নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসার এই ব্লগে ইহা আমার ২য় নিক।

আব্দুল্যাহ

ব্লগে ফিরে আসা হবে চিন্তাতেই ছিল না। নতুন ব্লগের জন্য প্রচুর পড়তে হবে।

আব্দুল্যাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ের আগে পিতা হবার আনন্দ!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

শিরোনামটি দেখে হয়তো অনেকেরই খটকা লাগবে, কিন্তু বিষয়টি এমনই।

গত এক বছরের বেশী সময় ধরে একটি ব্লাড গ্রুপের সাথে জড়িত এবং একবছর ধরে গ্রুপটির সমন্যয়কারী হিসাবে কাজ করছি। প্রায় সপ্তাহে ৫বারের বেশী রক্তের জন্য ফোন আসে। রক্তদাতা খুজে দেই, বেশীরভাগ সময়ই রক্তদাতা কুজে পেতে সমস্যা হয়। কারণ আমাদের পরিধিটা অনেক ছোট, শুধু IUBAT ক্যাম্পাস ঘিরে।

আমাদের রক্তদাতাদের প্রায় সবাই এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র। আসুন এবার আপনাকে 'বিয়ের আগে বাবা হবার আনন্দ!' এর বিষয়টি বলি।

১।
গতকাল সকালে একজন ভাই ফোন করে রক্ত চাইল। তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা, সিজার করা হবে বিকালে। কোন সমস্যা নেই তবুও একজন রক্তদাতা রাখা আর কি?
গত কিছুদিন আগে একজন জানিয়েছিল যে তার রক্তদানের সময় হয়েছে, একই গ্রুপ হওয়ায় আমি প্রথমবারেই তাকে 'হ্যা' বলে দিয়েছিলাম। কিন্তু সমস্যা শুরু হলে যখন কিছুতেই কাউকে পাচ্ছিলাম না। আর তিনিও দুইবার ফোন দিয়েছেন, নিজের মাঝে অনেক টেনশন কাজ করছিল। ৪.৩০ এ অপারেশন, ৩.২০ এ তাকে জানালাম সম্ভব নয়। তিনিও মন খারাপ করে রইলেন।
৪টার পর এক বন্ধু জানালো তার এক ভাগিনা, মিরপুরের সেই হাসপাতালের পাশেই আছে, তার রক্তও এবি+। অতপর হাফ ছেড়ে বাচলাম, জানালাম তাকে। নাম্বার দিলাম, সবাই কিছুটা নিশ্চিন্তে।
তারপর কথা হলো রাতে, একজন নব বাবা উচ্ছাসের সাথে আমায় শুখবর জানাতে প্রস্তুত আর আমি তা শুনতে। তিনি কণ্যান সন্তানের বাবা হয়েছেন, মা-মেয়ে সবাই সুস্থ আছে, সবচেয়ে বড় কথা কোন রক্তই লাগেনি।

২।
গত বছরের ঘটনা, আমি তখন সবে সমন্নয়কারী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছি। একজন পিতা তার প্রথম ও একমাত্র মেয়ের জন্য রক্ত খুজছে। মেয়ের হার্টে ফুটো, রক্তের অভাবে অপারেশন করতে পারছে না। একবারে ছোট বাচ্চা, ৪বছর বয়স। রক্তের গ্রুপ এ+। মারো মাধ্যমে নাম্বার পেয়েছে, ফোন করেছে। তিন চারবার ধরে ফোন করছে, আমি একবারে নতুন, আমাদের রক্তদাতাদের ৭জনেরই রক্তদানের তিনমাস পার হয়নি। আমিও নতুন কাউকে ম্যানেজ করতে পারছি না, আর তিনি যথারীতি কান্না শুরু করে দিয়েছেন।
একজন পিতা যখন কান্না করে তখন বিষয়টা কেমন দাড়ায় ভাবতে পারেন। আমি আবার মানুষটি আবেগী, যে ব্যাক্তিটি আমার উপর এমন দায়িত্ব ছেড়ে গেছেন তিনি কেন আমার মতো এমন একজনকে পেয়েছিলেন তা জানিনা। যাইহোক একজন লোকের খোজ পাওয়া গেক, কিন্তু তিনি সকালেই অফিসে চলে যান। তাই আট টার পর রক্ত দেয়া সম্ভব না, তবুও সেই লোকটির নাম্বারটি আমি কান্নরত লোকটিকে দিয়েছিলাম।
এরপর পরদিন সন্ধ্যায়, সারাদিন নিজের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম। হঠাৎ করে সেই লোকটির ফোন, মেয়ের অপারেশন হয়েছে। আমি যেই নাম্বার দিয়েছিলাম, তিনিই রক্ত দইয়েছেন তাও আবার ৮টার পর। কারণ মানবতা, আর তিনিও একজন পিতা। সবমিলিয়ে একজন সন্তানকে বাচাতে মানুষ যে কি করে তা বলে বা লিখে বোঝানোর মতো ক্ষমতা আমার নেই।

