নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শূন্যকুম্ভ!

https://www.facebook.com/aa.sharker

আহমেদ আলাউদ্দিন

সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন- [email protected]

আহমেদ আলাউদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমিতাভ চৌধুরীর কবিতা

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৪



"কবিতা যাকে টানে, তাকে কৈশোর বয়সেই টানে। কৈশোরেই মানুষের শিল্পরুচি নির্ধারিত হয়ে যায়। আর যার হয় না, সে সারা জীবনই যে কোনও শিল্পরুচি থেকেই অনেকটা বঞ্চিত থেকে যায়। কৈশোরের যে শিল্পরুচি, তার সঙ্গে শিল্পচর্চারও সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু অনেকের পক্ষেই পুরোপুরি শিল্পচর্চায় নিমজ্জিত হওয়া সম্ভব নয়। জীবন ও জীবিকার টানে সরে যেতে হয় দূরে। কিন্তু কবিতা যাকে একবার ছোঁয়, তার থেকে যায় ভিতরেই। অনেক সময় তার চর্চাও শুরু হয় কিছুটা দেরি করে।



অমিতাভ চৌধুরী পেশায় সার্থক ইঞ্জিনিয়ার। অল্প বয়েসে কবিতাচর্চায় বেশি সময় দিতে পারেন নি। এখন পুরোপুরি কবিতা রচনা, দেশ-বিদেশের কবিতাপাঠ এবং কবিতা অনুবাদেই ব্যাপৃত। তার কবিতায় আছে প্রজ্ঞা ও আবেগের সংমিশ্রণ। বাংলা ভাষায় অমিতাভ চৌধুরী নামে দু'জন খুব সার্থক সাংবাদিক আছেন। তাদের মধ্যে একজন প্রক্ষাত ছড়াকার। ইনি তৃতীয় অমিতাভ। এবং কবিতায় বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন।"
---- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।



আমি প্রথম অমিতাভ পড়ি কোন এক ব্লগে, তাও বছর দুই আগে। সেদিন আজিজে যখন অমিতাভ পেলাম তখন লোভ সামলাতে পারলাম না। নিয়ে এলাম। গত কয়েকদিন অমিতাভে ডুবে আছি।



অমিতাভ চৌধুরী- প্রচলিত কোন কবি নন। ওনাকে পরিচয় করিয়ে দেবার মতো মানে জন্ম, জন্মস্থান, কোথায় থাকেন, কি করেন এসব জানি না। ওনার বইয়ে কবি পরিচিতি বলে কিছু নেই। তাই নেট ঘেটে ওনার সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু গুগল মামাও আমাকে হতাশ করে ছেড়েছে। তাই ওনার সম্পর্কে বইয়ের ভূমিকায় লেখা সুনীলের কথাগুলো হুবুহু তুলে দিলাম।







কৃষ্ণনাম



অন্য স্থানে যাও, একটি আলোক বিন্দুর সন্নিকটে

বাষ্পের নিকটে, পৃথিবীর প্রথম বৃক্ষটি কীটাপূর্ণ

তার কাছে।

আর চিতাভষ্ম থেকে জ্যোৎস্নার সঙ্কেতে জন্মদাগ

ফুলমনির গল্প--- এসবই স্মরণসভায় অর্থহীন উচ্চারণ

অসুস্থ আকাশটি। স্নানঘর, ভ্রমণহীন দুপুর

রতি অব্যয় একত্রে তৈরি করছে বাসস্থান, নির্বাহ;



এইরূপ অবস্থানে আমি জীবনের কথা শিখিলাম

যৌন জিজ্ঞাসা ও পাঠ ও কখনও অশ্রু বিসর্জন,

এইরূপ ব্যবহারে শূন্যতাকে গ্রহণ করিলাম



অন্য খোঁজে যাও, ত্রিভুজ থেকে বহুভূজ জটিলতার ভিতরে

টানা সুতোয় পায়রার মতো ঘুড়ি উড়ছে, অঙ্কের স্যার

ভূগোলের বিভূতি স্যারকে শুনিয়ে শুনিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন

একশো ফুট আরও ওপরে উঠতে কবার ঘুরবে লাটাই

কত ডিগ্রি মাপ মাটির সঙ্গে ঘুড়ির সুতোর টানজেন্ট?

