নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদ্যাসাগরেরই বিরোধিতা করে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর ভণ্ডামি আর কত দিন???

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:০৩

২৯ জুলাই। পণ্ডিত ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুদিন।
ব্যস, আর যায় কোথায় !
সবাই মিলে "লহ প্রণাম" বলে চিৎকার করে মাথা ধরিয়ে দিল।

বিদ্যাসাগর নামী মানুষ।
আর আমাদের সমাজ শিখিয়ে দিয়েছে বিখ্যাত লোকেদের বিনা প্রশ্নে সম্মান জানাতে হয়।
আর বাঙালির থেকে বড় হুজুগে আর কে আছে?
আমরা আবার সবজান্তা। কিছুই না পড়লেও আমরা সবাই সব জানি।
তাই আমাদের কাছে রামমোহনও আদর্শ আবার তার বিপরীত মতাবলম্বী রাধাকান্ত দেবও আদর্শ।
বিদ্যাসাগরকেও আমরা সম্মান করি, আবার তার বিপরীত মেরুতে অবস্থানকারী বিবেকানন্দও আমাদের কাছে সমান শ্রদ্ধেয়।

কিন্তু, এই ভণ্ডামি আর কতদিন???

সেই কোন ১৮৫৩ সালে বিদ্যাসাগর শিক্ষা কমিটিকে লিখে ছিলেন যে, বিশেষ মহলের চাপে তাকে সাংখ্য আর
বেদান্ত দর্শন পড়াতে হচ্ছে। কিন্তু এগুলি যে ভ্রান্ত তাতে কোন সন্দেহ নেই।

সেসময়, শুধুমাত্র ব্রাহ্মণরাই সংস্কৃত কলেজে পড়ার সুযোগ পেত।
অথচ,তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পর তথাকথিত অব্রাহ্মণরা সেখানে শিক্ষার অধিকার লাভ করে।
সময় অনেক এগিয়েছে। আমাদের 'ভূপর্যটক' প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন দেশ ডিজিটাল হচ্ছে।
কিন্তু, এই 'ডিজিটাল ইন্ডিয়া'তেও শুধুমাত্র দলিত হওয়ার অপরাধে অনেক মেধাবী ছাত্রকে আত্মহত্যা করতে হচ্ছে।

তখন সংস্কৃত কলেজে সুপ্রাচীন 'লীলাবতী' পদ্ধতিতে অঙ্ক শেখান হত।
কিন্তু তিনি তা বাতিল করে ইংরাজিতে অঙ্ক শেখানোর ব্যবস্থা করেন।
কারণ, এই আধুনিক যুগোপযোগী পদ্ধতিতে অনেক সহজেই ছাত্রদের শিক্ষাদান করা সম্ভব।

আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে থাকি অধ্যাত্মবাদ ভারতের ঐতিহ্য।
ঈশ্বর বিশ্বাস না থাকলে নাকি নীতিশিক্ষাই সম্পূর্ণ হয়না।
অথচ, ১৮২০ সালে পরাধীন দেশের গন্ডগ্রামে জন্মান এবং জাতিভেদ, হিন্দুয়ানি, বাঈনাচ, বাবুকালচারের ঘুণে ভরা
সমাজে বড় হওয়া এই লোকটা শিশুশিক্ষা বিষয়ে ইশ্বর বিশ্বাস কে কোন গুরুত্বই দিলেননা।

তিনি শিশুশিক্ষা বিষয়ক বইতে সহজ সরল ভাষায় গ্রহ-নক্ষত্রের কথা, নানা ধাতব ও অধাতব পদার্থের কথা, বিজ্ঞানীদের
জীবনী লিখলেন।

না, শুধু কোপারনিকাস, গ্যালিলিও বা নিউটনের কথা নয়।
এমন অনেকের জীবনী তিনি আলোচনা করেছেন বর্তমান কালেও শুধুমাত্র বিজ্ঞান শিক্ষার উচ্চতর বিভাগেই যাদের সম্পর্কে
পড়ান হয়।
ক্যারোলাস লিনিয়াস এমনি একজন বিজ্ঞানী।
কেতাদুরস্থ পোশাকে সজ্জিত, স্মার্টফোনে অতিস্বচ্ছন্দ যুবসমাজকে যদি প্রশ্ন করা হয় জীববিদ্যায় লিনিয়াসের গুরত্ব কী?
তাহলে একটা বড় অংশই চোখে অন্ধকার দেখবে।

আর, ঈশ্বর???
'বোধোদয়' বইতে ঈশ্বর বিষয়ে প্রথমে একটি শব্দও লেখেননি।
পরে ইংরেজ আধিকারিকদের চাপে ঈশ্বর বিষয়ে লেখেন।
তাও মাত্র সাড়ে চার লাইন !!!


আজ কেন্দ্র সরকার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বেদ, বেদান্তের মত বিষয় পড়িয়ে সমাজ কে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনরকম প্রতিবাদ করলেই তাকে ভারতীয় সংস্কৃতির বিরোধী বা দেশদ্রোহী বলে দেগে দিয়ে পাকিস্তানে
যাওয়ার "সুপরামর্শ" দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু, এটাকে শুধু বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্ত ভাবলে ভুল হবে।
সরকার তো আর মঙ্গল গ্রহ থেকে আসেনা। আমরাই তাকে নির্বাচিত করে থাকি।
তাই কেন্দ্র সরকারের এসকল সিদ্ধান্তে অনেকেরই (যার ভিতর তথাকথিত সংস্কৃতিবান বাঙালিরাও আছেন) বুকের ছাতি ৫৬
ইঞ্চি হয়ে যায়।

তাই আরও একবার প্রশ্ন করছি, এইভাবে বিদ্যাসাগরেরই বিরোধিতা করে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর ভণ্ডামি আর কত দিন???

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১৭

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: লেখাটি আমি বুঝিনি, বুঝিয়ে কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.