নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো ছায়ায় আমার ভূবন

আমি কনফিউসড চরিত্রের মানুষ।অগোছালো সবকিছুতে দোদূল্যমনতা আমার বৈশিষ্ট্য।টু বী অর নট টু বী এই দ্বন্ধে চলছে জীবন।

আরজু মুন জারিন

নিজের সম্পর্কে বলার মত কিছু করা হয়ে উঠেনি এখন। ব্লগ এ লেখা টা প্রথমে ছিল সামাজিক দায়বদ্ধতা। মেসেজ শেয়ার করা। তবে লিখতে লিখতে এখন লেখার ভালবাসায় পড়ে গিয়েছি। নিজে যেমন লিখতে পছন্দ করি অন্যের লেখা ও একই পছন্দ নিয়ে পড়ি। লেখালিখির আরেকটা বড় উদ্দেশ্য হল (অন্যের দৃষ্টিতে তা ফানি মনে হবে ) সামাজিক বিপ্লব করা , মানুষের জীবনে স্বাছন্দ্য আনয়ন করা মূলত আমার দেশের মেয়েদের লেখিকাদের আমি বড় প্ল্যাটফর্ম এ দেখতে চাই। আমাদের দেশে ভাল লেখিকা অনেক কম। অথচ আমার মন বলে অনেক ট্যালেন্ট মেয়েরা আছে। অনগ্রসর সামাজিক পরিস্থিতির কারণে মেয়েরা এক বৃত্তে বন্ধী হয়ে আছে। আমি খুব চাই ওই বাধা সরিয়ে আলোয় ,সাহিত্যে জ্ঞানে আমাদের মেয়েরা পথ চলুক। প্রচলিত দৃষ্টিতে সমাজে চলতে মেয়েদের বাধা গুলি চিহ্নিত করা আমার লেখালিখির আরেকটি উদ্দেশ্য। প্রগতির কথা বলতে চাই ভদ্রতায় , শালীনতায় এবং মর্যাদায়। সামাজিক আভ্রু ভেঙ্গে নয় যা তসলিমা নাসরিন করেছিলেন। বেগম রোকেয়া আমার পথ প্রদর্শক। তিনি মেয়েদের পাদ প্রদীপের আলোয় নিয়ে এসেছিলেন ঠিক ই রক্ষনশীলতার ঢাল ভেঙ্গে নয় , মর্যাদায় থেকে আলোতে নিয়ে এসেছেন মেয়েদের।

আরজু মুন জারিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চার অকর্মন্য একসাথে(হাসির গল্প)

২৭ শে মে, ২০১৪ রাত ২:৫৫

পর্ব -দুই পূর্ব প্রকাশিতের পর



১ তিনজন দৌড়ে রাস্তার ওইপাড়ে চলে যেতে সক্ষম হল।আসাদ বেচারা শিংয়ের কাটার আঘাত খাওয়া পা নিয়ে বেশী দৌড়াতে পারলনা।সে বসে পড়ল মাটিতে।জনতা গোল করে তাকে ঘুরে ফেলল।যে যায হাতে যেই জিনিস ছিল সেটাকে অস্র বানিয়ে গুড়ুম গুড়ুম করে দিতে লাগল।কেও আখ খাচ্ছিল আখের ডান্ডা দিয়ে পিঠে দিল বাড়ি।কেও হাতের ছাতা রে বাকিয়ে দিল বাড়ী।



কার ও চিৎকার শোনা গেল।



সর সর তোরা ইবলিশের দল তোরা আমার পোলারে এরকম করি মারতাছস কেন ? আসল শয়তানগুলা তো চম্পট দিছে।এতো আমার পোলা।



জনতার মধ্যে একজন বলে উঠল এ আপনার পোলা হইলে দৌড় দিল কেন এইভাবে।



আসাদ এখন বাচার জন্য মরিয়া হয়ে বলল বাজান লোকগুলারে দেইখা ভয়ে দৌড় দিছি।



বয়স্ক লোকটির ভীড় ঠেলে বলল তোমরা সবাই যার যার কাজে যাও।বলে আসাদকে তুলে ধরল।



জনতার থেকে একটু দুরে এনে বলল ইস রে তুমি তো ভাল মার খাইছ দেখি কি করা যায় দরদ মাখা গলায় বলল বয়স্ক লোকটি।