স্যারের ছেলেটি পাগল হতে শুরু করেছে, তাও একবছর :



তাহার চাহনিতে একতি সমীকরণ খুঁজিয়াছিলাম

জিজ্ঞেসগুলি ও সমাধান, এবং আমি এই পুনর্বার

শূন্যতার সম্মুখীন হইলাম



অগত্যা

মধ্যরাত্রির একটি কুকুরের প্রাণপাত চিৎকারের সঙ্গে

ফাল্গুনী পাঠকের ডাণ্ডিগান নবরাত্রি উৎসবে।







লেখানালেখায়



এই টেবিলের কোণে হাত রাখুন

আর খোলা পেনের নিবটি, আপনি বুঝতে পারবেন

স্পর্শগুলির স্পর্শে ব্যথা--- সেই সব স্থান

ও ব্যবহারের উপযোগী সরঞ্জাম আহত ও নিষ্ক্রিয়

এবং তিনি লেখক অথবা কবি;



আয়নার সামনে অন্যমনস্ক দাঁত মাজছে যে লোকটি

মোক্ষম ধান্দাবাজ, চিন্তায় কুঞ্চিত ভুরু

মিথ্যার হিসাব লুকিয়ে রাখার জন্য

আর ছায়ার মধ্যে ঢুকে পড়েছে রোদ

----- রক্তমাংসের একটি মানুষ;



অবশ্য প্রতিমুহূর্তে অনুসন্ধান করে

সময়ের বয়ে যাওয়া--- তাকে চিনে নিতে হবে

অনেকগুলি মুখ, মনে রাখতে হবে ফোন নম্বরগুলি,

এখন মহান স্মৃতির ভেতরে বাসা বেঁধেছে সুখের চিন্তা

টুকরো ট্র্যাজেডি--- বাহাবা পাবার জন্য;



নিজের দিকে তাকাই, এসব যে লিখে রাখিনি

না-লেখার কিছু ছিল না হয়তো, কিন্তু স্বপ্নের দ্বীপ কোনও

বেঁচে ওঠে না একটি শ্রাবণের বৃষ্টিতে কেবল---

আর আমার সন্দেহ হয়, যা বলার নয়

অনেক বেশি বলে ফেলেছি আমি;



আমি তো এখন বাস করছি আমার হাড়ের ভিতরে,

কেমন কঠিন।







বসতবাড়ি



দিগন্ত পর্যন্ত যদি সড়ক থাকত, ধরা যাক

সেইরকমই ছিল আর কলোরেডা নদীর মতো

সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছে জল

অস্তগামী সূর্য পর্যন্ত; সন্ধ্যার নরম হাওয়ায়

অন্যমনষ্ক দেখছি কে যেন পরম স্নেহে

গান শোনাচ্ছে বালিকা শিশিরকে---

আমি শুয়ে থাকতাম উঠোনে।



না, সেরকম কিছু হয়ে ওঠেনি, বাড়ির দালাল

নগদ মূল্য, আর দুঃস্বপ্ন ছাড়া,

আসলে তেমন কিছু বসতবাড়িই ছিল না ওটি।



তাই হয়তো আরও একটা সুযোগের অপেক্ষায় আছি,

সাদা মেঘগুলি জন্মাক আর একবার, আহ্লাদে

মিশে যাক ভোরের কাশফুলের সঙ্গে, আর

শীতের চেনা ফুলিগুলি, টুকরো জ্যোৎস্নার দড়ি ধরে

আকাশ পর্যন্ত উঠে গেছে প্রসন্ন সন্ধ্যা, তখন

ভয়ের স্বপ্নগুলি ঘুমে ঘাসফড়িংয়ের মতো স্থির;

