নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

আইজ্যাক আসিমভ্‌

আমি কার, কে আমার !

আইজ্যাক আসিমভ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ লিনাক্সপ্যাড্ H047(১ম পর্ব , সায়েন্স ফিকশান/ফ্যান্টাসি)

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:১৪

ছবিঃ গুগল

রফিক কাটা কম্পাসটা টেবিলের কোণায় রাখল । এরপর সাদা খাতায় আঁকা বৃত্ত দুটা দেখল। তারা পরস্পর খালি একটা বিন্দুতে স্পর্শ করেছে। দুটা বৃত্তের পরিধি বরাবর হাজার হাজার , কোটি কোটি বিন্দু। গণিতের ভাষায় বলতে গেলে ইনফিনিটি বা আসীম সংখ্যক। প্রতিটা বিন্দুই রফিকের কাছে অসীম সম্ভাবনার। আঁকার সময় সে আদৌ ভাবে নাই অসীম সংখ্যক বিন্দুর সেটকে(set) সে খাতায় বসাতে যাচ্ছে। কম্পাসের মাথায় একটা পেন্সিল। হাত দিয়ে খালি ঘুরিয়ে দিল। ব্যাস অসীম সংখ্যক বিন্দু গোলাকার সসীম বক্ররেখায় পরিণত হয়ে গেল। বদ্ধ গোলাকার বক্ররেখা। এরপর আরেকটি বক্ররেখা। হাজার হাজার বিন্দুর মাঝে খালি দুইটি তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের যাত্রা একসাথে শুরু করে দিল। রফিক সেই সংসার তছনছ করে দিতে পারে রাবার দিয়ে। কিন্তু তার সেটা মোটেও করতে ইচ্ছা করছে না। দুইদিন পর এই খাতা আম্মা সের দরে বিক্রি করে দিবে। এই খাতা , অসীম সংখ্যক বিন্দু , বৃত্ত সবগুলর ভবিষ্যত পরিণতি হয়তো দোকানের ঠোঙ্গা হবার মধ্যেই নিহিত। সেটা নিয়ে রফিকের মোটেও মাথা ব্যাথা নেই। আপাতত।

সন্ধ্যার পর রফিক এই টেবিলেই বসে থাকে কিছুক্ষণ। স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে মোটে সাত দিন হল। বিশাল লম্বা একটা ছুটি চলছে। আজকে সারা সকাল বিপুল আর তুষারের সাথে টো টো করে ঘুরেছে। পড়াশুনায় ওদের অবস্থা খুব শোচনীয়। ওদের বাবা খালি অপেক্ষায় আছে কবে ওরা কোনমত টেনেটুনে এস. এস. সি টা পাশ করবে । এরপর ওদের ভবিষ্যত রচিত হবে রাস্তার মোড়ের বিশাল মুদির দোকানটায়। রফিক স্কুলের ফাস্টবয়। ওর পড়াশুনা নিয়ে অনেক অগ্রহ। বাব-মা , বিশেষ করে ক্লাস টিচাররা ওকে নিয়ে খুব আশাবাদী। বণিক স্যার বাবকে দেখলেই সবসময় বলে ,” এই ছেলে গ্রামের হীরা। ও আলো সবদিকে ছড়াবে।” “হীরার পক্ষে কি শুধু শুধু আলো ছড়ানো সম্ভব , কোন আলোর উৎস ছাড়া? “---রফিক মনে মনে ভাবে।

“রফিক এদিকে আয়।”-মা ডাকছে।
“তুই কি গতকাল মাঝরাতে আবারও কি টিনের চালে উঠেছিলি ? তোকে না বলেছি রাত বারোটার পর চালে উঠবিনা। জিন-ভূত কতকিছু ঘুরাঘুরি করে রাতেরবেলা। কখন যে তোর ঘাড়ে উঠে একটা কাঁমর লাগায় দিবে কে জানে। সোনা বাপ আর যাবি না। কেমন । “

জীন-ভূত নিয়ে ওর খুব একটা মাথা ব্যাথা নাই। ভূত তো মোটেও বিশ্বাস করে না। তবে জীন নিয়ে সংশয়বাদী। রফিক গ্রামের বিভিন্ন জীব-জন্ত দেখে আমোদ পায়। পুকুরে মাছ , বিভিন্ন জাতের মাছ। অকাশে পাখি, নানা ধরণের। বাজার গুলতেতো গরু, খাসী, হাঁস, মুরগী আছেই। সারাক্ষণ কক্‌ , কক্‌ , কক্‌ - করে। তবে এত কিছুর মাঝেও ওর সবচাইতে প্রিয় বিড়াল। এইটা আসলেই একটা জিনিস। একটা প্রাণী এতটা বুদ্ধিমান কি করে হতে পারে, সেইটা তার কাছে একটা বিরাট আশ্চর্যের বিষয়।
রফিক খাটের নিচে তাকাল। না, হুলো নেই। ওর পোষা বিড়াল। বিড়াল না বলে বিড়াল ছানা বলাই ভাল। সেই মাসদেড়েক আগের কথা। ঝড়ের রাত। বৃষ্টি সেই রকমের, আর হু হু হু বাতাসের কান্না। হঠাৎ চিকণ স্মরের ম্যাও , ম্যাও , ম্যাও। রফিক রুমের জানালাটা আস্তে করে অল্প খুলে। উঠানের বাল্বের আলোতে
চারপাশের অনেকটাই আলকিত। উঠানের বাইরে ২০-৩০ ফুট দূরে থেকে আকদম অন্ধকার। একটু পর পর আকাশে বিদ্যুতের চমকে হঠ্যাৎ হঠ্যাৎ আলো হয়ে উঠছে। উঠানের কোণাটায় জানালার ঠিক নিচে খানিকটা ডানদিকে একটা ভাঙ্গা গাছের ডাল। ডলাটা পড়েছে কাল রঙের একটা বিড়ালের ওপর। বিড়ালটা বেঁচে নেই। সেটা বুঝতে খুব কষ্ট হবার কথা না। বড় ডালটার নিচে মরা বিড়ালটার ঠিক পাশেই আরও দুই জোড়া পা। বিড়ালটার দুইটা বাচ্ছা। নিশ্চল পাগুলো দেখে বোঝা যায় ওরা মায়ের পরিণতিই বরণ করেছে। ডলাটার পাতাগুলার নিচে একটা ছোট ধপধপে সাদা বিড়াল ছানা। বৃষ্টির পানিতে চুপসে আছে। সেইটাই মিউ মিউ করছে। খুব মায়া হয়েছিল। আস্তে করে উঠানের দরজা খুলে বিড়ালের বাচ্চাটাকে নিয়ে এসেছিল। বাবা ঠিকই টের পেয়েছিল। বিরক্ত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু কিছু বলেন নাই। প্রথমে বাচ্চাটা নিজে নিজেও খেতে পাড়ত না । বাসায় একটা ইনজেকশন ছিল। মাথায় সুই ছাড়া। ওটা দিয়ে রফিক পানি ভরে পিচকিরি খেলত। সেইটা দিয়েই বিড়ালটাকে দুধ খাওয়ানো শুরু করে। সেই থেকেই এই বাসার একজন স্থায়ী নন্‌-মানব সদস্য হুলো। খুবই আদুরে।
(১ম পর্ব, চলবে)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ
শুরুটাতো দারুন!

উল্টো যাত্রায় হাটছি ;)

৩-১-২ কি কি উল্টো বলা যায়? না! এটাকে ফিকশনে কি ভাবে প্রকাশ করে???

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:১৮

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। মূল কাহিনী ৫ ও ৬ থাকবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.