নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শঙ্খচিল

রুপন হাবিব রহমান

রুপন হাবিব

রুপন হাবিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গডফাদারদের না ধরতে পারলে জঙ্গি তৎপরতা থামানো যাবে না

৩১ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৫:৪১

প্রায় এক যুগ আগে সিলেটের পূর্ব শাপলাবাগ এলাকা থেকে জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানের গ্রেফতারাভিযানকেও হার মানিয়েছে অপারেশন টোয়াইলাইট নামের ঐ অভিযান । 'দেশে আবারও কি জঙ্গি হামলা আসন্ন'-এই শিরোনামে গত ৮ মার্চ লেখা আমার পোষ্টটি দেওয়ার ঠিক দুই সপ্তাহ পরই দেশে কয়েকটি স্থানে জঙ্গি আস্থানায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লগাতার অভিযান চলছে।
সিলেটে অপারেশন টোয়াইলাইটে রর্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ, ২জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৭জন নিহত হন। তাদের মধ্যে লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ গুরুতর আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ মার্চ রাতে মারা যান। বাকী ৬জন গত ২৪ মার্চ ভোর থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত চলা অপারেশনকালীন জঙ্গিদের বোমা হামলায় নিহত হন। এই অভিযানে আতিয়ার মহলের ভেতরে থাকা ৪ জঙ্গিও নিহত হয়।এই অভিযানটি মূলত সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডাররাই চালান। পুলিশ, রর্যাব, ফায়ার ব্রিগেড তাদের সাহায্য করে। শ্বাসরুদ্ধকর এ অভিযানে আতিয়ামহলে জিম্মি দশা থেকে ৭৮জন নিরীহ মানুষকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সিলেট নগরীর শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্থানা আতিয়ার মহলের আশপাশের সকল বাসা-বাড়ির লোকজনকেও সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরই মূলত অভিযানের পরিসমাপ্তি ঘটানো হয়।
এদিকে, মৌলভীবাজার পৌরশহরের নাসিরপুরে দু'দিনব্যাপী 'অপারেশন হিট ব্যাক' গত ৩০ মার্চ রাতে শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে পুলিশ বা সাধারণ মানুষ নিহত কিংবা আহত হননি। তবে ৭/৮ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরণে ভবনের ভেতরেই নিহত হন। পুলিশ তাদের ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করে। মৌলভীবাজারের বড়হাটে আরেকটি জঙ্গি আস্থানায় এবং কুমিল্লায় অপর আস্থানায় আজ কোন এক সময় অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত হওয়া জঙ্গিবিরোধী অভিযানের লক্ষণে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। মৌলভীবাজারের বড়হাট এবং কুমিল্লায়ও জঙ্গি আস্তানা থেকে হয়ত কাউকে জীবিত আটক করা সম্ভব হবে না। অথচ এসব সন্ত্রাসী জঙ্গিদের জীবিতাবস্থায় গ্রেফতার করাটা রাষ্ট্রের ভবিষ্যত নিরাপত্তা পরিকল্পনার জন্য খুবই দরকার ছিল। এভাবে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়ে কতদিনে দেশে এর মূলোৎপাটন করা যাবে, তা কেউ বলতে পারছে না। আমি আগেই বলেছি, চুনুপুঠি জঙ্গিদের ধরে তাদের মদতদাতাদের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত দেশে এ ধরনের অপতৎপরতা চলতেই থাকবে। এধরনের জঙ্গি তৎপরতার সাথে দেশী-বিদেশী পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। নতুবা তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার মধ্যেও কিভাবে তারা দেশে নাশকতা চালানোর অপচেষ্টা করতে পারতো না। গত বছরে গুলশানের হলি অটিজান বেকারীতে হামলায় দেশী-বিদেশী ২২জন নিরীহ নানুষ নিহত হওয়ার ঘটনার সময় থেকেই এগুলো আইএস'র কাজ বলে দাবি করা হলেও সরকার তা অস্বীকার করছে। সিলেটের অভিযানের পরও নিহত জঙ্গিরা আইএস'র কর্মী বলে দাবি করা হয়। সরকার এবারও তাদেরকে লোকাল প্রডাক্ট বলছে।
গত সপ্তাহে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টারে এক ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে চারজনকে নিহত করার পর একজন পুলিশ কর্মকর্তাকেও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্য পুলিশ গুলি করে ঐ হামলাকারীকে হত্যা করে। এরআগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ব্যস্ততম একটি বিমানবন্দরে টহলরত নিরাপত্তারক্ষীদের একজনের কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে তাকে জিম্মি করে ব্যাপক হত্যালীলা চালানোর প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু অন্য নিরাপত্তারক্ষীদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমাত্তার কারণে ও তাদের জিম্মি হওয়া সহকর্মী কৌশলের কাছে হামলাকারী পরাস্ত হয় এবং সেনাদের গুলিতে নিহত হয়। এ দুটি ঘটনায়ই দেখা যায় হামলাকারী ছিল আত্মঘাতি। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী মৌলবাদীদের হামলার সাম্প্রতিক ধরন এমনই। এদের কোন ধর্ম নেই, এরা শুধুই সন্ত্রাসী। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে মনে হচ্ছে, জঙ্গিরা আত্মঘাতি আচরণ করছে। 'অন্যকে মারো, নিজে মরো-তবু ধরা পড়তে নেই'-এই তাদের বর্তমান কৌশল। ধারণা করা হচ্ছে, গডফাদারদের পরিচয় বেরিয়ে আসবে, তাই হয়ত তাদের নির্দেশেই চুনো-পুঠি জঙ্গিরা আত্মঘাতি হচ্ছে। আর বাংলাদেশে জঙ্গি গডফাদাররা সাধারণ মানুষের ধর্মভিরুতা, বেকারত্ব, হতাশার জায়গাগুলো খোঁজে বের করে সচ্ছল-অসচ্ছল নির্বিশেষে তরুণদের ক্রমাগতভাবে তাদের দলভুক্ত করছে। এ অপতৎপরতা যে কোন মূল্যে থামাতে হবে। সরকার ও বিরোধীদল একে অন্যকে মৌলবাদের মদতদাতা বলে বিরামহীম অভিযোগ করে যে ঘৃণ্য রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে, তা বন্ধ করে জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই এই নরকের কীটদের অপতৎপরতা থামাতে হবে।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তাদের সহযোগীদের ফাঁসি কার্যকর হবার কথা রয়েছে। এ সময়ে স্বাভাবিকভাবেই জঙ্গিরা বসে থাকবে না। এ প্রস্তুতি নিশ্চয়ই সরকারের আছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৫:৫৬