একমুঠো ঘুমইতো এই পৃথিবী, খোলা চোখ

ভারী হয়ে বন্ধ হয়ে যায়, হারিয়ে যায়

ভিটে বাড়ির দুঃখ, শেষ হয় সব---



একটি গভীর ঘুমের জন্মহীন গৃহে

প্রবেশ করতে পারতাম যদি, আমার বোধ

আমার আকাঙ্ক্ষা আর দুঃস্বপ্নগুলিকে নিয়ে

আর আমি কথা বলতাম তাদের সঙ্গে,



কাঠবিড়ালিরা অবশ্য তাদের শীতের স্বপ্নকে

হারিয়ে ফেলেছে বৃক্ষ কোটরে।







একটা প্রেমের কবিতা



জলের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে একটি হৃদয়

আর আমি চেষ্টা করছি তাকে তুলে আনতে

ভাগ্যিস জেলেরা মাছ ধরছিলো দরিয়ায়



বিকেল তখন, রাতের আকাশে ফুটবে বলে

তৈরি হচ্ছে দু-একটি ফুল

আর আবিষ্কৃত হওয়ার বাসনায়

মনের আনাচেকানাচে উঁকি মারছে

কিছু নতুন শব্দ---

যদি সত্যিই হয়ে ওঠে প্রেমের কবিতা



জলের মধ্যে ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে একটি হৃদয়,



তুমি জিজ্ঞেস করো

জানবে মানুষহীন সে এক দ্বীপ

প্রশ্নচিহ্নের মতো তার আকাশে ঝুলে আছে

একটি কবিতা-- হয়তো-বা কথার-কথা



সময় তো নয় উড়ন্ত পাখির পাখনার সীমাহীন সময়

আর একাকীত্ব, সময়ঘড়ি ফিরিয়ে দিয়েছে

তট-বয়ে-ভেসে-আসা বালির ধূলোয়---



ভালবাসা, ক্রমশ-পাল্টে যাওয়া একটি শব্দ

আকাশের সূর্যকিরণভরা মেঘের ছিদ্রে

যেমন কেবলই পাল্টে যায় শেষ বিকেল

আর তার রং



লুসিফার, তোমার প্রলোভনে

একটি কিশোরী করেছে সমর্পণ

তার দুটি হাত, মসৃণ ঊরু, শরীরের মাংস-হাড়

গ্রীষ্মের ঝলসে-যাওয়া রাত্রির মতো চোখ

লুসিফার, সাবধান হও।



জলের ভিতর ধীরে ডুবছে হৃদয়

দেখতে পাচ্ছি

দূর থেকে এগিয়ে আসছে ভাবনা

বহু দূর থেকে, আমার পাশ থেকে উঠে

ব্রক্ষ্মাণ্ড চলে গেছে যেখানে, সেখান থেকে

অতি উজ্জ্বল নীল চোখের দ্যুতি আর ভারী পা

এতো ভারী

পৃথিবীকে পেতে চাইছে স্মৃতি আর অনুভবে



জলে ডুবে যাচ্ছে হৃদয়, আমি ছুঁতে চাইছি তাকে

আর হাহাকারে সর্বস্বান্ত একটি কবিতা

আপ্রাণ চেষ্টা করছে বেঁচে উঠবে বলে



সময়ঘড়ি ভুলে গেছে জানাবে সময়।





চরণভুমি



কেননা বহু শতাব্দীর সৌন্দর্য -কল্পনায়

পিতামহ, মাতামহ এবং আমাদের পূর্বপুরুষের স্মৃতির ভিতর

অতীতের আকাঙ্ক্ষা ভবিষ্যতের কোনও- এক প্রেরণার সাক্ষী হয়ে



কেননা নিসর্গ সব কল্পনার শুরু, এবং অবশ্যই থিয়েক্রিটাস,

দুপুরের চরণভূমি কেমন রঙ্গিন হয়ে ওঠে তার বর্ণনায়

