নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের পথিক

হেৃদওয়ানুল জান্নাহ

হেৃদওয়ানুল জান্নাহ

হেৃদওয়ানুল জান্নাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও সমকালীন ভাবনা।

২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৩৬

(১)
জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট; মুক্তি সেখানে অসম্ভব।সত্যিই তাই। সংকীর্ণ ও সংকুচিত এলুয়া জ্ঞান প্রকৃত মুক্তি দিতে ব্যর্থ।আর যেখানে মুক্তি নেই ‍সেখানে সুখ-শান্তি নেই,নেই উন্নতি ও সমৃদ্ধি।যে সমাজ মুক্ত নয় অর্থ্যাৎ পরাধীন, সে সমাজের মানুষগুলো চিন্তারুদ্ধ কারাগারে বন্দি।
যে জাতির মানুষেরা স্বাধীনভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে পারে না, যারা জীবন-জগৎ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখে না;তাদের আমৃত্যু অন্যের গোলামী করতে হয়।সেটি হতে পারে অন্য দেশের ভিন্ন মানুষের জীবনাদর্শ,অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মতবাদের দাসত্ব করা।
সমাজে অন্যায়,অপরাধ হওয়ার কারণ কি? সমাজে বসবাসরত মানুষগুলোর মধ্যে কেউ কেউ খেকো বা হিংস্রাত্বক হয়ে ওঠে কেন?কোন কারনে মানুষ হয়ে একজন আরেকজন মানুষকে হত্যা করতে পারে? একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে সহ্য করতে পারছে না কেন? কেন সবাই আক্রমনাত্মক হয়ে উঠছে? মানুষের ভেতরের স্যাক্রিফাইস বোধদয় কোথায় চলে গেল?
এর অনেক সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে প্রথম ও প্রধান কারণ হল অজ্ঞতা আর অন্ধত্ব।অর্থ্যাৎ যে বা যারা অন্যায়-অপরাধ করছে তারা আসলে অজ্ঞ ও অন্ধ।এখন একটি প্রশ্ন হল-এই মানুষগুলো অজ্ঞ বা অন্ধ কেন?এর বিস্তর ব্যাখ্যা, বিশ্লেষন প্রয়োজন।সেই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষনে অনেক কারণ বেরিয়ে আসবে।তবে প্রথম ও প্রধান কারণ রাষ্ট্রের ব্যর্থতা আর বৈষম্য।

(২)
শিক্ষা বা জ্ঞানই মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।শিক্ষার দ্বারাই ব্যক্তির চিন্তা,ভাবনা ও কল্পনার বিকাশ সাধিত হয়।শিক্ষা মানুষের হৃদয়কে সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত করে আর সেই আলোয় ব্যক্তি ভালো/মন্দ স্পষ্টরুপে চিনতে পারে।একজন প্রকৃত জ্ঞানী মানুষ কখনো অন্যায়-অপরাধ করতেই পারে না।যদি লেভেল লাগানো তথাকথিত কোনো শিক্ষিত মানুষ অন্যায় বা অপরাধ করে, তাহলে সে তো জ্ঞানী মানুষ নয়ই, সে বরং অজ্ঞ, অন্ধ দুটোই।
রাষ্ট্র যখন তার প্রতিষ্ঠান (স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা মাদ্রাসা)দিয়ে শিক্ষিত তথা জ্ঞানী মানুষ উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়,ঠিক তখন থেকেই অজ্ঞ-অন্ধ মানুষের জন্ম হতে থাকে।আর অজ্ঞ-অন্ধ মানুষগুলোর অন্যায়-অপরাধে সমাজটা শ্বাস-নিশ্বাস বন্ধ করে মরতে বসেছে আজ।
আর ঠিক এই সময় দম বন্ধ হয়ে মরতে বসা সমাজটাকে বাঁচাতে জ্ঞানের মশাল জ্বালিয়ে আলোর পথ দেখাতে দুর্বার কল্লোলে আবির্ভুত হয় “বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র।” আলেকিত মানুষ তৈরির মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে আর আলোকিত মানুষ দিয়ে সত্য,সুন্দর,শান্তি ও সমৃদ্ধির রাষ্ট্র বিনির্মানের উদ্দেশ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে জ্ঞানের ও সৌন্দর্যের প্রতিষ্ঠান বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র।বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র তাঁর দীপ্ত কর্ম-কান্ডের মধ্য দিয়ে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে দেশব্যাপি।সে চায় সমাজের প্রতিটি মানুষ অজ্ঞতার ঘুম থেকে জেগে উঠুক জ্ঞানের আহ্বানে।চিনে নিক নিজেকে,জেনে নিক নিজের দায়িত্ব।আর বেরিয়ে পড়ুক বিশ্বভুবনে তার দায়িত্ব পালনের জন্য।
এভাবেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মা-বাবার মত অভিবাবক হয়ে সমাজের সন্তানদের ভালো মানুষ বানাতে চায়।
আজকের ছেলে-মেয়েরাই যেহেতু আগামী দিনের বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবে,তাই তাদের সৎ,যোগ্য,দক্ষ ও দেশপ্রেমিক করে গড়ে তোলার মানসে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
মানুষকে তার আত্মপরিচয় জানাতে, মানুষের মাঝে নৈতিক মুল্যবোধ জাগ্রত করতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তাঁর ভ্রাম্যমান লাইব্রেরীর মাধ্যমে পৌছে যাওয়ার চেষ্টা করছে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে, পাড়া-মহল্লায় তথা প্রতিটি ঘরে ঘরে।

