প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল চারপাশ। শত্রুপক্ষের মর্টারের আঘাতে সৈন্যদের ব্যারিকেডের এক অংশ ধ্বসে পড়েছে। কতজন হতাহত হয়েছে বোঝার উপায় নেই। তবে খানিক বাদেই ব্যারিকেডের এক পাশে লেফটেন্যান্ট বেনকে দেখতে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম আমি। যাক, ছেলেটা বেঁচে আছে! লেফটেন্যান্ট বেন আর তার কিছু সাথি হামাগুড়ি দিয়ে আমাদের দিকে আসতে থাকল। আমরা শুয়ে আছি ফেলে রাখা বেশ কিছু পাইন গাছের গুড়ির আড়ালে। প্রচণ্ড বন্দুকযুদ্ধ চলছে এদিকটাতে।
আমার সাথে আছে মিত্রবাহিনীর কিছু অকুতোভয় যোদ্ধা। কিন্তু দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে খুব দ্রুত আমাদের লোকবল কমে যাচ্ছে। ব্যাকআপ না পৌঁছালে আজ মৃত্যু নিশ্চিত। লেফটেন্যান্ট বেন কাছে চলে এসেছে। আমার উদ্দেশ্যে বলল, “ক্যাপ্টেন, উই আর ইন ক্রাইং নিড অফ ব্যাক আপ”।
আমি উত্তর দিলাম না। তবে একটা বিষয় লক্ষ করে আতঙ্কের ঢেউ নামল আমার শিরদাঁড়া বেয়ে। আমাদের অ্যামুনিশন প্রায় ফুরনোর পথে। ব্যাকআপ আসা পর্যন্ত টিকব বলে মনে হচ্ছেনা।
লেফটেন্যান্ট চিৎকার করছে, “ক্যাপ্টেন, ফর গডস সেক! কিছু একটা তো বলুন! এভাবে পরে থাকলে সবাই মারা পড়ব। আমরা কি অল আঊট এটাকে যাব?”
আমি বললাম, “অলআউট অ্যাটাকে যাওয়টা হবে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত। ওদের ভারী অস্ত্রের মুখে আমরা দু মিনিটে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। আমাদের পিছু হটতে হবে”।
“তাহলে নির্দেশ দিন ক্যাপ্টেন, চুপ করে আছেন কেন?”
“সবাই একসাথে পিছিয়ে গেলে ওরা বুঝে ফেলবে লেফটেন্যান্ট। আমাদের কিছু সৈন্য এখানে থাকতে হবে কভার ফায়ার করার জন্য”।
“আমি থাকছি ক্যাপ্টেন”। দৃঢ় কণ্ঠে বলল বেন। “আপনার দ্রুত পিছু হটুন”।
“না লেফটেন্যান্ট, আপনার অধীনস্থ সৈন্যদের নিয়ে আপনি পিছু হটতে থাকুন, আমরা কভার ফায়ার করছি”।
“না স্যার। আপনাকে এভাবে রেখে আমি পালাতে পারব না”।
“আহ! অযথা কথা বাড়িয়ে সময় নষ্ট করবেন না লেফটেন্যান্ট। এই যায়গাটা আপনি আমার চেয়ে অনেক ভাল চেনেন। খুব সহজেই সবার জন্য একটা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নিতে পারবেন। সময়মত ব্যাকআপ নিয়ে হাজির হতে পারবেন”।
“কিন্তু স্যার........”
আমি বিরক্তির সাথে বললাম, “ইটস অ্যান অর্ডার!!”
“ইয়েস স্যার” বলে ঘুরল লেফটেন্যান্ট বেন। সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বলল, “অ্যাটেনশন এভরিওয়ান। উই আর রিট্রিটিং, ফলো মি। আই রিপিট- ফলো মি”।
কিছুক্ষন তাদের গমন পথের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কেন যেন মনে হচ্ছে ওদের সাথে আর দেখা হবে না! আমি আবার শত্রুদের সম্ভাব্য অবস্থান লক্ষ করে গুলিবর্ষণে মনযোগী হলাম। নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছি আমরা। সামান্য অমনোযোগ মৃত্যুর কারন হতে পারে।
কতটা সময় এভাবে পেরিয়ে গেল জানিনা, হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড একটা ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়লাম। আওজায়টা পেলাম দু সেকেন্ড পর। মর্টারের শেল আঘাত করেছে। বুকের ভেতর থেকে সমস্ত নিঃশ্বাস বেরিয়ে গেছে যেন। উফ! কি ভীষণ কষ্ট। শরীরের অংগ প্রত্যঙ্গগুলো থেকে কোন সাড়া মিলছে না। ঘুম আসছে! সহস্র বছরের ঘুম...
***
এই মুহূর্তে একবার নুবির সাথে কথা বলতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু জানি নুবি বিজ্ঞান কাউন্সিলের একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রোজেক্ট নিয়ে ব্যাস্ত। তার সাথে এখন যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। তারপরও একবার চেষ্টা করে দেখতে তো ক্ষতি কি?
আমি বেডের পাশে একটা সুইচে চাপ দিলাম। ঘরের ঠিক মাঝখানে একজন সুন্দরী তরুণীর হলগ্রাফিক মূর্তি ভেসে উঠল। ও হচ্ছে কিটি, আমার ব্যাক্তিগত কম্পিউটার।
কিটি সুন্দর করে হাসল। “সুপ্রভাত রিমন? কেমন আছ তুমি?”
কিটির এই ফালতু কুশল বিনিময় অংশটা আমার জন্য খুব বিরক্তিকর। যে পোগ্রামার ওর পোগ্রামিং করেছে তার মাথায় কি ঘিলু বলে কিছু ছিলনা? একটা যন্ত্রের সাথে মানুষের কুশল বিনময়ের অর্থ কি? বিরক্তি গোপন করে বললাম, “ভাল আছি কিটি। তোমাকে ডেকেছি একটা বিশেষ প্রয়োজনে”।
“সানন্দে প্রয়োজনটি জানাও রিমন”।
“আমি এই মুহূর্তে নুবির সাথে একটু কথা বলতে চাই”।
“সেটা তো সম্ভব নয় রিমন। নুবি একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রোজেক্টে ব্যাস্ত। তার সাথে এখন যোগাযোগ করা যাবেনা”।
“আমি জানি। তারপরও তুমি একবার বিজ্ঞান কাউন্সিলের জীববিজ্ঞান অনুষদের সাথে যোগাযোগ করে দেখ”।
“ঠিক আছে রিমন” বলে কিটির মূর্তিটি অদৃশ্য হয়ে গেল। ফিরল আবার মিনিট খানেক বাদেই। “আমি দুঃখিত রিমন। বিজ্ঞান কাউন্সিল থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি”।
আমি হতাশ হয়ে গেলাম। নুবি খুব ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে ইদানিং। দেখা পাওয়াতো যাচ্ছেই না, কথা বলাও মুশকিল হয়ে পরেছে।
“তবে আমি তোমার জন্য একটা কাজ করেছি রিমন”।
“কি করেছ তুমি?” আমি শঙ্কিত হয়ে পড়লাম। কিটি প্রায়ই আমার অনুমতি ব্যাতিত বিভিন্ন কাজ করে বসে যা আমার জন্য পরবর্তীতে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
“আমি জীববিজ্ঞান অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগের সময় জানিয়ে এসেছি, যখনই নুবির অবসর হয় একমুহূর্ত দেরি না করে যেন তোমার সাথে যোগাযোগ করে!”
“ওহ হ! কেন করেছ তুমি এটা? নুবি জানতে পারলে চিন্তিত হয়ে পরবে। কাজে মনোযোগ দিতে পারবে না!”
“আমি তোমার কণ্ঠের অস্থিরতাটুকু টের পাই রিমন। তুমি তো জান আমাকে সেভাবেই পোগ্রাম করা হয়েছে”।
“হ্যা, তুমি উদ্ধার করেছ আমাকে!” এবার আর বিরক্তি গোপন থাকল না। “এখন দয়া করে আমার ব্যাক্তিগত সাইক্রিয়াটিস্ট রিগের সাথে যোগাযোগ কর”।
কিটি আবার অদৃশ্য হয়ে গেল। কিছুক্ষন বাদে ঘরের মাঝখানে ভেসে উঠল রিগের মূর্তি। “কেমন আছ রিমন?”
“ভাল থাকলে কি তোমাকে ডাকতাম, রিগ?”
“কেন কি হয়েছে?”
“আজ আবার দুঃস্বপ্ন দেখেছি”।
“কি দেখলে আজ?”
“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর একজন সৈন্যের ভুমিকায় দেখলাম নিজেকে। যুদ্ধের এক পর্যায়ে শত্রুপক্ষের মর্টারের আঘাতে ছিটকে পড়লাম। সমস্ত শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা! আর ঘুম ভেঙে গেল তখনই”।
“নতুন কিছু নয়”।
“হ্যা, কিন্তু স্বপ্নগুলোকে এত জীবন্ত মনে হয় কেন? মনে হয় যেন এই ছোট ছোট ঘটনাগুলো আমার জীবনেরই অংশ”।
“এটা খুব হাস্যকর ধারনা, রিমন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেড় হাজার বছর পূর্বের ঘটনা। তোমার বয়স মাত্র ত্রিশ”।
“কিন্তু বিষয়টা লজিক্যাল নয় রিগ। আমি নিশ্চয়ই স্বপ্নে এমন কোন ঘটনা দেখতে পারিনা যার অংশ আমি নই। যে ঘটনা আমি স্বচক্ষে দেখিনি, শুনিনি বা কখনো ভাবিনি তা আমার কল্পনায় কেমন করে আসে?”
“আমাদের অবচেতন মন লজিক মানেনা। তুমি কি আমার নির্দেশগুলো মেনে চলছ?”
“হ্যা, রাতে শোয়ার আগে কম খাচ্ছি, হালকা ব্যায়াম করছি। অন্যান্য নিয়মগুলো সব মেনে চলছি কিন্তু তারপরও লাভ হচ্ছেনা”।
“হুম... বিষয়টা নিয়ে একটু ভাবতে হবে রিমন। আমি তোমার সাথে পরে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলব। এখন বিদায় দাও”।
“বিদায় রিগ”।
রিগ চলে যেতেই আবার কিটির ছবি ভেসে উঠল। “আর কিভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি রিমন.........”
আমি সুইচ টিপে কিটিকে নিষ্ক্রিয় করে দিলাম।
বাবার সাথে অনেক দিন ধরে দেখা হচ্ছেনা। তার সাথে একটু কথা বলতে পারলেও মনটা হালকা হত।
****
ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসতেই স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে আমার পিছু নিল দুটি বিদঘুটে চেহারার রোবট। এই রোবটগুলোর দেহের গরন মানুষের মত। হাত পা আছে ঠিক ঠাক কিন্তু যেখানে মস্তিস্ক থাকার কথা সেখানে আছে বিশাল আকৃতির একটা চোঙ। তার ভেতর বসান আছে কপরটন। প্রতিটি প্রতিরক্ষা রোবট একটি ফ্রিকোয়েন্সি দ্বারা পরস্পরের সাথে সম্পৃক্ত। এই ফ্রিকয়েন্সির সাহায্যে এদেরকে প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে নিয়ন্ত্রন করা হয়।
এরা আমার ব্যাক্তিগত বডিগার্ড। প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে এই রোবট দুটো আমার ব্যাক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। আমার বাবা বিজ্ঞানী ইরিদ বিজ্ঞান কাউন্সিল কতৃক ঘোষিত বর্তমান পৃথিবীর সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের মাঝে একজন। গত কয়েক দশকে পদার্থ বিজ্ঞানের নানান শাখায় বাবার সৃষ্টি কিছু ফর্মুলা আর আবিস্কার পৃথিবীর বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে কয়েক ধাপ। তার পুত্র হওয়ার সুবাদে আমিও নানা সুযোগ সুবিধা ভোগ করি, না চাইলেও এ সুবিধা আমাকে নিতে হয়।
আমার রুমের বাইরে ডানদিক বরাবর লম্বা একটা করিডোর। এই করিডোরের শেষ মাথায় বাবার ব্যাক্তিগত ল্যাবরেটরি। গত কয়েকদিন যাবত বাবা কাজে মশগুল হয়ে আছে, ল্যাব ছেড়ে আর বেরোচ্ছে না। বাবা সময় পরিভ্রমনের উপর কাজ করছে। আমি বিস্তারিত জানিনা, বিজ্ঞান কখনোই আমার আগ্রহের বিষয় ছিলনা।
বাবার ল্যাবের সামনে এসে দাঁড়ালাম। দরজার মাথায় সবুজ বাতি জ্বলছে। অর্থাৎ এ মুহূর্তে বাবা খুব বেশি ব্যাস্ত না, যোগাযোগ করা যাবে। আমি ভয়েজ সেন্সরের বাটন চেপে বললাম, “বাবা আমি রিমন। তোমার সাথে কথা বলা যাবে এখন?”
ইন্টারকমে বাবার গমগমে আওয়াজ ভেসে এল, “অবশ্যই রিমন। ভেতরে এসো”।
স্বয়ংক্রিয় ভাবে দরজা খুলে গেল। আমি ভেতরে পা দিলাম, রোবট দুটো আর ফলো করছে না। ওদের এখানে আসার অনুমতি নেই।
বাবা বসে ছিলেন একটা কিম্ভুতকিমাকার যন্ত্রের আড়ালে। আমাকে দেখে উঠে এলেন। “কেমন আছ রিমন?”