আর রাখালের গান, তখন প্রক্ষিপ্ত আচরণে ভুলে থাকা

নিত্যদিনের ভাবনা



আর ঝুলে- থাকা বর্তমানের এই সময়, আমারই ভূমির ওপর

আমি আবিষ্কার করে নিচ্ছি অর্থনীতির নতুন সূত্র, হে পাঠক,

আপনার পুরনো মদের দাম মেটাতে আমার নতুন গান

প্রাচীন ধারাবাহিকতায় আমাকে নিয়ে এসেছে এইখানে,

এই সময়ে-- কল্পনার পরিসরে আপয়ান্র চেনা প্রকৃতির দৃশ্য

হিসেবের বিনিময়ে, ভারজিল যেমন যোদ্ধাদের ফিরিয়ে এনেছেন

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে; দেখুন কেমন করে হেঁটে বেড়াচ্ছেন তাঁরা



প্যাস্টোরাল ল্যান্ডস্কেপ-- নিশ্চিত বিশ্রামের ভূমি।



আমাদের প্রয়োজনে আমরা খুঁজে নেব শহর-কিনারে

পরিত্যাক্ত ভূমি মফস্বলের বিশৃংখল গলি-শেষে

এবং সীমান্ত-বিভাজনে কবরস্থান, তার প্রহরী, কেউ চেনে না;

খোলা উনুনের ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে দূর-অদূরের আকাশ

ছায়া হয়ে নেমে আসছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নোংরা ছাদে



আর সত্যি যা হয়েছিলো কাল ভোরে, ঘুম থেকে উঠে দেখি

রাখাল মাঠে চরাচ্ছিল যে মেষপাল, তারা গিলে নিচ্ছে মানুষদের--

হয়তো কথার কথা, কিন্তু এই দৃশ্যে ভরে গেছে পৃথিবীর দিগন্ত

ধুলো উঠে আসছে 'সুন্দর' হয়ে---



হয়তো জীবনান্দ সেই মহাশ্মশন যা গড়ে তোলা হয়েছে

ভাষাশ্রীয় কবিদের বিচরণের জন্য, জাগ্রত করে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়--

হয়তো ছায়ার মুক্তি, ভুতুরে স্বাধীনতা, তার অনুকরণে

দুধওয়ালি প্রবৃত্তিতে কতিপয় কবির এফ এম রেডিয়োতে কথাকলি



আরও- একটা ল্যাণ্ডস্কেপ, সিল্কস্ক্রিনে ছাপানো প্যাস্টোরাল।



পৃথিবীর স্পর্শে একটা বস্তু হয়ে ওঠে চিরকালীন স্থান

তুমি স্বীকার করবে তাকে, অনন্তকালের রক্ষাকবচ সেই স্থান?

আমি এগিয়ে দেব একটি বাহু, এবং ক্রমশ প্রসারিত হয়ে

প্রতিদিন পাল্টে যাবে--- পৃথিবী আমাদের দেখার শেষ দিনটি পর্যন্ত

হয়তো সে-রকম কিছু নয় যেমন দেখছি, বিশিষ্ট একটি মুখ

দিগন্তের দিকে চেয়ে আছে শহরের চোখ, অতি ক্রুর



অন্তত নিসর্গ। চরণভূমি আরও একবার।



কে্উ একজন তন্ময় চেয়ে দেখছে রেমব্রান্টের আত্ম-প্রতিকৃতি

জ্বলজ্বল চোখের তীক্ষ্ণ চাহনি, কঠিন চোখের পাতা

আর লোকটি বলছে এই ছবির রঙ্গে সাজাব ঘরের দেওয়াল;

