নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

বিএম বরকতউল্লাহ

জানতে চাই।

বিএম বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফার্স্টবয়

১৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:২১


বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছি। ৫ম শ্রেণীর ফার্ষ্টবয় মনির আজ অনুপস্থিত। স্যারেরা অস্থির ভাবে মনিরের বিষয়ে আমাদের জিঞ্জাসা করছেন, কিন্তু আমরা তার বিষয়ে কিছুই জানি না।
আমাদের ৩ টি সেকশনে ১৬৫ জন ছাত্র। আমার রুল নম্বর ২। যতই পড়ি না কেন, মনিরের সাথে পড়ালেখায় কুলিয়ে উঠতে পারি না। মনে মনে খুব হিংসা করি তাকে। কিন্তু আজ আনন্দ লাগছে না; খুব খারাপ লাগছে মনিরের জন্য।
পরীক্ষা শেষে রনি ও শুভকে নিয়ে আমি মনিরের খোঁজ নিতে বের হয়ে গেলাম।
মনির একটা বস্তিতে থাকে। বস্তিটি পানিতে ভাসছে। ছোট ছোট খুপড়ি ঘর। মনে হলো ঢেউগুলো বস্তির ঘরগুলোকে ঠেলে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করছে।
ঘরে চুপি দিয়ে দেখি, খুঁটির উপর জোড়াতালি দেওয়া কাঠের ওপর বসে আছে মনির। কপালে হাত দিয়ে দেখি তার প্রচন্ড জ্বর। সে কাঁপছে। ঠোঁট-মুখ শুকিয়ে গেছে। তার সামনে একটা টিনের বাসনে চাল ভাজা ও পাউরুটির কিছু অংশ পড়ে আছে। তার বাবা নেই। তার মা ঝি-এর কাজ করতে গেছে। ঘরে সে একা। মনির লজ্জায় ছোট হয়ে বলল, “ভাই আমি তোদের বসতেও বলতে পারছি না। তোরা কেন খালি খালি কষ্ট করছিস? পরীক্ষা কেমন হলো রে বলেই সে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল সে।
বৃষ্টি ও বন্যার জলে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে তার। ঘরের কোণায় দেখলাম তার খাতা, বই ভাসছে। এসব দেখে আমাদের চোখও ভিজে গেল। আমরা চিন্তাও করতে পারি নি, আমাদের ক্লাশের ফার্ষ্টবয় মনির এতটা গরিব।
আমরা চট করে বুদ্ধি পেয়ে গেলাম। আমরা তিন জন একত্রে তিনজনের বাসায় গিয়ে বাবা-মাকে সব খুলে বললাম। তাঁরা আমাদের কিছু টাকা দিলেন। আমরা মনিরের বাসায় রওনা হয়ে গেলাম। যাওয়ার পথে একটা চকি, স্যালাইন, ফিটকিরি ও পথ্য নিয়ে গেলাম। আমাদের হাতে ওসব দেখে তার মার চোখ ছানাবড়া। শেষে আমরা মনিরের হাতে কিছু টাকা দিয়ে চলে এলাম।
স্কুলে এসে স্যারদের কাছে মনিরের বিষয়ে সব বললাম। স্যারেরা বললেন, ‘ভালো কাজ কখনও হারিয়ে যায় না রে।

পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন দিন পরে মনির দুর্বল শরীর নিয়ে স্কুলে এলো। তার বিষয়টি নিয়ে স্যারেরা জরুরি মিটিং করলেন। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় মনিরের পরীক্ষা নেয়া হলো।

পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন সবার চক্ষু ছানাবড়া। এবারও ফার্ষ্ট হয়েছে মনির!





মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:২৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: মনিররাই ফাস্ট হয়। তবে কর্মজীবনে মনিরদের সকলে মিলে পিছনে টেনে ধরে রাখে। কিছুতেই উঠতে দিতে চায় না।

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: আমি ক্লাশ ফাইভ পর্যন্ত সব সময় ফার্স্ট হয়েছি। হে হে---

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: তাই নাকি!
অভিনন্দন।

৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

অন্তরা রহমান বলেছেন: এরকম তলানি থেকেই কেন যেন স্বর্ণসন্তানেরা উঠে আসে।

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৪

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
কারণ সুখে থাকলে ভূতে কিলায় যে!

৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৪

ঢুকিচেপা বলেছেন: খুব সুন্দর একটি গল্প। মেধাবীরা আজীবন মেধাবী।

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৪

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। শুভেচ্ছা নিন।

৫| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০১

ঘরহীন বলেছেন: এরকম কষ্ট করা ছেলেগুলো খুব উপরে উঠে, অথবা মুখ থুবড়ে পরে।

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৫

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
এমনটিই যে কেন হয়।

৬| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:১৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর লেখা । জীবন সার্থক হোক সফল হোক।

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৫

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল।

৭| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২৪

প্রেক্ষা বলেছেন: মনিরদের কেন এত কষ্ট?
সব মনিররা ভালো থাকুক,সুস্থ সুন্দর একটা পরিবেশ পাক।

১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
আপনি অনেক সুন্দর করে মনিরদের শুভ কামনা করেছেন। ভাল লেগেছে।
আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.