নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হে মানুষ...

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১



সত্যি, যারপরনাই বিস্ময়কর ও ভীতিজনক ব্যাপার, আজকে ২০১৮ সালে, এদেশের কতিপয় লোক (হয়তো সংখ্যাটা আমি যা ভাবছি তারচে’ও আরও অনেক বড়, এই ব্লগেও এ ধরণের মন মানসিকতার লোক রয়েছে) সমস্ত প্রচার মাধ্যমে এখনও দিব্যি প্রচার করে বেড়াচ্ছে, এ দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাবার জন্য নারীর বেশভূষা, চালচলন, আধুনিকতা দায়ী! তাদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, আমরা ২০১৮ তে নয় ১৯১৮ তে আছি। এ ধরণের কথা যারা বলে থাকে, তারা নিঃসন্দেহে অসুস্থ, বিকৃতরুচি’র মানুষ। সত্যিই দারুণ অনুতাপের বিষয় যে, অনেক নারীও আছে এদের দলে। এগুলো একেবারে ডাহা মিথ্যা ও যারপরনাই হাস্যকর। পাশাপাশি এসব বলা প্রকারান্তরে অগ্রসরমান নারী সমাজকে নির্লজ্জভাবে তিরস্কার, অবজ্ঞা ও লাঞ্ছনা করার সামিল। সত্যি, এ ধরনের মন মানসিকতা’র মানুষের সাথে সহাবস্থান বা একই সমাজে বাস করতেও ঘেন্না অনুভব হয়। তাদের বক্তব্য মেনে নিলে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াচ্ছে, যে বা যে পুরুষেরা যে নারীটির খারাপ বেশভূষা ও আধুনিকতা দেখেও মওকা মতো তাকে ধর্ষণ করেনি, তারা সবাই পুরুষ নামের কলঙ্ক, তারা ক্লীব নয়তো নপুংসক। আর যারা তাকে ধর্ষণ করেছে তারাই প্রকৃত পুরুষ, তারাই বীরপুরুষ!

তাদের মনোভাব, আমাদের দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাবার জন্য নারী যেন নিজেই দায়ী। নিজেই সে প্রলুব্ধ করছে তার চারপাশের পুরুষদের তাকে ধর্ষণের জন্য। কোথাও তারা ধর্ষকের কোনও দোষ খুজে পান না। ধর্ষক তাদের দৃষ্টিতে নিরপরাধ! সব দোষ ওই বেহায়া নারীর। সে কেন সর্বত্র তার অঙ্গ প্রদর্শন করে চলাফেরা করে? সে কেন বোরখা পরে না, হিজাব পরে না, পর্দা করে না? তাই সে ধর্ষিত হয় বারবার। তাই সে ধর্ষিত হবে বারবার। ধর্ষকের কোনও দোষ নেই, ধর্ষক তো নেহায়েত পরিস্থিতির স্বীকার! সত্যি, এতো অসুস্থ বিকৃতরুচি’র মানুষদের সঙ্গে আদৌ কী কোনও যুক্তিতর্ক চলে? না, চলে না। এ ধরণের বক্তব্য বা মনোভাব জনসমক্ষে যারা প্রকাশ করে, তাদেরকে শাস্তি দেয়া হোক, সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ বয়কট করা হোক।

তবে আমি সবচেয়ে আতঙ্কিত হই, তাদের সংখ্যা নিয়ে। তারা কি আমাদের দেশের দশভাগ, পনেরো ভাগ, বিশ ভাগ, নাকি আরও বেশি! সত্যি, এসব দেখেশুনে আমি আজ দারুণ হতাশ। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। নারীত্বকে সম্মান দিতে শিখুক তারা। পৃথিবীর সমস্ত নারীর শরীর আমার আপনার মতোই একটি শরীর। পথেঘাটে অফিস আদালতে নারীর পোষাক আষাক বেশভূষা, হাঁটাচলায় মনোযোগ না দিয়ে প্রকৃতি দেখুন, আকাশ দেখুন, চারপাশের জনসমাগম দেখুন, সা সা ছুটে চলা যানবাহন দেখুন, ফুল দেখুন, পাখি দেখুন, চাঁদ দেখুন, তারা দেখুন, ল্যাম্পপোস্টের ঝলমলানো বাতিগুলো দেখুন। এই পৃথিবী, প্রকৃতি, জীবন ও বেঁচে থাকা ঢের বৈচিত্র্যময়, ঢের রমণীয় এইসব সাধারণ রমণীদের থেকে। নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি আপনারা আরও উন্নত করুন।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