এ-ও কল্পনা, স্মৃতিকে উষ্কে দেওয়ার জন্য

শিল্পের চোখে তৈরি হয়ে ওঠে ভাষা, তার খুঁটিনাটি

বানের জলের মতো থেকে যায় সীমা আর সীমাহীনের মধ্যখানে

বেড়ে ওঠে একটি স্থান থেকে অন্য- একটি পৃথিবীতে

ঘড়ির ঘন্টা কাঁটা

নাগরিক আকাংখায় দর্শক হয়ে বসে থাকে স্টেডিয়ামে



অন্যতর প্রকৃতি।



গ্যারেজের বন্ধ দরজার সামনে সিঁড়িতে বসে মেকানিক---

সম্মুখে মাঠের অন্ধকার কালো হয়ে নোংরার ওপরে

যা কিছু চলে চাকার ওপর, তাকে চালু রাখার মিস্ত্রি সে

কোনও তাড়া নেই এখন, হাতে সস্তা দিশি মদ

মেরামতির কাজ পড়ে আছে, অপেক্ষমান সংগীত হয়ে

শহরের সমস্ত দিনের আপসোসের গান।

রাত্রিতে গুটিয়ে- নেওয়া বাজার পড়ে আছে পরিত্যাক্ত বাঁধাকপি

প্রত্যন্ত সময় ভেঙ্গে বিশৃংখল, ভাবছে

অজানা গানের সুর হয়ে ঢুকে পড়বে চিন্তার ভিতরে



পাঠক, আপনি কি মেনে নেবেন এই সব

মেরু-নক্ষত্রের জন্য পৃথিবীর প্রান্তরের পরিকল্পনার আয়োজন

কিংবা জ্যোৎস্নাহীন আকাশ, একটির-পর-একটি নিসর্গ দৃশ্য?

আসলে আজকাল ঋতু সব পাল্টে যায় নাটকীয়ভাবে

আর তাই সন্দিহান হয়ে উঠছেন আপনি, এই সব বিচরণ ভূমি

সত্য বলা যায় কিছু?

তবু কল্পনাময় নির্বাহ, আমাদের অনুপস্থিতি উদ্‌ঘাটন-স্পৃহা।







শহর রহস্য



যে তুমি বারবার ভেজা চটিজোড়া পায়ে

হেঁটে যেতে পারনি চেনা রাস্তার অচেনা রহস্যে

আমিও ভেবেছি কখনও কখনও দুর্গম স্থানগুলি

সম্মোহনে নিশ্চুপ, অভিযান শেষে রক্তিম লগ্ন

তামাসা করে অনাদৃত স্বপ্নের ভিতরে __

প্রাচীন দেওয়ালে বিবর্ণ পোস্টার, কাঁটা মুন্ডু

অদ্ভূত অঙ্গুলি সংকেত,

মনে হয় সারাদিন বছর ভাঙা ফুটপাথ

রাস্তার যকৃতের বন্ধ প্রণালী সব চিনে নিয়ে

সেই নায়িকাও নির্বাসনে গিয়েছিল দুর্গমে

রহস্যহীন;



এখন তোমার সহবাস অন্ধ আনুগত্যে,

শহর পড়ে আছে ওই দিকে, পিঠ বেঁকিয়ে।





তোমার জন্য প্রদীপ



ধরো,

দক্ষিণের আগুন দেখতে পাওনি তুমি

আর ত্রিশূলের মতো একটি বৃক্ষের নীচ দিয়ে

হেঁটে গেছো নিশ্চিন্তে নদীর কাছে--

কাঁচের বয়ামের বৌ-মাছ

সেই রাতে গোপন কথা শুনিয়েছিলো তোমাকে;



ধরো,

বৃষ্টি আসবে জেনেও পত্রহীন বৃক্ষশাখা

তোমাকে জানাতে ভুলে গেছে সেই কথা

আর কাঁচা আমের আচার ছাদে শুকোতে দিয়ে

কখন তুমি শরীর এলিয়ে দিয়েছিলে বিছানায়--

আয়নার অগোছালো ছায়া

সারা দুপুর চেয়েছিলো তোমার দিকে;



