নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শঙ্খচিল

রুপন হাবিব রহমান

রুপন হাবিব

রুপন হাবিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান // পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা ও বিশ্বের ২৩ বরেণ্য ব্যক্তির বিবৃতি

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১১

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর মিয়ানমার সরকারের দমন অভিযানের সর্বশেষ অধ্যায়টি ব্যাপক গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। এটি অনেকেই জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বলেও অভিহিত করেছেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গত দু'মাসের শুদ্ধি অভিযানে এ পর্যন্ত কয়েক শ' নিরীহ রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে অনেক নারী-শিশুও রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে এশিয়ার মুসলিম দেশগুলো যখন রোহিঙ্গা ইসু্্যটি নিয়ে স্বোচ্চার, বাংলাদেশ তখন অনেকটাই নিরব, নির্বিকার। এক্ষেত্রে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরোপুরিই ব্যর্থ। দু'একটি বিবৃতি প্রদান করা ছাড়া তাদের যেন আর কিছুই করার নেই।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। তিনি ১৩ নোবেল বিজয়ী এবং বিশ্বের আরও বিশিষ্ট ১০ নাগরিককে রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সরকারের জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর প্রচেষ্টায় সামিল করেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের প্রতি তাঁরা মানবিক আহবান জানিয়েছেন, যেন এব্যাপারে দ্রুত ও একটি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস (২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), হোসে রাসোস-হরতা (১৯৯৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু (১৯৮৪ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), মেইরিড মাগুইর (১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), বেটি উইলিয়ামস (১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), অসকার অ্যারিয়ামস (১৯৮৭ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), জোডি উইলিয়ামস (১৯৯৭ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), শিরিন এবাদি (২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), তাওয়াক্কল কারমান (২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), লেইমাহ বোয়ি (২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), মালালা ইউনুফজাই (২০১৪ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী), স্যার রিচার্ড জে. রবার্টস (১৯৯৩ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ী), এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন (২০০৯ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল বিজয়ী), ইতালির সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী এমা বোনিনো, এসডিজি সমর্থক প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা রিচার্ড কার্টিস, এসডিজি সমর্থক ও লিবীয় নারী অধিকার প্রবক্তা আলা মুরাবিত, দ্য হাফিংটন পোস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক এরিয়ানা হাফিংটন, ব্যবসায়ী নেতা ও সমাজসেবি স্যার রিচার্ড ব্রানসন, ব্যবসায়ী নেতা পল পোলম্যান, সমাজসেবি মে. ইব্রাহীম, ব্যবসায়ী নেতা ও সমাজসেবি জোকেন জাইটজ, মানবাধিকার কর্মী কেরি কেনেডি ও ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রদি।
গত ২৯ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে বিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এই মহতি উদ্যোগের কথা জানা গেলো। মিয়ানমারের অঘোষিত সরকার প্রধান শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আং সাং সুচি এই পদক্ষেপের পর কি প্রতিক্রিয়া দেখান তা এখন দেখার বিষয়। তিনি কি এই বর্বর গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেন, না-কি তার দেশের ক্ষমতাশালী সেনাবাহিনী বর্বর কর্মকান্ড সমর্থন দেন তা দেখতে বিশ্ববাসী এখন উদগ্রিব।

রোহিঙ্গারা পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর একটি। ১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব েকড়ে নে ওয়া হয়।্এরপর থেকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দমন অভিযান ও হত্যাকান্ডের শিকার তারা। গত দুই মাসে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের কয়েক হাজার বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের বাস্তুচু ্যত করেছে। স্থানচ্যুত হয়ে হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পলায়নরত রোহিঙ্গাদের উপর গুলিবর্ষন করা হচ্ছে। এত কয়েক শ নিরীহ রোহিঙ্গা নিহত ও শত শত আহত হয়েছেন। এসব বিভিষিকা থেকে বেঁচে যাওয়া অগণিত নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এমনকি মায়ের সামনে ছোট্ট শিশুদের জলন্ত অগ্নিকূন্ডে নিক্ষেপ করার ঘটনাও ঘটছে। আশ্রয়প্রার্থী লাখ লাখ রোহিঙ্গা বারবার বাংলাদেশের দরজায় করাঘাত করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে ভাগ্যবান মাত্র ৪০ হাজারের মতো গত দু'মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছেন। বাকিরা প্রতিদিনই সীমান্তের নাফ নদীতে নৌকায় করে এসে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে আশাহত হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। বাংলাদেশের এক্ষেত্রে সীমাব্দ্ধতা রয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমনাভিযান থেকে বাঁচতে গত এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা এখন অর্ধ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এদের অনেকেই এখন বাংলাদেশের নাগরিকত্বও পেয়ে গেছেন। বিপুল জণসংখ্যা অধু্্যষিত বাংলাদেশ সরকারকে তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে সীমান্ত বন্ধ করে দিতে হয়েছে। তারপরও এই যাত্রায় গত দু'মাসে অতি নির্যাতিত প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় পেয়েছেন। জাতিসংঘও বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি অনুধাবন করছে। সাম্প্রতিক মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমনাভিযান চলাকালে রাখাইনে কোন মানবিক ত্রাণ সরবরাহকারী দলকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকসহ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে আটকে দেওয়া হয়। এমনকি জাতিসংঘের কোন সংস্থাকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত চিত্র দেখে ও বাংলাদেশে আশ্রয়ের সুবিধাপ্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের জবানি থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতার কথা জানা যায়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




ড: ইউনুসের পক্ষ থেকে বিশাল উদ্যোগ, খুবই দরকারী উদ্যোগ। তবে, এই কথা শোনার পর, আওয়ামীদের ভাত হজম হবে না; এবং রোহিংগারা আওয়ামীদের জাতীয় শত্রুতে পরিণত হতে পারে।

২ দিক রক্ষা করার জন্য, ড: ইুনুসের দরকার ছিলো শেখ হাসিনার সাথে আলাপ করে কাজটি করা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.