নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাফখাতা

কাজী আসিফুজ্জামান

Lazy, Arrogant, Selfish, Idiot!!!

কাজী আসিফুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

তেহারী (ছোট গল্প)

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:২৯

-“কিরে কুদ্দুস? তোর হাতে কি জাদু আছে নি?”
-“ক্যান মিয়াভাই? কি হইছে?”
-“আজকের তেহেরীডা তো সেই বানাইছোস! পুরা গেরামে এত এত গরু নাই যত গরুর মাংস তোর তেহেরীতে পাই!”
-“হেহেহে... কি যে কন না মিয়াভাই!”
-“হাছাই কই। যাক গা! রতন্যারে ডাক দে। একটু ঝোল দিতে ক!”
-“ও তো নাই মিয়াভাই। নতুন একটা আইছে। খাড়ান ডাক দিতাছি। ফজল! ওই ফজল! এই টেবিলে ঝোল দিয়া যা!”
-“রতন নাই মানে? কই গ্যাছে?”
-“কাম ছাইড়্যা দিসে”
-“কি কস? তোর দোকানে তো দেহি লোকই টেহে না!”
-“কি করমু কন মিয়াভাই! আজকালকার পোলাপান কাম করতে চায় না! হারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবো, মাগার কাম কাজ করবো না!”
-“রতনের বাড়ির ঠিকানা জানোস?”
-“ভালোমতো জানিনা। যাক গা। আল্লাহ’র রহমতে কুদ্দুসের দোকানে কাম করার লোকের অভাব হয় না ভাই!”
-“হ! কিন্তু রতন পোলাডা ভালো ছিল। ছোট মানুষ তয় কাজ কাম ভালোই তো পারতো দেখতাম!”
-“হ... তা ঠিক। তয় এই ফজলও খারাপ না!”


---------------

রাত ১২টা বাজে। কুদ্দুস মিয়া একটু পর হোটেল বন্ধ করবে। আজকের মত বেচা কেনা শেষ। কাউন্টারে বসে সারাদিনের হিসেব করে লাভের অংশটা পকেটে পুরলো সে।
ফজল রান্না ঘরে কাজ করছে। বেঁচে যাওয়া খাবারগুলো আলাদা পাত্রে তুলে ভালো করে মুখ লাগাচ্ছে। কালকে রান্নার সময় এগুলো তার ভেতর দিয়ে দেয়া হবে। খাবারগুলো পাত্রে রাখার পর রান্নাঘরের সেগুলো এক কোণায় রেখে দিল ফজল। ছোট মানুষ সে। খুব বেশি বয়স না। এই ১১-১২ বছর। তাই তেহেরী রাখা ভারী পাত্রগুলো একরকম ঠেলে ঠেলেই সরালো সে।
এদিকে কুদ্দুস মিয়া অপেক্ষা করছে ফজলের জন্যে। তার কাজ শেষ হলে সে হোটেল বন্ধ করবে। হঠাৎ কাউন্টার থেকে বের হয়ে এলো কুদ্দুস। আগামীকাল রান্না করার মতো গোস আছে কিনা দেখতে হবে।
সিড়ি ভেঙ্গে হোটেলের দোতলায় উঠলো সে। জায়গাটা ছোট। পুরোনো রান্না করার সরঞ্জামে ঠাসা। মাঝে মাঝে কোথাও খ্যাপ পড়লে এই সরঞ্জামগুলো লাগে তাঁর। এখানেরই এককোণে রাখা আছে একটা ডিপ ফ্রিজ। কুদ্দুস মিয়া ফ্রিজের কাছে এসে ঢাকনা খুলল। ভেতরে রতনের অর্ধণ্ডিত দেহ। এক খন্ড ইতিমধ্যে রান্না হয়ে গেছে। বাকি এক খন্ড রয়ে গেছে।
হাত বাড়িয়ে রতনের উরু স্পর্শ করলো। তারপর বুকে। হাল্কা চাপ দিল। অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল কুদ্দুস মিয়া! হ্যাঁ মাংস এখনও শক্ত হয়ে যায় নি! যা আছে তাতে আরো ২ দিন চলে যাবে নির্বিঘ্নে!

