নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভাল ছেলে!

জুবায়ের হাসান রাব্বী

পরিচয় দেওয়ার মত তেমন কিছু নেই। আমি নিতান্তই অলস একজন মানুষ। লেখালেখি শখ হিসেবে শুরু করলেও এখন সেটা নেশা হয়ে গেছে।

জুবায়ের হাসান রাব্বী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ বুঝে নিয়েছি

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৭



কয়েকবার কলিংবেল বাজানোর পরে আপু দরজা খুলে দিল। আপু আমাকে দেখে বলল
-এতক্ষণে ফেরার সময় হল!

-চল খেয়ে নে। বেড়িয়েছিস!
আপু খাবার টেবিলে বসে প্লেটে ভাত দিল। আমি আপুর পাশে বসলাম।

-তুই আমার বাসায় ঘুরতে এসেছিস নাকি বাইরে ঘুরতে এসেছিস!
আপুর কথায় কিছু বললাম না। কালকে সন্ধায় বেড়াতে এসেছি। রাতের কিছু সময় বাদে বাইরেই থেকেছি। এমন দেখে আপু রাগ করার কথা।

-তোর এইখানে আমার ভাল লাগেনা। কেমন যেন লাগে।
আমার কথা শুনে আপু অবাক হয়ে গেল। সরকারি কোয়াটারে অন্যের চেয়ে সুযোগ সুবিধা বেশি। সেখানে আমার ভাল লাগেনা! শুনে অবাক হওয়ার কথা। আপু বলল
-ভাল লাগেনা কেন!
-তোদের এই ডাক্তারদের মাঝে ভাল লাগেনা।

আমার কথা শুনে আপু চুপ করে আছে। কিছুক্ষণ পরে আপু বলল
-তাহলে ডাক্তারের সাথে বিয়ে দিয়েছিলি কেন!আব্বা তো আসেনা। আবার তুই আসলেও তোর সমস্যা!
-আমি সময় পাইনা তাই....
-তোদের সময় হবেনা। পাশের বাসার নিলা ভাবির ভাই প্রায় আসে। আর তোকে বার বার ফোন দিলেও আসিস না!
-আপু...

আপু খাবার টেবিল থেকে উঠে চলে গেল। ভাইয়ের প্রতি বোনদের ভালবাসা বেশি থাকে। দুইদিন আসলেও আমার আদরে কুলায় না। কোনটা রেখে কোনটা রান্না করবে এমন অবস্থা। তবুও আমি আসিনা।

-কিরে মামা। কি করিস?
নাবিলের রুমে ঢুকে দেখলাম, সে কম্পিউটারে গেইম খেলছে। ক্লাস টুতে পড়ে। তবুও তার কম্পিউটারে গেইম খেলতে পটু। ছোটবেলায় আমিও এমন ছিলাম। মামার ভাগ্নে বলে কথা।

-মামা, গেইম খেলবে?
নাবিল কম্পিউটারের সামনের চেয়ার থেকে উঠে পরল। এই বাসায় আসার পরে সে বেশি খুশি। সবসময় আমার সাথে থাকতে চায়। মামা ভাগ্নের ব্যাপারগুলো এমন।

-মামা, তুমি কালকেই চলে যাবে!
নাবিল আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সে কিছুতেই আমাকে যেতে দিবেনা। তার দাবি আরো এক সপ্তাহ থাকতে হবে। কিন্তু সেটা আমার জন্য অসম্ভব।

-মামা, ছাদে যাবে?
আমি কম্পিউটারের সামনে থেকে উঠে পরলাম। নাবিল হাত ধরে বলল
-চল ছাদে যাই।
-চল মামা।

ভাগ্নের সাথে ছাদে এলাম। ছাদে কোন লোকজন নাই। এখানে ছাদে আসার মত মনেহয় কেউ নেই! সব ডাক্তাররা রোগি নিয়ে ব্যাস্ত আর তাদের বউরা সিরিয়াল নিয়ে ব্যাস্ত। ছাদে আসার দরকার হয়না কারো।

-নাবিল বাবু কেমন আছ?
পিছনে তাকিয়ে একটা মেয়েকে দেখলাম। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু চিনতে পারছিনা। এইখানে থাকে সেটা বুঝতে পারছি।

-ভাল আছি আন্টি। তুমি কেমন আছ?
নাবিল আমার কাছ থেকে মেয়েটির কাছে গেল। মেয়েটি আমার দিকে একবার তাকিয়েছে। সেও মনেহয় আমাকে চিনে নি।

-আপনি নাবিলের মামা। তাইনা!
মেয়েটির কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। সে আমাকে কিভাবে চিনল! আগে কথা হয়নি তো। আগে দেখাও হয়নি মেয়েটির সাথে। তাহলে আমাকে চিনল কিভাবে!