অগ্নিবেশ বলেছেন: এদের কোন ধর্ম নেই, এরা শুধুই সন্ত্রাসী।
আর বাংলাদেশে জঙ্গি গডফাদাররা সাধারণ মানুষের ধর্মভিরুতা, বেকারত্ব, হতাশার জায়গাগুলো খোঁজে বের করে সচ্ছল-অসচ্ছল নির্বিশেষে তরুণদের ক্রমাগতভাবে তাদের দলভুক্ত করছে।

একবার বলছেন এদের কোনো ধর্ম নেই, আবার বলছেন এদের ধর্মভিরুতা আছে। কোনটা ঠিক?

২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৭:৩৫

নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: গডফাদারদের ধরতে হবে, জঙ্গী অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে। তা নাহলে জঙ্গীবাদ নির্মুল হবে না।আর তরুনদের বিপথগামী হবার দায় কেবল মাবাবাদের ওপড় ছেড়ে দিলে চলবে না। আজকের ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের যুগে ছেলেমেয়ে, কার সাথে মিশছে কার পাল্লায় পড়ছে তা বাবামাদের পক্ষে জানা একেবারেই অস্মভব। তাই সামাজিকভাবে এর মোকাবেলা করতে হলে আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বয়ান দেয়া দরকার যে জঙ্গীরা ইসলাম ধর্মকে ভুলভাবে ব্যখ্যা করে ইসলামকে কলুশিত করছে। তাই জঙ্গীদের অপকর্মের দায় একান্তই তাদের, ইসলামের নয়। মসজিদে, টিভিতে এই প্রচারনা ব্যপক আকারে চালাতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.