নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সরোবরে সৌরভ জাগ্রতচিত্তে !!জীবনে অনেক ঘুমিয়েছি এখন জেগে থাকতে চাই! !!

হ্যা সৌরভ

সরবরে সৌরভ জাগ্রতচিত্তে! !

হ্যা সৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যর্থতাময় সফলতা নাকি সাফল্যময় ব্যার্থতা!!

০৩ রা জুন, ২০১৪ রাত ২:৫২

আবারো আসছে ভর্তিযুদ্ধ ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভর্তি পরীক্ষার তারিখও দিয়ে দেয়া হয়েছে । আজ আমি আমার জীবনে এই সময়টার সম্পূর্ন ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ পোষ্ট দিবো । অহংকার ছাড়া পোষ্ট টা থেকে কেউ যদি কিছু খুঁজে না পান তবে নিজের লেখকসত্ত্বাকে গালি দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই ।



প্রত্যেকটি ব্যার্থতার পর আমাকে বাসায় আসতে হয়েছে ঢাকা থেকে বাসে করে মনে একরাশ গ্লানি নিয়ে ।তাই ঢাকাফেরত বাসের সাথে আমার কষ্টগুলোর একটা সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিলো |



ব্যার্থতা নম্বর ০১: H.S.C রেজাল্ট দিলো আমি পেলাম নরমাল এ+ ,তথাকথিত গোল্ডেন এ+ পেলাম না, বাংলা এবং ইংরেজিতে মিস। আমাদের কলেজে আমি সহ মোট ২জন এ । টোটাল ডিজাস্টার রেজাল্ট।BUET এ অন্তত পরীক্ষা দেয়ার যোগ্যতা হরানো |



ঢাকাফেরত বাসে: নিজেকে দেয়া কৃত্রিম শান্তনা,এই রেজাল্ট নিয়েও মেডিকেলে চান্স পাওয়া যায়। আর কেউই তো গোল্ডেন এ+ পায়নি আমাদের কলেজে। কষ্টের মাত্রা ৩৩%।



ব্যার্থতা নম্বর ০২: রেটিনা থেকে মেডিক্যাল কোচিং শেষে মেডিক্যাল পরীক্ষায় ওয়েটিং টাইটেল পাওয়া ।



ঢাকাফেরত বাসে: নিজেকে দেয়া কৃত্রিম শান্তনা, হয়নি তো কি হইছে । ওয়েটিং থেকে টানবে তো আমার । আর তাছাড়া ঢাকার বাইরের মেডিকেলে চান্স পাওয়ার চেয়ে ঢাবিতে পড়াই ভালো । কষ্টের মাত্রা ৮৭%।



ব্যার্থতা নম্বর ০৩: টেক্সটাইলে ৪০০২ সিরিয়াল। এখানেও ফেইল।



ঢাকাফেরত বাসে: এইবার বাসে চড়তে হয়নি কারণ তখন ঢাকাতেই ছিলাম। নিজেকে দেয়া কৃত্রিম শান্তনা.,আমি তো কটন আর ট্যাট্রন এর পার্থক্যই বুঝি না। আমার মত গাধার দ্বারা টেক্সটাইল পড়া কি সম্ভব নাকি? কষ্টের মাত্রা ১৩%।



ব্যার্থতা নম্বর ০৪: ঢাবি এর ঘ ইউনিটে টোটাল ১৩৫ মার্কস পেয়েও (শুনেছিলাম ১৩৩ মার্কস এ টানছে) ফেল। কারণ আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে পেয়েছি ৭.৫ যেখানে ন্যূনতম পাস মার্ক ৮ ।



ঢাকাফেরত বাসে: নিজেকে দেয়া কৃত্রিম শান্তনা,আরে আমি তো সাইন্সের ছাত্র,আর্টসের আমি কি বুঝি চান্স পাইলেও কি পড়তাম নাকি,আর পড়লেও একজন ইডিয়েট ছাত্র হব। ঢাবি ক ইউনিটে হতে পারে,একবার করে "জয়কলি" তো শেষই করে ফেললাম। কষ্টের মাত্রা ২৫%।



ব্যার্থতা নম্বর ০৫: ঢাবি এর ক ইউনিটে ১৪৩(৬৯ মার্কস অবজেকটিভ) মার্কস। হ্যা এবার ওয়েটিং ৬২০৬ তবে চান্সের সম্ভাবনা কম।



ঢাকাফেরত বাসে: নিজেকে দেয়া কৃত্রিম শান্তনা, শান্তনার স্টক শেষ। নিজের সামর্থ্যের উপর সব ভরসা শেষ। আমি একটা অযোগ্য সন্তান। দুনিয়াটা আমার অর্থহীন।