“ভাল আছি। তোমার কাজ কেমন চলছে?”
“ভালনা”। বাবাকে চিন্তিত দেখাল। “আমার ফর্মুলাতে কিছু একটা গলদ আছে, যুগান্তকারী এক আবিস্কারের দ্বারপ্রান্তে এসে থমকে দাঁড়িয়েছি”।
আমি হাসলাম।
“তুমি হাসছ রিমন? তুমি আসলে বিষয়টার গুরুত্ব বুঝতে পারছ না। আমি সফল হলে বদলে যেতে পারে পৃথিবীর ইতিহাস। যেকোনো সময় আমরা অতিত অথবা ভবিষ্যতে পরিভ্রমন করতে পারব! যে টাইম মেশিনের কথা এতদিন কল্পকাহিনীতে পরেছ তা আজ বাস্তব হতে চলেছে! কি উত্তেজনাকর বিষয় একবার ভেবে দেখ!”
আমি বললাম, “আমি বুঝতে পারছি বাবা। আসলে বিজ্ঞান নিয়ে আমি খুব বেশি আগ্রহী নই তা তো জানই”।
“এটা খুব লজ্জাজনক! আমার পুত্র হয়ে তুমি বিজ্ঞান ভালবাসনা!” বাবা আফসোসের ভঙ্গিতে মাথা নাড়লেন। তারপর বললেন, “তুমি বলেছিলে আমার সাথে কথা বলতে চাও। কি বিষয়ে?”
“আমার দুঃস্বপ্ন দেখা নিয়ে। সমস্যাটা তো যাচ্ছে না। দিন দিন বাড়ছে”।
“তোমার ব্যাক্তিগত সাইক্রিয়াটিস্ট রিগের সাথে কথা বলেছ?”
“হ্যা, তার দেওয়া নিয়মগুলো সব মেনে চলছি কিন্তু লাভ হচ্ছেনা”।
বাবা যেন আরও চিন্তিত হয়ে পড়লেন। “বিষয়টা ভাবনায় ফেলে দিল রিমন! আমি বিজ্ঞান কাউন্সিলে যোগাযোগ করে তোমার সমস্যার কথা বলব”।
“আর একটা কথা বলতে চাই বাবা”।
“কি?”
আমি খানিক ইতস্তত করে বললাম, “বলতো আমার বয়স কত?”
বাবা হাসলেন, “আমি তো তোমার বয়সের হিসেব রাখিনি। ২৮-২৯ হবে বোধহয়”।
“ত্রিশ”।
“কাছাকাছি অনুমান করেছি”। বাবার হাসিটা প্রসারিত হল।
“কিন্তু আমাকে দেখলে মনে হয়না ২৫-২৬ বছরের যুবক?”
“সেটা কোন সমস্যা না রিমন। বয়সের সাথে সাথে সবার গ্রোথ তো এক হয়না!”
“কিন্তু বাবা, আজ থেকে ১০ বছর পূর্বে যখন আমার বয়স ছিল ২০ তখনো আমাকে ২৫ বছর বয়সী মনে হত!”
“সেটা হরমনজনিত কোন সমস্যা হতে পারে! আমি এ বিষয়টা নিয়েও ওদের সাথে কথা বলব”।
“কিন্তু বাবা.......”
বাবা হাত তুলে আমাকে থামিয়ে দিল, “আমি বুঝেছি বিষয়টা রিমন। তোমার সাথে এ বিষয়ে পরে আরও কথা হবে। আমি এখন একা একা একটু কাজ করব, ফর্মুলার সমস্যাটা মনে হয় ধরতে পেরেছি। তুমি যাও”।
আমি বেরিয়ে এলাম ল্যাব থেকে। স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধ হয়ে গেল। প্রায় সাথে সাথে লাল বাতিটি জ্বলে উঠল। এর মানে হচ্ছে বাবা এখন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন, তার সাথে কথা বলা যাবেনা। আমি জানি এখন তিনি কি করবেন। বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রধানের সাথে সরাসরি কথা বলবেন যোগাযোগ মডিউলের সাহায্যে। পকেট থেকে একটা এয়ারবাড বের করে কানে প্রবেশ করালাম। আজকের কথোপকথনটুকু আমিও শুনতে পাব। বাবা টের পায়নি, তার অলক্ষ্যে একটা ছোট্ট বাগ লাগিয়ে রেখে এসেছি ঐ অদ্ভুত যন্ত্রের গায়ে। প্রতিপদার্থের তৈরি এই বাগ, নির্দিষ্ট সময় পর নিজ থেকে মিশে যাবে যন্ত্রের গায়ে। বাবা ঘুণাক্ষরেও সেটা জানতে পাবে না।
যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই। বাবার কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছি, “মহামান্য সভাপতি আমাকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ”।
অপর প্রান্ত থেকে কিছু বলা হল।
বাবা আবার বলল, “আমার মনে হয় আবার সময় চলে এসেছে। ওর মনে সন্দেহ দানা বাঁধছে, প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে চাইছে”।
আবার নিরবতা। অপর প্রান্ত থেকে কিছু একটা বলা হচ্ছে।
“না, এসবে কাজ হবেনা। আমার মনে হয় চুরান্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা আবশ্যক!”
আবার নিরবতা।
“ঠিক আছে, দ্রুত ব্যবস্থা করুন”।
কথোপকথন শেষ হয়েছে। আমি কান থেকে এয়ারবাড খুলে নিলাম। আমি আজ এমন কিছু জেনে ফেলেছি যা আমার জানার কথা নয়!
****
“রিমন, তুমি কি সুস্থ মস্তিষ্কে কথা গুলো বলছ?”
কফির কাপে চুমুক দেয়ার ফাকে দেখে নিলাম আমার বডিগার্ড রোবট দুটি মোটামোটি দূরে আছে। এইমাত্র নুবি আমাকে কেলভার মেটালের তৈরি একটা লকেট উপহার দিয়েছে। লকেট থেকে চোখ ফিরিয়ে আমি নুবির দিকে তাকালাম। “হ্যা, নুবি”।
“কিন্তু এটা কিকরে সম্ভব?”
“আমি জানিনা কিভাবে সম্ভব। কিন্তু এটাই সত্যি। আমার বয়সের সাথে সাথে দৈহিক বৃদ্ধি হচ্ছেনা। তোমার সাথে আমার পরিচয় দু বছর আগে একটা বিজ্ঞান বিষয়ক সেমিনারে। তোমার কি মনে হয় গত দু বছরে আমার শরীরে একটুও পরিবর্তন এসেছে?”
“দু বছর খুব অল্প সময়, রিমন”।
“কিন্তু ১০ বছর অল্প নয় নুবি। ব্যাপারটা সিরিয়াস। গত দশ বছরে আমার শারীরিক বৃদ্ধি হয়নি একচুলও”।
“এটা কোন হরমোনজনিত সমস্যা হতে পারে”।
“ঠিক আছে মেনে নিলাম। কিন্তু আর একটা বিষয় দেখানো দরকার তোমাকে”। আমি একটা চাকু হাতে তুলে নিলাম ডান হাতের তালুতে একটা পোঁচ দিলাম। সাথে সাথে গভীরভাবে কেটে রক্ত বেরিয়ে এল।
“রিমন তুমি কি করলে এটা?” আঁতকে উঠল নুবি।
“রিল্যাক্স! কিচ্ছু হবেনা”।
নুবি অবাক চোখে দেখল আমার হাতের ক্ষতচিহ্নটি আপনা থেকেই ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল। সে চিৎকার করে উঠল, “মাই গড! ইউ ক্যান হিল”!!
“ইয়েস, আই ক্যান”।
“আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, রিমন। এটা কিভাবে সম্ভব?”
“আমি জানিনা নুবি। তবে এমন উত্তর না জানা আরও হাজারো প্রশ্ন আছে। গতকাল আমি আড়ি পেতে বাবাকে কথা বলতে শুনেছি বিজ্ঞান কাউন্সিল প্রধানের সাথে। বাবা বলেছেন আমি কিছু একটা সন্দেহ করছি। খুব তাড়াতাড়ি সত্য জেনে ফেলব। বিজ্ঞান কাউন্সিল থেকে বলেছে দ্রুত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে”।
নুবির চোখে উদ্বেগ, “কেন রিমন, কেন হচ্ছে এসব তোমার সাথে?”
“কিছু একটা রহস্য লুকিয়ে আছে আমার মাঝে নুবি। আমার বাবা বা বিজ্ঞান কাউন্সিল চায়না আমি সেই রহস্যের সন্ধান পাই”।
নুবি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি বলে চলেছি, “তবে আমার কি মনে হয় জান? আমি সম্ভবত এই রহস্যের উত্তর জানি। অন্তত আমার অবচেতন মন জানে। সেজন্যই আমি প্রায়ই দুঃস্বপ্ন দেখি। এই দুঃস্বপ্নের মাঝেই সব উত্তর লুকিয়ে আছে”।
“কিন্তু তুমি তো এই দুঃস্বপ্ন খুব বেশিদিন যাবত দেখছ না!”
“হ্যা। আমার যখন ২০ বছর বয়স তখন আমার মা মারা যায় এবং তারপর থেকেই আমার দুঃস্বপ্ন দেখার শুরু। প্রায় একই সময় থেকে আমার দৈহিক বৃদ্ধি গেছে থেমে। আমার কেন যেন মনে হয় আমার দুঃস্বপ্নগুলো আসলে কল্পনা নয়, খুব বেশি জীবন্ত। আমার স্মৃতি নিয়ে কেউ খেলছে নুবি। মনে হচ্ছে আমার যে স্মৃতি আছে তা পূর্ণাঙ্গ নয়। কিছু স্মৃতি ভুলে গেছি আমি”।
“সেক্ষেত্রে আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারব”।
“কিভাবে?”
“মেডিকেল সায়েন্স বিভাগ মানসিক সমস্যা গ্রস্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটা বিশেষ সিমুলেশন টেকনিক আবিস্কার করেছে। এর সাহায্যে মানুষকে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করা হয়। তুমি যদি সত্যিই কোন স্মৃতি হারিয়ে গিয়ে থাকে তাহলে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। এই জন্য কিছু ইকুইপমেন্ট আর খুব রেয়ার একধরনের ইঞ্জেকশন প্রয়োজন”।
“তুমি কিভাবে এগুলো যোগাড় করবে?”
নুবি ঠোঁট টিপে হাসল। “ভুলে যাচ্ছ কেন? আমি একজন জীববিজ্ঞানী, গবেষণার কাজে প্রয়োজন বলে নিজের আইডি দেখিয়ে ওগুলো যোগাড় করা খুব বেশি সমস্যা হবেনা”।
“কিন্তু ওরা যদি ধরে ফেলে তোমার এগুলো নেওয়ার উদ্দেশ্য গবেষণার জন্য নয়?”
“সেটা বুঝতে ওদের অন্তত দুদিন সময় লাগবে। ততদিনে আমাদের কাজ হয়ে যাবে”।
“কিন্তু একদিন তো ওরা জানবেই, তোমার ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে নুবি”।
“তোমার চাইতে ক্যারিয়ার বড় নয় আমার কাছে”।
হাত বাড়িয়ে নুবির একটা হাত দুহাতের মাঝে তুলে নিলাম আমি। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষন। নুবি আছে বলেই তো বেঁচে আছি, ও না থাকলে এই একঘেয়ে বেঁচে থাকার আশা আমার অনেক আগেই নিঃশেষ হয়ে যেত।
****
আমার পায়ের নিচে পাহাড়ের চুড়ো, সম্মুখে বিশাল সাগর। আমি প্রস্তুত হচ্ছি, এক মুহূর্ত পরেই আলিঙ্গন করে নেব মৃত্যুকে। আরও একটি শেষ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে হবে সকল জাগতিক যন্ত্রণার অবসান। শেষবারের মত চিরচেনা পৃথিবীকে একনজর দেখে নিয়ে আমি ঝাপ দিলাম, আপন করে নিলাম ভীষণ শূন্যতাকে। পতনের গতি দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে। সামুদ্রিক বাতাস কানের দুপাশ দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে যাওয়ার সময় ফিসফিস করে বলে যাচ্ছে “আর কয়েক মুহূর্ত পরেই তোমার মুক্তি”।
যেন একযুগ পরে আমার দেহ লবণাক্ত পানির স্পর্শ পেল। কি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা! শরীরে কাপন ধরে যাওয়ার এক তীব্র অনুভূতি। আমি হারিয়ে যাচ্ছি অতলে, গভীর থেকে গভীরে। প্রশ্বাসের সাথে বুক ভরে যাচ্ছে লোনা পানিতে। বুকের ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে, পুরে যাচ্ছে অক্সিজেনের অভাবে। মুক্তি এত কঠিন কেন?
