নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ

সোনালী ঈগল২৭৪

সোনালী ঈগল২৭৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাপিত জীবনের কথকতা -৬

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:১৮



১ । দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেলো সামু ব্লগে লেখালিখি করছি , লেখার পরিমান যদিও খুব বেশি নয় , যখন ব্লগে লেখা প্রথম শুরু করলাম , তখন দেশের বাহিরে অবস্থান করছিলাম , একরকম বাধাহীন ভাবেই লেখালিখি চালিয়ে যাচ্ছিলাম , কিন্তু দেশে আসার পরেই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হলো , ফলস্বরূপ বেশির ভাগ সময়ই আর সামু ব্লগে লগ ইন করতে পারতাম না , নিজের কাছে খুব খারাপ লাগতো । অল্প দিনেই ব্লগকে খুব আপন করে নিয়েছিলাম , একসময় দেশে নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে আর নতুন দায়িত্ব পেয়ে ব্লগে আর আসাই হয়নি , কিছুটা গুছিয়ে আশা করছি এখন থেকে ব্লগে লেখালিখি চালিয়ে যেতে পারবো , এক বছরে সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে খুব ভালো ভালো বেশ কয়েকজন ব্লগার এর লেখা পড়া , আমার লেখায় তাদের মন্তব্য পাওয়া , এগুলোকেই গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে মনে করি , তবে এমন ও দেখেছি কারো মতের সাথে না মিললেই তাকে নিয়ে কটূক্তি এবং নানা বাক্যবানে জর্জরিত করা হয় , আমাদের সকলকেই অপরের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে ।

২ । সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের জন্য নতুন নীতিমালা প্রকাশিত হয়েছে , নতুন এই নীতিমালা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে তিন বছর শিক্ষকতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে , অর্থাৎ একজন প্রার্থী হোক সে পিএইচডি এবং পোস্টডক করা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন , তার যদি তিন বছর সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে সে কোনোভাবেই সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না , বাংলাদেশের প্রচুর ভালোমানের গবেষক যারা পৃথিবীর বিভিন্ন সনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের উচ্চশিক্ষা শেষ করে দক্ষতার সাথে গবেষণা কাজে নিয়োজিত আছে , তারা দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছে যদি তাদের জন্য কোনো সুযোগ করে দেয়া যেত , তাহলে আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের উচ্চতর গবেষণা আরো উন্নততর হতো , কিন্তু তা না করে এভাবে গবেষণা কিংবা ডিগ্রির অভিজ্ঞতাকে পাশ কাটিয়ে , শ্রেণীকক্ষভিত্তিক শিক্ষকতাকে অভিজ্ঞতার মানদণ্ড ধরে শিক্ষক নিয়োগ চলমান উচ্চশিক্ষা ব্যাবস্থাকে আরো বেশি হুমকির মুখে ফেলবে , শুধু তাই নয় , বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পিএইচডি ডিগ্রি ধারীদের পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র স্নাতক ও স্নায়তকোত্তর এমনকি এসএসসি এমং এইচ এস সি পরীক্ষার ফলাফলকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়েছে । অবশ্যই এসব পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তি রয়েছে , কোনো না কোনো কারণে একজন ব্যাক্তির এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতেই পারে , পরবর্তী সময়ে সে পিএচডি কিংবা পোস্টডক লেভেলে ভালো মানের গবেষণা করে তার শিক্ষাজীবনের পূর্বেকার সমস্ত সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে নিতে পারে , তাকে সুযোগ না দিয়ে শুধুমাত্র স্নতকোত্তর ডিগ্রিধারী এবং তার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া শুধুমাত্র অন্যায় নয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবার সামিল । আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক নিয়োগ পেতে গেলে পিএচডি এবং পিএইচডি পরবর্তী তিন বছরের পোস্টডক গবেষণা আবশ্যক । তার সুফল ইতিমধ্যেই তারা পেতে শুরু করেছে । একইরকম নীতিমালা আছে ভিয়েতনামে । আর আমরা হাটছি পেছনদিকে , এই গেলো নিয়োগের দুরবস্থা । নতুন নীতিমালায় যে তুঘলকি কান্ড ঘটেছে তা হচ্ছে , বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির সকল ক্ষেত্রেই আবশ্যিক হিসেবে আট ঘন্টা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান আবশ্যিক করা হয়েছে , অর্থাৎ শ্রেণীকক্ষে আটঘন্টা উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে , সেই সাথে প্রতিবছর গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের যে পূর্বের যে বাধ্যবাধকতা ছিল সেখানে যথেষ্ট শিথিলতা আনা হয়েছে , তার মানে নামকাওয়াস্তে কিংবা কোনো গবেষণা ছাড়াই একজন প্রভাষক শুধুমাত্র আট ঘন্টার দৈনিক হাজিরা দেখিয়ে অধ্যাপক পর্যন্ত প্রমোশন নিয়ে নিতে পারবেন । সম্প্রতি টাইমস হায়ার এডুকেশন কতৃক তৈরিকৃত তালিকায় প্রথম ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই যেখানে পার্শবর্তী ভারতের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি পাকিস্তানের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে । গবেষনাকে আগ্রহ করে একটা দেশ কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না এবং তার কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না ।

