নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি
২৬ সেপ্টেম্বর শাসকদল আয়োজিত এক "অসাধারণ" বিদ্যাসাগর জন্মদিবস পালন দেখলাম।
প্রথমে বিভিন্ন বক্তা তাদের জ্ঞানগর্ভ(!) বক্তৃতা দিলেন।
ভাবের আবেগে একজন বলে বসলেন তার নামের আগে ঈশ্বর ছিল বলেই তিনি বড় বড় কাজ করতে পারতেন। তাই সকলেরই ঐশ্বরিক নাম রাখা উচিত।
একজন, সম্পূর্ণ বিপরীত মতাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও বিদ্যাসাগর আর বিবেকানন্দ দুজনকেই জীবনে আদর্শ করতে বললেন। বুঝলাম বক্তব্য রাখতে তাকে কিছুমাত্র পড়াশুনা করতে হয়না।
জনৈকা নেত্রী জানালেন, তাদের সাথে বিদ্যাসাগরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এমনকি তার শ্বশুরকে নতুন বাড়ির নামও তিনি ঠিক করে দিয়েছিলেন।
একজন বললেন, বেলুড়ের টোলেতে বিদ্যাসাগর পড়াতেন এবং তিনিই সেটিকে বেলুড় হাই স্কুলে পরিণত করেন। অথচ সত্য এই যে স্কুল ইনস্পেক্টর হিসাবে একবার তিনি এসেছিলেন মাত্র।
তবে চূড়ান্ত নাটক তখনো বাকি ছিল।
শেষের সামান্য আগে পাজামা, পাঞ্জাবি পরে সেজেগুজে এক নেতা এসে হাজির হলেন। হয়ত 'তুচ্ছ' অনুষ্ঠানের কথা ভুলে গেছিলেন।
এদিকে মালা শেষ। একজন ছুটে গিয়ে কিনে আনল। কিন্তু, মাল্যদান করে বেদি থেকে সে নামছেনা কেন?
বুঝলাম ছবি ওঠেনি। অবশেষে পোজ দিয়ে তিনি ছবি তুললেন।
স্বয়ং বিদ্যাসাগর ও তার সাথে ছবি তুলে ধন্য হলেন।
সেজেগুজে এসেছেন, কিছুতো বলতেই হবে। হাতের কাগজই বুঝিয়ে দিল, না দেখে ৫ মিনিট বলারও ক্ষমতা নেই।
তিনি বলতে থাকলেন আমরা নিয়ান্ডারথালের মত অবাক বিস্ময়ে শুনতে থাকলাম।
"বন্ধুগণ এই বিদ্যাসাগর খুবই বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তিনি শিক্ষা বিস্তারের জন্যে অনেক কিছু করেছিলেন।
এমন মনীষী কে শ্রদ্ধা জানাত উচিত।
এই জন্যেই আমাদের দিদি সকল মনীষীদের জন্মদিবস পালন করতে বলেছেন।
তিনি নিজেও প্রতিদিন সব মনীষীদের জন্মদিন পালন করেন (জানিনা প্রতিদিন সব মনীষীরা কিভাবে জন্মান !!!)।
খুবই দুঃখের কথা পূর্ববর্তী বাম সরকার এই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেইনি।
কিন্তু আমরা ক্ষমতা তে এসেই ৯ কোটি টাকা দিয়ে তার নামে পার্ক তৈরি করছি। এছাড়া বিবেকানন্দ আর শরৎচন্দ্রের নামে পার্ক তৈরিতেও আমরা আরো কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি।
আমরা যাতে এই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যেতে পারি তাই আপনারা আগামী পুর ভোটে আমাদের বিপুল ভোটে জয়ী করুন।
এই বিদ্যাসাগর সম্পর্কে সবাই সব কিছু বলে দিয়েছেন তাই আমার বক্তব্য আমি এখানেই শেষ করছি।"
মা, মাটি, মানুষ সবাই কে কাঁপিয়ে দিয়ে অবশেষে তিনি ক্ষান্ত হলেন।
আমরাও রেহাই পেলাম আর তিনিও রেহাই পেলেন যিনি নিরুপায় হয়ে এতক্ষণ গলায় মালা দিয়ে মর্মর মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১৯
মণীশ রায় চৌধুরী বলেছেন: আপনার আমার লেখা ভাল লেগেছ জেনে খুশি হলাম। এটা কিন্তু বাস্তব ঘটনা।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৩
ইমরান আশফাক বলেছেন: চমৎকার উপস্হাপনা, আসলেই এইরকম ঘটে অধিকাংশ সভাগুলিতে।