কোথায় সমুদ্র? এতো দেখছি ব্যাস্ততম এক সড়ক। আমি মাঝখানে দাঁড়িয়ে কি করছি? গায়ের পাশ ঘেঁষে ছুটে যাচ্ছে দূরপাল্লার ভারী যানবাহন। নাহ, ওরা যানবাহন কেন হতে যাবে? ওরা আমার মুক্তির দূত। দূর থেকে দেখতে পাচ্ছি একটা যাত্রীবাহী বাস। আমার মুক্তির পয়গাম নিয়ে প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে। আমি দু হাত প্রাসারিত করে করে চেয়ে আছি সেই বিশাল মুক্তিকে গ্রহন করার জন্য।
একমুহূর্ত বাদেই লক্ষ করলাম জাহাজের নির্জন ডেকে বসে সমুদ্রের ঢেউ অবলোকন করছি। মৃদু ঢেউয়ের ধাক্কায় দোদুল্যমান অনুভূতি নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে। সমুদ্র ডাকছে আমায়, কোন অপ্রতুল মাদকের প্রতি আসক্ত ভবঘুরের মত আমি এগিয়ে গেলাম ডেকের কিনারে। ঝাপ দেব বলে প্রস্তুত, আরও একবার মুক্তির দ্বারপ্রান্তে আমি। দেহটা পানি স্পর্শ করতেই আবার সেই তীব্র অনুভূতি! এই অনুভূতি আমার অনেক দিনের চেনা। মুক্তির নেশায় আসক্ত ক্রীতদাসের প্রচণ্ড আর্তনাদ শুনছি সমস্ত অস্তিত্বজুড়ে।
কিন্তু এটা কি হচ্ছে? আমার প্রসারিত দুহাতে অস্ত্র কেন? আর কোথায় গেল ব্যাস্ত সড়ক? এতো এক যুদ্ধের ময়দান। প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে। আমি অনবরত গুলি করে চলেছি আর দ্রুত পায়ে এগিয়ে যাচ্ছি সম্মুখে শত্রুর অবস্থান বরাবর। আমার মনে ভয় ডর বলে কিছু নেই। আমি স্বাধীনতার নেশায় বুঁদ। হঠাৎ বুকে ভারী বুলেটের ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়লাম। সমস্ত দম বেরিয়ে গেছে বুক থেকে। বার কয়েক কেশে উঠলাম। তবে কি এই আমার মুক্তি?
নাহ! ওটা মুক্তির নামে ছিল প্রহসন। নইলে আমি এখন একটা চলন্ত মহাকাশযানে কেন? ওজনের তারতম্যের ঝক্কি সামলে মহাকাশযানটির হ্যাচ বরাবর দাঁড়িয়ে যেতে খুব বেশি বেগ পেতে হলনা। হ্যাচ ধরে টান দিতেই সম্মুখে দেখলাম বিশাল শুন্যতা। এই শূন্যতার ভিড়ে কোথাও হারিয়ে যাব আমি আজ। নাহয় এটাই হোক আমার মুক্তির নামান্তর। বিশাল শূন্যতাকে গ্রহন করে নিলাম অনায়াসেই। শরীরের ওপর আর কোন নিয়ন্ত্রন নেই, ভেসে চলেছি অজানার উদ্দেশ্যে। অনেক দূরে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র দেখতে যাচ্ছে। তার উজ্জ্বল আভা যেন প্রশ্ন করে চলেছে “তুমি মুক্তি চাও নাকি মৃত্যু চাও”। এই প্রশ্ন আমাকে করা অবান্তর। আমার কাছে মুক্তি বা মৃত্যু ভিন্ন কিছু নয়।
ধীরে অন্ধকার কেটে যাচ্ছে। নক্ষত্রের অবয়বটি ক্রমশ কোন মানব মূর্তির আঁকার ধারন করছে। এই মুখশ্রী আমার অনেক দিনের চেনা, অনেক বেশি আপন। এটা নুবি, আমার নুবি। নক্ষত্র মিলিয়ে গিয়ে সেখানে নুবির মুখটা স্পষ্ট হয়ে উঠল। তার চোখ দুটো আমাকে ক্রমাগত প্রশ্ন করে চলেছে, “তুমি কি মুক্তি চাও, তুমি কি মৃত্যু চাও?”
“না, নুবি আমি মৃত্যু চাই না। অন্তত তুমি যতক্ষণ পাশে আছ ততক্ষন নয়! আমার মুক্তি তোমার মাঝে, মৃত্যু আমার মুক্তি নয়”।
“কি আবল তাবল বলছ তুমি, রিমন?”
নুবির কথায় বাস্তবে ফিরে এলাম। আমি শুয়ে আছি বিছানায়। মাথা হাত বুক ও শরীরের অন্যান্য অংশে নানান ইকুইপমেন্টের সংযোগ। আমি উঠে বসার চেষ্টা করলাম। নুবি বাধা দিল “আস্তে! ওষুধের প্রভাব কাটতে কিছুক্ষন সময় লাগবে”। সে ব্যাস্ত হাতে আমার শরীর থেকে ইকুইপমেন্টগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় মনযোগী হল। বলল, “কি কিছু উপকার হল”।
“হ্যা”। আমার সংক্ষিপ্ত উত্তর।
“কি জানতে পারলে?”
“বিজ্ঞানী ইরিদ আমার বাবা নন। আমার ২০ বছর বয়সে আমার মা মারা যাননি। সমস্ত স্মৃতি মিথ্যে। আমার মাথায় ২০ বছর বয়স পর্যন্ত সময়ের অসংখ্য স্মৃতি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে যার পুরোটাই মিথ্যে”।
“তাহলে সত্যি কি?”
“আমার জন্ম দেড় হাজার বছর পূর্বের পৃথিবীতে। আমার আসল বাবা ছিলেন কৃষক। আমার বাবা মার মৃত্যু হয়েছে আমার সামনে। তখন আমি ২৫ বছরের যুবক। এর পর আরও অসংখ্য পরিবারের সাথে থেকেছি আমি, সবাই বুড়ো হয়ে একসময় মরে গেছে কিন্তু আমি মরিনি, আমি মরিনা, আমার বয়স বাড়েনা। একসময় অতিষ্ঠ হয়ে মুক্তির নেশায় আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি। অসংখ্যবার চেষ্টা করেছি মরে যেতে। পানিতে ডুবেছি, সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছি, পাহারের ওপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছি, গুলি খেয়েছি- কিন্তু আমি মরতে পারিনি, কোন অদৃশ্য শক্তি আমাকে প্রতিনিয়ত রক্ষা করে চলেছে”।
নুবিকে একটুও বিচলিত মনে হচ্ছেনা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কি ব্যাপার নুবি? তুমি অবাক হচ্ছনা একথা শুনে?”
“না, আমি পুরো বিষয়টা আন্দাজ করতে পারছিলাম”।
“কিভাবে?”
“এখানে আসার আগে আমি আমাদের বিজ্ঞান কাউন্সিলে ডাটাবেজে খোঁজ নিয়েছি। তুমি তো জানই বিজ্ঞান কাউন্সিলের ডাটাবেজে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ সম্পর্কে তথ্য রাখা আছে। তোমারটাও আছে। একজন সদস্য হিসেবে সে তথ্য জানার অধিকার আমার আছে। কিন্তু আমাকে সেই তথ্য জানতে দেওয়া হচ্ছেনা। বলা হচ্ছে তুমি সম্পর্কে সকল তথ্য ক্লাসিফাইড। শুধুমাত্র প্রধান বিজ্ঞানী সভার সদস্য না হলে এই তথ্য জানা যাবেনা। তারপর আমি একজন প্রধান বিজ্ঞানী সভার সদস্যের পাস চুরি করে তথ্যটুকু বের করে এনেছি। সেখানে শুধু দুটো বাক্য বলা তোমার সম্পর্কে বলা আছে, ১. তুমি একজন অমর মানুষ ২. বিজ্ঞান কাউন্সিলের সর্বোচ্চ দায়িত্বগুলোর মধ্যে একটি হল তোমাকে রক্ষা করা। এর চেয়ে বেশি তথ্য জানার অধিকার একমাত্র বিজ্ঞান কাউন্সিল প্রধান ছাড়া কারো নেই”।
“তুমি এত বড় ঝুকি নিয়েছ কেন?”
“তোমার জন্য রিমন... আমি যেকোনো ঝুঁকি নিতে পিছপা হবনা”।
“কিন্তু এখন কি হবে? ধরা পরলে ওরা তো আমাদের কঠিন শাস্তি দিবে!”
“আমরা পালিয়ে যাব, তুমি প্রস্তুত থেক। কেউ কিছু জানার আগেই আজ রাতে পালাব আমরা”। নুবির চোখে মুখে দৃঢ়তা।
“কিন্তু প্রতিরক্ষা রোবটগুলো আমাদের ঠিকই ধরে আনবে। ওরা ওদের ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে যেকোনো জিনিসের সন্ধান পেয়ে যায়। পৃথিবীর কোন প্রান্তই আমাদের জন্য নিরাপদ নয়”।
“সেটা তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও”। নুবির ঠোঁটের কোনে হাসির আভাস। “ তুমি তো জানই প্রতিটি প্রতিরক্ষা রোবট ফ্রিকোয়েন্সি দ্বারা একটি অন্যটির সাথে কানেক্টেড। আমি ওদের ফ্রিকোয়েন্সিতে একটা ভাইরাস আপলোড করে দিয়েছি। ওদের পক্ষে এখন আর তোমাকে আইডেন্টিফাই করা সম্ভব নয়। আমরা পৃথিবীর উত্তর প্রান্তের কোন বিরান অঞ্চলে পালিয়ে গিয়ে পরিচয় গোপন করে নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারব।”
আমি নুবির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম। অস্ফুট কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে বসলাম, “আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তুমি আমার পাশে থাকবে তো?”
নুবি হাসল। “কথাটা উলটো করে বললে ভাল হবে রিমন। তোমার নয়, আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি তোমার পাশে থাকব”।
আমিও হাসলাম। নুবির কথাই ঠিক। আমাদের সংসার হবে, সন্তান হবে, ভালবাসার মেয়েটি ধীরে ধীরে বুড়িয়ে যাবে, একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে। কিন্তু আমি থাকব একই রকম। তাতে কি? একটা জীবন এই মেয়েটির সাথে পার করে দিতে পারলে আমার আর কিছুই না পাওয়া থাকবেনা। এই মৃত্যুহীন অস্তিত্ব নিয়ে সারাজীবন আমার যে আক্ষেপ ছিল তা এক পলকেই দূর হয়ে গেল। নিজের এই বেঁচে থাকাটা সার্থক হয়েছে নুবির জন্য। দেড় হাজার বছর পর জীবনে এসেছে সত্যিকারের ভালবাসা ।
নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর আমরা তখনও জানতাম না যে পালানোর সুযোগ আমাদের হবেনা। ইতিমধ্যে নুবির পাসওয়ার্ড চুরি আর ইলিগাল মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ইস্যু করার খবর জানাজানি হয়ে গেছে। একটু পরেই কিছু প্রতিরক্ষা রোবট আসবে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই শক দিয়ে ওরা আমাদের অজ্ঞান করে দেবে।
***
বার কয়েক চোখ মিট মিট করতেই চোখের সামনে পৃথিবীটা পরিষ্কার হয়ে এল। এই যায়গা আমার অনেক দিনের পরিচিত। এটা বাবার ল্যাব। আমি বসে আছি একটা চেয়ারে। হাত-পা চেয়ারের সাথে শক্ত ইলাস্টিক রোপ দিয়ে বাধা। সামনেই বসে আছে বাবা। তার চোখে মুখে কৌতূহল। নুবিকে কোথাও দেখছি না।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “নুবি কোথায়?”
বাবা হাসল, “নুবি ফিরে গেছে তার আপন ভুবনে, তার কর্মক্ষেত্রে”।
“নুবি আমাকে ফেলে কাজে ফিরে গেছে! এটা অসম্ভব”।
“সম্ভব, কারন ও এখন আর তোমাকে চেনেনা। নুবির মস্তিস্ক থেকে তোমার সকল স্মৃতি মুছে দেওয়া হয়েছে।
তীব্র এক হতাশার অনুভূতি গ্রাস করল আমাকে। কয়েক মুহূর্ত কিছুই ভাবতে পারলাম না। তারপর আস্তে ধীরে বললাম, “আমাকে বাদ রাখা হল কেন? আমাকেও সব কিছু ভুলিয়ে দিচ্ছ না কেন তোমরা?”
“হুম.. বিজ্ঞান কাউন্সিল থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আনা হচ্ছে। তোমার সমস্ত স্মৃতি মুছে দিয়ে নতুন স্মৃতি প্রবেশ করান হবে, দেওয়া হবে নতুন পরিচয়। এখনও কাজটা করা হয়নি আমার অনুরোধে। আমি চাইছিলাম সব কিছু ভুলে যাওয়ার আগে তুমি সবটুকু জেনে নাও”।
“সর্বমোট কতবার আমাকে এভাবে স্মৃতি ভুলিয়ে নতুন স্মৃতি দেওয়া হয়েছে?”
“আমার অধীনে মোট তিন বার তোমার পুনর্জন্ম হয়েছে। এর আগে আমার শিক্ষকের অধীনে ছিলে তুমি। আমার পরে অন্য কারো অধীনে নেওয়া হবে। প্রতিবার ঠিক ১০ থেকে ১২ বছরের মাথায় তুমি নিজ সম্পর্কে সবটুকু জেনে যাও। আর জানার পর পরই খুব ভায়োলেন্ট হয়ে ওঠো, আত্মঘাতী কাজ কর, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা কর। তাই তোমার কাছ থেকে তোমাকে রক্ষা করতেই প্রতি ১০ বছর পর পর তোমার স্মৃতি রিবুট করতে হয়”।
“কেন এমন হচ্ছে আমার সাথে? আমার বয়স বাড়েনা কেন? আমি অমর হলাম কিকরে?” একসাথে অনেকগুলো প্রশ্ন করে বসলাম আমি।
“এই সব প্রশ্নের উত্তর আমারও জানা নেই। তোমার সম্পর্কে সব তথ্য জানার অধিকার একমাত্র বিজ্ঞান কাউন্সিল প্রধান ছাড়া আর কারো নেই। অনুমান নির্ভর হয়ে বলতে পাড়ি, সম্ভবত তুমি গোপন কোন প্রজেক্টের অংশ, কিন্তু এই প্রজেক্টের কি উদ্দেশ্য তা আমি জানিনা”।
আমি চুপ করে থাকলাম।
বাবা প্রশ্ন করলেন, “আর কিছু জানতে চাও তুমি?”