৩।
আমরা আসলেই ব্যস্ত শহরে অনেক বেশী ব্যাস্ত থাকি। দিনভর অনেক কাজ তারপর রাস্তায় জ্যাম, তবুও অন্যের দরকারে এগিয়ে আশা উচিৎ। আজ যদি আমরা এগিয়ে না আসি তবে কাল অন্যেরা কেন আমার প্রয়োজনে পাশে থাকবে। তাই সবার কাছে অনুরোধ থাকবে যতোটুকু সামর্থ্য আছে করে যান। কিছু হয়নি, হবে না এমনটা না ভেবে আপনি নিজে করুন আপনাকে দেখে বাকীরা করতে শুরু করবে।

সর্বশেষে, আমার পিতা হবার আনন্দের কারণ, আমিও স্বপ্ন দেখি একদিন কণ্যা সন্তানেক জনক হব। এখন আমি শুধুই একজন সন্তান, কিছুটা হীন। কারণ আমি 'মা' ঢাকি এমন মানবীর সংখ্যা চারজন, আপনার হয়তো খারাপ লাগবে। তবে আমার ভালো লাগে তারা যখন অন্যের সামনে আমায় নিয়ে বলে, ছেলে ডাকে।

যে কোন সময়ে রক্তের প্রয়োজনে ফোন করতে পারেন
০১৫২০১০৩১৭০
রক্তদানে যোগ দিতে পারেন Register From থেকে
সবচেয়ে বড় যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন। আপনি রক্ত না দিতে পারলেও আপনার থেকে অন্যে আগ্রহী হয়ে আমাদের সাথে যোগ দিবে।
গ্রুপ- RAY
পেজ- RAY

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

প্রামানিক বলেছেন: লেখাটা ভাল লাগল। ধন্যবাদ

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩২

আব্দুল্যাহ বলেছেন: কিছুটা সার্থক, ধন্যবাদ

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: ভালো লাগলো।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৯

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার একটি কাজ করে যাচ্ছেন বলে, ভালো লাগল। +।

শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০২

আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ, আশা করব সবাই হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাব।

৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫১

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: দারুণ উদ্যোগ । এগিয়ে চলুক । আপনাদের জন্য রইলো অনেক শুভ কামনা ।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৯

আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০২

বিদ্রোহী সিপাহী বলেছেন: ভালবাসা-ই মানবতা।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৮

আব্দুল্যাহ বলেছেন: জ্বী হুকুম জাহপনা!

৬| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১২

মানবী বলেছেন: আপনি একটি মহান কাজের সাথে জড়িত, আপনাকে ধন্যবাদ।

যদি তালিকাভুক্ত ডোনার এ্যাভেইলেবেল না থাকে, সেক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে রক্ত সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ এবং প্রায় নিশ্চিত উপায় বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজের ক্লাসরুমে চলে যাওয়া। ক্লাস না চললে ভালো, আর ক্লাসের শীক্ষকের অণুমতি নিয়েও গ্রুপ জানালে সহজেই ডোনার পাওয়া যায়। তারপর যথাযথ পরীক্ষা করে নেয়া যায়।

এক সময় প্রচুর রক্ত সংগ্রহ করেছি, তাই আপনাকে টেকনিকটা জানিয়ে রাখতে ইচ্ছে হলো।
হয়তো কাজে আসবে।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৮

আব্দুল্যাহ বলেছেন: ধন্যাবাদ, আপু।
আসলে মানসিকতা আজ অনেক নিচে নেমে গেছে, আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্সকেরা নিজেদের প্রতিষ্ঠাতা ভাবে। তাই চাইলেও আমরা ক্লাসরুমে গিয়ে বলতে পারি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.