আমি চেষ্টা করছিলাম কিন্তু প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ব্যার্থ হচ্ছিলাম। আমি শুনেছিলাম "FAILURE IS THE PILLER OF SUCCESS." তাহলে আমি তো পাচটা পিলার পেলাম,এই পাচটা পিলার দিয়ে তৈরি হবে তো আমার সফলতার দালানকোঠা?হতাশ ছিলাম আমি,Spacificly বললে বলতেই হবে শুধুমাত্র একজনের অসীম সাপোর্ট আমাকে তখনও স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। আর সে হচ্ছে আমার বড়ভাই #Rubaiat_Islam । এই সময় সান্ত্বনাও বিরক্তিকর লাগতো । সে আমাকে ততো সান্ত্বনাও দিতো না । কেনো জানি মনে হতো সে এমন এক ডাক্তার যে জানে কখন কি পরিমান সান্ত্বনার ডোজ আমার দরকার । আমার পরিবারের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। তারা কেন যেন আমার উপর তাদের প্রত্যাশার ভার চাপিয়ে দিতো না । তবে সমস্যা ছিলো চায়ের স্টলে । সেখানে আমার প্রিয় কিছু শিক্ষকের আমার যোগ্যতা নিয়ে ছাড়া উদার বাণী বাতাসের বেগে আমার কানে চলে আসতো । সারাদিন ঘরে বসে পড়তে পারতাম না তাই আমি হয়ে গিয়েছিলাম নিশাচর । এর মাঝে আমার কিছু বন্ধুদের ছোট্ট খোঁচাও সহ্য করতে হয়েছে । মফস্বল শহরের একটাই সমস্যা এখানে দুই একজন ছাত্রের উপর থাকে অসীম প্রত্যাশার চাপ । আমি কোন অস্ত্র পাচ্ছিলাম না যাতে মানুষের ছোড়া বিষবাণ থেকে মুক্তি পাই। অন্যের সাফল্যের খবর যতই শুনছিলাম নিজের বিবেক ততই নিজেকে ধ্বংস করে দিচ্ছিল । ঢাকার বাইরে পড়ব না বলে শাবিপ্রবি বাদে ঢাকার বাইরে কোথাও ফরম তুলিনি । মনে হচ্ছিল কি ভুল করলাম ? আমার মত ছাত্রের জন্য Choice And Passion are a Big luxury.



এখন আর কোথাও ফরম তোলার সময়ও নেই । আমার সামনে ছিলো জাবির পরীক্ষা । কিন্তু জাবির পরীক্ষার রুটিনই দিচ্ছিলো না ভার্সিটির আভ্যন্তরীন সমস্যার জন্য । আমার আব্বু আমার কলেজের ই টিচার এবং তার কলিগদের ছোড়া সান্ত্বনার মাঝেও ছিলো তীব্র তাচ্ছিল্য । শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও আমি বলছি কখনো কখনো জীবনের চাকা থামাতেও ইচ্ছা করেছিলাম,কারন নিজেকে নিছক এক পরাজিত সৈনিক মনে হচ্ছিল । চলে যেতাম আমাদের ওখানকার কালিকাপুর ব্রীজে একাই। হতাশা ছিলো সেখানেও। আমি জানতে পারলাম অযোগ্যতার সাথে গিফট হিসেবে কাপুরুষতা ফ্রি পেয়েছি আমি। ফিরে আসতাম যুদ্ধে যাওয়ার প্রেরণা নিয়ে। এইসময় জানলাম কেনো বলা হয় সাফল্যের জন্য ব্যার্থতা আবশ্যক, শিখলাম কৃত্রিম হাসির মাধ্যমে কিভাবে কষ্ট লুকাতে হয় । এই সময় পাওয়া একাকিত্ব আমাকে জীবনের প্রকৃতি সম্পর্কে শিখিয়েছে। যা শিখিয়েছে তা অবর্ণনীয়, তা শুধু অনুভূতি সাপেক্ষ । এবং সেই অমর বাণী,“মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে” কিংবা “ব্যার্থতার পর সফলতা ধরা না দিলে ভাবতে হবে পিকচার আভি বাকি হে।”

অবশেষে ধরা দিল সেই অধরা,



অতিক্ষুদ্র সফলতা নম্বর ০১: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাসি,মাইক্রবায়লজি সহ ৭টি বিষয়ে চান্স পাওয়া ।



ঢাকাফেরত বাসে: অকৃত্রিম,অসীম আনন্দ ভাসা আমি,“হে আল্লাহ!অনেক ব্যার্থতার পর পাওয়া এই অতিক্ষুদ্র সফলতার সমাপ্তি যেন না ঘটে। এটা যেন কোন একটা যাত্রার শুরু হয়।”

আজ যখন ব্যার্থতার বিষবাণীমাখা যুদ্ধকে পরাজিত করার অস্ত্র আমি পেয়ে গেছি তখন কেউ আর আমাকে যুদ্ধেই ডাকে না!!! আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ কারণ আমি পেয়ে গেছি এই পার্থিব যুদ্ধে জয়ী হবার সবচেয়ে দামি হাতিয়ার “অ্যান্টিব্যার্থতা:লেটেস্ট ভার্সন"আমি জানি এই অস্ত্র দিয়ে জীবনের সকল যুদ্ধে জয়লাভ সম্ভব নয় তাই এই অস্ত্রের আপডেট আমি খুজতেই থাকবো | সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন­ |

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৪ রাত ৩:০৪

পংবাড়ী বলেছেন: আমাদেরকে সবার ইচ্ছা মত বিশ্ব বিদ্যালয়ের ব্যবস্হা করতে হবে, পারবেন?

২| ০৩ রা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩

হ্যা সৌরভ বলেছেন: বাংলাদেশে যে পরিমান Public varsity আছে তাতে আপনি যা চাচ্ছেন তা করা সম্ভব নয় । তবে যদি Private varsity মিন করে থাকেন তবে বলব আপনি চাইলেই আপনার মত যেকোন Private varsity তে পছন্দমত Subject এ ভর্তি হতে পারবেন । আর আমি যদি পারতাম তবে সত্যিই আপনি যা চাইছেন তা করার চেষ্টা করতাম । ছাত্ররা তার পছন্দমত বিষয়ে পছন্দমত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে এই কামনা তো সবাই ই চায় । কিন্তু প্রতিষ্ঠান স্বল্পতা হেতু ভর্তিপরীক্ষা নিয়ে বাছাইকরন প্রক্রিয়া ছাড়া তাই এখন আর কোন বিকল্প আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে তো দেখি না ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.