“না”
“ব্যাস! প্রতিবার তো তুমি অসংখ্য প্রশ্ন কর। এইবার আর কিছু জানতে চাইছ না কেন?”
“যত দ্রুত সম্ভব আমাকে আমার স্মৃতি ভুলিয়ে দাও”। নুবির কথা মনে হচ্ছে বার বার। নুবিহীন বেঁচে থাকার কথা ভাবতেও অসহ্য মানসিক যন্ত্রণা হচ্ছে।
“একটু অপেক্ষা কর। বিজ্ঞান কাউন্সিল থেকে সরঞ্জাম এলেই ব্যবস্থা নেব”।
আমি চুপচাপ বসে থাকলাম। বাবা উঠে ল্যাবের অপর প্রান্তের দিকে এগিয়ে গেল তার সেই কিম্ভূতকিমাকার টাইম মেশিনের কাছে। ঝুঁকে পরে কাজ শুরু করল।
কিছু মুহূর্ত পেরিয়ে গেল। আমার তন্দ্রামত এসছিল, হঠাৎ মাথার অভ্যন্তরে তীক্ষ্ণ একটা ব্যাথা অনুভব করলাম। কেউ যেন আমার নাম ধরে ডাকছে। “রিমন!! রিমন!!”
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, “কে? কে ডাকে?”
আমার মাথার ভেতরে থেকে উত্তর এল, “আমরা”।
“কোথথেকে কথা বলছ তোমরা?”
“আমরা কথা বলছি অনেক ভবিষ্যতের এক পৃথিবী থেকে। এ এমন এক পৃথিবী যেখানে সব কিছুই আছে, শুধু মানুষ বলে কোন প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। সমস্ত মানবজাতি হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে”।
বিষয়টা আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা, এটা কোন কল্পনা নয়ত? আমি কোন স্বপ্ন দেখহি না তো? জিজ্ঞেস করলাম, “কারা তোমরা?”
“আমাদেরকে বোঝার সাধ্য তোমার নেই রিমন। আমরা মানবজাতির হিতাকাঙ্খি। আমরাই তোমাকে এতদিন বাচিয়ে রেখেছি। প্রতিবার মৃত্যুর কাছাকাছি যাওয়ার পর আমরা তোমাকে ফিরিয়ে আনি। আমরাই তোমার জিনে খুব সুক্ষ কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে বয়সটা একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে আঁটকে রেখেছি”।
“কিন্তু কেন করেছ তোমরা এটা?” আমি অস্থির কণ্ঠে বললাম।
“মানবজাতিকে রক্ষার করার জন্য, রিমন। মানবজাতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব তোমার হাতে। তুমিই শুধু পার মানবজাতিকে সম্ভাব্য ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে”।
“আমি কীভাবে মানবজাতিকে রক্ষা করব?” এতক্ষনে আমি একটু ধাতস্থ হতে পেরেছি।
“বিজ্ঞানী ইরিদ, যাকে তুমি বাবা বলে ডাক সে আর কিছুক্ষন বাদেই তার টাইম মেশিন তৈরির কাজে সফল হবে। তার আগেই তোমাকে যন্ত্রটা ধ্বংস করে দিতে হবে রিমন। তাহলেই মানুষ রক্ষা পাবে”।
“আমি কিছু বুঝতে পারছিনা”। অসহায় কণ্ঠে বললাম আমি।
“রিমন, মানবজাতীকে সময় পরিভ্রমনের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি কারন এই ক্ষমতা তোমাদের টাইম লাইন ভেদে সাহায্য করবে। তোমরা নিজেদের খেয়াল খুশি মত অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ পালটে দিয়ে গিয়ে সৃষ্টি করবে একটা বিশাল টাইম প্যারাডক্স। তাতে সমগ্র মানবজাতি হারিয়ে যাবে এক মহাজাগতিক গহ্বরে। পৃথিবী থেকে বিলিন হয়ে যাবে একটি বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব”।
“কিন্তু তোমরা আমাকেই কেন বেছে নিলে? আর কেউ নয় কেন?”
“কারন তুমি হচ্ছ জেনেটিকেলি পারফেক্ট একজন মানুষ। তুমি যে যুগ থেকে এসেছ তার পরবর্তী সময় থেকেই মানুষ জেনেটিকাল পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাভাবিক চিন্তা ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা প্রযুক্তির দাস হয়ে গেছে, এরা কখনোই আমাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কাররুপে বুঝতে পারবেনা। সময় পরিভ্রমনের সুযোগ কেউ নষ্ট করতে চাইবেনা। কিন্তু তুম দেখে এসেছ প্রযুক্তি শুধু উপকার করে তা নয়, কখনো কখনো বিশাল ধ্বংস ডেকে আনে”।
“একজন মানুষকে কেন বেছে নিতে হল? তোমরা যখন মানবজাতির হিতাকাঙ্খি, তাহলে নিজেরাই কেন বাবার যন্ত্রটা ধ্বংস করে দিচ্ছনা?”
“আমরা একটা সিমুলেশন প্রসেস সৃষ্টি করতে পারি। সেই সিমুলেশন প্রসেসে চাইলে এক বা একাধিক নতুন প্রান জুড়ে দেওয়া যায় কিন্তু একটা ঘটে যাওয়া ঘটনা পরিবর্তন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। ঘটনাটা যারা ঘটিয়েছে, তাদেরকেই সেটা পরিবর্তন করতে হবে। তাই তোমাকে বেছে নেওয়া হয়েছে এ কাজের জন্য”।
“আমাকে কি করতে হবে?”
“ভালকরে তাকিয়ে দেখ, বিজ্ঞানী ইরিদের তৈরি যন্ত্রের সাথে একটা ক্যাপসুল রয়েছে একজন মানুষ প্রবেশ করার মত। তার পাশেই দন্ডায়মান কাচে ঘেরা মোচক আকৃতির জারের ভেতর বেশ কিছু কেমিকেল ভর্তি টেস্ট টিউব রাখা আছে। তুমি শুধু এই টেস্ট টিউবগুলো ভেঙে দিলেই চলবে। এতে যে পরিমান ক্ষতি হবে তাতে বিজ্ঞানী ইরিদ তার জীবদ্দশায় আর সময় পরিভ্রমনের যন্ত্র তৈরি করতে পারবেনা। মানবজাতি রক্ষা প্পাবে সম্ভাব্য ধংসের হাত থেকে”।
কিন্তু আমি বাধন থেকে মুক্ত হব কীভাবে? ভাবতে ভাবতেই কাছাকাছি একটা স্ক্রু ডাইভার চোখে পড়ল। একটু কসরত করলেই ওটার নাগাল পাওয়া যাবে, তারপর মুক্ত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। যন্ত্রপাতির আড়ালে স্টিলের দণ্ড দেখা যাচ্ছে, এটার এক আঘাতেই কাচের জারটা ভেঙে দেয়া সম্ভব। আমি মনস্থির করে নিলাম।
বাবা যন্ত্রের ওপর ঝুঁকে পড়ে প্রবল উৎসাহে কাজ করছিল। আমি তার কাঁধে হাত রাখলাম। বাবা ফিরে তাকাল না, তার সমস্ত মনোযোগ নিজের কাজের প্রতি।
“বাবা, একটু কথা বলব তোমার সাথে”।
“এখন বিরক্ত করোনা”। উত্তেজনার বশে আমি কীভাবে বাধন খুলে বেরিয়ে এসেছি সেটাও বাবার মাথায় আসছেনা।
“কথাটা জরুরি বাবা”।
“আমি এখন যে কাজ করছি তার চেয়ে জরুরি আর কিছুই নেই”। বাবার কণ্ঠ থেকে উত্তেজনা উপচে বেরচ্ছে যেন! “আমি সমাধানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই আমি হয়ে যাব ইতিহাসে সেরা বিজ্ঞানী”।
“কিন্তু তুমি যে কাজটা করছ তা মানবজাতীর ধ্বংস ডেকে আনবে”। আমার শান্ত কণ্ঠস্বর।
এবার বাবা কাজ রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন। “কি বলতে চাও তুমি?”
“বিধাতা মানবজাতীকে সময় পরিভ্রমন করার ক্ষমতা দিয়ে পাঠায়নি কারন এটাই আমাদের ধ্বংস ডেকে আনবে”।
“কে বলেছে তোমাকে?”
“কে বলেছে সেটা বড় নয় বাবা। আমার দায়িত্ব হল যেভাবেই হোক মানবজাতিকে ধংসের হাত থেকে রক্ষা করা। এই কিয়ামত সৃষ্টির হাতিয়ার আমাকে ধ্বংস করতে হবে, যেভাবেই হোক এটা আটকাতে হবে”।
বাবা আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে চাইল। কিন্তু আমি সরে গেলাম না। কাচের জার লক্ষ করে আঘাত করতে প্রস্তুত হলাম। বাবা আমাকে থামনর জন্য তার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি তুলে নিল। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সজোরে স্টিলের দণ্ডটি নামিয়ে প্রচণ্ড শব্দে ভেঙে পড়ল কাচের জার আর তার ভেতরে রক্ষিত অসংখ্য টেস্ট টিউব। তরল কেমিকেল দিয়ে ভেসে যাচ্ছে ফ্লোর।
কি ঘটে গেছে সেটা উপলব্ধি করতে কয়েক মুহূর্ত লাগল বাবার। তারপর প্রতিহিংসায় জ্বলে উঠল তার চোখ দুটি। আমার বুক বরাবর অস্ত্রের নিশানা করল। যে চোখদুটো আমার সামান্য কষ্টতেও ব্যাথায় কাতর হত তা আজ আমাকে খুনের নেশায় বিভোর। উন্মাদনায় বাবা ভুলে গেছে আমি অমর। দুনিয়ার কোন বুলেটের সাধ্য নেই আমার মৃত্যু নিশ্চিত করার।
বাবা গুলি করল। ভারী বুলেটের প্রচণ্ড ধাক্কাতে আমার দেহটা মাটি থেকে দুহাত উপরে উঠে গেল। মেঝেতে পিঠ দিয়ে পড়ার সময় হুক করে বুক থেকে সমস্ত বাতাস বেরিয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড সময় লেগে গেল শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে। আমি বুলেটের আঘাত প্রাপ্ত যায়গায় দুহাত চালালাম ক্ষতস্থানের খোঁজে। বুকের বাদিকে শার্টের পকেটের কাছে একটা ফুটো আছে কিন্তু গায়ে আঘাত লাগেনি। কীভাবে হল এটা? বোতামের ফাক দিয়ে হাত গলিয়ে দিয়ে বুঝতে পারলাম বিষয়টা। বুলেটটা নুবির দেয়া কেলভারের তৈরি লকেটে লেগেছে। কেলভার মেটাল বুলেট ডিফ্লেক্ট করতে পারে! তারমানে বাবার বুলেট লকেটে লেগে দিক পরিবর্তন করেছে? কোথায় গেছে ওটা? বাবার কোন সাড়া-শব্দ পাচ্ছিনা কেন?
এক ঝটকায় উঠে বসলাম আমি। দেখলাম বাবা মেঝেতে বেকায়দা ভঙ্গিতে পড়ে আছেন। দ্রুত কাছে গেলাম। বাবার শরীরটা সোজা করলাম। মেলে থাকা চোখদুটি অনুভূতিহীন। একটা বুলেট তার দুচোখের মাঝে একটা তৃতীয় নয়ন সৃষ্টি করেছে। সারাজীবনের সাধনা শেষে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌছে বিদায় নিয়েছেন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী।
***
“এখন আপনাদের সামনে জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার ও তার প্রভাব নিয়ে বক্তব্য রাখবেন জীববিজ্ঞান অনুষদের নবীন এবং সম্ভাবনাময় বিজ্ঞানী নুবি...”