-আপনি আমাকে চিনলেন কিভাবে?
অবাক চোখে তাকিয়ে কথা বললাম। মেয়েটিকে দেখে অবাক হয়েছি। সে আমাকে চিনেছে,সেটা দেখে আরেক দফা অভাক হয়েছি।

মেয়েটি আমার কথায় মুচকি হেসে বলল
-আপনার কথা নাবিলের কাছে শুনেছি। নাবিল একবার আপনার একটা হিরোমার্কা ছবি দেখিয়ে বলেছিল "এটা আমার মামা হিরো"
মেয়েটির কথা শুনে আমি হেসে ফেললাম। মেয়েটি বলল
-কবে এসেছেন?
-এইত কালকে।
-ও। আচ্ছা।

আমার সাথে কথা বলেই মেয়েটি চলে যাচ্ছে। আমি তাকে যেতে দেখে পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললাম
-চলে যাচ্ছেন কেন?
-এমনিই।
-আমি থাকলে মনেহয় আপনার সমস্যা হবে। আপনি থাকুন। আমি চলে যাচ্ছি।
-আরে নাহ। তেমন কিছু না। আমি তেমন ছাদে আসিনা। আজকে এলাম, আবার চলে যাচ্ছি।

মেয়েটি আর কোন কথা না বলে চলে গেল। আমি নাবিলের সাথে দাঁড়িয়ে আছি। নাবিলকে বললাম
-মামা, এইটা কেরে?
-এইটা ডাক্তার দাদুর মেয়ে, মিতু আন্টি।

নাবিলের সাথে আমি ছাদ থেকে চলে এলাম। নাবিল এখন তার খেলনা বের করে দেখাচ্ছে। তার বাবা অনেক খেলনা কিনে দিয়েছে।

-তুই কালকে কখন যাবি?
আপুর কথা শুনে আমি কিছু বললাম না। এখন আর যাওয়ার ইচ্ছা নেই। আমি আপুকে বললাম
-আচ্ছা আমি কি তোর আপন ভাই?
-এমন কথা কেন বলছিস কেন!
-আমি কালকে এসেছি। আর তুই আমাকে তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছিস?
আমি কালকে যাব না। আর কয়েকদিন থাকব।
আমার কথা শুনে আপু অবাক! আপু মাথায় হাত দিয়ে বলল
-তুই ঠিক আছিস?

-ওর আবার কি হল?
পাশ থেকে দুলাভাই এর কথা শুনে বললাম
-আমি ঠিক আছি। আর আমি আরো কয়েকদিন এখানে থাকব।

আপু কিছু বলল না। আপু আমার কথা শুনে খুশি। পাশ থেকে নাবিল'ও খুশি। সাথে আমিও খুশি। তবে অব্য কারনে।

একটা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এইসময় সাথে দেখা হবেনা। তাই বিকেল পর্যন্ত বাসায় থাকার চেয়ে বাইরে ঘুরতে চলে এসেছি।

-আরে, আপনি এখানে?
কথা শুনেই পিছনে ঘুরে তাকালাম। মিতু দাঁড়িয়ে আছে! মিতুকে দেখে বললাম
-এদিকে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু আপনি....
-এটা আমাদের কলেজ।
কথায় আছে, "কপালে থাকলে আটকায় কে?" মিতুর সাথে এইসময় দেখা হবে সেটা ভাবিনি।

-এখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি বাসায় যাবেন?
মিতুর কথায় ফিরে তাকালাম। এতক্ষণ কি যেন ভাবছিলাম! আমি বললাম
-হ্যা বাসায় যাব।