(৩)
আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষার্থী আর শিক্ষকের মধ্যকার সম্পর্কটা জ্ঞানের,ভালবাসার,শ্রদ্ধার,গভীরতার ও বন্ধনের না হয়ে সম্পর্কটা হয়েছে যান্ত্রিক এবং বানিজ্যের।ফলে চারিত্রিক,নৈতিক, যোগ্য,দক্ষ ও দেশপ্রেমিক মানুষ তৈরি হচ্ছে না।শিক্ষার্থী শিক্ষকের কাছ থেকে কোনো সুমহান জীবনাদ্দেশ্য বা গন্তব্য জানতে পারছে না।পরিক্ষায় পাশ করা কিংবা শুধু সার্টিফিকেটের জিন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্পর্ক হওয়া দেশ ও জাতির জন্য ভয়াবহ এবং ধ্বংসাত্মক।

অপরদিকে কালের পথনির্দেশক হয়ে রুপ,রস আর প্রাণ জ্ঞানের নতুন পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেবার জন্য এদেশের ছেলে-মেয়েদের যোগ্য ও দক্ষ করে সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র যে শিক্ষকের ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে তা স্বরণে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

আমাদের দেশের অকেজো আর অফলা এলুয়া শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে চিন্তাশীল, স্বাপ্নিক, মননশীল, সৃজনশীল, সাংস্কৃতিক,হৃদয়বান এককথায় আলোকিত মানুষের যত গুন ও বৈশিষ্ট্য থাকে সেই আলোকিত মানুষ তৈরি করতে পারেনি, বরং উল্টো হৃদয়হীন ও সাংস্কৃতিক রুচি বর্জিত শিক্ষিত রোবট তৈরি করেছে এবং করছে, সেখানে বিকল্প হিসেবে আঁশা জাগানিয়া কর্মকান্ড ও কর্মসুচির মাধ্যমে ছেলে-মেয়েদের হৃদয়বান মানুষ করে গড়ে তুলতে অনন্য ভুমিকা পালন করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কবিতা উৎসব,বই পাঠ প্রতিযোগীতা, বিতর্ক উৎসব,চারু-কারু উৎসব, সঙ্গীত বা নৃত্যানুষ্ঠান প্রভৃতি সৃজনশীল-মননশীল ক্রিয়া-কর্মই তার প্রমাণ।