উপস্থাপক ঘোষণা দিতেই দর্শকসারি থেকে তুমুল করতালির শব্দ শোনা গেল। অবাক হওয়ার কিছু নেই, নুবি একজন পরিচিতমুখ।
ভাগ্য সহায় হয়েছে বলতে হবে। কনফারেন্সটা সাধারনের জন্য উন্মুক্ত। আমি দর্শক সারির একেবারে সামনের দিকে এসে বসার সুযোগ পেয়েছি।
স্টেজের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল নুবি। সাদা এপ্রোনটা চমৎকারভাবে মানিয়ে গেছে তার গায়ে। চোখে-মুখে এক ধরনের ঔজ্জ্বল্য। নুবি ফিরে গেছে তার আপন জগতে। মাইক্রোফোনের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। পরিষ্কার কণ্ঠে শুরু করল তার বক্তব্য। “জৈব রাসায়নিক পদার্থবাহী জীবাণু অস্ত্র আমাদের বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ ব্যাবস্থার জন্য অভিশাপস্বরূপ । এ ধরনের অস্ত্র তার লক্ষ্যস্থল এবং আশে পাশের এলাকার অধিবাসীদের উপর বিরূপ শারীরিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বিস্তার করতে পারে নিমেষেই…”
নুবি বক্তৃতা দিচ্ছে দর্শক সারির দিকে তাকিয়েই। আমি কয়েকবার হাত নাড়িয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। নুবি এখন রয়েছে অন্য কোন জগতে। জাগতিক জীবন তাকে টানছে না।
“জৈব রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা সংঘটিত প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষনিক কিংবা বিলম্বিত হতে পারে। একটা সম্পূর্ণ এলাকা দীর্ঘমেয়াদে আক্রান্ত করতে যেখানে অধিক পরিমাণে জৈব কম্পাউন্ড প্রয়োজন , অতর্কিত আক্রমণে স্বল্প পরিমাণ কম্পাউন্ড পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করলে আরও বেশী মরণঘাতী ফলাফল পাওয়া সম্ভব…”
নুবির চোখের দৃষ্টি ইতিমধ্যে কয়েকবার আমার ওপর দিয়ে ঘুরে গেছে। ওর মধ্যে আমাকে চিনতে পারার কোন লক্ষন দেখছিনা। তারমানে বাবা ঠিকই বলেছিলেন, নুবির মস্তিস্ক থেকে আমার সকল স্মৃতি মুছে দেওয়া হয়েছে। সে আর কখনো আমাকে চিনতে পারবেনা! ক্ষীণ একটা সন্দেহ ছিল মনে, এখন তাও দূর হয়ে গেল।
হঠাৎ করেই প্রচন্ড এক স্থবিরতা গ্রাস করল আমাকে। মনে হল কয়েক মুহূর্তের জন্য অনুভূতি শুন্য হয়ে পড়লাম। বুকের ভেতর প্রচণ্ড এক হাহাকার। তাহলে হাজার বছর বেঁচে আর লাভ কি? কার জন্য বাঁচব? কি উদ্দেশ্যে বাঁচব?
“…এছাড়া জীবাণুরা নিজেরাই দ্রুতহারে বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম। জীবাণু অস্ত্র দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পরে উপসর্গসমূহ বিশ্লেষণ করে কারণ সনাক্ত করা অর্থাৎ জীবাণু অস্ত্রের আক্রমণ যে হয়েছে সেটা সনাক্ত করা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া হওয়ায় তা আক্রমণকারী পক্ষকে বাড়তি কৌশলগত সুবিধা প্রদান করে…”
মনটাকে শক্ত করে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। এত সহজে আমি হাল ছাড়বনা। হাজার বছর ধরে একঘেয়ে, উদ্দেশ্যহীন আর দুর্বিষহ এক জীবনযাবন শেষে অবশেষে বেঁচে থাকার সত্যিকার অর্থ খুজে পেয়েছি আমি। প্রয়োজন হলে আবার নতুন করে পরিচিত হব নুবির সাথে। আবার নতুন করে গড়ে তুলব সম্পর্ক।
“...অত্যাধুনিক নিক্ষেপণ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে হাতে তৈরী বিবিধ ডিভাইস এক্ষেত্রে রাষ্ট্র অথবা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা ব্যবহৃত হতে পারে..” হঠাৎ পেছনের দিকে কিছু একটা দেখে নুবি থেমে গেল।
আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখলাম কিছু প্রতিরক্ষা রোবট কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেছে। দর্শকসারিতে চোখ বুলাচ্ছে। সম্ভবত আমাকেই খুজছে। তীব্র একটা আতংক গ্রাস করল আমাকে, যদিও জানি নুবির আপলোড করা ভাইরাসের কারনে ওরা আমাকে চিনতে পারবেনা।
আমার আতংক অমুলক ছিল, রোবটগুলো সামনে দিয়ে হেঁটে চলে গেল কিন্তু আমাকে চিনল না। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে যাব তখনই দ্বিগুণ আতংক পেয়ে বসল আমাকে। প্রতিরক্ষা রোবটগুলো একে একে সবাই নুবির দিকে অস্ত্র তাক করছে। কি ঘটছে বুঝতে পারছেন না নুবি। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি। রোবটগুলো আমার ফ্রিকোয়েন্সি ভুল করলেও নুবিকে চেনে। সম্ববত ওদের উপর নির্দেশ আছে আমাকে না পেলে নুবিকে ধরার জন্য। কিন্তু নুবিকে কেন ধরবে ওরা? নুবি আমাকে সাহায্য করেনি, সে এখন আমাকে চেনেই না। নুবিকে কি করবে ওরা ধরে নিয়ে গিয়ে? টর্চার করবে নিশ্চয়ই! আমি সেই রিস্ক নিতে পারিনা। আমাকে ওরা ধরে নিয়ে গেলে হয়ত কোন একভাবে ওদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে ফিরে আসতে পারব। কিন্তু নুবিকে ধরে নিয়ে গেলে আর কখনোই তার দেখা পাবনা।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। হাততালি দিয়ে রোবটগুলোর দৃষ্টি আকর্ষন করলাম। “এইযে দেখ, তোমরা যাকে খুঁজছ, সেই আমি এখানেই”।
রোবটগুলো আমার দিকে ফিরে তাকাল। হাতের অস্ত্রগুলো নুবিকে রেখে আমার দিকে তাক করল। সম্ভবত ভয়েস রিকগনিশনের মাধ্যমে আমাকে চিনতে পেরেছে।
কিন্তু রোবটগুলোর আচরন সন্দেহজনক। ওরা নিজেদের মাঝে ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে যোগাযোগ করছে। সম্ভবত আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য নয়, মেরে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে! আমার হাসি পেল। অদ্ভুত ব্যাপার, ওরা কি জানেনা যে আমি অমর? আমি হিল করি? কোন বুলেটের পক্ষেই আমাকে খুন করা সম্ভব নয়!
বরাবর সামনে দড়িয়ে থাকা রোবটটি আমাকে লক্ষ করে গুলি ছুড়ল। বুকের বা পাশে এসে গুলি বিঁধল। প্রচণ্ড এক ঝাকুনি খেয়ে দুহাত দূরে গিয়ে ছিটকে পড়লাম। সমস্ত শরীরে তীব্র ব্যাথার অনুভূতি। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা বুক। তার মাঝেও কষ্ট করে হাসি টেনে আনলাম মুখে। এই রোবটগুলোর মত গন্দমূর্খ খুব কম আছে! শরীরে বুলেট প্রবেশ করার এই অনুভুতি আমার কাছে নতুন কিছু না।
দর্শকরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেছে। নুবির চোখে নির্ভেজাল আতংক। খুব বেশি ভয় পেয়ে গেছে সে। রোবটগুলো আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি হাচরে উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করলাম, পারলাম না। হাটুর নিচ থেকে একদমই বল নেই। এতক্ষনে তো আমার শরীর রিকভারি শুরু করার কথা। কিন্তু রক্ত বের হওয়া বন্ধ হচ্ছেনা কেন?
আবার একটা আতংক পেয়ে বসল আমাকে! তাহলে কি আমি এখন আর অমর নেই? যে বা যারা আমাকে এতদিন প্রোটেক্ট করে এসেছে তারা নিজেদের উদ্দেশ্য পুরন হতেই আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে? তারমানে বাবার ছোরা সেই গুলিটি লকেটে লেগে ডিফ্লেক্ট না হলে মারা পড়তাম আমি!
আমি তাকালাম নুবির দিকে। নুবি আমাকে দেখে নিঃশব্দে কাঁদছে। কেন কাঁদছে ও? আমাকে তো এখন আর সে চিনতে পারছে না। তাহলে কাদবে কেন? তবেকি ওর অবচেতন মনের গভীরে এখন কোথাও রিমনের ছবি লুকানো আছে, আধুনিক প্রযুক্তি যার সন্ধান পায়নি? এখানেই তাহলে ভালবাসার কাছে প্রযুক্তির পরাজয়!
আমার দু চোখ বুজে আসতে চাইছে। ঘুম আসছে... সহস্র বছরের ঘুম। এই ঘুমের জন্যই তো আমি শতাব্দীর পর শতাব্দী অপেক্ষায় ছিলাম। অথচ এখন আর ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না। প্রানপনে তাকিয়ে থাকার চেষ্টা করছি আমি।
দুটো রোবট দুদিক থেকে আমার আমার দুটো হাত ধরল। টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। আমি প্রানপনে বলতে থাকলাম, “তোমরা আমাকে নিয়ে যেওনা, আমি আমার নুবিকে দেখতে চাই! শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নুবিকে দেখতে চাই... শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত...”
(সমাপ্ত)
**************************
কেলভারঃ এক ধরনের মেটাল। বাস্তবে আছে, কাল্পনিক কিছু নয়। এটাকে বলা হয় বুলেটপ্রুফ মেটাল।
আর তেমন কোন কঠিন টার্ম ব্যাবহার করিনি, তাই রেফারেন্স দেওয়াটা বাহুল্য হয়ে যেতে পারে।
**************************
উৎসর্গঃ প্রোফেসর শঙ্কু, আমার প্রিয় গল্পকারদের মাঝে একজন।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সমস্যা নাইকা!
গল্পটা তোমার ভাল লাগবে অপু
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৪
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: প্রিয়তে রাখি.....কাল সকালে পড়বো।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪০
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অবশ্যই, সময় করে পড়বেন।
আর কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না যেন!
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৮
জুন বলেছেন: :-< :-<
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪০
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
কি ব্যাপার আপু?
বড় দেখে ভয় লাগল?
ব্যাপারনা, একটু চেষ্টা করে দেখেন পড়া যায় কিনা!
৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪
তাসজিদ বলেছেন: কিন্তু রিমন কিভাবে তার অমরত্ত হারালো? যেহেতু তার পিতা সে রহস্য বের করতে পারেনি।
আর গল্প সম্পর্কে কিছু বলার নেই।
আমার মনেহয় অমরত্ত কেও যদি পেত তাহলে সে অভিশাপ ই হত।
X man সিরিজ এ লোগান, যে অমর ছিল, কিন্তু তার জীবন ছিল অভিসপ্ত।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৩
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: রিমনকে অমর করে রাখার পেছনে উদ্দেশ্য একটাই ছিল - বিজ্ঞানী ইরিদ কে থামানো। কারন বিজ্ঞানী ইরিদের আবিষ্কারের ফলেই মানব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে। যেহেতু এই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে তাই তাকে অমর করে রাখার আর প্রয়োজন ছিল না।
ধন্যবাদ তাসজিদ ভাই গল্পটা পড়ার জন্য।
৫| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৮
তাসজিদ বলেছেন: তবে দেড় হাজার বছর না হয়ে ১০০ বছর হলেই মনে হয় ভাল হত। তাহলে সময়ের একটি ক্রম পাওয়া যেত। মানে পুরো সময় কে একটি ফ্রেমে সহজে বাধনো যেত।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৮
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: জেনেটিকাল কিছু ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে গিয়ে সময়টা বাড়াতে হয়েছে। গল্পের পটভূমিটা এমন একটি সময়ে যখন পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আশা করি দেরহাজার বছরের আগে পৃথিবী ধ্বংস হবে না।
ভাল থাকুন তাসজিদ ভাই।
৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
এত জটিল করে ভাবেন কিভাবে ? গল্প দারুন হইছে।
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: কইতাম পারি না
ভাল থাকেন ভাই।
৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৩
স্বঘোষিত মিসির আলী বলেছেন: চাচা জটিল হইছে !!
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: হ কাকা থ্যাংকূ
৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩১
গোর্কি বলেছেন:
-পড়ে গেলাম একটানে একটু সময় নিয়ে।
-বিজ্ঞান ভিত্তিক কল্প-কাহিনী ঝরঝরে ও সাবলীল ভঙ্গীমায় লেখায় দারুণ লেগেছে।
-গল্পে থাম্বস আপ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫০
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
-অনেক ধন্যবাদ গোর্কি!
-ছোট্ট বাক্যে চমৎকার মন্তব্য করেছেন।
-ভাল থাকুন আপনি।
একটু আপনার মত করে লিখার চেষ্টা করলাম!
৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২
লোপা এসহক বলেছেন:
প্রথম দিকে অনেকখানি পড়লাম ...
জটিল লিখেছেন! প্রিয়তে রাখলাম পরে পড়বো ...
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
প্রিয়তে!! দিল খুশি হয়ে গেল।
পুরোটা পড়ে জানাইয়েন কেমন লাগল
ভাল থাকুন।
১০| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪০
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: ভাই গপ বেশি লম্বা ! বুকমার্ক করে রাখলাম! পরে সময় নিয়া পড়মু!