৩ । কয়েকদিন আগে ভারতের চন্দ্রাভিযান নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বয়ে গেছিলো । যদিও চন্দ্রাভিযান শেষ পর্যন্ত অসফল হয়েছিল , তদুপরি , এই অভিযান ভারতের মহাকাশবিজ্ঞানকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে । সেই স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কেবল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র চাঁদে তাদের পরিচালিত অভিযানে সফল হয়েছিল , এর মধ্যে আমেরিকার নভোচারী কতৃক চাঁদের মাটিতে প্রথম পদার্পন ঘটেছিলো । সেই হিসেবে চন্দ্র বিজয়ের দিক থেকে পৃথিবীর একমাত্র সম্পূর্ণরূপে সফল দেশটি হলো আমেরিকা । সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইল এবং ভারত চাঁদে তাদের অভিযান পরিচালনা করেছে এবং দুটি অভিযানেই শেষ পর্যন্ত একেবারে সফলতার দ্বারপ্রান্তে গিয়েও ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়েছে । কিন্তু তাদের এই অভিযান তাদের দেশের মহাকাশ গবেষণাকে এক নতুন দিগন্তে নিয়ে গেছে । আশ্চর্যের বিষয় হলো , ভারতের চন্দ্র অভিযান ব্যার্থ হবার পর আমাদের দেশের সব পত্রিকা শিরোনাম করে যে ভারত শেষ পর্যন্ত চাঁদে যেতে পারলো না । আমাদের দেশের কিছু অতি উৎসাহী মানুষ এই খুশিতে উদ্বেলিত যে ভারত আমাদের শত্রু তাদের চাঁদে না পৌঁছুতে পারাটাই আমাদের বিজয় !!! কিন্তু এই বোধটুকু জাগে না যে ভারত যেখানে চাঁদে নভোযান পাঠায় সেখানে আমরা কি করছি !!!! আমাদের দেশে কি মহাকাশ বিজ্ঞানের কোনো চর্চা আছে ?? ভারতের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র "ইসরো " যেখানে নাসাকে তাদের আদর্শ মনে করে এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে যেখানে তারা মঙ্গল অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে , সেখানে আমরা কিংবা আমাদের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র "স্পারসো " কি করছে ???

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি দেশের বাহিরে থাকাকালীন সময়ে কি করছিলেন?

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৩৩

বলেছেন: অভিনন্দন

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪২

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই লেখাটি পড়া এবং মন্তব্যের জন্য

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২১

রাজীব নুর বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ আর ভারতের চন্দ্রাভিযান দু'টা বিষয় নিয়ে আপনার চিন্তা ভাবনা জানলাম।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৩

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: অনেকদিন পর ব্লগে এসেছি , আপনার লেখাগুলো খুব করেছি

৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বে কোনো নাম করতে পারেনি কারণ নাম করার মতো যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে নেই।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৫

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: আমাদের বিশাল একাডেমিক ভবন আছে , বিশাল ক্যাম্পাস আছে কিন্তু শিক্ষাদান যারা করবেন আমরা সেই মানবসম্পদ অর্থাৎ যুগোপযোগী শিক্ষক তৈরী করতে পারিনি

৫| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫৬

সোহানী বলেছেন: ভাইরে অসম্ভব ক্লান্ত, চরম হতাশ এবং একরাশ দু:খ নিয়ে দেশের জন্য ভাবি। আমরা কি করবো, কেন করবো, কি সে খুশি হবো, কিসে দু:খ পাবো তা এখনো জানি না। অন্যের গায়ে কাপড় আছে কিনা তা নিয়েই আমরা লাফঝাঁপ করতে ব্যাস্ত আর এদিকে নিজের পাছার যে কোন কাপড় নেই তা নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। (সরি খারাপ ল্যাংগুয়েজ ইউজ করার জন্য)।

বিশ্ববিদ্যালয় কেন সব স্তরেই আমরা দিন দিন হতাশাই উপহার দিচ্ছি।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৬

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য , সবকিছুর পর অবশ্যই একদিন সুদিন আসবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.