নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমার কোন বিশেষ প্রতিভা নেই।আমি শুধু মনেপ্রাণে কৌতূহলী”--আলবার্ট আইনস্টাইন “ভাষা একটি মাধ্যম মাত্র জ্ঞানই আসল”--ফেরদৌসি বিকন

চক্‌চাপড়ী

সৃস্টির সকল কিছুই জানার ইচ্ছা করে স্রস্টা যেটুকু জানার অধিকার দিয়েছেন।”

চক্‌চাপড়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা( তৃতীয় পর্ব)

২৫ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০


বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা(প্রথম পর্ব)
বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞানের আলোকে মানবদেহে রুহ ও আত্মার ইতিকথা(দ্বিতীয় পর্ব)

তৃতীয় পর্ব

ফুসফুস (Lungs):-

Your lungs are organs in your chest that allow your body to take in oxygen from the air. They also help remove carbon dioxide (a waste gas that can be toxic) from your body.
The lungs' intake of oxygen and removal of carbon dioxide is called gas exchange. Gas exchange is part of breathing. Breathing is a vital function of life; it helps your body work properly.(২০)

মানুষের শ্বসনতন্ত্রের একটি অন্যতম অঙ্গ হলো ফুসফুস।আমাদের বুকের বাঁ দিকের হৃৎপিণ্ডের দুপাশ জুড়ে রয়েছে এর অবস্থান। এটা স্পঞ্জের মতো নরম ও কোমল।সে কারণে শ্বাস নেওয়ার সময় বেলুনের মতো ফুলে যায় এবং শ্বাস ছাড়ার পর আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

নাক মানবদেহের ফিল্টারের কাজ করে। ধুলা, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসসহ অনেক কিছুই ফিল্টার করে ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ করে আমাদের নাক।আমরা নাক দিয়ে অনবরত যে বায়ু গ্রহণ করি তাতে নানারকম ধুলিকণা, রোগজীবাণু থাকে এবং তা নাকের লোম ও ঝিলি−তে আটকে যায় এবং বাকি অক্সিজেন যুক্ত বায়ু ফুসফুস টেনে নেয়।মানুষের ফুসফুসের প্রায় ৭০-৯০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে থাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এ্যালিভিওলাই(alveoli-একবচনে এ্যালিভিওলাস) প্রকোষ্ঠ।ফুসফুসের এই এ্যালিভিওলাসের প্রাচীরের কিছু কোষ থেকে সারফেকন্ট্যান্ট (surfactant) নামক এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। শ্বাস নেওয়ার সময় যেসব রোগজীবাণু নাকের লোম ও ঝিলি−তে আটকায় না সেসকল রোগজীবাণুকে এই পদার্থটি ধ্বংস করে দেয়। মূলত ২৩ সপ্তাহের মানবভ্রূণেই এই সারফেকন্ট্যান্ট ক্ষরণ শুরু হয়। এই ক্ষরণের মাধ্যমেই একটি মানবশিশু স্বাধীন সত্তা হিসাবে বিবেচনার যোগ্য হয়ে উঠে।

প্রাণীদেহে নাক দিয়ে বায়ুমন্ডল থেকে অক্সিজেন যুক্ত বায়ু টেনে নেয়াকে শ্বাস গ্রহণ বা প্রশ্বাস বলে।প্রশ্বাসের পর পরই নিঃশ্বাস পর্যায় শুরু হয় এবং আমাদের দেহের উৎপাদিত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ফুসফুসের ব্রঙ্কাস, ট্রাকিয়ার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে এই নাক দিয়েই বাইরে বেরিয়ে যায় । মূলত মানুষের ফুসফুস দুই ভাজ বিশিষ্ট পূরা/ ভেসরাল প্লেউরা (visceral pleura)নামক একটি ঝিলি বা পর্দা দ্বারা আবৃত। ফুসফুসের এই দুই ভাঁজের মধ্যে এক প্রকার পিচ্ছিল পদার্থ থাকে। ফলে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস কাজে, ফুসফুস ও বক্ষগাত্রের সাথে কোন ঘর্ষণ লাগে না।

