নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেটা নই যেটা আপনি ভাবছেন..!! আমি সেটাই যেটা আপনি ভাবছেন না.!! আমাকে ভাবা যায় না..!! বুঝতে হয়.!!

আর. এন. রাজু

আমি একদিন মারা যাব, এই সত্যটা নিয়ে আমার খুব বেশি আক্ষেপ নেই। তবে, আমার মৃত্যুর পর আরও অসংখ্য অসাধারণ সব বই লেখা হবে, গান সৃষ্ট হবে, চলচিত্র নির্মিত হবে। কিন্তু আমি সে সব পড়তে, শুনতে কিংবা দেখতে পারবো না। এই সত্যটা আমাকে খুব যন্ত্রণা দেয়।

আর. এন. রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'রবার্ট\' একটি ভূতুরে পুতুল ।। \'Robert\' A Ghostly Doll

২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২১


১৮০০ সালের শেষ দিকে 'থমাস অট্টো' (Thomas Otto) তার
পরিবারের বসবাসের জন্য আমেরিকার ফ্লোরিডা শহরের ইটন
(Eaton) অঞ্চলে একটি বিশাল বড় বাড়ি কিনেন। এখানে তিনি তার
স্ত্রী, সন্তান এবং দাসদাসী নিয়ে সেখানে বসবাস করা শুরু
করেন। থমাস ছিলেন একজন বদমেজাজি ধাঁচের লোক আর
দাসদাসীদের উপর বেশ অত্যাচার করতেন। আর এই ভৌতিক
পুতুলের ঘটনার সূত্রপাত হয় এই দাসদাসীদের কেন্দ্র করে।
তাদের একমাত্র সন্তান রবার্ট অট্টোকে (Robert Otto)
দেখাশোনার জন্য থমাস অট্টো একজন দাসীকে ঠিক করেন।
একদিন হঠাত থমাস অট্টোর স্ত্রী দেখতে পান যে দাসীকে
তারা ঠিক করেছিল তাদের সন্তানকে দেখাশোনার জন্য সে
বাড়ির পিছে কালো যাদু চর্চা করছে।
এরপরেই চাকরীচ্যুত করা হয় দাসীকে। দাসীটি চাকরীরত
অবস্থায় রবার্টকে একটা মানুষরূপী পুতুল উপহার দেয়। পুতুলটি
ছিল তিন ফুট লম্বা, বোতামের চোখ, আর মাথায় মানুষের চুল
(অনেকের ধারনা এটা রবার্ট অট্টোর চুল) আর দেহের
ভিতরে ছিল খড়কুটা।



রবার্ট তার এই পুতুলকে খুবই পছন্দ করত। সে এতই ভালবাসে
যে পুতুলকে নিজের নাম দিয়ে দেয় এবং অনেক সময়
পুতুলকে নিজের পোষাক পরিয়ে রাখত। পুতুলটি ছিল রবার্টের
সব থেকে প্রিয় জিনিষ। বাইরে কোথাও ঘুড়তে গেলেও সে
পুতুলকে সাথে নিয়ে যেত। এমনকি খাবার টেবিলেও পুতুলের
জন্য ছিল আলাদা চেয়ারের ব্যাবস্থা, আর তার স্থান ছিল রবার্টের
চেয়ারের পাশে। রাতের বেলাতেও দু'জনে একই সাথে
ঘুমাতো। খুব শীঘ্রই পুতুলের সাথে এই সুন্দর সম্পর্ক এক
ভয়ানক দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
কিছু দিন পরেই রবার্ট সবাইকে বলে তাকে 'জ্যেন' (Gene)
নামে ডাকতে। এটি ছিল তার সম্পূর্ন নামের মধ্যাংশ। জ্যেন এর মা
তাকে রাগ করলে সে তাকে বলে যে রবার্ট হচ্ছে পুতুলের
নাম, তাই তাকে যেন জ্যেন বলেই ডাকে। মাঝে মাঝে
জ্যেন তার রুমে পুতুলের সাথে কথাবার্তা বলত। আর অবাক করার
বিষয় হচ্ছে জ্যেনের কথার প্রতিউত্তর মাঝে মাঝে খুব নিচু
স্বরে শোনা যেত। মাঝে মাঝে জ্যেন খুব উত্তেজিত হয়ে
যেত। জ্যেনের এই অস্বাভাবিক আচারনের কারনে তাকে
নিয়ে বেশ চিন্তায় পরে তার বাবা মা। মাঝে মাঝে জ্যেনকে
খুঁজে পাওয়া যেত তার রূমের কোন এক কোনায় খুব চুপচাপ
বসে আছে আর তার সামনে চেয়ারে রবার্ট বসে রয়েছে
জ্যেনের দিকে তাকিয়ে। এটা ছিল কেবন সূত্রপাত।