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
পড়েন, সময় নিয়েই পড়েন। তাড়াহুড়োর কিচ্ছু নাই। কেমন হইসে বইলেন পড়ার পর। ভাল থাকুন
১১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩০
সাদরিল বলেছেন: আমরা একটা সিমুলেশন প্রসেস সৃষ্টি করতে পারি। সেই সিমুলেশন প্রসেসে চাইলে এক বা একাধিক নতুন প্রান জুড়ে দেওয়া যায় কিন্তু একটা ঘটে যাওয়া ঘটনা পরিবর্তন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। ঘটনাটা যারা ঘটিয়েছে, তাদেরকেই সেটা পরিবর্তন করতে হবে। তাই তোমাকে বেছে নেওয়া হয়েছে এ কাজের জন্য। দারুন এক যুক্তি দিয়েছেন।মূলত এখানেই গল্প আপনার সুপ্রতিষ্ঠিত।
গল্পটার বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সিনেমার কথা মনে পড়েছে।
দ্বীতিয় বিশ্বযুদ্ধের সমন মনে পড়েছে সেভিং প্রাইভেট রায়ানের কথা।
রিমন যখন অমরত্বের কথা জানতে পারে তখন মনে পড়েছে এক্স ম্যান উলভারিনের কথা।
ভবিষ্যত থেকে যখন তাকে বাবার প্রজেক্ট থামাতে বলা হয় তখন মনে পড়েছে টার্মিনেটর টু এর কথা।
তবে ফিনিশটা হয়েছে নিখুত।আমি ভেবেছিলাম রিমন তার বাবার হাতেই মারা পড়বে।কেলভারের তৈরি লকেট গল্পে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ সাদরিল ভাই।
ব্যাখ্যাটা মুলত গল্প লিখারও আগে দাঁড় করাতে হয়েছিল। এই টাইপের খুটি নাটি ব্যাক্ষা আমার সময়ক্রম গল্পটাতে বাদ দিয়ে গিয়েছিলাম তাই অনেকেই গল্প থেকে খুঁত বের করেছিলেন। এবার তাই নিখুত করার চিন্তা ছিল মাথায়।
সেভিং প্রাইভেট রায়ান একটা অনবদ্য সিনেমা। দেখেছি মাত্র কিছুদিন আগেই। আর টার্মিনেটর সিরিজের সব কটা মুভিতো অলটাইম হিট!
ভাল থাকুন সাদরিল। শুভকামনা আপনার জন্য।
আর একটা কথা- আপনার দেখা কিছু ভাল যুদ্ধের মুভির নাম সাজেস্ট করে দিয়েন তো আমাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতে হবে এমন কথা নেই। আমি যুদ্ধের ওপরে নির্মিত মুভি খুব কম দেখেছি।
১২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৪
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সায়েন্স ফিকশন হিসেবে আমার বেশ ভালো লেগেছে। তবে নামটা হয়ত আরো সুন্দর কিছু রাখা যেত। এটা যে খারাপ তা বলছি না।
বাংলায় খুব সাবলীল বর্ননায় সায়েন্স ফিকশন লিখেছেন আমি এমন একজনকেই চিনি, জাফর ইকবাল স্যার। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে আমি তার কোন লেখাই পড়ছি। আবেগ ইমোশন সবই আছে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি কিছুটা অন্যরকম এন্ডিং আশা করেছিলাম।
আপনার প্রায় সব গুলো লেখাই আমার প্রিয়। আমি খুব চাই আপনার বই প্রকাশিত হোক। শুধু ব্লগের জন্য নয়, প্রিন্ট মিডিয়ার জন্যও লিখুন। গল্প ছোট বড় না, গল্পের আবেদনই বড় কথা। সেটা সব সময়ই আপনার গল্পে পেয়ে এসেছি। ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইল।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
প্রথমে গল্পের নাম এটা ছিলনা। নাম দিয়েছিলাম অনিঃশেষ অবয়ব। কিন্তু পোস্ট দেয়ার আগে খেয়াল হল শেষ পর্যন্ত যেহেতু রিমন আর অনিঃশেষ থাকল না, নিঃশেষ হয়ে গেল তাই এই নামটা গল্পের সাথে যায়না। তাৎক্ষনিক আর কোন নাম আসছিলনা মাথায়, তাই প্রযুক্তির পরাজয় দিলাম নাম হিসেবে। আমি প্রযুক্তির কাছে ভালবাসার হার দেখাতে চেয়েছিলাম। তবে নামটা আমার কাছেও ভাল লাগেনি খুব একটা। চিন্তা করে দেখি আর কি নাম দেয়া যায়!
এন্ডিংটা হ্যাপি এন্ডিং হয়নি বলেই হয়ত আপনার মনে একটা খেদ রয়ে গেছে। দেখবেন এতে গল্পটা কিছুদিন আপনার মনে থাকবে। পাঠকের অতৃপ্তি ছোট গল্পের একটা বৈশিষ্ট বলা চলে।
প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য একেবারেই লিখিনি তা না। বেশ কয়েকটা সাহিত্য পত্রিকাতে আমার গল্প ছাপা হয়েছে। তবে ওনারা খুঁজেন ছোট গল্প মানে ছোট করে লেখা গল্প। আমি ছোট করে লিখতে পারিনা, বিস্তারিত না লিখতে পারলে মনে অতৃপ্তি থেকে যায়। তাই আপাতত প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য লেখা একটু বন্ধ আছে। আর চুপি চুপি বলি- ইনশাল্লাহ, আশা করি বই আসবে আগামী বইমেলাতে। কাউকে বইলেন না কথাটা।
১৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৯
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পড়েছি গল্পটা। সংক্ষেপে বলে যাই, ভালো লেগেছে। সাইফাই লাভ স্টোরি ।
আবার পরে আসব।
কমন বানান ভুল -- ব্যস্ত, ব্যথা, ব্যক্তিগত, লক্ষ্য
বিস্তারিত ব্যাপারে পরে বলবো যদি ব্লগ ঠিক থাকে। শুভরাত্রি নাজিম
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অবশ্যই আপু। মজার ব্যাপার কি জানেন? আমি একটা নতুন ওয়ার্ড ফাইলে লেখাটা কপি করে বানান ভুল গুলো শুধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু পোস্ট করার সময় ভুল বশত আগের ফাইলটা থেকেই কপি প্যাস্ট করেছি
আমি সময় নিয়ে আবার এডিট করব।
ভাল থাকুন আপু
১৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৯
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: হুম !
ভিন্নতা উপহার দিয়েই চলেছেন !
সাইন্স ফিকশান ও ভালো ই লিখছেন আপনি !
ভালো না , খুব ভালো !
আমি এমন একটা লিখতে চেয়েছিলাম যেখানে প্রেসিডেন্ট কে বাঁচাতে ব্যাস্ত থাকবে একদল প্রোগামার !
হচ্ছেনা ! আপনি একটু কপালে ঘসা দিয়েন !
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৬
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
এইযে দিলাম ভার্চুয়াল ঘষা । এইবার স্পিডে লেখা শুরু করেন। আর যদি ভার্চুয়ালে কাজ না হয়, তাহলে একদিন আমার ক্যাম্পাসে আইসা পড়েন সত্যিকারের ঘষা দিয়া দেব।
ভাল থাকুন অভি ভাই।
১৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১২
নূর আদনান বলেছেন: যা লেখছেন, আমারও মনে হয়েছে জাফর ইকবালের গল্প পড়তেছি, কাল্পনিক_ভালোবাসা ভাইয়ের সাথে সহমত। আমিও অন্যরকম এন্ডিং আশা করেছিলাম, হ্যাপি এন্ডিং.....
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
যা আশা করেছিলেন তা পাননি। এই অতৃপ্তির কারনেই গল্পটা আপনার কিছুদিন অন্তত মনে থাকবে। ছোট গল্প মানেই তো অতৃপ্তি!
ভাল থাকুন অনেক।
১৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৬
মারুফ মুকতাদীর বলেছেন: ইয়্যু আর গ্রেইট নাজিম ভাই।
প্লটটা সুপারব ছিল, প্রায় সব সাইফাইয়ের শেষেই টাচি ব্যাপার থাকে এমন, কিন্তু এটার ফুল থিমটাই হার্ট টাচিং। রিমনের জন্য প্রায় পুরো গল্পেই কেমন যেন খারাপ লাগে, আর শেষে এসে তো…………………
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ভাই বিকেলে পোস্ট দেব বলেছিলাম। রাত হয়ে যাওয়ার জন্য দুঃখিত। শরীরটা ভাল যাচ্ছেনা আমার। এই গল্পটাতে সায়েন্সের চেয়ে রোমান্সের দিকে বেশি নজর ছিল আমার। একসময় রোম্যান্টিক গল্পই লিখতাম, তাই কাজটা যে খারাপ পারি তা কিন্তু না। তবে নিকট ভবিষ্যতে আর রোমান্স নিয়ে গবেষণার চিন্তা নাই
ভাল ত্থাকুন।
১৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৩৬
শান্তির দেবদূত বলেছেন: আজ সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম তাই কাল পড়ব বলে ঠিক করেছিলাম, কিন্তু উকি মেরে ঢুকেই ফেসে গেছি। শুরু করার পর আর থামতে পারিনি। দারুন গতিশীল একটা সাই-ফাই পড়লাম। শুভেচ্ছা রইল।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩০
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
এত রাত অবধি জেগে গল্পটা পড়েছেন দেখে আপ্লুত হলাম ভাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক ভাল থাকুন। আপনার পরের গল্প কবে পাচ্ছি?
১৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৬
মামুন রশিদ বলেছেন: প্লাস দিয়ে গেলাম । ঘুম জড়ানো চোখে আপনার গল্প পড়া ঠিক হবে না । পরে পড়ব
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সকাল ৯ টায়ও চোখে ঘুম মামুন ভাই?
আর আমাকে তুমি করে বলতে বলেছিলাম যে সে খেয়াল আছে?
ভাল থাকেন।
আর কেমন লাগল জানাইয়েন
১৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৬
সুমন কর বলেছেন: আপনি খুব সুন্দর করে লিখেন। তাই আপনার লেখা পড়ি।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ ভাই। একটু চেষ্টা করি লেখার।
ভাল থাকুন।
২০| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৪
অদৃশ্য বলেছেন:
প্রিয় দৌলা
লিখাটি চমৎকার হয়েছে... ঘটনা পরম্পরা ভালো ছিলো... অনেক সাজানো গোছানো মনে হয়েছে লিখাটি... কোথাও গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলার মতো হয়নি... বেশ বড় লিখা, তবে আপনি তা সুন্দরভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গ্যাছেন... সাইফাই দারুনভাবেই ফুটে উঠেছে লিখাটিতে...
রহস্য আর ভালোবাসাময় এই সাইফাই পাঠে তৃপ্তি পেলাম খুব...
শুভকামনা...
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
প্রিয় নাজিম বলেলেই বেশি ভাল লাগে। দৌলা কেমন যেন শোনায়! একটা দৌড়া দৌড়া ভাব থাকে!
আপনি খুব চমৎকার করে মন্তব্য করেন। বিশেষ করে ... দেয়াটা ভালই লাগে। চেষ্টা করেছিলাম একটা জ্ঞানধর্মী সাইফাই এর বদলে ভিন্ন কিছু লিখতে। আপনাদের ভাল লেগেছে দেখে খুশি হয়েছি অনেক।
ভাল থাকুন।
২১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৭
লেজকাটা বান্দর বলেছেন: নেগেটিভ কথা আগে বলি। নাম মনে হয় আরও একটু সুন্দর করা যেত। ইরিদ, নুবি এই নামগুলো কেমন যেন বিদঘুটে লাগে, নাম একটু বাংলাদেশি টাইপ হলে মনে হয় ভালো লাগে।
এবার পজিটিভ কথা। ভাই কি লিখসেন ভাই!! কাহিনীটা অসাধারণ!! তবে দেড় হাজার বছর পর টাইম মেশিন আবিষ্কার হবে আর সেইটাকে ধ্বংস করার জন্য একটা মানুষকে দেড় হাজার বছর বাঁচাইয়া রাখা হবে, এইটা একটু কেমন কেমন যেন। ব্যাপার না। সাই ফাই ইজ সাই ফাই। মজা পাইলেই হইল। মজা পাইছি। আমাদের শুধুই গল্প পেজে দিতে পারব? জানায়েন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৪
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
গল্পের নাম দেওয়ার পিছনে একটা যুক্তি ছিল আমি ভালবাসার কাছে প্রযুক্তির হার দেখাতে চেয়েছিলাম। নুবি নামটা আমার অনেক পছন্দের। সাইফাই গল্পের নায়িকা মানেই যেন নুবি! বাংলাদেশি টাইপের নাম দেড় হাজার বছর পরে আর মানানসই লাগত না মনে হয়।
দেড় হাজার বছর পরের কাহিনী দেখানো দরকার ছিল। আমি গল্পের পটভুমি দেখাতে চেয়েছি এমন এক পৃথিবী যা ধংসের দোরগোড়ায় অবস্থান করছে।
]স্টিফেন হকিং একটা মজার প্রশ্ন করেছিলেন একবার-
“If time travel is possible, where are the tourists from the future?”
আমি নিজেও এখানে দেখাতে চেয়েছি সত্যিকার অর্থে টাইম ট্রাভেল পসিবল না। এটা পৃথিবীকে ধংসের মুখে নিয়ে যাবে। আর আশাকরি দেড় হাজার বছর আগে টাইম মেশিন কেউ প্রস্তুত করতে পারবেনা অর্থাৎ দেড় হাজার বছর আগে পৃথিবী ধ্বংস হবেনা
পেজে পোস্ট দিতে পারবেন। কোন সমস্যা নেই তাতে
ভাল থাকুন।
২২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৫
তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: এই গল্পটাকেও আমার প্রিয় তালিকাতে চালান করলাম।
সুন্দর প্লটে, সাবলীল বর্ণনায় চরম একটা সাইফাই গল্প।
এক কথায় অসাধারণ!
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৩
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
প্রিয়তে!!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অনেক ভাল থাকুন
২৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬
তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: এই গল্পটাকেও আমার প্রিয় তালিকাতে চালান করলাম।
সুন্দর প্লটে, সাবলীল বর্ণনায় চরম একটা সাইফাই গল্প।
এক কথায় অসাধারণ!
