নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘’পন্ডিত সাজবেন না..........হউন\'\'

১১ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১০

হাইস্কুল বা কলেজে পড়াশোনাকালে একটা কথা প্রায়ই কানে আসত তা হচ্ছে ‘’পন্ডিত সেজো না, পন্ডিত হও’’।কথাটি সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতার কথাবার্তা শুনে মাঝে মাঝেই মনে হয় ‘’আরে এ কথাটিতো তাদের জন্যই প্রযোজ্য।‘’ সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য বাংলাদেশের এক্তি অতি প্রাচীন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত এক নেতার ক্ষেত্রে। যিনি আবার কোলকাতা বাংলা ছবির অসাধারণ ভক্ত। কতটা ভক্ত তা তিনি মন্ত্রী হিসেবে মাঝে মাঝে হাতে–মাঠে-ঘাটে লম্বা লম্বা পা ফেলে সবাইকে বুঝিয়ে দেন। কারণ তাঁর প্রিয় নায়ক আবার লম্বা লম্বা পা ফেলে পছন্দ করেন চলতে পহন্দ করেন। যদ তাঁর সমসাময়িক ছাত্রনেতারা তাঁর সম্পর্কে একটা মজার তথ্য দিয়েছেন।সেটা হচ্ছে তিনি ছাত্রজীবনে বক্তব্য দেয়ার সময়ে গ্রামাঞ্চলের যাত্রাভিনয়কে অনুসরণ করতেন। তার কিছুটা উদ্ধৃতি দিলে এ প্রজন্মের ছাত্রনেতারা হয়ত কিছুতা উপকৃত হতেও পারতেন। তিনি প্রতিটা বক্তব্য শুরু করতেন এভাবে-‘’বাংলার আকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা , কে দেবে আশা কে দেবে ভরসা......’’ সেই একসময়কার যাত্রার নায়ক তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বাস্তবিক অর্থে এখন পর্যন্ত যাত্রাদলের নায়কই থেকে গেলেন।সাথে যুক্ত হয়েছে তিনি নিজেকে এখন মহাপন্ডিত মনে করেন।ভূমিকা একটু বড় হয়ে গেছে! কি আর করা ! যাত্রাপালার নায়কদের সবার সামনে পরিচয় করে দেয়ার স্টাইল একটু দীর্ঘ হয়ে থাকে।
গতকাল বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ শিরনামে আগামী দিনের দলীয় রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।তাতে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন । সে বিস্তারিত আলোচনায় যাবো না। এতে তিঁনি বাংলাদেশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব করেছেন। খুব ভালো কথা একটা রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব আনতে পারেন। কারণ সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে দেশের মৌলিক কাঠামোতেও মাঝে মাঝে পরিবর্তন আনতে হয়। ভিশন-২০৩০ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষের বিষয়ে ভাবনারই প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেই , মেক-আপ নেয়া পন্ডিতদের । তিনি এর বিপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বললেন –‘’ ‘’আজকে তারা বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চায়। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ভারত নয়। ভৌগোলিক আয়তনের দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ একটি ছোট রাষ্ট্র। এখানে কোনো প্রদেশ নেই যে, এখানে একটি ফেডারেল গভর্নমেন্ট কার্যকর আছে।‘’ কি অদ্ভুত না একটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো কি সেই রাষ্ট্র বড় না ছোট তার উপর নির্ভর করে। আর তাছাড়া দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার সাথে উনি প্রদেশের সংশ্লিষ্টতা কোথায় পেলেন।আর প্রদেশের সাথে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার বিরোধ কোথায় ! যাইহোক এবার ওনার কথাওই আসি ,ওনার মতে বাংলাদেশের মত একটি ছোট দেশের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা থাকা সমীচীন নয়। তাঁর জ্ঞাতার্হে জানাই , ভুটান নিশ্চয়ই বাংলাদেশের চেয়ে আয়ত্নে বড় নয়, সেখানে কিন্তু দ্বিকক্ষ আইনসভা। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার কথা বাদ দিলাম।অস্ট্রিয়া-আয়তন- ৮৩,৮৫৭ বর্গ কি.মি। এখানেও কিন্তু দ্বিকক্ষ আইনসভা।বাংলাদেশের চেয়ে ছোট দেশ বেলজিয়াম। আয়তন মাত্র ৩০২৫৮ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ১ কোটি। প্রতি কিলোমিটারে বাস করে ৩৩৪ জন। এখানকার ৯৭ শতাংশ লোকই শহরে বাস করে। সেখানেও আইনসভা দুটি।বারবাডোস আয়তন-৪৩০ বর্গকিলোমিটার। এই ছোট রাষ্ট্রের আইনসভাও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট।গ্রানাডা আয়তন : ৩৪৪ বর্গ কি.মি.। দেশটিতে একটি দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইন পরিষদ রয়েছে।আয়ারল্যান্ডের আয়তন বাংলাদেশের অর্ধেকের চেয়ে কম।অর্থ্যাৎ ৭০,২৮০ বর্গ কি.মি। পার্লামেন্ট –দ্বিকক্ষবিশিষ্ট।ভাবছেন কতগুলো আলাভোলা টাইপের দেশের কথা বলছি।তাহলে এবার আসি কমলা লেবু ও টোটাল ফুটবলে জনক হিসেবে অধিক পরিচিত নেদারল্যান্ডসের কথায় ।জানেনতো এর আয়তন মাত্র ৪১,৫৪৩ কিমি। বাংলাদেশের প্রায় চার ভাগের ১ ভাগের চেয়ে একটু বেশি। পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা মানুষের বসবাস যে দেশটিতে সেখানকার আইনসভাটিও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট।একটি হচ্ছে উচকক্ষ-সিনেট।অন্যটি নিম্নকক্ষ-হাউস অভ রিপ্রেসেন্টেটিভ।আর অনেক দেশের নাম উল্লেখ করা যায় ।আমার মনে হয় ছোট দেশের নাম উল্লেখ করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট।মহান পন্ডিতের মন্তব্য মতাবেক, উল্লেখিত আয়তনে ছোট দেশগুলো কি কাউকে খুশী করার জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তনের করেছে? আর একটি বিষয় উল্লেখ না করলে মনে হবে আঞ্চলিক কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হলো না। তাদের জ্ঞাতার্থে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানেও দ্বিকক্ষবিশিশট আইনসভা।

দ্রষ্টব্যঃ যেকোনো বিষয়ে মন্তব্য করার আগে একটু পড়াশোনা করুন ,জানুন, শুনুন তারপর বলুন।শুধু পন্ডিত সাজবেন না , আগে পন্ডিত হউন। তথ্য প্রযুক্তি শুধু ফেসবুকে রাস্তার পাশের দোকান থেকে রুটি খাওয়ার দৃশ্যে আপলোড করার জন্য নয়! বিএনপি মনে করে ছবি আপলোড করার চেয়েও আরো বেশি কিছু পাওয়ার আছে, আর সেজন্য দরকার প্রকৃত প্রযুক্তিগত শিক্ষা ! শুধু গোল্ডেন, সিল্ভার পাওয়ার শিক্ষা নয়। আর বেগম জিয়ার ভিশন-২০৩০টিতে মূলত সেটাই আছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.