পাশের মেয়েটি বলল চোরা চুরি করছে মাইর দিছে পাবলিক উচিত করছে।আমার ও ইচ্ছা করতাছে দুই ঘা বসাই।বাবা এসব চোর বাটপারগুলারে কেন তুমি বাচাও বাবা।



মারে সব অন্যায় দেখতে হয়না।এরা অন্যায় করছে অসহায় অবস্থায় পইড়া।



আসাদের চোখে পানি চলে আসল লোকটির কথা শুনে।সে লোকটির পা ধরে কাদতে লাগল। হ চাচাজান সত্যি তাই এই প্রথম বাজে কাজ করছি আমার জীবনে।ক্ষিধার চোটে আপনার জিনিস নিয়া পলায়ছিলাম।



তোমার আর বন্ধুরা কই? লোকটি জিজ্ঞাসা করল।



চাচা আমরা আসলে আপনরে খুজতেছিলাম জিনিস গুলা ফেরত দেওয়ার লাগি লজ্জায় সে ডাহা মিথ্যা কথা বলল যদি এই মূহূর্তে অনেক অনুশোচনা হচ্ছে এই ভাল মানুষটার জিনিস নেওয়ার জন্য।



বাকী তিনজনের মধ্যে একজনের কুকুরের সামনে পড়ল।কুকুর ঘেউ ঘেউ করে তারে তাড়া শুরু করল।



সে ও মাগো বাবাগো তারসাথে ঘেউ ঘেউ করতে সামনা সামনি ছুটতে লাগল ।কুকুরের তাড়া খেয়ে সে ভয়ে ভূলে গেল সে মানুষ না কুকুর।



দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে এক ছোট খাল পেল তাতে ঝাপ দিয়ে পড়ল।

কুকুরটা তখন ও খালের কিনারে দাড়িয়ে ঘেউ ঘেউ করে চলেছে।ভাবখানা এরকম যে আমি তোরে পাহারা দিচ্ছি ।কতক্ষন তুই খালে থাকবি।খাল থেকে উঠলে তোরে খাইছি।



বাকী দুইজনের মধ্যে একজনে বাসে উঠে গেল ।



২ আজাদ একা একা রাস্তায় দাড়িয়ে রইল।নিজেকে একা আর অসহায় মনে হচ্ছে ।এটা কোন জায়গা তাও সে চেনেনা। প্রথম বারের চার বন্ধু চারজায়গায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।তিনবন্ধুর জন্য তার চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছা করল।



অনেকক্ষন একা একা বসে রইল রেল লাইনের পাশে।সে এখন আছে বনানী রেল লাইনের পাশে।কিছুক্ষন ক্ষিধার যন্ত্রনায় পেট মোচড়ে ধরে বসে রইল।তারপর চোখের পানি মুছল পেঠে একটা থাপড় দিল বলল



কিছু একটা করতে হবে।কাজ করতে হবে।মেহনত করতে হবে।পেটের জন্য খাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে কাজ করতে হবে।সব ধান্ধা বাদ দিতে হবে।যদি অসহায় ওই পরিবারের জিনিস ছিনতাই না করত তবে কপালে এই দূর্ভোগ হতনা।তার বাকী বন্ধুরা কে কোথায় আছে কে জানে।লাফ দিয়ে উঠে দাড়াল।নিজেকে বেশ আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান মনে হল।তার পাশে দিয়ে ট্রেন চলে গেল।ট্রেন থেকে কেও কোন ঝোলা ছুড়ে মারল সেটা এসে সরাসরি তার মুখে আঘাত করল।চমকে সে বিকট লাফ দিল।তারপর দৌড়ে গিয়ে দেখার চেষ্টা করল কিছু আছে নাকি।প্যাকেটে যা ছিল তা দেখে মুখে হাসি ফুটল।প্রায় দুইদিন না খাওয়া মানুষের জন্য রাজভোগ ই বটে।দুইটা পুরানো কলা রুটি একটুকরা মাংস সম্ভবত সব বাসী সেজন্য ই ফেলে দেওয়া।কিন্তু তার এখন এসব দেখার সময় নাই।ক্ষুধার যন্ত্রনায় মরার চেয়ে খেয়ে মরি তার ভাবটা এরকম।