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৪
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
২৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৬
ল্যাটিচুড বলেছেন: আমি সায়েন্স ফিকশনের চরম ভক্ত, আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো, ভালো থাকুন আর ভালো ভালো সায়েন্স ফিকশন লিখন এই প্রত্যাশা রইল।
আপনার জন্য একটা সায়েন্স ফিকশন মুভি রিকমান্ড করছি - সময় পেলে মনোযোগ দিয়ে দেখবেন (সাব-টাইটেল সহ মুভিটা দেখলে বেশী ভালো লাগবে) মুভিটা শ্লো, কিন্তু শেষের টুইষ্ট ভুলবার নয়।
মুভির নাম - Man from Earth
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১২
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
মজার কথা শোনেন, ম্যান ফ্রম আর্থ মুভিটা আমার এক বন্ধু অন্তত ১০ বার বলেছে দেখার জন্য। নিজে জোর করে মুভিটা দিয়ে গেছে। কিন্তু আমি আলসেমির জন্য দেখিনি।
আপনিও যখন বলছেন, তখন না দেখে আর উপায় কি?
ভাল থাকুন
২৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৪
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গল্পের শুরুতে স্বপ্নের শুরুটা বেশ জীবন্ত লাগছিলো, যদিও শুরুটা পড়ে বোঝার উপায় ছিল না ওটা ক্যাপ্টেনের স্বপ্ন ছিল, কিংবা ক্যাপ্টেনরূপী রিমনের স্বপ্ন।
নুবি নামটা খুব সুন্দর। নুবি আর রিমনের অনুভূতিটা সবকিছুকে ছাপিয়ে ধরা পড়েছে।
অমরত্ব লাভের জন্য ব্ল্যাক ম্যাজিকের কত চর্চা হয় শুনেছি কিন্তু অমরত্ব খুব জন্ত্রনাদায়ক কিছু। যদিও এটা অনুভবের সুযোগ নেই, চাইও না তবে উদ্দেশ্যহীন ভাবে বেঁচে থাকাটা খুব যন্ত্রণার, মরে যাওয়া, আবার বেঁচে ওঠা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থাৎ উদ্দেশ্যহীন বাঁচা --এই বোধটা যখন আঁকড়ে ধরে তখন যে কতটা অসশায় লাগে এই ছোট এই জীবন দিয়েই ভালো টের পাওয়া যায়।
ভালো থেকো নাজিম
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: স্বপ্ন দেখে ধড়মড় করে উঠে বসা- এটা তো নতুন কিছু না। খুব কমন দৃশ্য। আমি নিজেও অন্তত ৫ বার ব্যাবহার করেছি। তাই এবার দুঃস্বপ্নের ব্যাপারটা একটু অন্যভাবে আনলাম।
আমার কাছে মনে হয় অমরত্ব বিষয়টা নিয়ে লেখার অনেক স্কোপ আছে। সাইফাই হতেই হবে এমন কোন কথা নেই। বাংলায় এমন লেখা কম। আমি বাইরের লেখকদের বেশ কিছু সুপার ডুপার লেখা পড়েছি জার মুল বিষয় হল অমরত্ব লাভ। ইচ্ছে আছে সামনে আরও লিখার, ব্যক্ষাটা মজবুত হলে কাহিনীটা যুক্তিহীন মনে হবেনা। উপরে তাসজিদ ভাইও বললেন আপনার মতই। আমারও মনে হয় অমরত্ব বিষয়টা আসলেই অভিশপ্ত।
সুন্দর কিছু অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু। ভাল থাকুন।
২৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১
অদৃশ্য বলেছেন:
প্রিয় নাজিম
লিখাটি চমৎকার হয়েছে... ঘটনা পরম্পরা ভালো ছিলো... অনেক সাজানো গোছানো মনে হয়েছে লিখাটি... কোথাও গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলার মতো হয়নি... বেশ বড় লিখা, তবে আপনি তা সুন্দরভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গ্যাছেন... সাইফাই দারুনভাবেই ফুটে উঠেছে লিখাটিতে...
রহস্য আর ভালোবাসাময় এই সাইফাই পাঠে তৃপ্তি পেলাম খুব...
শুভকামনা...
অট: আপনি আমার প্রতি আন্তরিক তাই আমার কথা বা আমার ... ও আপনার ভালো লাগে... আমি কৃতজ্ঞ
শুভকামনা...
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
এইবার সম্বোধনটা ভালা পাইলাম
আমি আপনার কবিতা ভালা পাই, তাই আপনার সব কিছুই ভালা লাগে
আপনার জন্য শুভকামনা আর সাথে ভাললাগা
২৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৭
মারুফ মুকতাদীর বলেছেন: আপনার সব গল্পই আমার পড়া, যা লিখেন, তাই আমার কাছে পার্ফেক্ট লাগে। তবে ছোটবেলা থেকেই সাইফাইয়ের প্রতি একটু বিশেষ দূর্বলতা আছে। যাই লিখেন, ভালো হবে বিশ্বাস করি, শুধু বেশিদিন গ্যাপ রাইখেন না। আর দ্রুত সুস্থ হয়ে যান, দোআ করি।
আর যে কারণে আবার মন্তব্য করলাম, আমি আপনার অনেক জুনিয়র, ‘আপনি’ করে বইলেন না।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ তোমাকে।
আমার সব গল্পই ভাল লাগে এমন পাঠক এই প্রথম পেলাম।
বেশিদিন গ্যাপ না দিলে আবার দেখবে একঘেয়ে লাগা শুরু করবে।
এইযে তুমি করে বলে দিলাম।
ভাল থাক ভাই।
২৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪
বটের ফল বলেছেন: এত লম্বা লেখা একবারে আমি কিভাবে পড়লাম!!!!!!!! দুনিয়ার অষ্টমাশ্চার্য ঘটায়া ফেলছি দেখতাছি। আপনারে ধইন্যা । পিলাস লনরে ভাই।+++++
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩০
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হে হে!!
আপনারে সাধুবাদ অসাধ্য সাধনের জন্য।
ধইন্না নিয়েন
২৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: আমি একজন নতুন ব্লগার। আপনার লেখা এই প্রথম পড়লাম তাতেই ভালো লাগা তৈরী হল। অসাধারণ লাগল। প্রিয়তে রাখলাম মাঝে মাঝে পড়ব। ধন্যবাদ আপনাকে।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৮
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, এত দ্রুত সেইফ হয়ে গেছেন দেখে আপনাকে সাধুবাদ জানাই। নতুন- পুরনো বলে ইছু নেই আসলে। মনের দিক থেকে আমরা ব্লগাররা সাধারণত নতুনই থাকি সবসময়।
ভাল থাকুন ভাই।
৩০| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩
আমি ইহতিব বলেছেন: আপনিতো সাধারণত মাসে একটার বেশী পোস্ট দেননা, নির্বাচিত পাতায় আপনার পোস্ট দেখে বোনাস পাওয়ার আনন্দ পেলাম। সময় লাগবে পড়তে, পড়ে আবার হাজিরা দিবো ইনশাআল্লাহ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হ্যা, একটু সময় লাগবে। আস্তে ধীরে পড়ুন। সমস্যা নেই। আর পরিবারের সবাইকে নিয়ে অনেক অনেক ভাল থাকুন, আপু।
৩১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩০
হাসান মাহবুব বলেছেন: থিমটা যে খুব নতুন কিছু তা না। প্রথমদিকে মনে হচ্ছিলো জ্যাকবস ল্যাডার মুভিটার মত নাকি। পরে অবশ্য তা লাগে নি। ফিনিশিংটাই গল্পের মূল আকর্ষণ। সব মিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
জ্যাকবস ল্যাডার দেখা হয়নি। আসলে ফিনিশিংটাই আমার এই গল্পের সবচেয়ে প্রিয় অংশ। গোপন একটা কথা বলি- ফিনিশিংটাই আমি সবার আগে ভেবেছি। তার পর ডাল পালা লাগিয়ে বটবৃক্ষ সৃষ্টি!
ধন্যবাদ হামা ভাই।
৩২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪১
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভুল বানানে কমেন্ট দিয়ে এখন হাত কামড়াতে ইচ্ছে হয় নিজের। মন্তব্যও এডিটের অপশন নাই। যন্ত্রণাদায়ক, অসহায় !!!
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৩
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: বানান ভুলে ভরা পোস্টে ঠিক বানানে কমেন্ট করা তো ঠিক না, আপু! যা করেছেন ভালই করেছেন। আমার মত বানানের প্রতি বেখেয়াল লেখকের বানানভুল কমেন্টই প্রাপ্য
৩৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫
ভিয়েনাস বলেছেন: এতো চমৎকার করে লিখেছেন পড়ে মনে হলো একজন জাত সায়েন্স ফিকশন লেখকের লেখা পড়ছি। একবসায় এক টানে এক মনে পড়েছি আমি যে কয়টা সায়েন্স ফিকশন পড়েছি তার বেশিরভাগ জাফর ইকবাল স্যারের। পড়ার সময় মনে হয়েছে জাফর স্যারের কোন লেখা পড়ছি। সায়েন্স ফিকশনের হেপি এন্ডিং ভালো লাগেনা।
অনেক অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি সামনে আরো নতুন নতুন ফিকশন পাবো
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৫
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
জাফর স্যার, আমার খুব প্রিয় একজন সাইফাই লেখক। তবে চেষ্টা করি লেখার সময় ওনার ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে। প্রথমদিকে বোধহয় পেরেছিলামও। এখন আর সম্ভব হয়না।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম।
হুম। ইনশাল্লাহ, পাবেন
৩৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: একটানে পুরোটা পড়ে ফেললাম। অফিসে কাজের ফাঁকে। ভীষণ ভালো হয়েছে। আমি সাধারনত ব্লগে লেখা বড় গল্প পড়তে পারিনা, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই লেখা আমাকে ধরে রাখতে পারে না। কিন্তু আপনার এই লেখা তা পেরেছে।
লেখায় প্লাস++++++++
দোয়া ও শুভ কামনা রইল।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৮
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধরে রাখতে পেরেছি বলে নিজকে ধন্য মনে হচ্ছে
আমার গল্প একটু বড় হয়ে যায়। আমি ছোট করে লিখতে পারিনা, মনে খুঁতখুতি থেকে যায় তাহলে!
ভাল থাকুন আপনি
৩৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮
মামুন রশিদ বলেছেন: সাই ফাই লাব স্টোরি
এমনিতে সাই ফাই গুলো মেটালিক হয় । মানে পড়ার সময় একটা যন্ত্র ময় অনুভুতি কাজ করে । কিন্তু আপনার অন্যান্য গল্পের মতই এই গল্পের বর্ণনা এতটাই প্রাঞ্জল হয়েছে, এক নিঃশ্বাসে পড়ে নিতে কোন সমস্যাই হয় নি । আর সাইন্টেফিক-রোবোটিক টার্ম কম থাকায় গল্প বোধগম্য হতেও সমস্যা হয় নি । আর শেষমেষ গল্প সাইফাই থেকে চমৎকারভাবে রোমান্টিক গল্পে টার্ন নিয়েছে ।
রিমন-নোভার ভালবাসা সকল টাইমলাইন ভেদ করে অমরত্বের পানে ছুটে চলুক
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২২
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে জানি কঠিন কঠিন টার্ম ইউজ করলে গল্প পাঠকের জন্য সহজবোধ্য হয়না। তাই ইচ্ছে ছিল টেকনিক্যাল বর্ণনা যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাব। গল্পের মজাও বজায় থাকুন, সায়েন্সও বিদ্যমান থাকুক।
এই গল্প লেখার আগে মাথায় ঘুরছিল "সুদূর ভবিষ্যতে ভালবাসার কি অবস্থা হবে?' এই টাইপের চিন্তা। সেখান থেকেই গল্পের উৎপত্তি।
ভাল থাকুন প্রিয় মামুন ভাই
৩৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৯
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আপনার স্ট্যাটাস পড়ে ধারনা করেছিলাম প্রথম বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে কোন গল্প হবে। হল না, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পড়ে মন হল "ত্রিমাত্রিক অবগাহন"এর পরের পর্ব। তাও হল না। কিছুদূর পড়ার পর কাহিনী ধরতে পেরেছিলাম, কিন্তু ফিনিশিংটা অপ্রত্যাশিত ছিল। ভাল লাগল।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৫
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হুম, ফিনিশিংটাই গল্পের মাঝে আমার সবচেয়ে প্রিয় যায়গা। ত্রিমাত্রিক অবগাহন গল্পটা নিয়ে একটা সিকুয়েল লেখার চিন্তা মাথায় ছিল কিন্তু মনে হচ্ছে গল্পটা যেখানে শেষ করেছি সেখানেই বেস্ট অবস্থায় আছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।
৩৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৭
rudlefuz বলেছেন: শব্দটা কেভলার... কেলভার না... আর এইটা একধরণের ফাইবার... মেটাল না।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৩
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আরে মেটাল না ফাইবার সেটা দিয়া কি করবা?
গল্প কেমন লাগল সেইটা কও!!
৩৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১
নতুন বলেছেন: পরে পড়বো...