তবে সত্য কথা যা দু:খজনক তা হল, ৩৫ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্র কোনো বড় ধরনের জ্ঞানভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। সমাজের সর্বস্তরের, সকল ধর্মের, সকল জীবনাদর্শের মানুষেরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাথে সেই অর্থে যুক্ত হয়নি। সৃষ্টি হয়নি কোনো জাগরণ। মানুষ একটি জ্ঞানভিত্তিক, যুক্তিনির্ভর এবং বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ বিপুলভাবে অনুভব করেনি বা করছে না।যারা বিষয়টি উপলপ্দি করে তাদের সংখ্যা মুষ্টিমেয়।
সমাজের খেটে খাওয়া মেহনতি শ্রমিক মানুষগুলো সেই অর্থে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সম্পর্কে জানে না বা তারা সেইভাবে সম্পৃক্ত নয় বললেই চলে। কিন্তু আমাদের ভুললে চলবে না যে, যাদের সঞ্চিত শ্রমের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে সমাজের প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাঠামো; সেই মেহনতি দরিদ্র শ্রেণী যাদের প্রাণে আগুন জ্বলে, তাদের দ্বারাই সমাজের সংস্কার ও পরিবর্তন সাধিত হয়। ডাকলে তাদেরকেও ডাকতে হবে এই জ্ঞান মন্দিরে জ্ঞান উপাসনার জন্য।

(৪)
এই জগতে দুই শ্রেনির মানুষ আছে। এক শ্রেণী হল তারা যারা চিন্তা-ভাবনা করে।এই গোষ্ঠিই কিছু করে এবং পৃথিবকে নেতৃত্ব দেয়।এদের সংখ্যা কম। অপরদিকে আরেক শ্রেণী হল তারা যারা চিন্তা-ভাবনা করে না।এই শ্রেণী শাষিত বা শোষিত হয় তাদের দ্বারা যারা চিন্তা-ভাবনায় এগিয়ে। চিন্তা না করা শ্রেণির মানুষের সংখ্যাই বেশি। যাদেরকে আমরা বলি সাধারণ মানুষ।
আমার মনে হয়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আরো চিন্তা জাগানিয়া বই প্রকাশ করা উচিত, যাতে তার পাঠক শ্রেণী সমাজের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য তথা সারা পৃথিবীর জন্য চিন্তা-ভাবনা করতে পারে গভীরভাবে এবং বিশ্বকে পথ দেখাতে এই জ্ঞানপিপাসুদের মধ্য থেকেই যেন সেই মানুষটি বা সেই নেতৃত্ব বেরিয়ে আসে যা পিড়ীত, বঞ্চিত ও লাঞ্চিত মানুষের আকাঙ্খিত। মানুষের হৃদয়কে ছুয়ে যায় আর তার মনজগতে বিরাট ধরনের কম্পন যেন সৃষ্টি হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়ার মাধ্যমে।

চিন্তা-ভাবনা হল পিতা-মাতা আর জ্ঞান হল সেই পিতা-মাতার সন্তান।অর্থ্যাৎ,আজকে যা জ্ঞান তা গততে ছিল চিন্তা-ভাবনা।এজন্যই আইনস্টাইন বলেছেন,“জ্ঞান নয়,চিন্তাই বেশি গুরত্বপুর্ণ ও প্রয়োজনীয়”।
এখন কথা হল-একটি জাতির মানুষগুলোকে চিন্তাশীল ও ভাবুক করে গড়ে তুলতেই প্রয়োজন শিক্ষা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের দেশের মিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এদেশের ছেলে-মেয়েদের যান্ত্রিক রোবট বানিয়ে সরকারের বা বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের দাস বানানো ছাড়া আর কিছুই করছে না।একদম ইংরেজ শাষন থেকে বর্তমান সময় অবদি এইভাবেই চলে আসছে।
