নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষাসংস্কৃতিই আমাদের অনন্য পরিচিতি বিশ্ব দরবারে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪২



এই ছোট্ট জীবনে বেশ অনেক গুলো দেশ মহাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। আরও ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা আছে। ভ্রমণের পূর্বে অবশ্যই সেই স্থান সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। হোক বই পড়ে, ট্র্যাভেল গাইড পড়ে অথবা অনলাইনের তথ্য ভাণ্ডার থেকে। নিজের দেশ, নিজের ভাষা বলে বলছিনা আসলেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি সত্যিই অতুলনীয়। যার আছে গৌরব করার মত নিজস্বতা, আছে স্বাতন্ত্র্য গুণাবলি। সুযোগ পেলেই বিদেশী বন্ধু, সহপাঠী এবং সহকর্মীদের কাছে নিজ দেশের স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্টগুলো খুব গর্ব করেই বলি। শুনতে মনে হবে বাড়িয়ে বলছি আসলে মোটেও তা নয়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত,পাকিস্তান হতে পারে আমাদের থেকে উন্নত কিন্তু আমাদের দেশ বা জাতি হিসেবে যে গৌরবাজ্জল ইতিহাস, ঐতিহ্য আছে তা তাদের নেই। না স্বাধীনতার গৌরব না ভাষাসংস্কৃতি। তাঁদের স্বাধীনতা যেমন একটানে মানচিত্র ছিড়ে দুই ভাগ করা তেমনি ভাষাসংস্কৃতির ক্ষেত্রেও অনেক কিছু ধার করা। বিদেশী বন্ধু, সহপাঠী এবং সহকর্মীদের কাছে বলি পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি যারা নিজেদের মাতৃভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি, দিয়েছি তাজা অনেক প্রাণ। আমরাই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্ম দিয়েছি, তোমাদের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আমরা করেছি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট। আমাদের ভাষা সংস্কৃতি এতই উচ্চ মানের, আমাদের ভাষা সংস্কৃতি এতই উচ্চ মানের যে বিশ্বে খুব কমই খুজে পাওয়া যাবে। আমাদের আছে নিজস্ব ভাষা, শব্দ,অক্ষর যা অনেক দেশ বা জাতির নাই। বেশির ভাগ দেশ বা জাতি গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা থাকলেও অনেকেরই শব্দ অথবা অক্ষর নেই, সব ধার করা। বহু ভাষা বা অনেক ভাষা শেখা ভাল। ভাষা আসলে একটি টুলস বা যন্ত্র হিসেবে কাজ করে যার মাধ্যমে বিশ্বকে সহজে নিজের করা যায়। বাংলা ভাষা হল বিশ্বের সপ্তম নম্বর ভাষা। এক নম্বর হল মান্দারিন ভাষা। বিশ্বের এক নম্বর ধনী মিঃ বিল গেটস আফসোস করে বলেছেন তিনি যদি সব ভাষা শিখতে পারতেন তাহলে আরও সুবিধা হত তাঁর জন্য। অবশ্য তিনি কিন্তু মান্দারিন ভাষা রপ্ত করেছেন কারণ চীন দেশের বাজার ধরার জন্য । আমরা বাঙ্গালীরা শিখি হিন্দি আর উর্দু, লাভ কিছু না শুধু নিজেদের সংস্কৃতি বাদ দিয়ে হিন্দি আর উর্দু সংস্কৃতি উপভোগ করার জন্য। আমি একটা জিনিষ খুব কাছে থেকে লক্ষ্য করলাম ব্রিটেনে বসবাসরত বেশির ভাগ বাঙ্গালীরা নিজেদের ভাষা,সংস্কৃতির চাইতে হিন্দি ভাষা,সংস্কৃতির দ্বারা বেশি প্রভাবিত। ব্রিটেনে বাঙ্গালী কমিউনিটিতে আসলে শিক্ষিত লোকের সংখ্যা কম। আমরা কোঠর পরিশ্রম করি ঠিকই কিন্তু আমাদের ভাষাসংস্কৃতির প্রতি খুব যত্নবান নয় যেমনটা ইন্ডিয়ান, পাকিস্তান, আরাবিয়ান কমিউনিটিগুলো যত্নবান। আমরা বিলেতে বাঙ্গালীরা এতটাই অশিক্ষিত যে যেদেশে বাস করি সেই দেশের ভাষা বলতে পারিনা অথচ হিন্দি, উর্দু দেদারছে বলছি। অফিস, আদালত, হাসপাতাল সবখানে আমাদের ইন্টারপ্রিটর বা অনুবাদক লাগে। অনেক ক্ষেত্রে ইন্টারপ্রিটর সময়মত না থাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেমন অফিস, আদালত, ব্যাঙ্ক,বিমা ও হাসপাতালে জরুরী চিকিৎসার জন্যও অনেক লেট বা বিলম্ব করতে হয়। তাও আমরা ইংরেজি ভাষা শিখি না। বর্তমানে ব্রিটেনে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি শেখার প্রবণতা খুবই কম, অবশ্য এর জন্য তাদের পিতা-মাতা মূলত দায়ী। এমনও কিছু লোকজন আমি দেখেছি তাঁরা গর্ব করে বলে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বাংলা ভাষা বলতেই পারেনা। অথচ শুনে অবাক হবেন সেই লোক গুলো কিন্তু ইংরেজিতে কথা বলতে পারেনা। আমি একজন কে জিজ্ঞাস করলাম বাসায় ছেলেমেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলেন? সোজাসাপটা উত্তর তাঁর ছেলেমেয়েরা হিন্দি বোঝে। তার মানে বাসায় হিন্দি চলে। প্রবাস জীবনের প্রথম দিকে অনেক ছোট খাট কাজ করে জীবন নির্বাহ করতে হয়েছে। ওই লোকের সাথে এরকম একটি কাজ করতে গিয়ে আমার পরিচয়। সেখানে কিছু ভারতীয় ও পাকিস্তানী কাজ করত। সে অনর্গল তাঁদের সাথে হিন্দিতে কথা বলত কিন্তু আমি আসলে হিন্দি বলতে পারতাম না। সে আমাকে বলে আমি বাঙ্গালী কিনা? আমি বললাম হ্যাঁ আমি বাঙ্গালী। সে রীতিমত অবাক। বলে আমি বাঙ্গালী অথচ হিন্দি বলতে পারিনা! আসলে বিলেতে বাঙ্গালীরা বিশেষ করে কর্মস্থলে বাংলার চাইতে হিন্দিই বেশি বলে তবে যারা ইংরেজি জব করে তাঁদের কথা ভিন্ন।

