নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাফখাতা

কাজী আসিফুজ্জামান

Lazy, Arrogant, Selfish, Idiot!!!

কাজী আসিফুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিহিংসা (২য় পর্ব)

১৫ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:০৪



১ম পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link

আমরা বসে আছি এমপির বাড়ির ড্রয়িং রুমে। বেশ বড় সাজানো গোছানো ড্রয়িংরুম। রুমের মাঝখান দিয়ে চলে ডুপ্লেক্স বাড়ির উপরে ওঠার সিড়ি। আমরা যে সোফায় বসে আছি তার দাম কম করে হলেও লাখখানেক হবে বলে মনে হলো আমার। দেয়ালে সুন্দর কারুকার্য দেখা যাচ্ছে। আমাদের পেছনের দেয়ালে ঝুলে আছে বেশ বড়সড় একটি তৈলচিত্র। যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি সুন্দর গ্রামবাংলার দৃশ্য। এমপির রুচিবোধ ভালো মনে মনে মানতে বাধ্য হলাম আমি।
আমরা ভেতরে এসে বসার একটু পর একজন চাকর চা-নাস্তা দিয়ে গেছে। আমি এককাপ চা হাতে নিলাম। আবির কিছুই নিল না। আমি বললাম, "চা নে।" সে বলল, “থাক। সমস্যা নেই!”
একটু পর এমপি সাহেবের পিএ নেমে এলেন নিচে। আমাদের দেখে বললেন, "ম্যাডামের অবস্থা খুব খারাপ। আপনি স্যারের ছেলের সাথে কথা বলতে পারেন।" “ঠিক আছে। তাকেই ডাকুন!” আবির শান্ত গলায় বলল।
এমপি সাহেবের ছেলে নেমে এলো নিচে। লাল রঙের টি শার্ট আর নীল রঙের ট্রাউজার পরা। বেশ মোটাসোটা দেখতে তিনি। গোলগাল চেহারা, ছোট মুখ, ফর্সা আর ঘন ভ্রুর তলে কুতকুতে দুটো চোখ। কেমন যেন চোর চোর ভাব। আমাদের দেখে সালাম দিল। আমরা ঊঠতে যাচ্ছি দেখে হাত দিয়ে ইশারা করল বসতে। ভদ্রলোক বসলেন আমাদের সামনের সোফায়।
আবিরই কথা শুরু করল, "দবির সাহেব আপনার বাবা?"
“জী” বললেন ভদ্রলোক। বেশ দরাজ গলা। শুনে একটু চমকে উঠলাম আমি। বাবা মারা গেছে তার। অথচ গলা শুনে বেশ স্বাভাবিকই লাগছে আমার কাছে।
"কালকের ব্যাপারটা কখন টের পান আপনারা?"
"প্রথম আমিই টের পাই। সকালে মর্নিং ওয়াকে যেতে গিয়ে দেখি ওই অবস্থায় পড়ে আছেন বাবা।"
"আপনার নাম কি?"
"সোহেল। সোহেল আহমেদ।"
"কি করেন?"
"ব্যবসা করি। এক্সপোর্ট ইম্পোর্টের।"
"পার্টনারশীপ?"
"হ্যাঁ।"
"আপনার পরিবারে আর কেউ নেই? আই মিন ওয়াইফ?"
"আছে। বাপের বাড়ি গেছে।"
"ছেলেমেয়ে?"
"নেই।"
"আপনার বাবার কারও সাথে শত্রুতা ছিল?"
"বাবা রাজনীতি করতেন। তার শত্রুর অভাব নেই। তবে আমার মনে হয় না কেউ তাকে জানে মেরে ফেলার মত কিছু করবে।"
"আপনার বাবার সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিল?"
"ভালো।"
"আপনি কাউকে সন্দেহ করেন?"
"না।"
"আপনার মায়ের সাথে একবার কথা বলতে চাই"
"এখন তো সম্ভব না। তিনি খুব শক পেয়েছেন। আপনারা অন্যকোন দিন আসুন।"
"আচ্ছা ঠিক আছে। থ্যাঙ্কু ফর ইওর কো-অপারেশন!"

-----------------
থানায় বসে আছি আমরা। আবির বেশ চিন্তিত। চেয়ারে হেলান দিয়ে তাকিয়ে আছে রুমের এককোনায় ঝোলানো দেয়াল ঘড়ির দিকে। আর হাতে চালাচ্ছে রুবিস্কিউব! মাথার ভেতর জট পাকাচ্ছে তার। অবশ্য তাকেও দোষ দিতে পারছি না। এরকম জটিল কেস এর আগে আমিও পাই নি। তার উপর বারবার ফোন আসছে উপর মহল থেকে। কেসের অগ্রগতি জানতে চাচ্ছে। সকালে পাওয়া কেস এত দ্রুত সলভ করা যায়? আমরা শার্লক হোমস না ব্যোমকেশ বক্সী? এত সোজা নাকি সবকিছু? মেজাজ মন দুটোই খিচড়ে গেছে।
হঠাৎ চেয়ার ঘুরিয়ে আমার দিকে ফিরল আবির। “আচ্ছা, তোর কি মনে হয়? কে করেছে কাজটা?”
"বোধহয় বিরোধী দল।"
"যাহ! বিরোধী দল না। এত পাটা নেই ওদের বুকে।"
"তাহলে কে?"
"সেটাই তো ভাবছি। সম্ভাবনা অনেক। এতলোককে ট্রেস করা ঝামেলা। ব্যাটা পলিটিকস করতো। শত্রু ঘন্টায় ঘন্টায় গজাতো তার।"
"আমি কি ভাবছি জানিস?"
"কি?"
"আমার মনে হয় ওর ছেলে করছে কাজটা।"
"কেন?"
"বাপের সম্পত্তি লোভে।"
"আরে ধুর! বাপের একমাত্র ছেলে সে। বাপ মরলে এমনিতেই সব পাবে। তবে হ্যাঁ। লোকটার হাবভাব কেমন যেন রুড! আচ্ছা দাঁড়া!"

এই বলে টেবিলের তলের বেলটা বাজালো আবির। একটু পর হাজির হলো পিওন। তার মাধ্যমে হেড কন্সটেবলকে ডেকেল পাঠালো সে।
আমাদের থানার হেড কন্সটেবলের নাম আবুল হোসেন। মাঝবয়সী মানুষ সে। পুলিশের চাকরী করছে অনেক দিন। মদ গাজা থেকে শুরু করে এমন কোন নেশা নেই যা সে করে না। তবে খুব কাজের লোক। বিভিন্ন ধরণের লোকের সাথে মেশে বলে খবর জোগাড় করতে তার জুড়ি নেই।
আবুল হোসেন রুমে ঢুকল। সালাম ঠুকে বলল, "আমারে ডাকছেন স্যার?"
"হ্যাঁ। তুমি আজকের ওই বাড়িতে গেছিলে?"
"কোন বাড়ি স্যার?"
"খুন হওয়া বাড়ি।"
"হ্যাঁ স্যার।"
"ঐ বাড়ির ছেলেকে চেনো? এমপির ছেলে?"
"হ্যাঁ স্যার চিনি।"
"গুড। ওর উপর কয়েকদিন নজর রাখো। আর যত পারো খবর জোগাড় করে আমাকে বলবা। ওকে?"
"ওকে স্যার। আসি স্লামুয়ালাইকুম!"


(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.