নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোল পৃথিবী তোমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে।তবে ঠিক ততটুকুই তোমাকে সে দিবে যতটুকু তুমি নিজেকে গড়েছ।

পথিক৬৫

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ,যে কিনা পৃথিবীর মানুষ গুলোকে হাসতে দেখলেই হাসে,আর কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। তবে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভুল করেন না।

পথিক৬৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এরদোয়ানের ইমেজে আর কতদূর?

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:০৪

গতকাল তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছিল। এই নির্বাচন নিয়ে এখন অব্দি বেশ অনেক পর্যালোচনা পরেছি। গতকাল পেশাগত কারনে নির্বচনের শুরু সময় থেকে শহরের ফলাফল চুড়ান্ত হওয়া অব্দি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল। বাস্তব দেখা কিছু অভিজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তার্কির পূর্ব দিকে সকাল ৭ টায় আর অন্য দিক গুলোতে ৮টা নির্বাচনের ভোট গ্রহন শুরু হয়েছিল। চলেছে পর্যায়ক্রমে ৪ টা আর ৫ টা অব্দি। শুরুর ঘন্টা থেকেই শহরের রাস্তাঘাট ছিল একান্তই নিরব। দুপুর ১২ টায় যখন আমি সিটি সেন্টারে ছিলাম তখন পুরো রাস্তায় ১ জন মানুষও পাই নাই, এমন হয়েছে।এবার বলে রাখি আমি যে শহরে থাকে সেটাকে তুরস্কের বিরোধীদলের ২য় ঘাটি (ইজমিরের পরে) বলা হয়ে থাকে। এস্কেশেহীর।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ৪র্থ বার এর মত জিতিছেন ইয়াল্মাজ বুয়ুক এরশেন। আর সিটির মধ্যে থাকা ২ টা সিটিতেও অনেক বড় ব্যাবধানেই জিতেছে এই বিরোধীজোট। এটা অনেকটা আসলে কাম্যই ছিল। যদিও সিটির মধ্যের একটা পৌরসভা নিয়ে একে পার্টির কিছুটা আশা ছিল। আর সিটি নিয়ে একে পার্টির চিন্তা ছিল এই বয়স্ককে হয়তো আর এবার কেউ ভোট দিবেন না। আর এতেই জিতে যাব। কারন এই ইয়াল্মাজ বুয়ুক এরশেন ৮৭ বছরের এক মেয়র। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেন ভিসি এই প্রফেসর।
শহরের মোট ১৪ টি পৌরসভা থেকে একে পার্টি ১২, বিরোধী ১২ আর এমএইচপি পেয়েছে ১ টি আর অন্যরা পেয়েছে ১ টি।
এই মর্মে একে পার্টি নিজেদের আগের থেকে ২ টি পৌরসভা হারিয়েছে।

গতকাল ভোট গ্রহন শেষ গননা করার সময় প্রেস এর সাথে সাধারন মানুষের জন্যও খুলে দেয়া হয় ভোট কেন্দ্রগুলো। যে কেউ চাইলেই এসে এই গননা দেখতে পারেন। আর প্রেস এর জন্য সব সময়ই খোলা।

বিকেল ৫.৩০ এর মত। আমি আর আমার কলিগ মুরাদহান কেন্দ্র কেন্দ্র ঘুরে দেখছি। বিষয়টা ছিল ছিল অনেকটা এমন; যদি বিরোধীজোট ২০ টি ভোট পেয়েছে, একেপার্টি পেয়েছে ৩ টি। আমরা তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, শহরের মানুষ এই বয়স্ককেই আবার মেয়র বানাচ্ছেন। উনি কাজও করেছেন। মানতেই হবে।

যে কেন্দ্র এর কথা বললাম এটি ছিল শহরের যুবকদের ঘাটি, বিশ্ববিদ্যালয় এর সব থেকে কাছের কেন্দ্র। তাই এই ২০ আর ৩ এর হিসেব টা নরমাল। কারন এই শহরের যুবকদের আইডল এই সিএইচপি।

