নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ শান্তার বিয়ে। বিয়ের কথা হলেই প্রথমে মনে পরে বাহারি খানাপিনা আর গানবাজনার কথা। অথচ আমার কানের কাছে মশা গুনগুন করছে। আমি ভাবতে লাগলাম এটা আসল মশাতো। আজকাল সবকিছু নিয়েই সন্দেহে থাকি। এই যেমন, সকাল বেলা মোরোগের ডাক শুনে ঘুম ভাঙল। আমি মহাবিস্ময় নিয়ে ভাবতে লাগলাম, এই শহরে মোরোগ আসলো কোথা হতে। ভাবতে গিয়ে মনে হল, আরে মোরোগতো আমার বালিশের নিচে। আমি বালিশের নিচ থেকে মোবাইল বের করে অ্যালার্ম অফ করলাম। মোবাইল ফোন আসায় এখন অনেক সুবিধা হয়েছে। যেকোনো জায়গায় চাইলেই সব পশু-পাখির ডাক শোনা যায়, বাহারি সব রিংটোন। কোন একদিন হয়ত কোরবানির বাজারে গিয়ে গরুর হাম্বা শুনে পকেট থেকে ফোন বের করে কানে ধরব আর পিছন থেকে গরু শিং দিয়ে আমার পশ্চাৎদেশে আদর করে যাবে।
গতকাল রাতে শান্তা আমার ফোনে দুটা মেসেজ দিয়েছে। একটা পড়েছি। তাতে আবারো বিয়েতে যাওয়ার রিকোয়েস্ট, আর শেষে তিনটা স্টার দিয়ে লেখা পরের মেসেজটা সময় নিয়ে পড়তে। তিনটা স্টার কেন দিল বুঝতে পারলাম না। তবে এটুকু বুঝতে পারছি, যে মেয়ে বিয়ের আগের রাতে মেসেজ দিয়ে সময় নিয়ে পড়তে বলে, তার সেই মেসেজ পড়ার জন্য উপযুক্ত সময় দরকার। আমি উপর্যুক্ত সময় পাইনি বলে পড়া হয়নি। তাই সেটা আমার ফোনের ডাকবাক্সেই রয়ে গেছে। উপযুক্ত সময় দেখে ডাকবাক্স খুলতে হবে।
একটা পাঞ্জাবী দরকার। বিয়েতে যাব একটা ময়লা টিশার্ট গায়ে দিয়ে তাতো হয় না। টিশার্ট পরে পার্কে গিয়ে বাদাম খাওয়া যায় কিংবা বাজারে গিয়ে লাইট্টা মাছ কেনা যায়, কিন্তু বিয়ের পোলাও কোর্মা খাওয়ার জন্য চুরান্ত ভাবে সেজেগুজে যেতে হয় এটাই নিয়ম। অথচ ঘরে কোন ধোয়া পাঞ্জাবী আছে বলেও মনে পরে না। টিশার্ট পরে গেলে গেট থেকে ঢুকতে দেবে কিনা শান্তাকে ফোন দিয়ে জানা দরকার।
--হ্যালো, শান্তা?
--শালিক ভাই?
--তুমি আমাকে শালিক বলছ কেন? আমার নামতো শাকিল।
--আজকের দিনটা ডাকি। কাল থেকে আর ডাকব না।
--আচ্ছা, ঠিক আছে।
--আপনি আমার বিয়েতে আসবেন না?
--আসতেও পারি। তার জন্য আগে ফুড আইটেম বল। আমি আবার ফুড আইটেম পছন্দ না হলে বিয়েতে যাই না। বিয়ের আয়োজনের সফলতা ডিপেন্ড করে ফুডের উপরে।
--শালিক ভাই, আপনি উল্টা পাল্টা বলে কথা ঘুরানোর চেষ্টা করছেন।
--উল্টা পাল্টা কোথায়। ধর কেউ একজন বলল, "বিয়ে ভালো হয়নি, ছেলে-মেয়ের ম্যাচিং হয় নি। ছেলের গালের ডান পাশে তীল আর মেয়ের কপালে, এইডা কিছু হইল।" আসলে দেখা যাবে মাংসে লবন বেশি হয়েছে, উনি খেতে পারেন নি।ব্যাপারটা বুঝছ?
--শালিক ভাই, আপনি কি কোন দিনই সিরিয়াস হবেন না?
বলতে বলতে শান্তা কাঁদতে আরম্ভ করলো। আমি সিরিয়াস হয়ে ফোন কেটে দিলাম। পৃথিবীতে সব কিছু সহ্য করা যায় কিন্তু মেয়েদের চোখেরজল সহ্য করার ক্ষমতা বিধাতা ছেলেদের দেননি। সে জল ভালোবেসে ঝরে, ভালোবাসা চায়। সে জলের অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। কোন এক অজানা মায়ায় বেধে ফেলে। সে মায়ার নামই হয়ত ভালোবাসা। সরি শান্তা, আমি এ জলের যোগ্য না।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৬
কলমের কালি শেষ বলেছেন: আহারে দুঃখে মন ভারী হয়ে গেল । গল্পটা আরেকটু আগালে ভাল হত ।