নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষের প্রকৃত অর্থে যাহা গুণ থাকা দরকার সেরুপ গুন নিজের মধ্যে না থাকলেও চেষ্টায় আছি প্রকৃত মানুষ হয়ে বাঁচার।

এন.এ.আনসারী

একজন মানুষ হিসাবে আমিও সত্যক ভালবাসি। তাই আমারো চেষ্টা থাকে সত্য প্রকাশ করার আপ্রাণ চেষ্টা। অন্যের মত সহনশীলতার সাথে শুনা এটাই মনুষ্যত্য

এন.এ.আনসারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাড়া দিয়ে গেল সন্তানহারা মায়েদের আহাজারী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি দেশের অভিভাবক, আপনাকে কখন নাড়া দিবে??

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২২


‘তাদের অপেক্ষায় কাঁদতে কাঁদতে আমাদের চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। কেউ কি আমাদের কান্না শুনবে না? আমরা আর কাঁদতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী, আপনি চাইলেই আমাদের স্বজনদের উদ্ধার সম্ভব।’
সাজ সকালে ঘুম থেকে উঠিয়া খবরের কাগজে চোখ বুলাতে নজর কাড়িলো সন্তান হারানো কিছু মায়ের আহাজারীর বুকফাটা কান্নার ছবি। এদের মধ্যে ছিল কিছু অবুঝ সন্তানের বিবৃতি যেখানে হাতজোড় করে বলছে সেই অবুঝ বাচ্চারা “আমার বাবা কে ফিরিয়ে দিন, কতদিন বাবা কে দেখিনি, এদিকে মায়ের কান্না যে আর থামে না।
আসলে এক মায়ের কাছে সন্তানের প্রতি যে ভালবাসা যার মুল্য কেউ দিতে পারে না, সেসব মায়ের অবস্থা যে এখন কেমন তা একটু হলেও অনুমান করুন সবাই। দেখবেন আপনার চোখেও জ্বল আসতে বাধ্য।
গতকাল কান্নাভরা চোখে এক ভায়ের বোন রেহেনা বানু মুন্নী বলেন ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পল্লবীর বি-ব্লকের ৯ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় মুন্নীর ভাই সূত্রাপুর থানা ছাত্রদল সভাপতি সেলিম রেজা পিন্টুকে। নিখোঁজ ভাইকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে চোখের পানি ফেলেছেন এই বোন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনিও একজন মা, তাহলে মায়ের আর্তনাদ আপনাকে নাড়া দেয় না? পরিবার হারানোর বেদনা যে কতটা বেদনাদায়ক তা আপনার চেয়েও হয়তো কেউ বেশি জানে না, আমরা দেখেছি ১৯৭৪ সালে কিভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সহ পুরো পরিবারকে কিভাবে নিমর্মভাবে হত্যা করে আপনাকে পরিবারহারা করেছিল সেই খুনিরা। আমি জানি আপনি একজন মা হিসাবে সন্তানহরার কষ্ট, একজন সন্তান হিসাবে মাতা-পিতা হারানোর কষ্ট খুব ভাল করেই জানেন তাহলে আজ এইসব হতভাগা মায়ের বুকফাটা কান্না, পিতৃহারা সেইসব সন্তানহারাদে “বাবা” বলে কান্না কেন আপনাকে নাড়া দিচ্ছে না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
এভাবে জানা গেল ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে গুম হওয়া ১৯ জনের স্বজনরা একইভাবে আকুতি প্রকাশ করেছেন। নিখোজ ১৯ জনের চেয়েও যে এই নিখোজের সংখ্যা শতাধিক তা আজ স্পষ্ট। এখানে আমি তাদের রাজনৈতিক পরিচয় তুরল ধরছি না আমি বলতে চাচ্ছি একটি দেশের বাসিন্দার কথা, আমি বলছি একটি সন্তানহারা মায়ের কথা, একটি ভাই হারা বোন কিংবা পিতৃহারা সন্তানদের কথা যার সকলেরই অভিভাবক কিন্তু রাষ্ট্র আমাদের সরকার কিন্তু প্রশ্ন কেন তাদের প্রতি এমন আচরন কেন তাদের সন্ধান দিচ্ছে না রাষ্ট্র? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দয়া করে এতটা নির্দয় হয়েন না। আপনি দেশের অভিভাবক, আর আমাদের অভিভাবক যদি নির্দয় হয় তাহলে এই মায়েরা,এই সন্তানেরা কোথায় যাবে?