নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দস্যু রত্নাকরের কাহিনি

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৬

আজ আপনাদের আমার অত্যন্ত পরিচিত একটি ছেলের কথা বলব।
ছেলেটি অবলা জীবদের নির্দয়ভাবে অত্যাচার করে হত্যা করে আনন্দ পেত।
মনোবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে স্যাডিস্ট চরিত্র।
কেঁচো ,শামুক, কেন্নো, প্রজাপতি, ব্যাঙ কিছুই তার হাত থেকে রেহাই পেতনা।

বিজয়া দশমীর দিন সে এক অদ্ভুত হত্যালীলায় মেতে উঠত।
শামুক, গেঁড়ি ধরে উঠানে ছেড়ে দিত।
তারা মাংসল দেহ বার করে চলা শুরু করতেই খুব কাছ থেকে তার গায়ে ক্যাপ ফাটাত।
মুহূর্তে ঝলসে যেত কোমল শরীর। খোলসের ভিতর থেকে ফেনা বেরিয়ে আসত।
উঃ, সে কী ভয়ানক দৃশ্য !
এভাবে ১০-১৫ টা হলে সে খোলা ভেঙে মাংস গুলি একটা গাছের পাতায় সংগ্রহ করত।
কোনদিন তার মধ্যে বিকার দেখিনি।
হয়তো অবচেতন মনে ভাবত বিদায়বেলায় দেবীকে ভোগ নিবেদন করছে।

একবছর দোলের দিন সে একটা আরশোলা ধরল। কি মনে হল প্যাকেট থেকে আবির মেঝেতে ঢেলে তার ভিতর আধমরা আরশোলাটাকে ঢুকিয়ে দিল। সে যত বেরিয়ে আসতে চায়, তত তার উপর আবির ঢালতে থাকে।
আবিরের বিষক্রিয়ায়, আধঘণ্টার ভিতরেই "মানুষের" আজব খেয়ালের বলি হল সে।

আরও একবার তখন সে আরও ছোট, মামাবাড়িতে বেড়াতে গেছে।
বৃষ্টির সকাল। কোন কাজ নেই।
রাস্তায় জল জমে আছে, তাতে ছোট ছোট ব্যাঙের ছানারা আপন মনে প্রথম বৃষ্টির আনন্দ উপভোগ করছে।
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আশ্রয়।
ছেলেটি একটি বাতিল স্টিলের মগ আর মোমবাতি সংগ্রহ করল।
১০-১২ টি ছানা ধরে মগের ভিতর ছেড়ে দিয়ে জ্বলন্ত মোমবাতির উপর মগটি ধরল।
স্টিলের মগ গরম হচ্ছে আর অসহ্য তাপে লাফাচ্ছে কচি ছানাগুলি। ছেলেটির কোন বিকার নেই।
সে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছিল নিরীহ প্রাণগুলির মরণ যন্ত্রনা।
যখন "খেলার" সাধ মিটে গেল তখন মগের গায়ে আটকে আছে কিছু কালো ঝলসে যাওয়া মাংসপিণ্ড।

এরকম নৃশংসতার বহু উদাহরণ দেখেছি যা ভাবতেও আপনারা শিউরে উঠবেন।

তার পর সেই ছেলেই একদিন এক প্রকৃত মানুষের সংস্পর্শে এসে যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী আন্দোলনে মন, প্রাণ সঁপে দিল।
সেদিন ছেলেটার সাথে পথ হাঁটছি।
সামনেই একটা কেন্নো পড়ল। এই প্রাণীটি কোনদিন তার সামনে পড়ে জীবিত ফিরে যায়নি।
লাল কেন্নোর থেকে হলুদ-কালো কেন্নো কে কেন সহজে মারা যায় এবিষয়ে "গবেষণা" করতে সে ভালবাসত।
অথচ, ছেলেটি পরমযত্নে সেটিকে তুলে রাস্তার ধারে ছেড়ে দিল যাতে কেউ ভুল করে না পাড়িয়ে দেয়।
কারণ, সে অকারণে জীবহত্যা ছেড়ে দিয়েছে।
এরপরে কী করে বলি বলুনতো যুক্তিবাদ মানবতা শেখায় না???

পরিশেষে আপনাদের কাছে অনুরোধ, ছেলেটির আজকে বিশ্বাস করুন।
তার পূর্বকৃত জঘন্য অপরাধের জন্যে তাকে ঘৃণা করবেননা।

কারণ সেই ইতর, নরাধম আমি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.