-উঠুন।
মিতু একটা রিক্সা ডেকে দাঁড়িয়ে আছে। রিক্সাটা আমার জন্য ডেকেছে মনেহয়। আমি বললাম
-আপনি ডেকেছেন। আপনিই চলে যান। আমি অন্য একটা ডেকে নিচ্ছি।
-আরে দুজন একটাতেই যাই। আরেকটা রিক্সার দরকার নেই।

রিক্সায় উঠে মিতুর পাশে বসলাম। দুজনে চুপ করেই বসে আছি। মিতু বলল
-আপনি নাকি ঘুরে বেড়ান! বেড়াতে আসলে বাসায় থাকেন না?
-কি বলেন? আপনাকে এসব বলল কে!
-আপনার আপু বলল। আপনি তো মনেহয় খুব ঘুরতে ভালবাসেন।
-তা একটু। ঘুরে বেড়ানো ভাল। জ্ঞ্যান অর্জন করা যায়। তবে ভবঘুরে নাহলেই হল।

মিতুর সাথে কথা বলতে বলতে বাসার সামনে চলে এলাম। মিতু মেয়েটা মিশুক প্রকৃতির। সহজেই মানুষের মাঝে মিশে যায়। হিংসা বা দেমাগ জিনিসটা তার মাঝে নেই।

রিক্সা থেকে নেমে, রিক্সাওয়ালাকে ভাড়া দিলাম। মিতু আমাকে ভাড়া দিতে দিবেনা। তার কথা "আপনি আমাদের মেহমান, আমিই ভাড়া দেই।" শেষ পর্যন্ত মিতু ভাড়া দিল। ভাড়া দিয়ে দুজন সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকলাম।



বিকেলবেলা ছাদে দাঁড়িয়ে আছি। আজকে নাবিল আসেনি। ও ঘুমাচ্ছে। তাই একা একাই দাঁড়িয়ে আছি। কি কারনে একা একা দাঁড়িয়ে আছি, সেটা জানিনা।

-একা একা দাঁড়িয়ে কি করছেন?
পিছনে ঘুরে দেখলাম মিতু দাঁড়িয়ে আছে। মুখের মুচকি হাসিটা অনেক সুন্দর। কিছু মানুষ খুব সুন্দর করে হাসতে পারে। তাদের মধ্যে মিতু একজন।

-এইত দাঁড়িয়ে চারপাশের পরিবেশ দেখছি।
আমার কথা শুনে মিতু আমার পাশে এসে দাঁড়াল। মিতু আমার দিকে তাকিয়ে আবার সামনে থাকা মাঠের দিকে তাকাল।

-আপনি মনেহয় ঘুরতে ভালবাসেন?
মিতুর কথা শুনে মুচকি হাসলাম। আমি পর্যটক নয়। তবে ঘুরে বেড়াতে ভালই লাগে। বিশেষ করে নতুন পরিবেশে ঘুরে দেখতে আগ্রহ জাগে।

-ঘুরতে খারাপ লাগেনা।
আমার কথা শুনে মিতু আবার মুচকি হাসল। এই মেয়েটা এত সুন্দর করে হাসে কেন! কিভাবে এত সুন্দর করে হাসে!

-আমার সাথে ঘুরতে যাবেন?
মিতুর কথা শুনে ঘুরে তাকালাম। এইরকম একজন সুন্দরির সাথে ঘুরে বেড়ানোর প্রস্তাব না করি কিভাবে! আমিতো যেতে রাজি।

-কোথায় ঘুরতে যাবেন?
আমার কথা শুনে মিতু কিছুক্ষণ ভেবে বলল
-ফুচকা খেতে যাবেন? এখানে রবি ভাইয়ের ফুচকা বিখ্যাত।
-যেতে পারি। তবে আজকে আমি আপনাকে খাওয়াব।
মিতু হেসে বলল
-আচ্ছা, চলুন।

মিতুর সাথে রিক্সায় উঠে একটা ফুচকার দোকানের সামনে আসলাম। মিতু রিক্সা থেকে নেমে বলল
-এইটা রবি ভাইয়ের দোকান। আসুন।

রিক্সা থেকে নেমে চেয়ারে বসলাম। দুই প্লেট ফুচকার অর্ডার দিলাম। মিতু চুপচাপ কিছুক্ষণ ভেবে বলল
-পাশে একটা উদ্যান আছে। যাবেন?
মিতুর এই প্রস্তাব না করলাম না। নতুন কিছু দেখতে গেলে যাওয়া যায়।