নিউওনডার বলেছেন: "তাদের বক্তব্য মেনে নিলে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াচ্ছে, যে বা যে পুরুষেরা যে নারীটির খারাপ বেশভূষা ও আধুনিকতা দেখেও মওকা মতো তাকে ধর্ষণ করেনি, তারা সবাই পুরুষ নামের কলঙ্ক, তারা ক্লীব নয়তো নপুংসক। আর যারা তাকে ধর্ষণ করেছে তারাই প্রকৃত পুরুষ, তারাই বীরপুরুষ! "

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

অর্ক বলেছেন: আপনার কোনও বক্তব্য...

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:১৪

নিউওনডার বলেছেন: আমিও একমত, তাই।

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮

অর্ক বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪

তারেক ফাহিম বলেছেন: চারদিকে ধর্ষন দেখতে দেখতে নিজেকে পুরুষ ভাবতে ঘৃনা লাগে অর্ক ভাই।

লিখার বিশ্লেষন ভালো লাগলো।

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। নারীর প্রতি সবরকম সহিংসতা বন্ধ হোক।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

মনিরুল ইসলাম বাবু বলেছেন: উচিৎ কথা লিখেছেন।

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯

অর্ক বলেছেন: প্রেরিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

৫| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন ভাই। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক আতঙ্কিত হওয়ার মতো বিষয় হলো ধর্ষণ। সম্প্রতি এই জঘন্যতম অপরাধের সংখ্যা বেড়েই চলেছে! আজও দেখলাম ধর্ষণের পর মেরে মেয়েটিকে রেল লাইনে রেখে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে ধর্ষিতা মেয়েটির শরীর!! কিছুদিন আগে বিউটির লাশ রাখা হয় সবুজ ঘাসের উপর! কি হচ্ছে এইসব! বড়ই আতঙ্কিত হচ্ছি দিনদিন!!

সবচেয়ে দুঃখজনক প্রতিটি ধর্ষণের পর কিছু মানুষ বুদ্ধিবেশ্যার মতো পর্দাপ্রথাকে দায়ী করে ধর্ষণের অপরাধ ভিন্ন দিকে নিয়ে যাচ্ছে!! বড়ই দুঃখজনক ব্যাপার!!

সময় আর নেই ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসির দাবী নিয়ে রাস্তায় নামার। এখনো যদি গণআন্দোলন সৃষ্টি করা না যায় তবে এমন জঘন্য অপরাধ ঠেকানো মুশকিল হবে মনে হয় আমার কাছে। ধর্ষণের শাস্তি দ্রুত দেয়ার দাবী নিয়ে গণজাগরণ দরকার হয়ে পড়েছে।

সুন্দর আলোচনায় ধন্যবাদ

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩৯

অর্ক বলেছেন: বিস্তারিত মন্তব্যের জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভকামনা।

৬| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম। সত্যি কথা বলতে না পারায় কি অর্বাচিন ভাবনায় পোষাকে দোষারুপ!

