নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এরিয়েল ওরতেগার জন্য ভালবাসা

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:০৫



আর্জেন্টিনা’র এরিয়েল ওরতেগা আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন ফুটবলার। এ শুধুই তাঁর ক্রীড়া নৈপুণ্যের জন্য। সত্যি বলতে কি, বল ড্রিবলিং কাটানোতে তাঁর মতো দক্ষ খেলোয়াড় আমি আমার এযাবতকালের জীবনে আর দ্বিতীয়টি দেখিনি! এ কাজটা খুব ভালোই পারতেন তিনি। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে দেখেছিলাম তাঁর অতিমানবীয় ফুটবলের জাদু। দিব্যি পাঁচ ছয় জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে, ইচ্ছেমতো ডস দিয়ে দিয়ে বল নিয়ে বারবার টুপ করে ঢুকে পড়তেন প্রতিপক্ষের ডি বক্সে। একবার দুবার তিনবার- বারবার। বল পেলেই প্রতিপক্ষের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠতেন তিনি। সহযে আর বল পা ছাড়া হতো না, যেন বুটে অদৃশ্য কোনও আঠা লেগে আছে, তাতে লেপটে আছে বল। প্রতিপক্ষকে কাটানো ডালভাতের মতো সহজ ব্যাপার ছিল এরিয়েল ওরতেগার জন্য। চার পাঁচ জন একত্রে ঘিরে ধরেও বল ছিনিয়ে নিতে পারতো না তাঁর পা থেকে। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা বুঝে যেতো, এঁকে বৈধভাবে থামানো কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই বারবার অবৈধভাবে তাঁকে থামিয়ে দেয়া হতো। বেশিরভাগ সময় দেখতাম প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা জামা টেনে ধরতো, ধাক্কা দিতো, পা'য়ে ল্যাঙ মারতো- এভাবে একের পর এক ফাউল করে বলতে গেলে তাঁকে তাঁর স্বাভাবিক খেলাই খেলতে দেয়া হয়নি; আমি ১৯৯৮ জার্মানি বিশ্বকাপের কথা বলছি। সেবার নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে রেফারি নেদারল্যান্ডের পক্ষে উলঙ্গ পক্ষপাতিত্ব করে অবৈধভাবে লাল কার্ড দেখিয়েছিল ওর্তেগাকে। সে ম্যাচে ড্যানিস বার্গক্যাম্পের শেষ মুহূর্তের গোলে হেরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। মনে পড়ছে সে ম্যাচে ওরতেগার অশ্রুসিক্ত চোখে হতাশ হয়ে মাথা নিচু করে শ্লথ পা’য়ে হেটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়া। তখন বুঝিনি, সেটাই হতে চলেছে আমার দেখা তাঁর শেষ পূর্ণ আন্তর্জাতিক ম্যাচ! সেসময় সেভাবে ক্লাব ফুটবলের সাথে পরিচিত ছিলাম না। তাঁর পরের ২০০২ কোরিয়া জাপান যৌথ রাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সম্ভবত এরিয়েল ওর্তেগা আর খেলার সুযোগ পাননি। পেলেও পুরো সময় খেলতে পারেননি। সম্ভবত বদলি খেলোয়াড় হিসেবেই খেলেছিলেন দুয়েকটি ম্যাচে। এরকম কিছু হয়েছিল।
জানি না এখনও তিনি খেলেন কিনা। আমি তাঁর চমকপ্রদ অতিমানবীয় ক্রীড়া নৈপুণ্যের সাক্ষী। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে আমি হাই স্কুলে অধ্যায়ণরত কিশোর ছিলাম। খেলাধুলা দারুণ পছন্দ করতাম। বিশেষ করে ফুটবল, ভলিবল ও সবরকমের মারপিটের খেলা- রেসলিং, বক্সিং, জুডো, তায়কোয়ান্দো ইত্যাদি। ক্রিকেট অতোটা নয়। সব থেকে প্রিয় ছিল ফুটবল। সেবার বিশ্বকাপে একমাত্র এই এরিয়েল ওর্তেগা’র কারণেই কিছুতেই চাইতাম না, জুর্গেন ক্লিন্সম্যান, অলিভার কান, লোথার ম্যাথিউস, মাইকেল বালাক’র মতো দক্ষ খেলোয়াড়ে পূর্ণ প্রিয় জার্মানি ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা’র মুখোমুখি হোক।
সে সব দিন ধূসর অতীত আজ। নিটোল সুখের একগুচ্ছ স্মৃতি। অনেককিছুই ভুলে গেছি সময়ের সাথে সাথে, যেটুকু মনে আছে, তাও বিস্তারিত বা পুঙ্খানুপুঙ্খ নয়। কিন্তু আমার পরিষ্কার মনে আছে এরিয়েল ওর্তেগাকে, তাঁর অসাধারণ দৃষ্টিনন্দন ক্রীড়া নৈপুণ্য- খেলার যে কোনও পর্যায়ে বল পেলেই প্রতিপক্ষের একাধিক খেলোয়াড়কে ইচ্ছে মতো নাচিয়ে কাটিয়ে ডি বক্সে বারবার ক্ষিপ্রগতিতে ঢুকে পড়া। এঁকেই বোধহয় জন্ম ফুটবলার বা জাত ফুটবলার বলা হয়ে থাকে! বেশ নস্টালজিক হয়ে উঠছি তাঁকে নিয়ে লিখতে গিয়ে। তাঁর সাথে সাথে আরও মনে পড়ছে, আমার ছেলেবেলার শহর- রাত জেগে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখা, বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আনন্দ ফুর্তিতে মেতে ওঠা, বাড়ির ছাদে পতাকা ওড়ানো, খেলার পর বিজয়ী প্রিয় দলের পক্ষে মিছিলে শরীক হওয়া... আহ, কতো যে প্রাণোচ্ছল সুমধুর ছিল সেসব দিন! যাই হোক প্রিয় ফুটবলার এরিয়েল ওর্তেগা’র জন্য হৃদয় নিংড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আজ আমার এ সামান্য লেখার মাধ্যমে। যেখানে যেভাবেই থাকুক তিনি, সুখদায়ক ফল্গুপ্রবাহে ভরা থাক তাঁর অনাগত প্রতিটি দিন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:১১