মানবদেহ অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অতি আণুবীক্ষনিক কোষ দ্বারা গঠিত । এসব কোষের প্রত্যেকটিকেই কোন না কোন কাজ করতে হয় আর তার জন্য দরকার শক্তির। শক্তির উৎস হল তাপ। আর তাপ উৎপাদনের জন্য দরকার দহন বিক্রিয়া । দহনের জন্য দুটি জিনিসের প্রয়োজন তার একটি হল জ্বালানী এবং অপরটি অক্সিজেন। বলার অপেক্ষা রাখে না রক্ত হল মানবদেহের জ্বালানি। রক্ত ও অক্সিজেনের দহণ ক্রিয়ার ফলে দেহাভ্যন্তরে তাপ উপন্ন হয় এবং ঐ তাপ দেহের উষ্ণতা বজায় রাখে।আর মানুষ বেঁচে থাকে।মানবদেহের উষ্ণতা বজায় রাখতে গিয়ে একদিকে তাপ এবং অপর দিকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় । তাপকে আমরা শক্তি হিসাবে ব্যবহার করে যাবতীয় কাজ করে থাকি আর কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে দেহের ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ হিসাবে লোহিত রক্ত কণিকা কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে ফুসফুসে ফিরিয়ে নিয়ে আসে এবং ফুসফুস তার ব্রঙ্কাস, ট্রাকিয়ার মাধ্যমে তা নাক দিয়ে বায়ুমন্ডলে ছেড়ে দেয় । (২১)

মানব দেহের মূল উপাদান(Biochemistry)
মানব দেহের গঠনের মূল উপাদান(Elementary Composition OF human body)হলোঃ-
১.অক্সিজেন শতকরা ৬৫ ভাগ...।
২.হাইড্রোজেন শতকরা ১০ ভাগ...।
৩.নাইট্রোজেন শতকরা ৩ ভাগ...।
৪.ক্যালসিয়াম শতকরা ১.২৫ ভাগ...।
৫.ফসফরাস শতকরা ১ ভাগ...।
৬.পটাশিয়াম শতকরা ০.৩৫ ভাগ...।
৭.সালফার শতকরা ০.২৫ ভাগ...।
৮.সোডিয়াম শতকরা ০.১৫ ভাগ...।
৯.ক্লোরিন শতকরা ০.১৫ ভাগ...।
১০.ম্যাগনেসিয়াম শতকরা ০.০৫ ভাগ...।
১১.লৌহ শতকরা ০.০০ ভাগ...।

এছাড়াও থাকে সামান্য পরিমাণে আরও নানা পদার্থ।যেমন- আয়দিন,মাঙ্গানিজ,কপার,জিঙ্ক,ক্লোরিন,সিলিকন, কোবাল্ট, মলিবডেনাম, প্রভৃতি পদার্থ।এখন দেহে এইসব পদার্থ প্রধানত যেরকমভাবে থাকে তা হলঃ-
১.প্রোটিন/ আমিষ(একই পদার্থের দুটি ভিন্ন নাম)
২.কার্বোহাইড্রেড/শর্করা/গ্লুকোজ(একই পদার্থের ৩টি ভিন্ন নাম)
৩.স্নেহ/ফ্যাট/চর্বি/লিপিড(একই পদার্থের ৪টি ভিন্ন নাম)
৪.ভিটামিন
৫.মিনারেল সল্টস/ খনিজ লবণ
৬.জল HMR (২২)

উপরের তালিকা থেকে বোঝা যায় মানব দেহের গঠনের মূল উপাদানগুলোর মধ্যে কেবল অক্সিজেন নয় আরও কয়েকটি গ্যাসও রয়েছে।এর মধ্যে নাইট্রোজেন অন্যতম । সে জন্য সংশোধন করে বলতে হয় শ্বাসের সাথে আমরা বায়ুমন্ডল থেকে অক্সিজেন যুক্ত বায়ু গ্রহণ করি।