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানি না গতকালের সংবাদ সম্মেলন আপনি স্বচক্ষে দেখেছেন কি না কিন্তু দেশের মানুষ গতকাল স্বচক্ষে দেখেছে নিখোজ পারভেজ হোসেনের ছয় বছরের মেয়ে হূদি হোসেনের কান্নায় ভরা সেই আর্তনাদ “আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিন” ‘বাবার সাথে স্কুলে যাব। বাবা আইসক্রিম কিনে দিবে। মামনি কিনে দেয় না। মামনির টাকা নাই। বাবার সাথে শিশু পার্কে যাব। প্লিজ, আমার বাবাকে এনে দাও’—এমন সব কথা বলতে বলতে হূদি অঝোর ধারায় কান্না করে যাচ্ছিলো তা দেখে আবেগঘন পরিবেশ নেমে আসে চারদিকে।
জেএসসি পরীক্ষার্থী রাজু কান্না করে বলছে, ২ ডিসেম্বর ছিল তার জন্মদিন। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর তার জন্মদিনে বাবা বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ফুল আনার জন্য। জন্মদিনের কেকও আনা হয়েছিল। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও বাবা আর ফিরে আসেনি। এরপর থেকে তার আর জন্মদিন পালন করা হয় না। নিজের জন্মদিনে যেন বাবার মৃত্যু দিন না হয়, সে জন্য ছেলেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে আকুতি জানিয়ে বলেছে, ‘একবারের জন্য হলেও আপনি আমার বাবাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিন।’ আমরা দেশের মানুষ বলছি প্লিজ প্রধানমন্ত্রী একটু হলেও সদয় হউন এসব সন্তানদের উপর কারন আপনি দেশের মানুষের অভিভাবক
একটি দেশ থাকলে রাজনীতি হয়, রাজনৈতিক বিভিন্ন দল থাকে বলেইতো দেশে গণতন্ত্র থাকে কিন্তু রাজনৈতিক মারপেচের কারনে কি এসব মায়ের সন্তানদের, এসব শিশুর বাবাদের খোজা হবে না..! এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
এসব মায়ের, এসব সন্তানদের একমাত্র ভরসা এখন কিন্তু আপনি। কারন আমরা দেখলাম এসব মায়ের সন্তানদের খোজ করার জন্য, অবুঝ এসব বাচ্চাদের বাবাদের সন্ধান দেওয়ার জন্য তেমন সুষিল সমাজের আওয়াজ উঠে না, কোনদিন দেখি নি গনজাগরণমঞ্চে এদের জন্য একটি ১৮ জনেরও মানববন্ধন করেছে, কোন মঞ্চকর্মীও এসব মায়ের চোখের জ্বলের দাম দিচ্ছে না অথচ আজ তারাই নাকি সাচ্চা পাক্কা দেশপ্রেমিক। আমরা দেখি নি শাহরিয়ার কবিরকে কিংবা, গাফ্ফার স্যার, জাফর স্যারকে এসব মায়ের পক্ষে একটি ২ লাইনের বিবৃতি দেওয়র জন্য। কিন্তু আজ তারাই নাকি দেশপ্রেমিক। ইমরান এইচ সরকার থেকে শুরু করে আজ যারাই দ্বিমুখী নীতি অবলম্বন করে দেশে হিংসার পুর্নজনম দিচ্ছেন এটা কিন্তু ঠিক না। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব মায়ের আর্তনাদ এবং এদের সন্তানদের সন্ধান দিতে একমাত্র আপনিই ভরসা, বাকিসবতো দেখছি একচোখা প্রাণী হয়ে গেছে।
সন্তানহারা বাবা শামসুদ্দিন জানান, ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর রাতে দক্ষিণখানের ১২৫, মোল্লারটেকের বাড়ির সামনে থেকে ডিবি পুলিশ মাইক্রোবাসে করে তাঁর ছেলে নিজাম উদ্দিন মুন্না ও বন্ধু তরিকুল ইসলাম ঝন্টুকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। ‘র্যা ব, পুলিশ, ডিবি—সবার কাছে গিয়েছি। কেউ কিছু জানাতে পারেনি। এখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আমার ছেলেকে যারা যে মাটিতে পুঁতে রেখেছে, সেটি বলে দিক...’ বাবা সামসুদ্দিন আর বলতে পারলেন না।... ভাবুন একটু তাদের মনের অবস্থা কেমন? উফফফ প্লিজ প্রধানমন্ত্রী একটু দোয়া করুন।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আসাদুজ্জামান রানার বোন মিনারা বেগম বলেন, তাঁদের বাড়ি রংপুরে। তাঁরা ৫ ভাই-বোন। রানা ঢাকার উত্তর মুগদায় তাঁর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। মিনারা বলেন, ‘আমার ভাই ছাত্রদল করত—এটাই অপরাধ? প্রধানমন্ত্রী চাইলে ভাই ফিরে আসতে পারে। আমাদের বিশ্বাস সে ফিরে আসবে’—কেঁদে বলেন মিনারা বেগম।