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: আমি চাই এইবার মেসি ওয়ার্ল্ড কাপটা জিতুক। সেরা প্লেয়ারের হাতে সেরা কাপটা উঠুক। ওরতেগা আমারও খুব প্রিয় খেলোয়াড়। পাশাপাশি বাতিস্তুতা, রিকোলেম ও ম্যারাডনা। তবে আমি নির্দিষ্ট কোন দলের সমর্থক নই।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:১৭

অর্ক বলেছেন: রিকোয়েলমে‘ও চমৎকার পরিপূর্ণ একজন ফুটবলার। বাতিস্তুতা শুধু গোল দিতে পারতো, হেডে দারুণ দক্ষতা ছিল। ম্যারাডোনা’র খেলা দেখিনি। তবে হারনান ক্রেসপোও আমার খুব প্রিয়। অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভরপুর শুভকামনা। আমিও কোনও দলের সমর্থক নই। এরপর ব্রাজিলের রোনালদিনহো’কে নিয়েও লিখতে পারি। তিনিও আমার খুব প্রিয় ফুটবলার।

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:০৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আসলে আমরা ম্যারাডোনার খেলা দেখেছি বলে এর মাঝে ওর্তেগা, রিকুইলমে যেই এসেছে তাকে 'নতুন ম্যারাডোনা' নামে ডেকেছি। আমি আরেকটু পুরোনো দর্শক হওয়ার কারণে ঐ সময় বাতিস্তুতা ভক্ত ছিলাম। তাই ওর্তেগার চাইতে ফোকাস বেশী ছিল বাতিস্তুতার দিকে। আমি চাইতাম দল হারলেও যেন বাতিস্তুতা গোল পায়। বাতিস্তুতা '৯৪ ও '৯৮ বিশ্বকাপে পরপর দুবার হ্যাট্রিক করেছিল। আর ঐ ম্যাচে ('৯৮) বাতিস্তুতার একটা শট বারে লেগে ফিরে আসে এবং বার্গক্যাম্পের শেষ মুহূর্তের গোলে (২-১) হেরে যায় হল্যান্ডের কাছে, টাইব্রেকারে নয়...

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৪

অর্ক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ বিচার মানি তালগাছ আমার। সংশোধন করলাম। আনন্দের সাথে আপনার লাইনটাই তুলে দিলাম। দেখেন, পুরোটাই স্মৃতি থেকে লেখা। হয়তো আরও দুয়েকটা ভুল আছে। ভুল শনাক্ত হলে সংশোধন করবো। নিচে এক পিশাচ অভদ্রোচিত মন্তব্যে ভুল ধরেছে। ওই জানোয়ারের ভুল আর সংশোধন করলাম না। এরা যে কেন আমার পোস্টে মন্তব্য করে!