আমরা জানি, অক্সিজেন নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে।শ্বাসের সাথে বায়ু থেকে যদি আমরা শুধু অক্সিজেন গ্রহণ করতাম তবে প্রাণীদেহের অভ্যন্তরে দহন ক্রিয়া এত দ্রুত সম্পন্ন হত যে, উহাতে অত্যধিক তাপ শক্তি উৎপন্ন হত এবং দেহ যন্ত্র বিনষ্ট হয়ে যেত । ফলে প্রাণীর অস্তিত্ত্ব লোপ পেত।(২৩)
মানুষের শ্বাসক্রিয়া ও শ্বসন(২৪)


আমরা নাক দিয়ে যে অক্সিজেন যুক্ত বায়ু গ্রহণ করি তাতে নিস্ক্রিয় প্রকৃতির নাইট্রোজেন গ্যাস থাকে।নিস্ক্রিয় প্রকৃতির এই নাইট্রোজেন গ্যাস ফুসফুসে প্রবেশ করে ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুস্থ অধিক সক্রিয় অক্সিজেন গ্যাসের দহণ ক্রিয়াকে অনেকটা মৃদু করে দেয় যাতে দেহের অভ্যন্তরস্থ দহনক্রিয়া অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে এবং পরিমিত গতিতে সম্পন্ন হয়।এভাবে ফুসফুসেই প্রক্রিয়াকৃত অক্সিজেন রক্তের হিমোগ্লোবিনের সাথে বিক্রিয়া করে অক্সি-হিমোগ্লোবিন তৈরি করে হৃদপিন্ডের বাম নিলয়ে স্থানান্তরিত হয়ে সারা দেহে সঞ্চারিত হয়।

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য শক্তি প্রয়োজন। সে শক্তি কিভাবে উৎপন্ন হয় সেটি আমরা জেনেছি।মানুষের দেহে শক্তি উৎপাদনের মূল উপাদান রক্ত ও অক্সিজেন। দেহের রক্ত তৈরীতে ফুসফুসের ভূমিকা নেই।কিন্তু রক্ত শরীরে যে অক্সিজেন পরিবহন করে সেটির যোগাদার হ’ল ফুসফুস।রক্ত হল মানব দেহের জ্বালানি স্বরূপ। রক্তের এই সন্মান,যশ খ্যাতি,শক্তি কেবল অক্সিজেনের কল্যাণে।অক্সিজেন ছাড়া রক্ত মূল্যহীন,মানবদেহের ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ।

প্রতিনিয়তই মানুষ মারা যাচ্ছে । জীবিত মানুষেরা কোন রকম ক্ষতি ছাড়াই রক্ত দিতে পারলেও কিডনি, চোখ, ফুসফুস ইত্যাদি দিতে পারে না।মৃত মানুষের কাছ থেকে কেবল রক্ত ব্যতীত কিডনি,ফুসফুস,চোখ সবই নেয়া যায়।মরে যাওয়া মানুষদের তো রক্তের প্রয়োজন নেই। তাহলে মৃত মানুষ থেকে রক্ত নেয়া যায় না কেন?কারণ মৃত মানুষের ফুসফুস অচল থাকার কারণে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে না।এজন্য দেহের মৃত্যুর পর রক্ত দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে বোঝা যাচ্ছে মানবদেহে অক্সিজেনই মূল প্রাণ শক্তি।আর অক্সিজেনের যোগাদার হ’ল ফুসফুস। তাহলে কি ফুসফুসে অবস্থান করেই রুহ মানবদেহে অক্সিজেন সরবরাহ করে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখছে?