একেপার্টি যে পৌরসভাগুলো জিতেছে সেগুলো গ্রামের দিকের। বয়স্ক আর ধর্মি চেতনাকে কাজে লাগিয়ে এই ভোট দিতে পারেন এটা এখানে কিছুটা হলেও বুঝা যায়। আর একটা বিষয় হচ্ছে, একে পার্টির খুব কম প্রার্থীই আছেন যারা নিজেদের কাজ দিয়ে, নিজেদের পরিচয় দিয়ে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তাদের বিজয়ের পেছনে এরদোয়ান সাহেবের ইমেজটা শুধু তার দল বলে সব সময় কাজ করে। কিন্তু সিএইচপি এর জন্য এটা নয়। প্রার্থী তার নিজের ইমেজেই এখানে জিতেন, তবে আতাতুর্ক এর ইমেজ যে এখানে কাজ করে না সেটা বলা যাবে না।

যাই হোক, ফলাফলে বিশাল ব্যবধানে জিতেছে সিএইচপি। আর ছাত্রদের শহরে এটাই ঘটবে, বুঝা যাচ্ছিল। তাহলে এটা কিছুটা ক্লিয়ার যে, একে পার্টি তাদের ম্যাছেজ সাধারন ছাত্রদের কাছে পৌছে দিতে ব্যর্থ। আগে যাদের কাছে দিয়েছিলেন তাদের থেকেই ফল কুড়াচ্ছেন। কিন্তু এটা আর কত দূর? যদিও সারাদিন সিগারেট আর মেয়ে বা ছেলে নিয়ে ব্যস্ত থাকা যুবক বা যুততীদের জন্য ধর্মীয় চিন্তাকে পুষে চলা একটি পার্টির জন্য কনভেস করা আসলে কঠিন।

এরদোয়ানের ইমেজে আর কত?

নির্বাচন এর আগে গত ২ মাসে ১২ জন মন্ত্রী এসেছেন আমাদের এই শহরে। এটা মন্ত্রীদের নির্বাচনী বাড়ির কাজ। মাসে ২ টি শহর ঘুরতেই হবে তাদের, তারা করেছেনও। কিন্তু কি করেছেন? আঙ্কারাতে আমাদের মন্ত্রী সাহেবেরা থাকেন। আর আমার এই শহর মাত্র ১.৩০ মিনিটের পথ আনকারা থেকে, তাই কাছে পেয়ে সবাই এখানেই এসেছেন বাড়ির কাজ করতে। লাভ হয় নাই। আমি প্রায় সব গুলো মন্ত্রীর পেছেনি দৌড়িয়েছি যখন এসেছেন। কিন্তু আমার কাছে সেদিন মনে হয়েছে এরা আসলেই জনগন থেকে চরম বিচ্ছিন্ন। এটা শুধু মাত্র পাশের জনের খাতা দেখে লিখে বাড়ির কাজ শেষ করা।

যারা এসেছেন প্রায় সবাই একই স্থান থেকে তাদের যাত্রা শুরু করেছেন। মানুষ তাকিয়েছে বা না তাকিয়েছে তারা নিজেদের মত কাজ করে দায় সেরেছেন। শেষ যিনি আসলেন গত ২২ তারিখে, ক্রীড়া মন্ত্রী। সাথে শহরের প্রার্থীরা। পাশে একজন সিকিউরিটি ডেকে যাচ্ছিলেন, ক্রীড়া মন্ত্রী কাছাপঅলু আপনাদের এস্কেশেহীরে এসেছেন। তার পক্ষ থেকে সালাম। কেউ ফিরে তাকাচ্ছিলেনও না খুব একটা।

গত জাতীয় নির্বাচন এর কথা বলি, এক এমপি প্রার্থী ভোট চাইতে গিয়েছেন। একে পার্টির একজন বললেন, "মা, তোমাকে কষ্ট করে আসতে হবে না। আমরা ভোট তোমাকে দেই না। এরদোয়ানকে দেই। তুমি তার দলের বিধায় তুমি পেয়ে যাবে"।

এর মাধ্যমে নিতান্তই এরদোয়ান প্রেমের কারনেই এই দলের অস্তিত্ব সেটা বুঝা যায়। যদিও তার্কির ইতিহাসে এখন অব্দি যে দলই এসেছে সেখানে এই সিএইচপি ছাড়া আর সবাই-ই নেতার চলে যাওয়ার সাথে শেষ হয়ে গিয়েছে। আর কোন নেতা আসেন নাই। সেটা অবশ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে নিয়ে ইস্তানবুলের মেয়র প্রার্থী বানিয়েছে এটা দেখেই নেতা সংকট বুঝা যায়।