শুভকামনা।

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমার কাছে ওর্তেগাকে খুবই স্বার্থপর প্লেয়ার মনে হতো, তার একটাই ইচ্ছা কাজ কাউকে পাস দেবো না মাঝমাঠ থেকে একাই খেলাবো এবং একাই গোল দেবো, একারণেই ওর্তেকা একজন ফ্লপ খাওয়া তারকা।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৩০

অর্ক বলেছেন: হ্যা, আপনি ওভাবে বলতেই পারেন তারেক_মাহমুদ। তিনি ওরকমভাবেই খেলতেন। বল পাস করতেন অনেক পরে। ফ্লপ খাওয়া তথ্যটা মোটেই সঠিক নয়। সে সময় ফুটবল দুনিয়ায় দারুণ সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিস্তর চর্চা হয়েছিল। ম্যারাডোনার সাথে তুলনা করা হতো। পরে হয়তো সেভাবে আর পাদপ্রদীপের আলোয় থাকতে পারেননি। এরকমটাই স্বাভাবিক। অনেকের ক্ষেত্রেই এরকম হয়। মঞ্চের ধারণক্ষমতারও তো একটা সীমা আছে!

৯৮ বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো ইউটিউবে পাবেন। তাঁর দক্ষতা অসাধারণ।

অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:১০

ক্স বলেছেন: ১৯৯৮ বিশ্বকাপ কি জার্মানিতে হয়েছিল? তাহলে ২০০৬ সালেরটা কোথায় হয়েছিল? ফ্রান্স বিশ্বকাপ কবে হয়েছিল, যেটাতে ফ্রান্স ৩-০ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়?

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৮

অর্ক বলেছেন: এ’তো আচ্ছা অসভ্য ইতর টাইপের মানুষ! পুরো লেখাটাই আমার স্মৃতি থেকে লেখা। কোনও প্রকার নেটে তথ্য চেক করা হয়নি। আগে যেমন একজন একটি ভুল ধরেছে, হয়তো এরকমভাবে আরও ভুল থাকতে পারে! ভুল শনাক্ত হলে সাথে সাথে সংশোধন করবো। এভাবে ব্যঙ্গ করে এ নিজের নোংরা মনের পরিচয় দিলো। এ ধরণের দুষিত মানসিকতার কারও মন্তব্য আমার পোস্টে কাম্য নয়। এরপর এ অভদ্র মন্তব্য করলে একে ব্লক করবো, প্রয়োজনে ওকে ওর ভাষাতে উত্তরও দেবো। এদের প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই আসে না।

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮

হাসান রাজু বলেছেন: " এ’তো আচ্ছা অসভ্য ইতর টাইপের মানুষ! " এইটা ক্যামন সভ্যতা? " ক্স" এর মন্তব্য এর চেয়ে হাজারগুন ভালো । সে প্রশ্ন রাখতেই পারে । একটু তির্যক মন্তব্য ও করতেই পারে । এইটুকুন সহ্য করতে না পারলে ব্লগিং করতে আপনি ই বরং আসবেন না । সেটাই ভাল ।
আর কষ্ট করে একটা পোস্ট দিবেন একটু যাচাই করবেন না ! আপনার পোস্টটিতে তো তথ্য যোগ করেছেন । তাই আপনার দায়িত্ব ছিল সেগুলো একটু হলেও যাচাই করা ।

" এদের প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই আসে না " বেশি বলে ফেললেন না ??? বার বার মন্তব্য পড়ে দেখেছি । কোথাও খারাপ কিছু মনে হচ্ছে না। তির্যক মন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করলেও "না" ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:১৪

অর্ক বলেছেন: ক্স’র অভদ্র উস্কানি আপনার মন্তব্যেও। উভয় সম্ভবত একই ব্যক্তি।! ক্স নিয়মিত মন্তব্য করে কিন্তু আমার পোস্টে আগে কখনওই মন্তব্য করেনি। মনে হলো যেন এভাবে ব্যঙ্গ করার জন্য ওৎ পেতে ছিল এতদিন! ও অকারণে আমাকে অপছন্দ করে সম্ভবত! ভালোভাবে কথাটা এক লাইনে বললেই পারতো। তির্যক সমালোচনা’র আদৌ কিছু নেই মন্তব্যে, ব্যাঙ্গ তাচ্ছিল্য ছাড়া, আপনার এতো বুদ্ধিওয়ালা মাথায় ব্যাপারটা কেন যে ঢুকলো না!

প্রাসঙ্গিক সমালোচনা যতো তির্যকই হোক তাকে যারপরনাই স্বাগত জানাই। যাই হোক এক্ষেত্রে কথা বাড়ানো অরণ্যে রোদন। আমার দুটো মন্তব্য যদি আপনাদের কাছে ভালো না লাগে, তাহলে আর আমার পোস্ট পড়া বা মন্তব্য করবার দরকার নেই। আমিও হাসান রাজু, ক্স নাম দুটো মনে রাখবো। এসব তর্কবিতর্ক করার কোনও মানেই হয় না! এসময় অন্য কিছু লিখতে পারতাম। মন্তব্য বাড়াবাড়ি লাগলে উপেক্ষা করে চলুন আগামীতে।

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.