রক্তে সৃষ্ট কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফুসফুসের মাধ্যমেই নিষ্কাষিত হয় একথা আগেই বলেছি।আমরা মুখ দিয়ে যে কথা বলি সেখানে বাগ্যন্ত্রের সাহায্যে ধ্বনি তৈরি করার জন্য মধ্যস্থদা-র চাপে প্রয়োজনানুসারে বাতাস সরবরাহ করার কাজটিও ফুসফুস করে থাকে।

মানবদেহের বিদ্যুৎ তরঙ্গ হৃদপিন্ড খেকে প্রবাহিত হয়।কিন্তু বিদ্যুৎ তরঙ্গের জ্বালানীর রসায়নটা ফুসফুস থেকে সরবরাহ করা হয়।(২৫)

কৃত্রিম ফুসফুসেই জীবনচলা

The Journal of Thoracic and Cardiovascular Surgery.‘র জুন,২০১১ সংখ্যায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে. জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুই চিলড্রেনস হাসপাতালের চিকিৎসক ও ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা ওয়েন স্টার্ক নামের দুই বছরের এক শিশুর দেহে বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম ফুসফুস সংযোজন করে শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলেন।মুমূর্ষু ওয়েন স্টার্কের হূৎপিণ্ডে ছিল জটিল সমস্যা,তার রক্তনালি এত বেশি সরু হয়ে গিয়েছিল যে ফুসফুসে রক্ত যেতে পারছিল না।চিকিৎসকেরা ধরেই নিয়েছিলেন, শিশুটি বাঁচবে না।

Fighting for life: Owen, pictured at St Louis Children's Hospital in July 2010, after he was placed on the artificial lung (below his feet)(২৬)
শিশুর শরীরে কৃত্রিম ফুসফুস--প্রথম আলো তারিখ: ১৯-০৬-২০১১ শিশুর শরীরে কৃত্রিম ফুসফুস

বিস্ময়ের এখানেই শেষ নয়।কৃত্রিম ফুসফুসের সাহায্যে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন অস্ট্রেলীয় নারী জুন মিডেলটন।বেঁচে থাকার জন্য জুনের ওই লড়াই শুরু হয় ১৯৪৯ সালে। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই দুরারোগ্য পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে যান। বেঁচে থাকার জন্য চিকিত্সকেরা তাঁকে একটি ক্ষীণ সম্ভাবনার কথাও জানান, তা হলো জুনকে বাঁচতে হলে কৃত্রিম ফুসফুসের সাহায্য নিতে হবে। আর এভাবেই একটি কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্রের মাধ্যমে শুরু হয় জুনের ৬০ বছরের জীবনচলা।৮৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে ২০০৯ সালের ৩০ অক্টোবর শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের একটি নার্সিং হোমে মারা যান জুনে।এক্ষেত্রে মিস জুনের দেহেই বিশ্বে প্রথমবারের মত কৃত্রিম ফুসফুস সংযোজন করা হয়।(২৭)

Anniversary: Polio survivor Ms Middleton being awarded a certificate from Guinness World Records at a party to honour her 60th year in the iron lung(২৮)

ফুসফুস ছাড়াই ছয় দিন বেঁচে ছিলেন তিনি!
কালের কন্ঠ ২৯ জানুয়ারী ২০১৭

মানব দেহের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণের জন্য ফুসফুস গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। আর এ ফুসফুস শরীরের বাইরে রেখেই কানাডার এক নারীকে ছয় দিন বাঁচিয়ে রেখেছেন চিকিৎসকরা। কানাডার টরেন্টোর একএক হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
মেলিসা বেনয়েট নামে ৩২ বছর বয়সী ওই নারী ফুসফুসের ভয়ঙ্কর সংক্রমণ নিয়ে এসেছিলেন কানাডার টরেন্টো শহরের এক হাসপাতালে। সেখানে তিনি ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসেন।
চিকিৎসকরা জানান, তিনি জন্ম থেকেই সিস্টিক ফাইব্রোসিসের রোগী। জরুরি চিকিৎসরা তাকে প্রাথমিক পরীক্ষা করেই বুঝতে পারেন, কয়েক ঘণ্টার বেশি বাঁচবেন না মেলিসা। বাঁচাতে হলে তার ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন।
Melissa Benoit lived for 6 days without lungs.(২৯)