স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানুষের সবচেয়ে বড় ও প্রধান অধিকার নিজের মত হওয়ার অধিকারকে সম্পৃর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে।কথিত এলুয়া শিক্ষিত লোকগুলো চিন্তা-ভাবনা করছে না সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য।
আমরা সাহস আর অভয় নিয়ে বলতেই পারি- আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা,স্কুল, কলেজ,প্রাইভেট,কোচিং এসব হল এমনই উৎপাদন কারখানা যা দেশের নাগরিকদের সরকারের গোলাম বা দাস বানানোর এক মহাকর্মযজ্ঞ ছাড়া আর কিছুই নয়।কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য রোবট ব্যবহার করলে যেমন ঐ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বেড়ে যায় বহুগুনে আর রোবট দিয়ে যেকোনো কাজই করা যায়-সেটি অন্যায় হোক,ভুল হোক রোবট তা বুঝতে পারে না এবং প্রতিবাদ করে না।তেমনি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দীক্ষাহীন, আদর্শবিহীন,হৃদয়হীন শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত রোবট তৈরী করছে আর রাষ্ট্র নামক উৎপাদন কারখানায় এসব ডিগ্রিধারী রোবট মালিকের (সরকার)আজ্ঞা পালনে যন্ত্র হয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সে যা উৎপাদন করছে, যেভাবে করছে, যাদের জন্য করছে তা এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। ফলে তার মালিক (সরকার) যদি তাকে দিয়ে অপরাধ-অন্যায়ও করায় কিংবা মালিক (সরকার) যদি জনগণের উপর জ্বুলুম-নির্জাতনও করে অথবা দুর্নীতি-প্রতারণাও করে এর কোনো প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করার মনবাসনা পর‌্যন্ত হয় না এসব ডিগ্রিধারী রোবটগুলোর।
মালিক (সরকার) এভাবে চায় ক্ষমতা দির্ঘায়ীত করতে ।
এজন্যইতো আমরা আজ সমাজের মানুষগুলোকে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যেতে দেখছি। সবাই কৃত্তিমভাবে বোবা আর অন্ধ হয়ে যাচ্ছে।পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে। স্বামী-স্ত্রীর সুন্দর সম্পর্ক সন্দেহে আর পরকিয়াই আচ্ছন্ন হচ্ছে।
ব্যক্তি শুধু নিজেরটাই হিসেব করছে।নিজের প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদ করে অথচ সমাজের বৃহত্তর বিষয় নিয়ে কোনো প্রকার মাথা ব্যাথা নেই তাদের।কিন্তু তাদের এরকম দৃষ্টিভঙ্গি আর সেনুযায়ী ক্রিয়া-কর্ম যে বোকামী আর যেটি বোকামী তার পরিনতী যে খুব খারাপ হয় তা তারা বুঝতেই পারছে না বা বুঝতে চাচ্ছে না।বুঝবেই বা কি করে? তাদের বোধশক্তিইতো অকেজো করে দেওয়া হয়েছে।