দুই প্লেট ফুচকা নিয়ে দুইজন সামনাসামনি বসলাম। মিতু একটা ফুচকা মুখে দিতেই চোখমুখ লাল হয়ে গেল। শুনেছি, সুন্দরি মেয়েরা খুব ঝাল খেতে পারে। কিন্তু মিতু বেশি ঝাল খেতে পারেনা। দেখেই বুঝতে পারছি।

-পানি খাবেন নাকি?
আমার কথা শুনে মিতু হেসে বলল
-আরে নাহ। ফুচকার সাথে ঝাল বেশি না খেলে মজা লাগেনা।
-তাই বলে এত ঝাল!
-হুম। আপনি খেতে পারছেন না?
-পারছি।
এত ঝাল খায় মেয়েটা! চোখে পানি চলে আসলেও সে ঝাল খাবে। আমি বেশি ঝাল খেতে পারিনা। কিন্তু হাসিমুখে খেতে হচ্ছে।

ফুচকা খেয়ে হাটতে থাকলাম।ঝালে এখনো আমার মুখ জালা করছে। তবুও আমি কিছু বলছি না। বলেই উপায় কি! আমি মিতুর সাথে হাটছি।

-মিষ্টি খাবেন?
আমার ঝালের ব্যাপার মনেহয় মিতু বুঝে ফেলেছে। আমি তার কথা শুনে হাসিমুখে বললাম
-আরে নাহ। মিষ্টি খেতে হবেনা।
-আমাদের এখানের মিষ্টি বিখ্যাত।
-তাহলে চলুন।
-এবারে আমি আপনাকে খাওয়াব।

মিতুর সাথে একটা মিষ্টির দোকানে বসলাম। ছোট থেকেই মিষ্টি আমার খুব প্রিয়। তরকারীর বদলে মিষ্টি দিয়ে ভাত খাওয়ার অভ্যাস ছোটবেলায় ছিল। আর সেমাই হলে তো কোন কথাই ছিল না।

দুইজনের সামনে মিষ্টি দিয়ে গেল। আমি ছয়টা মিষ্টি খেয়ে ফেলেছি। কিন্তু মিতু একটাই শেষ করতে পারছে না। মিতু তবুও আমার সাথে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তার সাথে তাল দিয়ে জোর করে ঝাল খেয়েছি। এখন সে আমার সাথে তাল দিয়ে মিষ্টি খাচ্ছে।

আমি বারটা মিষ্টি খেয়েছি। মিতু খেয়েছে মাত্র তিনটা। মিষ্টির দোকান থেকে বেড়িয়ে আমরা উদ্যানে হাটছি। এখানে হাটার জন্য পরিবেশটা ভাল।

-আপনি ঝালের চেয়ে মিষ্টি বেশি পছন্দ করেন মনেহয়।
মিতু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কিছু বলছিনা। ফুচকা আর মিষ্টি খাওয়া দেখে বুঝেছে, মিষ্টি আমার প্রিয়।

-মিষ্টি খাওয়া মানুষের মনটা মিষ্টি হয়।
মিতুর কথা শুনে আমি হেসে ফেললাম। আমি বললাম
-আপনি টেস্ট করে দেখেছেন নাকি?
মিতু হেসে ফেলল।

বিকেলে ঘোরার পরে সন্ধ্যার দিকে দুজন বাসায় চলে এলাম। বাসায় ঢোকার আগে মিতু বলল
-তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
-কেন!
-আজকের সুন্দর একটা বিকেল উপহার দেওয়ার জন্য।
আমি কিছু বলার আগেই মিতু চলে গেল। আজকেই সম্পর্কটা আপনি থেকে তুমিতে নেমে এসেছে।

নাবিলের সাথে দাঁড়িয়ে কলিংবেল বাজালাম। নাবিল আমাকে জোর করে নিয়ে এসেছে। মিতু বাবা-মা নাকি আমাকে ডেকেছে!