ডাক্তাররা প্রাথমিকভাবে চেষ্টা করেছিলেন, নানা রকমের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে রোগীর ওই বিকল হয়ে পড়া ফুসফুস দু’টিকে চালু রাখতে। কিন্তু পারেননি। কোনও ওষুধই ওই রোগীর বিকল হয়ে পড়া ফুসফুস কার্যকর করতে পারছিল না। তার ফুসফুসে জমা ব্যাকটেরিয়াই ওই অ্যান্টিবায়োটিকগুলোকে কাজ করতে দিচ্ছিল না।

সে হাসপাতালের চিকিৎসক সার্জন শাফ কেশবজী বলেন, ‘রোগী যে ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন, তাতে প্রতিস্থাপনের জন্য যে সময়টুকু লাগে, সেই সময়েও ওই ফুসফুস দু’টিকে শরীরে রাখলে রোগীর পক্ষে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যাওয়া ছিল কঠিন।’
তখন লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রেখে ওই রোগীর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কোনও পথ ডাক্তারদের সামনে খোলা ছিল না। আর এজন্য রোগীর শরীরের তখন যা অবস্থা ছিল, তাতে সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করাটাও সম্ভব ছিল না। তার রক্তচাপ দ্রুত কমে যাচ্ছিল। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো এক এক করে অকার্যকর হয়ে পড়ছিল। তাই রোগীর ফুসফুস দু’টিকে তার শরীর থেকে বের করে রেখে রোগীকে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রাখাটা খুব জরুরি হয়ে পড়েছিল। না হলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হাত থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হতো না।
A: Melissa’s lung with severe pneumonia and end stage cystric fibrosis. B: Melissa with no lungs in the critical care unit at TGH. Photo courtesy of UHN.(৩০)

ডাক্তাররা আরও জানান, মেলিসার শরীরে প্রতিস্থাপন করার জন্য এমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না, যার শরীর থেকে একই সঙ্গে দু’টি ফুসফুস নিয়ে নেওয়া যায়। আর তা হাতে আসার পর, অর্থাৎ ফুসফুস ছাড়া লাইফ সাপোর্টে ৬ দিন থাকার পরই মেলিসার শরীরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়। আর ওই ৬ দিন ওই রোগীকে তার অকার্যকর হয়ে পড়া দু’টি ফুসফুস ছাড়াই কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল।এরপর নয় ঘণ্টা ধরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয় ওই রোগীর দেহে। ফুসফুস প্রতিস্থাপনের পর এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন মেলিসা।
Dr. Shaf Keshavjee, Surgeon-in-Chief, Sprott Department of Surgery at UHN, Director, Toronto Lung Transplant Program, and one of the three thoracic surgeons who operated together on Melissa to remove both her infected lungs, explains what the medical team did and why. (Photo: UHN)(৩১)

ওপেন হার্ট সার্জারির কথা বলে এসেছি।যেখানে অপারেশনকালে হার্ট পুরোপুরি থামিয়ে দেওয়া হয় এবং অপারেশন চলাকালীন হার্ট-লাং মেশিন (Heart-Lung machine) দ্বারা রোগীর হার্ট ও ফুসফুসের কাজ চালিয়ে নেয়া হয়। উপরের আলোচনায় বোঝা যাচ্ছে কেবল কৃত্রিম ফুসফুস প্রতিস্থাপন নয়, ফুসফুস ছাড়াও নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা যায়।অথচ রুহ ছাড়া মানুষ বেঁচে থাকার কথা কল্পণাও করা যায় না।অতএব মানবদেহের ফুসফুসেও রুহের অবস্থান নয় এটা পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে।

(চলবে)

