নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুক্তিবাদের চোখে দেশপ্রেম

১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৫৫

সম্প্রতি ইলিয়াড-ওডিসি পড়েছি।
মূল বই পড়ার ক্ষমতা আমার নেই। সহজ বঙ্গানুবাদই পড়েছি।

এখানে ইলিয়াড নিয়েই আলোচনা করব।
মূল কাহিনি হল, ট্রয়ের রাজকুমার প্যারিস গ্রীসের এক প্রদেশের রাজা মেনেলাউসের আতিথ্য গ্রহণ করে এবং সুযোগ বুঝে তার প্রচুর ধনরত্ন চুরি করে।
শুধু তাই নয় তার সুন্দরী স্ত্রী হেলেন কে প্রণয়পাশে আবদ্ধ করে নিজ দেশে ফিরে আসে।

নিঃসন্দেহে খুবই নিন্দনীয় কাজ। মেনেলাউস ও ছেড়ে দিলেননা।
তিনি তার দাদা আগামেমনন ও বন্ধু রাজা যেমন আকিলিস, ওডিসিউস প্রভৃতিকে নিয়ে ট্রয় আক্রমণ করলেন।
বীর রাজপুত্র হেক্টরের নেতৃত্ব ট্রয়ের যোদ্ধারা বহুদিন বীরবিক্রমে যুদ্ধে করে অবশেষে পরাজিত হন।

একথা অনেকেরই জানা।
কিন্তু, আমার মাথায় কিছু প্রশ্নেরা উঁকি দিচ্ছে।
স্ত্রী যেতেই মেনেলাউস তার প্রজা আর তার বন্ধু রাজাদের বললেন দেশের সম্মান আক্রান্ত।
দেশকে বাঁচাতে সবাই যুদ্ধে চলুন।
একইভাবে ট্রয়বাসীকে হেক্টর বোঝালেন দেশ আক্রান্ত, তাকে বাঁচাতে যুদ্ধ করতেই হবে। বীরের ধর্ম, কর্তব্য এসব ভারী ভারী কথায় মেতে উঠে দুদলের সাধারণ জনতা একে অন্যকে মারতে লাগল।

কেউ প্রশ্ন করলনা দেশটা কোথায়, কার জন্য আক্রান্ত হল?
দেশটা কে?
মেনেলাউস, হেলেন, প্যারিস, হেক্টর না অন্য কেউ?
রাজা, রানী বা রাজপুত্র রাষ্ট্র নয়।
বরং, এরাই হচ্ছে প্রকৃত সাম্যের সমাজ গড়ার অন্তরায়। কারণ, ভাল রাজা বলে আসলে কিছুই হয়না। প্রজাকে শোষণ করেই তাদের সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে হত।
তবে তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছে, লোভ, শত্রুতার দায় কেন জনগণ কে নিতে হবে?
কিন্তু, যুগ যুগ ধরে রাজতন্ত্রের কাজের বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই তাকে ভীরু, কাপুরুষ বা দেশদ্রোহী বলে চিহ্নিত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।


সময় বদলেছে, আজ আর রাজা নেই।
কিন্তু, রাজতন্ত্র থেকেই গেছে। তবে একটু অন্য ভাবে।
তাই আজও, রাষ্ট্রের স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করলেই তাকে বলা হচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী, সন্ত্রাসবাদী।

আজ বুঝিয়ে দেওয়া সময় এসেছে যে, এই সব তথাকথিত নেতা মন্ত্রীরা রাষ্ট্রের প্রতীক নন
দেশ মানুষে তৈরি হয়।
আর এরা তাদেরই সামান্য চাকর।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০৮

ডাঃ প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা সত্যকথা তুলে ধরার জন্য। নমঃস্কার।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৩

মহা সমন্বয় বলেছেন: আজ বুঝিয়ে দেওয়া সময় এসেছে যে, এই সব তথাকথিত নেতা মন্ত্রীরা রাষ্ট্রের প্রতীক নন।
দেশ মানুষে তৈরি হয়।
আর এরা তাদেরই সামান্য চাকর।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:১০

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: সালাম মণীশ রায় চৌধুরী, রাজা-প্রজার অবস্থানটা এমন একটা সুন্দর বিশ্লেষণের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য। ব্যক্তিগত উপলব্ধি হলো, এখনও রাজারা বহাল তবিয়তেই রয়েছে তারা শুধু পদবি বদলে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ইত্যাদি। আপনি বলেছেন নেতা-মন্ত্রীরা জনগণের চাকর। অবশ্যই সঠিক কথা। অথচ ওরা যখন জনগণের সাথে সাক্ষাৎ করে তখন ওদের ভাব খানা দেখুন, ওদের আসনের দিকে তাকান - কে চাকর, আর কে মালিক? অ্যাকিলিস, হেক্টররাও রয়েছে রাজার গোষ্ঠি-মিত্র বা বেতনভুক্ত চাকর বা কুকুর হিসেবে। ওরা সবসময়েই দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ, ইত্যাদি নামেই জনগণের ধন-মান-জীবন ব্যবহার করে চলেছে। ভাবতে অবাক লাগে, মানুষের সমাজবদলের গতিটা কতটা শ্লথ। মাঝে মাঝেই বিমূঢ় হয়ে যাই।

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫

মণীশ রায় চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.