নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

আইজ্যাক আসিমভ্‌

আমি কার, কে আমার !

আইজ্যাক আসিমভ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ লিনাক্সপ্যাড্‌ H047 (২য় পর্ব, সায়েন্স ফিকশান/ ফ্যান্টাসি)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:৩৯

ছবিঃ গুগল

রফিকের একটা সমস্যা দীর্ঘ দিন ধরে হচ্ছে। মাঝে মাঝে ওর মনে হয় হুলোর শরীরের রঙ পরিবর্তন হয়। সাদা ধপধপে বিড়ালের বাচ্চাটার রঙ কি করে হঠ্যাৎ বাদামী হয়ে যায় ! আবার কিছু দিন পর কাল। মাঝে মাঝে নীল। বিড়ালের রঙ কি করে নীল হয়! কিন্তু সবচে মজার ব্যাপারটা হল রঙ পরিবর্তনেও হুলকে চিনতে কোনই সমস্যা হয়না। এটা কি রফিকের চোখের ভুল, নাকি ওর কোন সমস্যা হচ্ছে মস্তিষ্কে। বাসার অন্যরাও তো কিছু বলেনা। রফিক জানে ওর জিজ্ঞস করা উচিত ব্যাপারটা। কিন্তু করে না। মাঝে মাঝে মনে হয় কেও যেন ওকে বলতে দেয়না। তাদের নিয়ন্ত্রণটা অনেক দূর থেকে। আরও অনেক কিছুই রফিক লক্ষ করে। মাঝে মাঝে ও ভেবে অবাক হয় যে , কেন ভয় পাচ্ছেনা এইসব ব্যাপারে। লজিকতো বলে ভয় পেতে। দূর থেকেকে যেন ওর মস্তিষ্কের ভয়ের ভাবটা অবশ করে রাখে। রফিকের খালি মানেই হয়।

এইতো সেই গত বৎসরের কথা। ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল বের হয়েছে। ৭৭ নম্বরের ব্যবধানে ও প্রথম হয়। তার ঠিক এক সপ্তাহ পরেই সকাল থেকে ঘুম থেকে উঠে আবিষ্কার করে যে ,ও ফেল করেছে। দৌড়ে গিয়ে রেসাল্ট সিটটা বের করে। হ্যাঁ , ফেলই লিখা। বাসার সবাই স্বাভাবিক , যেন ও খুব বাজে একটা ছাত্র। কিন্তু ও জানে ব্যাপারটা খুবই অস্বাভাবিক। কয়েক সপ্তাহ পরই আবার রেসাল্ট পাল্টায়। অবশেষে পরের ক্লাসে উঠলে রেসাল্ট ঝামেলার সমাপ্তি হয় ক্লাসের প্রথম হিসেবেই। ঝামেলা বাঁধে অন্যখানে । ও দেখে ও ক্লাসের ফাস্ট গার্ল। “ OMG! কীভাবে ?!” তবে সেই ঝামেলাটা একদিনই স্থায়ী ছিল।

এইতো গতকালের কথা। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তায় চা খাচ্ছিল। একটু পর স্বাদ পায় কফির। বেশ কয়েকবারই স্বাদটার পরিবর্তন হয়েছিল। একবারে মনে হয় অরেঞ্জ জুসের টেস্ট পেয়েছিল। একবার মাকে জিজ্ঞাস করবে ভাবল। কিন্ত আর জিজ্ঞাস করা হয় নাই। জিজ্ঞাস না করাটাই যেন স্বাভাবিক। ও নিশ্চিত দূর থেকে কেও ওর মস্তিষ্কে কিছু করছে। কিন্তু কে বা কারা ? রফিকের ভয় লাগা উচিৎ। কিন্তু ওর ভেতর ভয় নাই। নিশ্চিত কেউ কিছু করছে ! “ আচ্ছা কিসের জন্য পাসওয়ার্ড?! ” আজকে সকালেও ঠিক ঘুম ভাঙ্গার আগে কানে এসেছিল “ পাস্‌ওয়ার্ড , প্লিজ।” ঘুমের মাঝে বিড়বিড় করে একটা জিনিসই ও শুনতে পায়।”tintin 1.5.2062 ”. হ্যাঁ “ tintin 1.5.2062.” এটা কে তো একটা তারিখের মত মনে হয়। পহেলা মে দুইহাজার বাষট্টি। কিন্তু এখনতো উনিশ-উন-নব্বই। ব্যাপারটা বড়ই অদ্ভুত। বড়ই।

রফিক সাধারণত ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে। সকালের আকাশ , স্নিগ্ধ বাতাস , পাখির কিচিরমিচির ,আর সর্বোপরি পুরো ঘুমন্ত একটা মানব সম্প্রদায়ের জেগে উঠা অবলোকন করা খুবই বিশ্বয়কর একটা ব্যাপার তার কাছে। আজকের সকালটা খুবই চমৎকার। আকাশের রঙটা গোলাপী , সূর্যটা সবুজ , মাঠের ঘাসগুলোও সবুজ। রফিক মাঠের ধার ঘেঁষে হাঁটতে থাকে। গতকালও রাস্তাটা সোজা কিছুদূর গিয়ে বামে মোড় নিয়েছিল আর ডানে ছিল ঘন বাঁশঝাড়। আজকে ব্যাপারটা উল্টে গেছে। রাস্তা গেছে ডানে মোড় নিয়ে আর বামে বাঁশঝাড়। রফিক কিছুক্ষণ হেঁটে বাসায় ফিরে সকালের নাস্তা করতে।