তথ্য সূত্রঃ-
(২০) What Are the Lungs? National Heart, Lungs & Blood Institute What Are the Lungs?
(২১) মানব দেহে শক্তির রহস্য –ডাঃ নাসির, আপডেট ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩১ মানব দেহে শক্তির রহস্য
(২২) --মানব দেহের মূল উপাদান(Biochemistry) এনাটমি
(২৩) --বিশুদ্ধ অক্সিজেন মৃত্যুর কারণ!!
(২৪) মানুষের শ্বাসক্রিয়া ও শ্বসন
(২৫) শ্বসন
(২৬) Toddler given world's first artificial lung miraculously survives after accidentally kicking off-switch on his machine
(২৭) কৃত্রিম ফুসফুস নিয়েই ৬০ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি--প্রথম আলো, তারিখ: ০১-১১-২০০৯ কৃত্রিম ফুসফুস নিয়েই ৬০ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি
(২৮)
Polio survivor who spent 60 years in an iron lung dies aged 83
(২৯) (The Canadian Society of Respiratory Therapists) Canadian woman lives for 6 days without lungs
(৩০)
World first: Living without lungs for six days saves a mom’s life
(৩১)
World first: Living without lungs for six days saves a mom’s life

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: এই পষ্টের নাম হলো তিতা পোষ্ট।

২৫ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমার নিজের কাছেও তিতা লাগছে। কিন্তু মূল পর্বে(যেটা শিরোনাম) যাবার আগে আমাকে এই তিতাটাই হজম করে বসে বসে লিখতে হচ্ছে। আর কষ্ট করে আপনাদেরও পড়তে হচ্ছে। তবে আশা রাখছি মূলপর্বে ভাল লাগবে। কারণ মৃত্যু মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।এই মৃত্যুর সঠিক ব্যাখ্যা কেউ দিচ্ছে না। আপনার ঘরে ঢুকে পুলিশ আপনাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ জানেন না কি আপনার অপরাধ? দেশের আইন রক্ষার্থে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যে কাউকে যখন তখন তলব করার অধিকার রাখে। কিন্তু কোন অপরাধে তলব করা হ’ল তা জানার অধিকার আমার আপনার সবার আছে।

মৃত্যু মানব জীবনের অবশ্যম্ভাবী সত্য ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু মৃত্যুর আগে অবশ্যই মানুষের জানা উচিৎ তার দেহে কি ছিল এবং কিসের বিহনে মানুষের মৃত্যু ঘটছে। পৃথিবী কিয়ামতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। এখনও কি মানুষ জানবে না তার দেহের কারিগরের কর্মকাহিনী?

হুম, অনেক লেখা অনেক, বই আছে। কিন্তু সত্যের নির্যাসটুকু আমরা জানিনা। তাই কেবলই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

২| ২৫ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৬

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। এ ধরনের বিষয় নিয়ে লেখা দরকার। লেখাটা পড়তে পড়তে চিন্তা করি, কত দীর্ঘ সময় আর মেধা দিয়েছেন এটা লিখতে গিয়ে।

২৫ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন। চেষ্টা করছি সর্বোত্তম তথ্য তুলে ধরতে।আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ দিলে এবং সাথে আপনাদের আর্শীবাদ থাকলে অবশ্যই তথ্যগুলো মেলে ধরব।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের খুব সুন্দর উত্তর দিয়েছেন।
অন্য কেউ হলে রেগে মেগে অস্থির হয়ে যেত।

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৩

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: মানুষ মাত্রই ভূলের কান্ডারী।ভূল হলে ক্নেউ বলতে পারবে না, একথা যারা আতিলের স্বর্গে বসবাস করে তারাই ভাবে। কিন্তু নিজের খেয়ে নিজের পড়ে অন্যের ভূল ধরিয়ে দেয়াটা দুনিয়ার মহৎ কাজগুলির একটি। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলে ধরিয়ে দেয়ার লোকের খুব অভাব বলেই ঐ আতিলেরা সমাজে গেঁড়ে বসেছে।
আলোচক তখনই স্বার্থক যখন তার সমালোচক থাকে।সমালোচনা শুনে রেগে মেগে অস্থির হয়ে যাওয়া আলোচকের গুণ নয়। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।অশেষ ধন্যবাদ, আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.