আশা করি একেপার্টি তাদের এই ভুল গুলো শুধরেই পথ আগাবে। কারন তার্কির মানুষ নেতা দেখা ভোট দিলেও নিজের "রুটি" এর দাম কত বাড়ল বা কমে গেল সেটা নিয়ে যথেষ্ট সচেতন।

শেষ কথা অতি উৎসাহিতদের জন্য, সবকিছুর পরেও নির্বাচনের ৮৪ ভাগ ভোট দিয়েছে মানুষ। এটা আমাদের বাংলাদেশী ইসির বানিয়ে দেয়া তথ্য না। ২ টি শহরে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটেছে। তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এখানে আগের রাতে বাক্স ভরে নাই। আরও কিছুই হয় নাই যা আমাদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। তবে আমরা তো আসলে বুঝে উঠার পর থেকে ভোটের মর্মও বুঝতে পারছি না, ভোটও দিতে পারছি না, তাই এই বিদেশের ভোট নিয়েই পরে থাকি। আমার মনে হয় এগুলো না করে পারলে নিজের দেশকে নিয়ে, সেখানে ভাল কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে আগান। তুরস্কের নির্বাচন আপনাকে ভাত দিবে না





মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:০২

কলাবাগান১ বলেছেন: "যদিও সারাদিন সিগারেট আর মেয়ে বা ছেলে নিয়ে ব্যস্ত থাকা যুবক বা যুততীদের জন্য ধর্মীয় চিন্তাকে পুষে চলা একটি পার্টির জন্য কনভেস করা আসলে কঠিন।"
এই এক বাক্য ই আপনাকে চিনাতে সাহায্য করল।

আসল কথা হল ধর্মের বটিকা বিক্রেতা রা অশিক্ষিত লোকজন এর কাছে বেচতে পারে ..শিক্ষিত ছাত্র/ছাত্রীরা ধর্ম ব্যবসায়ীদের ভাল ভাবেই চিনে।

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৩

আখেনাটেন বলেছেন: শেষের প্যারাটা কলাবাগান১ ভাইজানকে মনে হচ্ছে তাতিয়ে দিয়েছে। যদিও সত্য সবসময়ই চিরতার রস। :P

এরদোগান কট্টর জাতীয়তাবাদী নেতা, কিছুটা ভারতের মোদীর মতো। তবে মোদীর মতো অবশ্য আগপাশতলা জঘন্য সাম্প্রদায়ীক নয়। কারণটা হতে পারে আতাতুর্কের নীতি এখনও কিছু মানুষের মনে প্রোথিত। এরাই তা হতে দেয় না। যদিও কয়দিন আগে খবরে দেখলাম হ্যাগিয়া সোফিয়াকে পুনরায় মসজিদ বানানোর পাঁয়তারা করছেন উনি। এগুলো ভালো লক্ষণ নয়। এতে হয়ত রুরাল এলাকার কিছু অশিক্ষিত লোকের ভোট টানতে পারবেন কিন্তু জাতি হিসেবে একধাপ নিচে নেমে যাবে। যেমনটা ভারত তাঁর বহুত্ববাদী সমাজে মোদীর আশির্বাদে কলঙ্ক লেপে দিয়েছে গরু দিয়ে।

বোঝা যাচ্ছে ধর্মকে পুঁজি করে নব্য সুলতান এরদোগান তরতর করে এগিয়ে গেলেও সমাজের শিক্ষিত গোষ্ঠীর কাছে উনি এখনও অপাঙত্তেয়। এটি একটি ভালো দিক। ক্ষমতাকে একটি চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে সাহায্য করে। নিরুঙ্কুশ ক্ষমতা দুর্নীতির পথটা মসৃন করে দেয়। যেমনটা আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি আমরা। আর এখন তো জবাবদিহিতার কোনো বালাই নেই। সামুর মতো ঢোঁড়া সাপকেও সহ্য হচ্ছে না। :|



৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.