খেতে খেতে বিকট ঢেকুর ।সঙ্গে পানি নাই ।পানির খোজে এদিক ওদিক করতে করতে ছোট একটা ডোবার মত পেল ।বাধ্য হয়ে ডোবার ময়লা পানি একটু গিলে ফেলল এবং হড়হড় করে বমি করে সব ফেলে দিল ।তারপর শব্দ করে রাস্তার পাশে বসে কাদতে লাগল।পাশ দিয়ে যাচ্ছিল অফিস ফেরত এক চাকুরীজীবি।



এই কে?কে তুমি কাদতাছ কেন?লোকটি কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে।সে আরও জোরে ফুফিয়ে কেদে উঠল ।লোকটি ধরে তাকে উঠাল আহারে কি হইছে তোমার?চল চল আমার সাথে।পাশের এক ছোট তেহারী চায়ের দোকানে ঢুকল।



তুমি কি আমার সাথে খাবা বাবা?আমার ঘরের রান্নার ব্যবস্থা করিনা।এখান থেকে খাইয়া চইলা যাই।একা মানুষ।



দুইজনে একসাথে খেল ।লোকটির বাড়ীতে আপাতত আজাদের ঠাই সন্ধা মিলানোর পর একটু মাথা উপরে তুলে দেখল আরমান কুকুরটি আছে নাকি।যাক বদ কুকুরটা মনে হয় গেছে। তবু সাবধানের মার নাই। পা টিপে টিপে উঠল ।



আহ নাই।শীতে ঠক ঠক করে কাপতে লাগল।প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে পানিতে ডুবে ছিল।



হাটতে হাটতে অবসন্ন হয়ে যায়।এক পর্যায়ে বাড়ীর সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।



এখন খোজ করা যাক বাকী দুই অকর্মন্যের।আসাদ বেশ ভাল ই আছে।ওই ফ্যমিলির সাথে তাদের এক বড়লোক আত্মীয়ের বাসায় উঠল।বিয়ের বাড়ীর প্রচুর খাওয়া দাওয়া সবই হল থাকার জন্য ছোট একটা আশ্রয় হল।শুধু লোকের মেয়েটা যখন পাশ দিয়ে যায় হূহ চোরা বলে গাল দেয়।সেটা সে মুখ বুঝে সহ্য করে।আসলে সে তো চোরাই।



আকাশ একটা লোকাল বাসে লাফ দিয়ে উঠে পড়ছিল টাকা ছাড়া টিকেট ছাড়া।প্রথমে ড্রাইভার ভাড়া না পেয়ে থাপড় মারল।ড্রাইভারের মেজাজ সপ্তমের উপর চৌদ্দগুন হয়ে আছে তার চোরা কন্ডাকটার কোন ফাকে তার লুঙ্গীর কোচড় থেকে আজকের সব কামাই সতেরশটাকা নিয়ে পালাইছে।



রাগে ড্রাইভার দাতে কিড়মিড় করতে লাগল।অবশেষে আইডিয়া এটারে হেল্পার বানাই দেই।

অবশেষে আকাশের একধরনের আশ্রয় হল।এই বাসের হেল্পার।মন্দ না।কিছু একটা তো হল।

৩ চার বছর পরের কথা।আসাদ ট্রেনে করে যাচ্ছে।এই দীর্ঘ চার বছরে তারা চার বন্ধু একে অপরকে দেখেনি।কিন্তু বাইরে গেলে তাদের চোখ খুজতে থাকত।আল্লাহ একদিন অবশ্যই তার বন্ধুদের সাথে তাকে মিলিয়ে দিবেন এই বিশ্বাস তার দৃঢ়।আজ সে চারবছর বাদে তার গ্রামে বেড়াতে যাচ্ছে।তার সামনে এক উলোঝুলো মার্কা লোক বসে তার কাধে হনুমান না বাদর কে জানে।লোকটার খবর নাই।সে নাক ডাকিয়ে একমনে ঘুমিয়ে যাচ্ছে।এই হনুমান এক একবার একজনকে পছন্দ করছে আর আও আও করে জিহবা বের করে ভেংচি কেটে যাচ্ছে।



আসাদের পাশে বসেছে এক দম্পতি।তাদের পাচ ছয় বছরের ছেলে চিৎকার করে কান্না শুরু করল



বাবা আমারে ভেঙায়।বাচ্চাটা বানরটারে জবাবে একটা ভেংচি কেটে দিল।বানরটা এতে মহা খুশী ।উত্তেজিত হয়ে সারা সিটে শব্দ করে মাথা দুলিয়ে সার্কাসের ভঙ্গিতে সিটের উপর থেকে নিচে গড়িয়ে নামছে।মাঝে মাঝে দুই হাতে তালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করছে।