-------------

খুশি মনে নিচে নেমে এলো কুদ্দুস মিয়া। মুখে তার পরিতৃপ্তির হাসি। ফজল এখনো রান্না ঘরে। কুদ্দুস মিয়া একরকম হেলে দুলে একটা চেয়ার টেনে বসলো। তারপর হঠাৎ কি মনে করে আবার উঠে দাঁড়ালো।
দ্রুত সিড়ি বেয়ে উঠলো আবার দোতলায়। সিড়ির কাছে একটা বাজারের ব্যাগ রাখা আছে। আবছা আলোয় সেটি তুলে নিল সে।
কুদ্দুস মিয়া একদমই ভুলে গিয়েছিল যে কাল গ্রামের চেয়ারম্যান ইসলাম সাহেবের বাসায় বিরাট অনুষ্ঠান হবে। আর কুদ্দুস মিয়া হবে সেখানকার হেড বাবুর্চি। তাই কাল যাওয়ার আগে রান্নার সকল উপকরণ তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
কুদ্দুস মিয়া ব্যাগের ভেতর হাত ঢুকালো। আস্তে করে বের করে আনলো মাংস কাটার ছুরি। ভালো করে হাত বুলালো সেটিতে। হ্যাঁ! ধার আছে।
তারপর সিড়ির কোণা থেকে মাথা বের করে ডাকল, “ফজল! ওই ফজল! একটু উপরে আয় তো!”

=শেষ=

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৭

নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: গল্পটা বেশ পাকা হাতের লেখাই মনে হচ্ছে :) কিন্তু কনসেপ্ট ঠিক ছিল কিনা, বুঝছি না :(

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৯

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: আপনাকে প্রথমবার পড়লাম। আরেকটু জমতে পারতো। তারপরেও ভাল লেগেছে। এরকম গল্প ব্লগে খুবই অল্প কয়েকজন লিখেন। শুভ কামনা।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

কাজী আসিফুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। আসলে ব্লগে আগে কখনও লেখা দেইনি... তাই রেসপঞ্জ কেমন আসে, সেই ব্যাপারে ধারণা ছিল না। তবে এখন থেকে নিয়মিত লেখা দেবার চেষ্টা করবো! :)

৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলাম বলে রোমাঞ্চটা টিক উপভোগ করতে পারিনি। একটু স্লো।
আরও ভাল হতেই পারতো

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

কাজী আসিফুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। আসলে ব্লগে আগে কখনও লেখা দেইনি... তাই রেসপঞ্জ কেমন আসে, সেই ব্যাপারে ধারণা ছিল না। তবে এখন থেকে নিয়মিত লেখা দেবার চেষ্টা করবো! :)

৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪

নাগরিক কবি বলেছেন: গল্পটা ভাল। কিন্তু প্রথম প্যারাতেই গল্পের কাহিনীটা ধরে ফেলা যায়। এটা একটা দুর্বল দিক।
ভাল লিখেছেন। আরো ভাল লিখবেন আশা করি।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

কাজী আসিফুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ। আসলে ব্লগে আগে কখনও লেখা দেইনি... তাই রেসপঞ্জ কেমন আসে, সেই ব্যাপারে ধারণা ছিল না। তবে এখন থেকে নিয়মিত লেখা দেবার চেষ্টা করবো! :)

৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৯

ওমেরা বলেছেন: ওমা গো কি ভয়ংকর !!

৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৫

িত্রস্তান বলেছেন: মারাত্মক লিখছেন তো

৭| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৫১

কালীদাস বলেছেন: লেখাটা আমার কাছে খারাপ লাগেনি :) এই প্লটটা ইদানিং বিভিন্ন চেহারায় বেশ কয়েকবার দেখেছি যদিও।
চেষ্টা চালিয়ে যান :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.