নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

ঘুরে বেড়ানো আমার একটা ভয়ংকর মাত্রার নেশা। আর আমার এই নেশার যোগানদাতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব দুঃসাহসিক অভিযাত্রিকেরা। ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের বিয়ার গ্রাইলস তাদের লিডার। এই মানুষটার জন্যই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ঘোরার নেশা আমাকে গ্রাস করে বসেছে। একা পথচলা আমার খুব পছন্দ। একা চলায় কষ্ট আছে সত্য, কিন্তু তা আনন্দের কাছে চাপা পড়ে যায়।The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd. The one who walks alone is likely to find himself in places no one has ever been.

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুম্বাইয়ের দিনলিপি: বাইকুল্লা... ৫ রুপী (পর্বঃ তিন)

০২ রা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৯

মুম্বাইয়ের দিনলিপি: প্যারেলের টাটা... (পর্বঃ দুই)

ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বললাম, "বাইকুল্লা যাবো।" উনি মিটার চালু করে গাড়ি চালাতে লাগলেন। ২০১১ সাল... মুম্বাইতে একটা মেট্রোরেল হচ্ছে... নির্মাণকাজ একদম প্রাথমিক পর্যায়ে। কিন্তু এই মেট্রোরেল নির্মাণের জন্যে কোন অতিরিক্ত ট্র্যাফিক জ্যাম পাই নাই কোথাও। যাই হোক, আমি হাসপাতাল থেকে বাইকুল্লা যাবো শুনে ড্রাইভার নিজে থেকেই বললেন, "কে ভর্তি আছেন?" বললাম, "আম্মা..."

বাইকুল্লা টাটা মেমোরিয়াল থেকে মোটামুটি ৫ কিলোমিটার দূরে হবে। আমি গাড়ির সামনের সিটে বসা। ব্যস্ত মুম্বাইকে দেখছি... হঠাৎ ড্রাইভার বলে উঠলো, "তুমি তো বাসে করেই যেতে পারো।" আমি আমার ব্যর্থতাটা লুকালাম না। বলে দিলাম যে, আমি একে তো হিন্দি বলতে পারি না; তার উপর বাসের সামনে যে হিন্দিতে বাস নাম্বার আর জায়গাগুলোর বর্ণনা লিখা থাকে সেটাও বুঝি না। :( আমার কথা শুনে ড্রাইভার হেঁসে দিলেন। বললেন, "আচ্ছা, তোমাকে বাসের রুট ধরে নিয়ে যাই আমি। তোমাকে তো বাইকুল্লা প্রায়ই যেতে হবে, তাই না? প্রতিবার কেন শুধু শুধু পঞ্চাশ-পঞ্চাশ একশ' রুপী দিয়ে ট্যাক্সি করে যাবা আর আসবা! বাসে তো পাঁচ করে দশ রুপী লাগে যাওয়া আর আসায়। বাকি টাকা তোমার মায়ের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা শ্রেয় না???"

আমি অবাক হয়ে শুনছিলাম লোকটার কথা। কি বলে এই পাবলিক!!! নিজের রুটি-রুজির কথা চিন্তা না করে সে ভাবছে পরের মায়ের কথা!!! উনি পুরো পথটা আমাকে চিনিয়ে চিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি হিন্দি পারি না এবং বুঝি না বলে পুরো পথে তিনি আমার সাথে ইংরেজিতে কথা বলেন। শেষে বাইকুল্লা বাটার সিগন্যালে আমাকে নামিয়ে অপেক্ষা করলেন কাঙ্ক্ষিত বাসটার জন্য। আমাকে বাসটা চিনিয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, "ভগবান যেন তোমার আম্মাকে সুস্থ করে দেন।" আমি বেশ কিছুক্ষণ লোকটার (ট্যাক্সি নিয়ে) চলে যাওয়া পথের দিকে চেয়ে ছিলাম। বাইকুল্লাতে আমার কাজ সেরে বাসে করে ফিরি। রুপী দিয়ে... এরপর প্রতিবার আমি বাইকুল্লাতে যেতাম বাসে করেই। সেই নাম না জানা ড্রাইভারের বাতলানো বুদ্ধি মোতাবেক...

ভালো মানুষের জন্য আসলে কোন বর্ডার লাগে না। ভালো মানুষের বিচরণ সমগ্র পৃথিবী জুড়ে। এরা থাকেই মানুষের উপকারের জন্যে... তা না হলে আমার মতো এক অচেনা ছেলেকে কেন মানুষ উপকার করবে!!! গতিময় মুম্বাই আমাকে এক অন্য জগত চিনিয়েছে। টাটা থেকে বাইকুল্লা আমার জীবনের একমাত্র মুম্বাই অভিজ্ঞতা না। আরো বহু বহু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে আমি পা রেখেছিলাম আমার জন্মভূমি বাংলাদেশের মাটিতে...

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ৩:২৪

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি। আমরা হয়ত ঠিকমতো তাদের বুঝতে পারিনা। কিন্তু সময়ে সময়ে ঠিকই ভালো মানুষেরা আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়।

২| ০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: //ভালো মানুষের জন্য আসলে কোন বর্ডার লাগে না।// - সহমত।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৩| ০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৫১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভালো মানুষের জন্য আসলে কোন বর্ডার লাগে না। ভালো মানুষের বিচরণ সমগ্র পৃথিবী জুড়ে। এরা থাকেই মানুষের উপকারের জন্যে... সহমত পুরোপুরি।

আমি আমার ভারত ভ্রমণ অভিজ্ঞতায় এমন অনেক মানুষের দেখা পেয়েছি।

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

৪| ০৩ রা মে, ২০১৬ রাত ১১:৫০

বোকামানুষ বলেছেন: ভালো মানুষের জন্য আসলে কোন বর্ডার লাগে না আসলেই তাই

৫| ০৫ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:০৬

অরন্যে রোদন - ২ বলেছেন: কিন্তু দেখুন নষ্ট রাজনীতি এই দুদেশের মানুষের মধ্যে এমন এক বিরোধের দুর্ভেদ্য দেয়াল তুলে রেখেছে যে মানুষ যতক্ষন না পর্যন্ত একে অপরের কাছে না আসছে ততদিন ভুল ধারনা নিয়েই একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.