-আসসালামু আলাইকুম।
মিতুর আম্মু দরজা খুলে দিয়েছে। আমাকে দেখে বলল
-ওয়ালাইকুম আচ্ছালাম। আরে রাব্বি! ভেতরে এস।
আমি নাবিলের সাথে ভেতরে ঢুকলাম। সোফায় নাবিলের পাশাপাশি বসলাম।

মিতুর মা-বাবা আমার সামনে বসে আছে। এতক্ষণে মিতুও চলে এসেছে। নাবিল মিতুর রুম থেকে ডেকেছে এনেছে নিশ্চয়। মিতুর বাবা বলল
-তো কেমন আছ?
-জ্বি ভাল আছি। আপনারা কেমন আছেন?
-এই বয়সে যেমন থাকি। তো তোমার পড়ালেখা কেমন চলছে?
-জ্বি ঠিকঠাক।

-মা, ওকে নাস্তা খেতে দে।
মিতুর বাবা নাস্তা দিতে বলেই উঠে পরল। তার হাসপাতালে ডিউটি আছে। আমি বললাম
-আমি কিছু খাব না।
মিতুর আম্মু বলল
-সে কি করে হয়! আজ প্রথম আমাদের বাসায় এলে। না খেলে হবেনা।

-আম্মু, উনি কি আর আমাদের বাসার খাবার খান! ভয় পেওনা। ঝাল কিছু দিব না।
মিতু কথাগুলো বলেই হেসে ফেলল। মিতুর আম্মু নাস্তা আনতে গেল আর বলল
-তোরা বসে কথা বল।

-তো আর কতদিন আছ?
মিতু আমার সামনের সোফায় বসল। আমার পাশে নাবিল বসে আছে। আমি বললাম
-এইত। পরশু চলে যাব।
-ও।
মিতুর কথার ভাবে মনেহয়, যেন আর কয়েকদিন থেকে যাই। এই কয়দিনেই আমরা অনেক জায়গায় ঘুরেছি। মিতুর মনে আরো ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা আছে!

-আন্টি, আমার মামা খুব ভাল কবিতা লিখতে জানে।
নাবিলের হঠাৎ এমন কথায় আমি হাসব নাকি বুঝতে পারছিনা। আমি কবিতা তেমন কবিতা লিখতে জানিনা। তবে মাঝেমাঝে লিখি আর কি!

-তাই! জানতাম না তো। আমাকে কবিতা লিখে দিতে হবে কিন্তু।
মিতুর কথার মাঝে যেন গভীর আবদার। কবিতা লিখে দিতেই হবে! উপায় না দেখে বললাম
-আচ্ছা দিব।

মিতুদের বাসায় অনেক্ষণ থাকার পরে চলে এলাম। মিতুর বাবা-মা অনেক ভাল মানুষ। ডাক্তারদের অনেকেই খারাপ বলে। কিন্তু মিতুর বাবাকে দেখলে তার উল্টো বলতে হবে।

ব্যাগ হাতে নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম। দুইদিন আগে যাওয়ার কথা থাকলেও জোর করেই আরো দুইদিন থেকে গিয়েছি। কিন্তু নিজের সাথে এই জোর করার কারন জেনেও জানিনি।

-তুই তো আমাদের বাসায় আসতে চাস না! আবার আসিস। এসে তোর ভাগ্নেটাকে অন্তত দেখে যাস।
আপু আমার সাথে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে এল।এখন আমি নিশ্চিয় আসব। বরং ঘন ঘন আসব।

আপু চলে যেতেই মিতুকে দেখে অবাক হলাম। মিতু আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার ফোন নাম্বারটা দেওয়া যাবে?
-কেন!
-মাঝেমাঝে কবিতার জন্য নাহয় ফোন দিব!

মিতুকে ফোন নাম্বার দিয়ে চলে এলাম। মিতুকে কিছু কথা বলতে চেয়েও বলা হয়নি। তবুও মনেহয়, আমার মনে যা চলছে। মিতুর মনেও সেটাই চলছে!

শুধু কবিতা শোনার জন্য, সে ফোন নাম্বার নেয়নি। আরো অনেক কথা বলার জন্য ফোন নাম্বার নিয়েছে। আমি সেটা ভালভাবে বুঝে নিয়েছি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩২

হাবিব বলেছেন: সেই রকম রোমান্টিক গল্প ভাই।চালিয়ে যান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.