ধর্ষনের গোড়ায় যেতে হবে। সামাজিক অবক্ষয়ের কারন খুঁজতে হবে!
সব কিছূর ভয়াবহ বানিজ্যিকায়ন আমাদের অনেক প্রচলিত সুস্থ বোধকেও ভেঙ্গেচুরে দিয়েছে।
রাজনৈতিক অধ:পতন সামাজিক পতনকে তরান্বিত করছে!
ইয়াবা ব্যাবসায়ী যখন রাষ্ট্র প্রধানের সাথে মঞ্চে হাত নাড়ে- পুরা জাতির কাছৈ ভীন্ন মেসেজ পৌছায় অবচেতনেই।!
পুলিশ, বিচারপতি, সাংবাদিক সকলে যখন ইয়াবা ব্যবসায় নাম লেখায় তখন আতংকিত হতেই হয়

ধর্ষন নিজে কোন রোগ নয়, অন্য রোগোর উপসর্গ! সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত উপসর্গ ধর্সন।
সেঞ্চুরিয়ান ধর্সক যখন সরকারী চাকুরী পেয়ে বুক ফুলীয়ে চলে তখন ধর্ষন কমবে কি করে?
যৌন শিক্ষার অভাবে স্বাভাবিক যৌনতা বিঘ্নিত হতে পারে- তবে তা মহামারী র্ধষনের কারণ নয়!

মাদকের স্বর্গ বলা যায় এখন স্ব-দেশকে! সরকার এবং সরকারী দলের, প্রশাসনের বৃহত অংশই যখন প্রত্যক্ষ পরোক্ষে জড়িত
তখন আর ঠেকায় কে? ইয়াবার নেশায় উদগ্র যৌনতা বিস্ফোরিত হচ্ছে আম অসহায় নারীদের উপর!
মিডিয়া, সুশীল সমাজ বিলকুল চুপ!
খবর টুকুও এমনভাবে প্রকাশ করে- পাঠকের রগরগে অনুভূতিকে সুড়সুড়ি দিয়ে- যাতে ক্লিক বাড়ে! সচেতনতার নামে মিনি চটি একেকটা অনলাইন!!! কারণ এলেক্সা রেটিংয়ে অনলাইনটার রেটিং বেশী হলেই বেশি বেশী বিজ্ঞাপন!

এক সময় বগুড়ায় ইয়াসমিন পুলিশ কর্তৃক ধর্ষিত হলে রাজপথে আগুন জ্বলেছ!
এখন সোনার ছেলেদের ধর্ষন সঞ্চুরি পেরিয়ে শততম সেঞ্চুরীর পথে! কারো মনে গোস্বার উত্তাপও ছড়ায়না।
আতংকিত জনপদে সন্ত্রস্ততায় ভীত সবাই। স্বাধীন মত প্রকাশে যখন টুটি চেপে ধরা হয়- তখন ন্যায্যতাও পথ হারায়!

ধর্ষন রোধ করতে হলে মাদক নিয়ন্ত্রন করতে হবে।
সারকারী দলের ধর্ষক বলে ছাড় পাওয়া চলবে না। বা
শূধূ লোক দেখানো দল থেকে বহিস্কার নাটকেই তা নিয়ন্ত্রনে আসবে না! চাই প্রকৃত দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!
প্রকাশ্যে, লাইভে এবং পক্ষপাতহীন।

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২

অর্ক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভৃগু ভাই। আসলে সমস্যাটা অত্যন্ত জটিল, ততোধিক এর ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসা। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, পাশের দেশ ভারতে সবচেয়ে আধুনিক ও স্বাধীনতা ভোগ করে মুম্বাইয়ের নারীরা, কিন্তু সেখানে সবচেয়ে নিরাপদ তারা। মুম্বাই মহারাষ্ট্র সারা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ রাজ্য নারীদের জন্য। আমি কিন্তু সেখানে স্কার্ট পরা মেয়েদের লোকাল ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির কামরায় সফর করতে দেখেছি।

ব্যাপারটা নিয়ে চটজলদি কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। তবে এমনকিছু কিছুতেই বলা যাবে না যা আদতে ধর্ষক বৃদ্ধি করবে। শাস্তি সুনিশ্চিত করতেই হবে।

আপনার মন্তব্যে অনেককিছু ভাববার অবকাশ আছে আমাদের সবার।

শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.