আমাদের ভাষা সংস্কৃতি এতই উচ্চ মানের আমরা নিজেরা আসলে উপলব্ধি করতে পারিনা। তবে আশার কথা হলে বিভিন্ন দেশে দেশে প্রবাসী বাংলাদেশি অনেক শিক্ষিত ও সচেতন লোকজন নতুন প্রজন্মের জন্য ভাষা, সংস্কৃতির সাথে বেড়ে ওঠার জন্য বিভিন্ন সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলেছেন। আমাদের স্বাধীনতার বীজ কিন্তু বপন করা হয়েছিল ৫২’র একুশে সালাম,বরকত,রফিক,জববর, সফিকদের আত্নদানের মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতার পক্ষ বিপক্ষ অনেক মতভেদ কিন্তু ৫২’র একুশ বাঙ্গালী জাতির এক হওয়ার চেতনা। আসুন আমরা শুধু ভাষার মাসে নয় জীবনের প্রতিটি স্তরে আমাদের ভাষাসংস্কৃতিতে যাপিত হয়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২২

ভুমিসংকর বলেছেন: হুম, খুব ভালো লাগলো ।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫

বিদ্যুৎ বলেছেন: স্বাগতম আপনাকে সেই সাথে বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও খুব ভাল লাগল। শুভ কামনা সাথেই থাকবেন আর ভাল থাকবেন সব সময়।

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০২

প্রামানিক বলেছেন: অনেক সুন্দর পোষ্ট। খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৫

বিদ্যুৎ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.