ছোট বাচ্চা ছেলেটিকে শিম্পান্জী বানর টার অনেক মনে ধরেছে।বাচ্চাকে তার নিজের গোত্রের মনে হচ্ছে।নাচতে নাচতে ছেলেটকে ধরতে আসার চেষ্টা করতে ছেলের বাবা ভয় পেয়ে ব্যাগের বেল্ট দিয়ে বাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিল।বানরটি উল্টে গিয়ে পড়ল এক লোকের কোলে।রেগে কাই হয়ে বানরের মালিকের কাছে ছুটে আসল।



এই শি্পান্জীরে কিন্তু জানালা দিয়ে ছুইড়া ফালামু।এটারে বাইন্ধা রাখেনা কেন?



কেন ভাই আমার পোলা কি করছে আপনার সঙ্গে?এতক্ষনে শিম্পান্জীর মালিক ঘুম থেকে উঠে কথা বলল।



বানরটা মাথা নাড়িয়ে ক্রমাগত ভেংচি দিয়ে যাচ্ছে।

চুপ থাক বানরের বাচ্চা ভূড়ি গালায় দিব।বানরের দিকে ভেংচি কেটে বলল।



বানরটা সিটের উপর জোরে জোরে লাফিয়ে লাফিয়ে এখন ভেংচি কাটছে।



লোকটা বানরটাকে থাপড় দিতে গিয়ে আসাদের সঙ্গে চোখাচোখি।



চার বৎসর পরে দুই বন্ধুতে দেখা।আজাদ আসাদ দুইজন দুইজনকে পাগলের মত জড়িয়ে ধরল।

নির্দিষ্ট ষ্টেশনে দুইজনে নেমে পড়ল ।সি এন জি র অপেক্ষা করতে লাগলেন।হঠাৎ দুইজনের চোখ চলে গেল সামনে সানগ্লাস পরিহিত দুইজন ব্যাক্তির দিকে।দুইজন সানগ্লাস খুলে অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। আরমান আকাশ।



চার অকর্মন্য বন্ধুর মিলন হল।তবে এবার তারা আগের মতন অকর্মন্য না সবাই এখন বেশ কর্মঠ।সবাই কাজ করছে মোটামুটি।মাবাবা ভাই বোন আত্মীয়স্বজনের জন্য অনেক গিফট সহ ফিরেছে।মাবাবা সবাই অনেক খুশী।কোলে বসিয়ে সব ছেলেকে চুমু খাচ্ছে।



চার বন্ধু এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে আরেকটা ডিসিশান নিল এবার তারা আবার এস এস সি পরীক্ষা দিবে।এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ পাস তারা করবেই এবং একসাথে ই করবে।



সমাপ্ত ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:১৮

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: কি লিখছেন? ধৈর্য্য হারায়া ফেলছি পড়তে গিয়া।

২| ২৭ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩

আরজু মুন জারিন বলেছেন: ধৈর্য্য হারায়া ফেলছেন ?

৩| ২৭ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫০

আরজু মুন জারিন বলেছেন: আমি ও নিজে ধৈর্য্য হারা হয়ে পড়েছি। প্রথম পর্ব ছাড়া দ্বিতীয় পর্ব পড়লে লেখা এলোমেলো মনে হবে। ধন্যবাদ কমেন্টস এর জন্য। /:)

৪| ২৭ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪

দাদা- বলেছেন: কি লিখছেন? ধৈর্য্য হারায়া ফেলছি পড়তে গিয়া।আর পড়মু না।

৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:০০

আরজু মুন জারিন বলেছেন: ইশ তাহলে রিলাক্স করুন। আপনার প্রোফাইল ছবিটা সুন্দর। ধন্যবাদ কমেন্টস এর জন্য। ভালো থাকবেন।

৫| ২৭ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

হামিদ আহসান বলেছেন: এবার পাশ করে যাক চার অকর্মন্য .......................

ভাল লাগল গল্পটি ................

৬| ২৭ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:২০

আরজু মুন জারিন বলেছেন: হ্যা। ধন্যবাদ হামিদ ভাই মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা থাকলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.