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৫
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
পড়ে জানাইয়েন কেমন লাগল
৩৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্রথমেই বলি, প্রিয় নাজিম, শেষের কথাটায় কৃতজ্ঞপাশে বেঁধে রাখলেন আমাকে। ভীষণ সম্মানিত বোধ করছি।
এবার গল্পে আসি। প্রথমাংশ পড়ে মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো মনে পড়ে যাচ্ছিল। তারপরে রিমনের বাস্তবে ফিরে আসা। আবার আত্মহত্যার প্রচেষ্টাগুলো...ফ্ল্যাশব্যাক চমৎকার লেগেছে, সাবলীল। আর গল্প অনেকগুলো থিমের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, এবং মজা পেলাম পড়ে- যা এই কয়েকটা শব্দের মধ্যে করে দেখানো বিশাল ব্যাপার।
গতিশীল লেখা, পাঠককে ধরে রাখার মতন গল্প। মুগ্ধপাঠ।
শুভেচ্ছা রইল।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
শেষ কথাটা হৃদয় নিংড়ে বেরিয়ে আসা সত্য উচ্চারন।
প্রথম অংশটার পর ধড়মড় করে উঠে বসল টাইপের কিছু দিতে চেয়েছিলাম যাতে দুঃস্বপ্ন বোঝা যায়। কিন্তু এই বিষয়টা খুব কমন হয়ে গেছে ইদানীং, তাই একটু ভিন্ন ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা। ফ্ল্যাশব্যাক একটু বেশি কাব্যিক হয়ে গেছে, এক সময় কবিতা লিখতাম তো, চলে আসে
আপনাকে ধন্যবাদ প্রোফেসর। ভাল থাকুন
৪০| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৩
নুসরাতসুলতানা বলেছেন: গল্প ভাল লাগলো, শেষ করেছেন চমৎকারভাবে।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৪
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ নুসরাত। ভাল থাকুন
৪১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪
ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: কাল ছুটির দিনে আরাম কইরা পড়বো!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০২
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
৪২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৯
এইস ম্যাকক্লাউড বলেছেন: ভালো লিখেছেন
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০২
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
৪৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: এত দিনে পড়তে পারলুম। পড়তে ভালোই লেগেছে, যদিও ততটা ভালো লাগার কথা না। কিন্তু মানবিক ব্যাপারগুলো সব সময়ই আলাদা। নুবির বক্তৃতার অংশটুকু ছাড়া বাকিঅংশের মুগ্ধ পাঠক ছিলাম বলতে পারি।
জয়তু!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
নুবির বক্তৃতার অংশটুকু একটু টেকনিকাল হয়ে গেছে। এইটা আমিও জানি। তাছাড়া তো সহজই লাগার কথা!
অনেক অনেক ধন্যবাদ জুলিয়ানদা
৪৪| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০১
অর্ধমানব ও অর্ধযন্র বলেছেন: শুধু ভালো না বরং অনেক বেশিই ভালো হয়েছে।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপনার নিক দেখে অবাক হলাম!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
৪৫| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৩
ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: আপনার লেখনীর মধ্যে চুম্বক একটা ব্যাপার আছে, যেইটা পাঠককে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত! বরাবরের মত মুগ্ধ পাঠ!
তবে নাজিম ভাই গল্প নিয়ে কিছু সমালোচনা উপস্থাপন করতে চাই!
গল্পটা হল ৩৫০০ সালে বিজ্ঞানি ইরিদ টাইম মেশিন আবিস্কার করেন যেটা মানব সভ্যতা ধংসের এক কারণ হয়েছিল। ভবিষ্যতের বুদ্ধিমান এক সত্তা এই এই ঘটে যাওয়া ধ্বংস ঠেকাতে ফিরে যায় অতীতে, ইরিদের টাইম মেশিন আবিস্কার হওয়া ঠেকাতে হবে। এই জন্য তারা ২০০০ সালের এক মানুষকে বেছে নেয় রিমন, যাকে ১৫০০ বছর ধরে অমর করে রাখা হবে। এই জন্য তার জেনেটিক সঙ্কেতে পরিবর্তন করা হয়, অসঙ্খ্যবার তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে অতীতের জগতে হস্তক্ষেপ করতে হয়। টাইম মেশিন ঠেকাতে ভবিষ্যত বুদ্ধিমান সত্তার এই সুবিশাল সময়ব্যাপী প্রস্তুতি, আর একটা স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে রিমন ধ্বংস করে ফেলল, এইটা আমার কিছু একটু কেমন মনে হয়েছে! এইটার থেকে যে অংশটা মেলাতে পারিনি সেটা হল রিমন যে একটা অমর মানুষ, তাকে কেউ কোনো ভাবেই হত্যা করতে পারেনা- এইটা বিজ্ঞান কাউন্সিল জানে, কিন্তু রিমন তো তাদের প্রজেক্ট না। রিমন তাদের কাছেও এক অমীমাংসিত রহস্য,- বিজ্ঞান কাউন্সিলের কাছে রিমনের অবস্থানটা আমার কাছে পরিস্কার হল না। বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রজেক্ট হচ্ছে টাইম মেশিন, সেই টাইম মেশিনের প্রধান বিজ্ঞানীর সাথে তারা তাদের অজানা অমর রহস্য রিমনকে কেন রাখবে? তারা চাইলেও রিমনকে হত্যা করতে পারেনা, এইটা তাদের জন্য এক অজানা হুমকিও বটে,- নাজিম ভাই, আপনি কি আমার পয়েন্টা বুঝতে পারছেন? তারা রিমনকে ব্যবহার করবে, ভয় পাবে, অকল্পনীয় প্রোটোকলের মধ্যে রাখবে, টাইম মেশিন প্রজেক্টের বিজ্ঞানীর ছেলে বানিয়ে রাখবে কি? আর এইগুলোও যদি ভবিষ্যৎ বুদ্ধিমান সত্তার হস্তক্ষেপ হয় তাহলে সেইটা সব মিলিয়ে এক বেশী লাগে না? অতীতের ঘটে যাওয়া ঘটনায় হস্তক্ষেপের নিশ্চয় কিছু সীমা বা সীমাবদ্ধতা আছে?
আমি আপনার গল্পটার মধ্যে যে অনেকখানি ঢুকে গিয়েছি সেটা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন? আপনার দুর্দান্ত লেখনীর গুন স্বীকার করতে হবে!
কত কথা বলে ফেললাম! আপনার গল্প নিয়ে অনেক গল্প হল!
শুভকামনা সুপ্রিয় গল্পকার!
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: সব প্রশ্নের উত্তর ও ব্যাক্ষা আছে।
বিস্তারিত মন্তব্যের জবাব বিস্তারিত দিব একটু পরে
৪৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭
রহস্যময়ী কন্যা বলেছেন: সায়েন্স ফিকশন পড়লাম অনেক দিন পর
ভালো লাহলো অনেক
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
৪৭| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪
মাহমুদ০০৭ বলেছেন: গল্প টা কয়েকবার পড়েছি । আমি বলব এটা আপনার অন্যতম সেরা ,
গল্পের মাঝে একদম ডুবে গিয়েছিলাম নাজিম ভাই ,
খুব ভাল লেগেছে আমার ।
ফার্স্ট পারসনে লিখাতে ভাল হইছে , আমেজ টা খুব ভাল পাওয়া গেছে । শেষ দিকে খারাপ লেগেছে । আচ্ছা নাজিম ভাই , গল্পের নাম টা সুন্দর দেখে আরেকটা নাম রাখলে হয় না ? কেমন জানি লাগছে ।
ভাল থাকুন প্রিয় নাজিম ভাই , অনেক অনেক । তা সিনেমার নায়িকার সাথে বাতচিত কেমন হইল ? ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২০
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সত্যি বলতে কি ফাস্ট পারসনে লিখতে গিয়ে আমি গল্পে অনেক কিছু দেখাতে পারিনাই। তবুও আপনার কাছে ভাল লেগেছে এইটা আমার জন্য অনেক পাওয়া।
ভাল থাকুন মাহমুদ ভাই।
৪৮| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮
আমি ইহতিব বলেছেন: সংকলণ পিডিএফ থেকে পড়লাম আপনার এই লেখাটা। আর কিভাবে আপনার লেখার প্রশংসা করবো বুঝতে পারছিনা। শুধু ভালো লাগা জানিয়ে যাচ্ছি। আর পরের পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
পরের পোস্ট আসতে অনেক অনেক দেরি হবে আপু। আমার আর আজকাল লিখতে ইচ্ছে করেনা একদমই। লেখার ক্ষমতা চলে গেছে! আমার একটা লং ব্রেক দরকার!
৪৯| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২
কাল পুরুষ কোরাস বলেছেন: খুব ভাল হয়েছে। ফিনিশিংটা অসাধারণ ।। গুড থিম।।
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২২
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ তোমাকে নাইম
৫০| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্রিয় নাজিম,
ঈদের আগে আগে একটা গল্প দেবার কথা ছিল, সেটার কি হল? মাসুদ রানার রিবুটের পরবর্তী অংশেরও অপেক্ষায় আছি। কোনটার অগ্রগতি হলে জানাবেন।
ঈদের শুভেচ্ছা।
১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৩
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ঈদের আগে একটা গল্প লিখে ফেলেছি প্রায়। কিন্তু সমস্যা হল ওটা হয়ে গেছে বিষাদের গল্প। ঈদ তো আনন্দের দিন! তাই ভাবছি আজ কালকের মধ্যে একটা রম্য গল্প লিখে ফেলব। আইডিয়া রেডি আছে। ঈদের আগেই পোস্ট দিব ইনশাল্লাহ।
৫১| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:৩৮
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্প কই?
লেখক বলেছেন: ভাই ২য় পর্ব লেখা হয়ে গেসে আরো ৩দিন আগে। কিন্তু যেহেতু এটা একটা যৌথ প্রচেষ্টা তাই বাকি লেখকদের সাথে শিডিউল মেলাতে গিয়ে পরের পর্ব এখনো পোস্ট করা সম্ভব হয়নি।
আপনি নাজিম উদ দৌলা রে গিয়া একটা ঝাড়ি দেন
rudlefuz-এর কাছ থেকে ঝাড়ি দেবার ফরমায়েশ পেয়ে এলাম
১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৭
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
২য় পর্বটা ঈদের আগের দিন পোস্ট দিতে বলছি আমি আসিফরে। আমি তৃতীয় পর্ব লিখতেছি। তৃতীয় পর্ব হাতে না রেখে ২য় পর্ব পোস্ট করা ঠিক হবেনা।
ঝাড়ি কোথায় দিলেন?
আদর করে বললেন দেখি!
৫২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
রোকেয়া ইসলাম বলেছেন: আপনার প্রতিটা গল্পই পড়ি আর ভাবি এত সুন্দর করে লিখেন কি ভাবে। সত্যি অপূর্ব, অসাধারন একটা গল্প লিখেছেন। খুব ভাল লাগলো যদিও বরাবরের মত অনেক বড়। তবু অনেক ভাল লেগেছে।
১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৯
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
গল্প লেখাটা আমার কাছে নেশার মত। যখন খুব ইচ্ছে করে লিখতে তখনই লেখি বাকিটা সময় চুপ মেরে থাকি বসে।
আপনি সামুতে আমার প্রিয় কবিদের একজন।
ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
৫৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্পের শুরুটা খুব সাদামাটা ছিল। এরপর যতোই এগোই, ডানদিকে তাকাই, আহ্, এখনই শেষ হয়ে যাচ্ছে না তো! যতো পড়ি, আকর্ষণ ততই বাড়ে। ফিনিশিংটা হলো অসাধারণ।
শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তির পরাজয় ঘটলো মানবিক অনুভূতির কাছেই। লাস্ট প্যারা, বিশেষ করে রিমনের লাস্ট ডায়ালগ, যা নুবির প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা, আবেগ, এমনকি আরো বেঁচে থাকবার জন্য প্রবল আকুতি প্রকাশ করে- খুব তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।
রিমনের অমরত্ব কীভাবে নষ্ট হলো তা অবশ্য ধরতে পারি নি।
মাঝখানের কিছু স্বপ্নদৃশ্য বা রিমনের ট্রানজিশনাল অবস্থার বর্ণনা পড়ার সময় মনে হচ্ছিল ‘ম্যাট্রিক্স’ সিনেমার কথা। কোনোভাবে কি এ সিনেমা থেকে ইন্সপায়ার্ড হয়েছিলেন?
দুর্দান্ত গল্প। লেখনিও অসাধারণ। এত দীর্ঘ গল্পে পূর্বাপর সামঞ্জস্য বজায় রাখা খুব কঠিন- কিন্তু আপনি খুব নিখুঁত ও পরিকল্পিতভাবেই এ কাজটি করেছেন। বিরাট ‘অভিনন্দন’।
শুভ কামনা।
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপনার বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য ভাল লাগল অনেক।
এটা সম্পূর্ণ মৌলিক কাহিনী। কোন মুভি থেকে ইন্সপায়ারড হইনি।
গল্পটার কাহিনী বিন্যাসে অনেক সময় লাগিয়েছি। সামঞ্জস্য রাখাটা সহজ ছিলনা।
রিমনকে অমর করে রেখেছিল কিছু মহাজাগতিক প্রাণী। তাদের উদ্দেশ্য ছিল রিমনকে দিয়ে ইরিদকে থামিয়ে দেওয়া। ইরিদের মৃত্যুর সাথে সাথে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয় এবং তাদের আর রিমনকে অমর করে রাখার কোন প্রয়োজন ছিলনা। তাই রিমনের অমরত্ত তারা নিয়ে নেয়, ফলে গুলিতে তার মৃত্যু হয়।
পরিশেষে আবার ধন্যবাদ জানাই নিবিষ্ট পাঠককে
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: আপাতত নিয়ে গেলাম ! মন্তব্য পরে জানাবো !!