“কিরে গতকাল রাতের বেলা দরজা খুলে বের হলি যে ? তুইতো আবার আকাশ দেখিস। কিন্তু এতরাতে দরজা না খুলাই তো ভাল।”- মা বলল।
গতরাতে রফিক ১০টার সময়ই ঘুমোতে গেছে। বৃষ্টি হওয়াতে আবহাওয়াটা ঠাণ্ডা ফুরফরে ছিল। বাইরে বেরোবার মত তো কোন কারণ ছিলনা। হুলোটাও তো চুপচাপ ঘুমিয়েছিল।
“মা তখন কয়টা বাজছিল ?” রফিকের প্রশ্ন।
“কখন কয়টা বাজছিল ? ও , সাড়ে বারটার মত হবে। আমি পানি খেতে উঠেছিলাম।”
“মা, আমি কোন জামাটা পড়েছিলাম?”
মা একটু অবাক হলেন। আনেকটা বিরক্ত হয়ে বললেন “ ওই তো সাদা রঙের জামাটা তুই পড়ে আছিস। তোর জিনিস তোর মনে নেই?”

নাস্তা শেষ করে রান্না ঘর থেকে দুই-তিন মুঠ ভাত একটু ডাল মাখিয়ে নিল। সাথে গতকালের রাতের কয়েকটা মাংস। হুলোর সকালের নাস্তা। বাইরের উঠানের পিছনে রফিক গেল। রিতিমত ভয়ংকর ব্যাপার ! প্রায় দশফুট উঁচু আর বিশফুট লম্বা একটা বাঘ তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ গুলোর চাহনি এমন যে , ওকে এখনই জ্বালিয়ে ছারখার করে দিবে। আরও ভয়ংকর জিনিসটা হল, এটাযে হুলো রফিক সেটা জানে। কিন্তু কীভাবে জানে সেটা বিস্ময়কর! খাবার প্লেটাটা মাটিতে রেখে রফিক সোজা তার ঘরে চলে যায়।

এটা কি দেখল সে ! কিছুক্ষণ বিছানায় বসে থেকে ঘরের জানালাটা একটু খুলে উঁকি দিল। হুম্‌ম্‌। বিড়ালটা এখন ঠিকই আছে, সেই ছোট্ট হুলো।
রাতে খাবার পর রফিক ঘুমাতে গেল। মাঝরাতে বাবার ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেল ওর।
“রফিক, তোর মার শরীর খুব খারাপ করেছে। ওকে হাসপাতালে নিতে হবে।”- বাবা বললেন।

রফিক বিছানা থেকে তড়াক করে উঠে দাঁড়াল আর সাথে সাথে বিস্ময়ের একটা ধাক্কা খেল। বাবার উচ্চতা তার কোমরের সমান। পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি উচ্চতার একটা মানুষ কয়েক ঘণ্টার মাঝে কি করে দুই ফুটে নেমে আসল ? ছোট্ট সাইজের বাবা দৌড় দিয়ে চলে গেল। পিছেপিছে রফিকও মার কাছে গেল। নাহ্‌। মার আকার ঠিকই আছে। বিছানায় শুয়ে আছে। বোঝা যাচ্ছে শরীর বেশ খারাপ।
“বাবা, তুমি কি ডাক্তার ডেকেছ ?”
“তুই তাড়াতাড়ি উঠানে গিয়ে দাঁড়া। ওরা প্লেন পাঠাবে বলেছে।” বাবা বললেন।
বলে কি, প্লেন? প্লেন! এই গ্রামেতো সবই মেঠো পথ। প্লেন কোথায় নামবে? আর প্লেনটাই বা পাঠাবেই কারা ? এই সব ভাবতে ভাবতে রফিক উঠানে গিয়ে দাঁড়ায়।

সত্য সত্যই একটা উড়ন্ত স্পেসশীপ উঠানে এসে নামল। বিচিত্র রঙের সব আলো জ্বলছে আর নিবছে যানটার গায়ে।
কিছুক্ষণ পর সেটার একটা দরজা খুলে গেল। দুই আস্ট্রোনট নেমে আসল। বিচিত্র স্পেসসীপটার দরজায় আরও একজন আস্ট্রোনট দাঁড়িয়ে থাকল। পাশেই বাবা এসে দাঁড়ালেন। আস্ট্রোনটদের একজনের হাতে পিস্তল আকৃতির একটা ইঞ্জেকশান ,আর তাতে হলুদ কিছু
তরল ভরা। লোকটা কাছে এসে ঠিক বাবার ঘাড়ে সেটা পুশ্‌ কে দিল। আর অমনিই বাবার আকার উচ্চতা সেই লিলিপুট আকৃতি থেকে লাফ দিয়ে আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এল।

আরেকজন আস্ট্রোনট রফিকের কাছাকাছি আসল। তার মুখে অদ্ভুত একটা মাস্ক লাগান। হাতে একটাখা লম্বা তলোয়ার। সে সেটা রফিকের হাতে দিয়ে খালি একটা শব্দই উচ্চারণ করল, “RESTART”। রফিকের পুরাপুরি অজ্ঞান হয়ে গেল।
(চলবে )

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: আর একটু সহজ করে লিখুন। বুঝতে বেগ পেতে হচ্ছে।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:০০

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। :)

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৮

খাঁজা বাবা বলেছেন: শুরু টা ভাল লেগেছে
অপেক্ষায় রইলাম :)

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৫:৩৮

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে । :)

৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ! দারুন জমেছে এ পর্বে!

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৬:১১

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.