আত্মকেন্দ্রিক মানুষগুলো এটি বোঝে না যে, সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে বা অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কা গায়ে মেখে আমাদের এই সমাজের বাইরে মঙ্গল গ্রহের কোনো সমাজে গিয়ে বসবাস করতে পরবে না।তাকে আমাদের সমাজেই বসবাস করতে হবে।কিন্তু আমাদের বসবাসরত এই সমাজ যদি বিশৃঙ্খল হয়, সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি দুর্বল বা ভঙ্গুর হয় কিংবা সমাজের কাঠামো যদি সঠিক না থাকে, তাহলে সে এই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েও, বাড়ি-গাড়ি করেও সুন্দর ও শান্তিপুর্ণভাবে বসবাস করতে সামর্থ্য হবে না।
বন্যা, ভুমিকম্প বা জ্বলোচ্ছাসের সময় যদি ঐ অঞ্চলে কেউ যাত্রানুষ্ঠান করতে চায় চিত্ত বিনোদনের জন্য, তাহলে তাদের মনুষ্য সমাজের জীব আর বলা যায় না মোটেই।

(৫)
কোনো জাতির জাগরণ,উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন জাতীয় চেতনা, ‍সুনির্দষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, চিন্তা ও ভাবনার দিক থেকে উন্নত পর্যায় আর নেতৃত্ব সমৃদ্ধ রাজনৈতিক দল।
আরো প্রয়োজন জাতীর সকল লোকের মধ্যে ঐক্যতা আর পারস্পরিক সম্মানবোধ।তাহলেই কোনো জাতি উদ্যম আর উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে উন্নয়নের দিকে,সমৃদ্ধির দিকে, প্রগতি ও সভ্যতার দিকে।যার উদাহরণ-চীন,জাপান,মালয়েশিয়া,সিঙ্গাপুর এবং আমেরিকা ও ইউরোপের দেশসমুহ। মুসলিম বিশ্বের মধ্যে ইরান।
আমাদের অবশ্যই সকল মত,পথ,আদর্শ,বিশ্বসের উর্ধ্বে উঠে জাতীর মূল বিষয়
গুলোতে সকল দল, গোষ্ঠি,ব্যক্তিকে এক হতে হবে অবশ্যই। বৃত্তের বাইরে থেকে নয়; বৃত্তের কেন্দ্রে সবাই না আসলে কখনো কেউ একিভুত হতে পারবে না।
জাতীয় ঐক্য না থাকলে জাতির নৈতিক,চারিত্রিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কখনো সম্ভব নয় তা নিশ্চিত করে বলা চলে।প্রমাণ-সিরিয়া,ইরাক,পাকিস্তান,রুয়ান্ডা,আফগানিস্তান,সোমালিয়া,লিবিয়া,সুদান, শৃলঙ্কাসহ আরো বেশ কিছু রাষ্ট্রের নাম এই তালিকায় যোগ করা যায়।
হ্যা,আমি বিশ্বাস করি, জাতিকে জেগে তোলার জন্য এবং একটি আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার জন্য যেই জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন তা একজন বিপ্লবী জাতীয় নেতার মাধ্যমেই হবে।
আমাদের এই বঙ্গের জন্যও তেমনি একজন সাহসী, বলিষ্ঠ আর বিচক্ষণ নতুন বীর নেতার প্রয়োজন।পাকিস্তানী বৈষম্য,বঞ্চনা আর শোষনের হাত থেকে মুক্তি দিতে বঙ্গবন্ধু যেমন বীর ও সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে সেই ভুমিকা পালন করেছেন; তেমনি জাতীয় ঐক্যতা সৃষ্টি, সাম্য,শান্তি ও সমৃদ্ধির সেই সাথে জ্ঞানভিত্তিক, চিন্তাশীল ও যুক্তিনির্ভর একটি আধুনিক উন্নত বাংলাদেশ গড়তে এরকম একজন জ্ঞানী,সাহসী,বিচক্ষন আর বিপ্লবী নেতার অপেক্ষায় আছে এই দেশ।বিশ্বসহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরে এটাই প্রত্যাশা করি যে, সে যেন এই শুন্যতা পূরনে কাজ করে।
এগিয়ে যাক বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তার জ্ঞানের তপস্যায়, নতুন চিন্তা-ভাবনার জন্ম দিক।দেশের ছেলে-মেয়েদের স্বপ্নিক করে গড়ে তুলুক এবং চিন্তারুদ্ধ কারাগার থেকে মুক্তি দিক এই কামনায়।
জয় হোক স্বপ্নের, জয় হোক জ্ঞানের। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের জয় হোক, বাংলাদেশের জয় হোক।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

সৈয়দ আবুল ফারাহ্‌ বলেছেন: বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র বই পড়ার প্রতি আকর্ষন করার নতুন হাতছানি।

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২৩

হেৃদওয়ানুল জান্নাহ বলেছেন: ঠিক বলেছেন একদম।
ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৪৪

মহা সমন্বয় বলেছেন: জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট; মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

পোস্টটা গুরুত্বপূর্ণ। ++

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩৮

হেৃদওয়ানুল জান্নাহ বলেছেন: যা গুরত্বপুর্ণ তা প্রয়োজনীয়। আর যা প্রয়োজনীয় আমাদের তার পেছনেই ছোটা উচিত বলে মনে করি।

বুদ্ধি আর দর্শনে আমাদের দেশের রাজনীতিবীদেরা শিশু তুল্য। আর এজন্যই ৩০ লক্ষ প্রাণের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা নামক যে আলোক্জ্জ্বল সম্ভাবনার ঘ্রাণ ছড়ানো ফুলের বাগান তৈরি হয়েছিল, আজ তাতে কীট-পতঙ্গ আর আগাছা জন্মালেও তাদের সুবোধ জন্মে নি।
জ্ঞান হোক সম্ভাবনার।জ্ঞান হোক মু্ক্তির। অন্ধকার পৃথিবীতে দীপ্ত হয়ে দুরন্ত সাহস আর চিন্তা-ভাবনার আকাশে জ্বোনাকি হয়ে হাসুক জ্ঞানের তারাগুলু।

ভাল থাকুন আর জ্ঞানের প্রেমে বিভোর হোন এই কামনায়..........।

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:০৬

মহা সমন্বয় বলেছেন: অসাধারণ সত্যিই অসাধাণ প্রতিউত্তর করছেন। :)

এটা বেশি ভাল লেগেছে- বুদ্ধি আর দর্শনে আমাদের দেশের রাজনীতিবীদেরা শিশু তুল্য। :D

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০০

হেৃদওয়ানুল জান্নাহ বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.