ধরো,

নৈঃশব্দের সঙ্গে মিথুন করবে বলে

আষাঢ়সন্ধ্যায় তুমি মাথায় পড়েছিলে চূর্ণিফুল

আর উত্তরের মর্মমূল থেকে উড়ে এসে

বাতাস চুমু খেয়েছিলো তোমার চুলের সীমান্তে--

মধ্যরাতের বদরিকা পাখি

ঘুম ভেঙ্গে তখন তোমাকে ডেকেছিলো নাম ধরে;



আর সেই চরের বুকে সারামাস ধান বুনেছিলো

তারা। বর্ষার জল ভেসে গেছে অকস্মাৎ

তোমার চোখের কাজলের মতো মোহিনী ফসল;

সেই লবণের জলে মিশে ছিলো ঘূর্ণির বালি,

বিব্রত করেছিল সারা রাত জেগে থাকা

আর্দ্রহীন অভিমানী তোমার চোখ--

কি প্রবল স্রোতের টানে

ভেসে গেছো তুমি একটি দীর্ঘশ্বাসের কাছে,

দুকুল ভাসা নদীর জলে ভেসে গেছে সন্ধ্যার মেঘ,

আর চরের বাতাসে উড়ছে তোমার চুল।



ধরো,

দিগন্তের অন্ধকারে তোমাকে দেখেই না হোক

কারা জ্বালিয়েছে প্রদীপ তাদের ঘরের দাওয়ায়--

রক্তপ্রপাত শহরের শ্রাবণ

আজও কেমন জেগে থাকে রাতে, তোমাকে দেখবে বলে।













এই সংকলন পোষ্ট নিয়মিত আপডেট করার ইচ্ছে আছে। অবশ্য সময়ই বলে দেবে কতোটুকু কী করতে পেরেছি।















প্রেমিকার খোঁজে ;)

মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৬

এহসান সাবির বলেছেন: উনার নাম শুনেছিলাম... আপডেট করবেন। সাথে আছি।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৯

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ইচ্ছে আছে। দেখা যাক।

শুভ রাত্রি।

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৯

মামুন রশিদ বলেছেন: কবি অমিতাভ চৌধুরী সম্পর্কে জেনে ভালো লাগল ।


চমৎকার পোস্টে ভালোলাগা ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩০

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
কিছুই আসলে জানাতে পারলাম না। কবি অমিতাভ চৌধুরীকে নেটে খুঁজতে গেলে ছড়াকার অমিতাভ চৌধুরী চলে আসে। :|


থ্যাঙ্কস মামুন ভাই।
শুভ রাত্রি।

৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৮

সায়েম মুন বলেছেন: এবং আপনার কল্যাণে কবিতার ইঞ্জিনিয়ারকে চিনলাম। দুর্দান্ত সব কবিতা। ফেসবুকেও কয়েকটা পড়েছি। পোস্টটা প্রিয়তে নিবো। বাটন খালি ঘুরতিয়াছে। আশা করি পরে এক সময় নিতে পারবো।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৪৭

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আচ্ছা, পরে এসে নিয়ে যাইয়েন। :D

শুভ রাত্রি।

৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫৫

শামীম সুজায়েত বলেছেন: পেয়ে গেলাম একগুচ্ছ কবিতা।
রেখে দিলাম প্রিয়তে।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৪৯

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ঈদ এবং শারদীয় শুভেচ্ছা :)

শুভ রাত্রি।

৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আমি অমিতাভ চৌধুরীর নাম এই প্রথম শুনলাম। ওনার একটা সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত পোস্টে জুড়ে দিলে ভাল করতেন।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫২

