নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্ঞানার্জনে সরস্বতীর ভূমিকা একটি বিরাট শূন্য

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৮

বিদ্যারত্ন তর্কালঙ্কারঃ কলি, কলি, ঘোর কলি।
ওরে মূর্খের দল, সরস্বতী হলেন বিদ্যার দেবী। আর ঐ যুক্তিবাদী সমিতি কিনা পুজো বন্ধ করতে চায়।
জেনে রাখিস, জ্ঞানচর্চার এমন অপমান মানুষ মেনে নেবেনা।

গাবলুঃ পণ্ডিতমশাই, যুক্তিবাদী সমিতি তো কাউকে বাড়িতে বা ক্লাবে পুজো করতে বারণ করেনি। আর, যুক্তিবাদীরা বরাবরই মুক্তচিন্তা আর জ্ঞানচর্চার পক্ষেই লড়াই করেছে।

বিদ্যারত্ন তর্কালঙ্কারঃ তাহলে, ওরা পুজো বন্ধ করতে বলছে কেন?

গাবলুঃ যুক্তিবাদীরা শুধুমাত্র সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পুজো বন্ধের আবেদন করেছে।
কারণ, সংবিধান অনুসারে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ধর্মাচরণ করা যায়না। আপনি আজকের কাগজ দেখুন, দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও সরকারি খরচে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

বিদ্যারত্ন তর্কালঙ্কারঃ তাহলে তুমি বলতে চাইছ আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের যেসব রীতিনীতি শিখিয়েছেন তা মিথ্যা। তোমাদের মত চ্যাংড়া ছেলেদের জন্যেই দেশে শিক্ষার এই অবনতি।

গাবলুঃ ডারউইন, ফ্যারাডে, নীলস্ বোর, এডিসন, আইনস্টাইন থেকে শুরু করে হাল আমলের কার্ল সাগান, রিচার্ড ডকিন্স বা স্টিফেন হকিং পৃথিবীখ্যাত এসকল বিজ্ঞানীরা সরস্বতী বন্দনা না করেই শিক্ষার চুড়ায় উঠে প্রমাণ করে দিয়েছেন জ্ঞানার্জনে সরস্বতীর ভূমিকা একটি বিরাট শূন্য।

বিদ্যারত্ন তর্কালঙ্কারঃ ওসব, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি। এদেশে ধর্মীয় শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড তৈরি করতে পারে।

গাবলুঃ শিক্ষার জন্যে ইশ্বরের অবদান যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হত তাহলে বাংলার সেরা শিক্ষাবিদ পণ্ডিত ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার শিশু শিক্ষা বিষয়ক বই গুলিতে ইশ্বরকে গুরুত্ব দেননি কেন? অথচ সেযুগে ইশ্বরবন্দনা করেই বই লেখার রীতি ছিল। কিন্তু তিনি তার বই তে সহজ ভাষায় লিখলেন সূর্যের কথা, কয়লা আবিষ্কার, গ্যালিলিওর জীবনী।
ইংরাজ সরকার তখন কিছুদিন পূর্বেই ঘটে যাওয়া ফরাসী বিপ্লবের ভূত দেখছে। তাই তার বই ধর্মবিরোধী এবং ইমমোরাল বলে বাতিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
বাধ্য হয়ে তিনি ইশ্বর বিষয়ক একটি ছোট অংশ ঢোকালেন। যার সারমর্ম হল, শুনেছি ঈশ্বর নামে একজন আছেন এবং লোকে বলে তিনি মঙ্গলময়।
বাংলার অপর শ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তার শান্তিনিকেতনে কোনরকম ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেননা।

বিদ্যারত্ন তর্কালঙ্কারঃ কিন্তু, পুজো না থাকলে উৎসব আনন্দ হবে কি করে?

গাবলুঃ উৎসব, আনন্দের জন্যে পুজোর কি প্রয়োজন? ধরুন, একটি শিশু জন্মাল, সে প্রথম ভাত খাবে বা প্রথম লিখতে শিখবে এত এমনিতেই সুন্দর আনন্দের ঘটনা। তাই নিয়েই তো আনন্দ করা যায়।
মনে করুন কোন ক্লাব ঘোষণা করল তারা ৫০ জন পথশিশুকে লেখা পড়া শেখাবে। এটাকে ঘিরেই কি প্রকৃত উৎসবের আয়োজন করা যায়না?
রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব পালন করতেন। কিন্তু কৃষ্ণের দৈব মহিমাতে বিশ্বাস করতেননা।
শিশুদের ভিতর প্রকৃতিপ্রেম জাগাতে তিনি শুরু করলেন বৃক্ষরোপণ উৎসব।
শান্তিনিকেতনে সপ্তাহে নির্দিষ্ট একটি দিন থাকত যেদিন সকল ছাত্র কে কাপড় কাচা, বাসন মাজা থেকে শুরু করে খাটা পায়খানা পরিস্কার করার মতো সকল কাজই করতে হত। এর মাধ্যমে তিনি তথাকথিত অন্ত্যজ শ্রেণীর মানুষদেরকেও সম্মান করার শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন।
মানুষ তৈরির প্রকৃত শিক্ষার রূপরেখা কি এমনই হওয়া উচিত নয়?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০২

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: :)

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২২

মহা সমন্বয় বলেছেন: গুড..

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৬

মহা সমন্বয় বলেছেন: আচ্ছা প্রবীর ঘোষ এই ব্লগে নিয়েমিত লিখেন না কেন ?? আর অামি প্রবীর ঘোষের যাবতীয় বইলের লিষ্ট চাই।
ধন্যবাদ।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৮

মণীশ রায় চৌধুরী বলেছেন: বন্ধু, আপনাকে জানিয়ে রাখি প্রবীর ঘোষের কোন ব্লগ আইডি নেই। এটা তার কোন এক আনুগামি খুলেছেন। যুক্তিবাদী সমিতির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হল http://www.srai.org.
আপনি আমার সাথেও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন আমার ফেসবুক আইডি হল।https://www.facebook.com/manish.raychaudhuri

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২১

মণীশ রায় চৌধুরী বলেছেন: বই এর কিছু ছবি পাঠালাম।বই এর কিছু ছবি পাঠালাম।

৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: সুন্দর পোস্ট, ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.