সবুজবাগের মাহবুব হাসান সুজনের ছোট ভাই শাকিল বলেন, ‘সুজনের দুই সন্তান রয়েছে। তারা এখন বাবার অপেক্ষা করছে। বাবা কোথায় আছে—এ প্রশ্ন করলে আমরা কোনো উত্তর দিতে পারি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই বলে দেন, সুজন এখন কোথায় আছে।’
২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া বাংলাবাজার এলাকার ছাত্রদল নেতা খালিদ হাসান সোহেল ও সম্রাট মোল্লাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। খালিদের স্ত্রী সৈয়দা শাম্মী সুলতানা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘খালিদের একটি ছেলে রয়েছে। প্রতিদিন বাবার কথা জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু কিছুই বলতে পারি না। আমরা আর কত দিন এভাবে থাকব? প্রধানমন্ত্রী একজন মমতাময়ী মা। তিনি যদি একটু দৃষ্টি দেন তাহলে খালিদের ছেলে তার বাবাকে ফিরে পাবে।’
পল্লবী থেকে গুম হওয়া সেলিম রেজা পিন্টুর বোন রেহেনা বানু মুন্নী বলেন, তাঁর ভাইকে উদ্ধারের দাবি জানিয়ে তিনি চলতি বছরের ২৬ জুলাই সিএমএম কোর্টে একটি মামলা করেন। আদালত পল্লবী থানাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেন এই ১৯ জনকে নিজের সন্তান মনে করে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেন। তিনি নির্দেশ দিলেই এই ১৯ জনের ফিরে আসা সম্ভব।’
গতকাল যখন এসব বিবৃতি তারা দিচ্ছিলো তখন সেইসব মায়ের, বোনের এবং সন্তানহারা সেইসব অবুঝ সন্তানদের কা্ন্না সবাইকে নাড়া দিয়েছে কিন্তু কেন যেন এই কান্না প্রধান অভিভাবক রাষ্ট্রকে নাড়া দিতে পারতেছে না তাদের অপরাধ হয়তো তারা রাজনীতি করতো। কিন্তু একটি রাষ্ট্র এবং সেই রাষ্ট্রের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু এই অপরাধের কারনে একজন মাকে সন্তান থেকে একজন সন্তানকে তার বাবা থেকে দুরে রাখবেন?
লজ্জিত হয়ে বলতে হচ্ছে আজব দেশে জন্ম নিলাম আমরা। প্লিজ প্রধানমন্ত্রী কালকের সংবাদ সম্মেলনের সেই ভিডিও অথবা খবরের কাগজ দেখে সেইসব মায়ের আর্তনাদ দেখুন, সেইসব সন্তানদের আহাজারি দেখুন আমার বিশ্বাস আপনার মনেও নাড়া দিবে এরপর হয়তো তারা ফিরে পাবে তাদের সন্তানদের, সন্তানরা ফিরে পাবে তাদের বাবাকে। প্রয়োজন শুধু আপনার সুনজরের............

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৪

মাকড়সাঁ বলেছেন: দেশে গণতন্ত্র থাকে কিন্তু আমাদের কথা বলা বারন ।

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৪

আহমেদ ফিরোজ- বলেছেন: ক্ষমতা ক্ষুধা যদ্দিন না মিটিবে...।

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এরা সবাই গুম হয়েছে বলা যায় না।
এদের অনেকেই জেল .. গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে আছে, অনেকে ভারতেও আছে।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

এন.এ.আনসারী বলেছেন: আপনি মনে হয় পুরো সংবাদ সম্মেলনটা দেখেন নি অথবা পক্ষাবালম্বন করছেন কারন তারা প্রত্যেকে বলেছে যে তাদের আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে গেছে

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪

এম.এইচ.সজিব বলেছেন: চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিছুই বুঝি আমাদের করনীয় নাই?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.