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
অমিতাভ চৌধুরী- প্রচলিত কোন কবি নন। ওনাকে পরিচয় করিয়ে দেবার মতো মানে জন্ম, জন্মস্থান, কোথায় থাকেন, কি করেন এসব জানি না। ওনার বইয়ে কবি পরিচিতি বলে কিছু নেই। তাই নেট ঘেটে ওনার সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করলাম, কিন্তু গুগল মামাও আমাকে হতাশ করে ছেড়েছে। তাই ওনার সম্পর্কে বইয়ের ভূমিকায় লেখা সুনীলের কথাগুলো হুবুহু তুলে দিলাম।

শুভ রাত।

৬| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৩৫

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: চমৎকার পোস্ট আলাউদ্দিন ভাই! উনার লিখা আসলেই মুগ্ধ হবার মত! আবার আসবো পোস্ট এ!

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আচ্ছা, আইসো।

শুভ রাত।

৭| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২৩

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
অদ্ভূত সুন্দর সব কবিতা।
অমিতাভ চৌধুরী আগে তেমন পড়িনি, নাইস শেয়ার।
এরকম শেয়ার চলুক।।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫৫

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ট্রান্সট্রোমার নিয়ে পরের পোষ্ট দিবো। যদি ঘুমকে কন্ট্রোলকে পারি :D

৮| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:২৬

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
অদ্ভূত সুন্দর সব কবিতা।
অমিতাভ চৌধুরী আগে তেমন পড়িনি, নাইস শেয়ার।
এরকম শেয়ার চলুক।।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫৫

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
শুভ রাত।

৯| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:৪০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


কোন কথা নেই সোজা প্রিয়তে

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৫৬

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
যাক পরিশ্রম বৃথা গেলো না!

শুভ রাত।

১০| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: একটি প্রেমের কবিতা এবং শহর রহস্য --- এই দুইটা বেশি ভালো লাগলো

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
অমিতাভ চৌধুরীকে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই পোষ্ট দেয়া। যাক, হুম হাম এর বদলে এক দুই লাইন লিখতেও পারেন দেখে ভালো লাগছে! :#) :#)

শুভ দুপুর।

১১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭

বশর সিদ্দিকী বলেছেন: নাম শুনেছি কিন্তু এই প্রথম কবিতা পরলাম। ধন্যবাদ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।

১২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮

ইকরাম উল হক বলেছেন: ধন্যবাদ।
অমিতাভ চৌধুরীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।

১৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ কবিতাগুলো আমার বিশেষভাবে বেশি ভালো লাগলো। কারণ খুঁজতে গিয়ে যেটা মনে হলো- আমি সুনীলের কবিতা বেশি ভালোবাসি, আর অমিতাভ চৌধুরীর কবিতায়ও একই স্বাদ বিদ্যমান (আমার মনে হয়েছে)।

সবগুলো কবিতাই মনে দাগ কাটলো।

‘প্রেমিকার খোঁজে’ গিয়ে তো পুরাই ধরা ;) পরে মনে পড়লো ‘প্রিয় প্রেমিকার খোঁজে’র কথা ;)

ধন্যবাদ আলাউদ্দিন ভাই মূল্যবান সংকলনের জন্য।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
অমিতাভ চৌধুরীর লেখা যে খুব বেশি পড়ছি ব্যাপারটা এমন না। কিন্তু ওনার লেখা অপ্রচলিত তাই এই ধরনের সংকলনের পোষ্টে যাওয়া। ওনাকে পরিচিত করানো আর কী।

সুনীল আমার অন্যতম প্রিয় কবি। তবে অমিতাভ চৌধুরীর লেখা পড়তে গিয়ে যেটা হয়ছে মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছি, এর কারনটা অবশ্য আমি ধরতে পারি নাই।

প্রেমিকার খোঁজে নামটা আপনার দেয়া :D আর আমি সুযোগ পেলেই দূর্জয়কে তার তার প্রেমিকাদের খবর জিজ্ঞেস করি ;)

অনেক ধন্যবাদ সোনাভাই।
ঈদের আগাম শুভেচ্ছা :)

১৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: ইনার কবিতা পড়া হয় নাই। একদিন সময় করে বসবো।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আচ্ছা।

শুভ রাত!

১৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২০

আহসান জামান বলেছেন:
প্রিয়তে!

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ঈদের শুভেচ্ছা কবি।

শুভ দুপুর।

১৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন:
অমিতাভ চৌধুরীকে জেনে ভালো লাগলো।

ঈদের শুভেচ্ছা আলাউদ্দিন ভাই।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।

ব্লগে স্বাগতম।

১৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৫:২৩

অনাহূত বলেছেন: প্রিয়তে নিয়া রাখলাম। একটা করে পিডিএফ বানাবেন প্রতি সংকলন পোস্টে। তাইলেই না চমক আসবে। কষ্ট যখন করবেন, ভালো করেই করেন। :)

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৪৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:

হা হা হা!

ঈদ মোবারক। :)

১৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৫১

আরজু পনি বলেছেন:

বাহ দারুণ তো ...জানতামই না কতো রত্ন আছে অজানায়, আড়ালে ।
প্রিয়তে রাখলাম আপডেট পাবার আশায় ।।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
প্রিয় পোষ্টে যায় নাই, আরেকবার চেষ্টা করন! /:)

২৫ তারিখের পর নতুন কবিতা এডামু, এর আগে সময় নাই।

থ্যাঙ্কস পনি'পা। :)

১৯| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৩

আরজু পনি বলেছেন:

হাহা
যখন ঠিক করি প্রিয়তে নিমু, তখন প্রিয়তেই রাখি /:)

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৯

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
গতরাতে একটা কবিতা পড়ছি, এটা পড়ার পর থেকে মাথা হ্যাং হয়ে আছে। আপনার জন্য---

কালো পোস্টকার্ড -- টমাস ট্রান্সট্রোমার

জীবনের মাঝখানে মৃত্যু আসে
তোমার ( শরীরের ) মাপ নিয়ে যায়। এই সফরের
কথা বিস্মৃত হয়, জীবন চলতে থাকে। কিন্তু
গোপনে স্যুটের সেলাই যে চলছেই।


আমি যে কবে এমন লিখতে পারবো :(

থ্যাঙ্ক্যু পনি'পা দ্বিতীয় চেষ্টায় প্রিয়তে নেওয়ার জন্য :-B

২০| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১২

অদৃশ্য বলেছেন:





দারুন... তিনটি লিখা পড়া হলো... পরেরগুলো পরে এসে পড়ে যাব...

সম্ভবত ওনার লিখা এর আগে পড়া হয়ে ওঠেনি... আপনার মাধ্যমেই শুরু...


শুভকামনা...

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
এই পোষ্টে আরো কবিতা এড করার ইচ্ছে আছে। কিন্তু ব্যস্ততা আর টাইপ করার অলসতার কারনে হয়ে উঠছে না।

থ্যাঙ্কস কবি।

শুভ সন্ধ্যা।

২১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০২

সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন:
খুব ভালো লাগলো।
প্রিয়তে নিলাম............কত ভালো কিছু পড়া হয়না।
বই পাইনা চাইলেই।
তবুও অনলাইন থাকাতে বেঁচে গেছি..........নাহলে এই দুর পরবাসে থাকা অনেক কঠিন হতো।

শুভকামনা রইলো।
অনেক ভালো থেকো।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১০

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আপু।
এখন থেকে প্রতি মাসে একটা করে সংকলন দেয়ার ইচ্ছে আছে।

দেখা যাক পারি কিনা।

শুভ সন্ধ্যা।

২২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪

বন্ধু তুহিন প্রাঙ্গনেমোর বলেছেন: প্রথমটা পড়লাম ...... পরের গুলো পড়ব.. ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য///

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২২

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ।

শুভ সকাল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.