জ্যেনের রুমের জিনিষ পত্র মাঝে মাঝে এলোমেলো
হয়ে যেত নিজ থেকেই আবার অনেক সময় জ্যেনের
খেলনা গুলি কেউ ভেংগে রেখে দিত, মাঝে মাঝে খুব নিম্ন
স্বরে হাসির শব্দ শোনা যেত জ্যেনের ঘর থেকে, যে
ঘরে রবার্টের বসবাস। যাই হোক না কেন জ্যেন সব সময়
একটাই কথা বলত, 'রবার্ট করছে'। যদিও খেলনা ভাঙ্গার দ্বায়
জ্যেনকেই দেওয়া হত, আর শাস্তিও তাকে দেওয়া হত কিন্তু
সে সব সময় দোষ দিত রবার্টকে। দিন দিন এই সব অদ্ভুত
কর্মকান্ড বেড়েই চলেছিল। কর্মচারিরা ছুটি নিত কিন্তু আর
ফেরত আসত না, তাদের জায়গায় আনা হত নতুন কর্মচারিদের।
অট্টো পরিবারের লোকেরা ভাবল এবার কিছু করা দরকার, তাদের
এক বয়স্কা আত্মীয়ার উপদেশ অনুসারে জ্যেনকে রবার্ট
থেকে আলাদা করা হল আর রবার্টের জায়গা হল ষ্টোর রুমের
একটা বক্সে। আর এই বক্সেই অনেক বছর কাটিয়ে দেয়
রবার্ট।
জ্যেনের বাবা থমাস অট্টো মারা গেলে তিনি বাবার বাড়ি মালিক
হয়ে যান। বাড়ি পাবার পরে জ্যেন ঠিক করে সে তার নববধূর
সাথে ঐ বাড়িতে থাকবে। জ্যেন এতদিনে একজন চিত্রশিল্পী
হয়ে ওঠেন। সম্পূর্ন বাড়িতে তার জন্য একটা নির্দিষ্ট স্থান জন্য
বরাদ্দ ছিল যেখানে তিনি ছবি আঁকতেন। বাড়ির ষ্টোর রুমের
মধ্যে পুরাতন জিনিষ খুঁজতে যেয়ে খুঁজে পান তার ছোট
বেলার খেলার পুতুল রবার্টকে। জ্যেন আবার ছোট বেলার
মত রবার্টের খুব কাছে চলে যায়, যদিও তার বৌ মোটেও এটা
পছন্দ করেন নাই এবং জ্যেনকে বাঁধা দেবার অনেক চেষ্টা
করেছেন কিন্তু তিনি ব্যার্থ হয়েছিলেন জ্যেনকে রবার্টের
কাছ থেকে দূরে সরাতে। জ্যেন যেখানেই যেত
সেখানেই রবার্টকে নিয়ে যেত। এমন কি রাতে যখন জ্যেন
আর তার বৌ ঘুমাতো তখন রবার্টকে তাদের বিছানার পাশে একটা
চেয়ারে বসায় রাখত জ্যেন। জ্যেনের বৌ অতিষ্ট হয়ে
রবার্টকে আবার ষ্টোর রুমে আটকে রাখে। তার এই
ব্যাবহারের কারনে জ্যেন আর তার সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।
হঠাত একদিন কোন এক অজানা কারনে জ্যেনের বৌ মারা যায় আর
তার কিছু দিন পরেই মারা যায় জ্যেন।



যারা এই ষ্টোর রুমের পাশ থেকে হেঁটে যেত তাদের
অনেকেই বলেছে তারা একটা হাসির শব্দ শুনতে পায় ষ্টোর
রুমের মধ্য দিয়ে। অনেক দিন রবার্ট একা একা বাড়িতে ছিল, যত
দিন না নতুন আরেকটি পরিবার বাড়িটি কিনে বসবাস করা শুরু করল। যদিও
বর্তমানের বাড়ির মালিক রবার্টেকে ষ্টোর রুম থেকে আর
বের করলেন না। কিন্তু এবার ঘটল আরো অনেক অদ্ভুত সব
ঘটনা। রবার্টকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রুমে খুঁজে পাওয়া যেত।
কোন এক রাতে বাড়ির যে মালিক তার ঘুম হঠাত করে ভেংগে যায়
আর সে দেখতে পায় রবার্ট তার পায়ের কাছে বসা আর তার
হাতে রয়েছে একটা ছুড়ি। এই ঘটনাই যথেষ্ট ছিল তাদের এই বাড়ি
ছেড়ে চলে যাবার জন্য।
এরপর রবার্টকে সরিয়ে নেওয়া হয় 'East Martello Museum' এ,
যেখানে রবার্টকে রাখা হয় একটা কাঁচের বক্সের মধ্যে। যদিও
তাকে নতুন এক জায়গায় রাখা হয়েছে কিন্তু এখানেও সে ভয়
প্রদর্শন করে চলেছে। অনেক প্রদর্শনকারী এবং এই
মিউজিয়ামের কর্মচারীরা দাবী করেন যে তারা রবার্টকে
নড়তে দেখেছেন।



মিউজিয়ামের একজন কর্মচারী রবার্টকে রাতের বেলা পরিষ্কার
করে সব লাইট বন্ধো করে চলে যান। কিন্তু পরের দিন এসে
দেখেন যে সব লাইট জ্বালানো, আর রবার্টকে যে ভাবে
বসিয়ে রেখে গিয়েছিলেন সে অন্যভাবে বসে ছিল, তার
থেকেও অবাক করার বিষয় হচ্ছে নতুন ভাবে ধূলার আস্তরণ
পরেছে রবার্টের জুতার উপর।



আপনি যদি রবার্টের সাথে ছবি তুলতে চান তাহলে অবশ্যই
আপনাকে রবার্টের কাছে নম্রভাবে অনুমতি চাইতে হবে, যদি
সে মাথা নেড়ে অনুমতি দেয় তাহলেই ছবি তুলতে পারবেন, তা
না হলে আপনার উপর নেমে আসবে দূর্ভাগ্য। শুধু আপনিই নন
আপনার সাথে যারা মিউজিয়ামে এসেছেন সকলের উপরে এই
দূর্ভাগ্য নেমে আসবে। এটা অবশ্য লোক কথা, সত্যি না মিথ্যা তা
নিজেই যাচাই করে দেখুন।



উপরের ছবি তিনটির মধ্যে দখুনতো কোথাও রবার্টকে
দেখতে পান কিনা? এই ছবিটিকে প্রমান ধরে অনেকেই বিশ্বাস
করে যে রবার্ট সত্যি সত্যিই চলাফেরা করতে পারে।
যাই হোক রবার্টের সত্যতা, তার বর্তমান বসবাস ফ্লোরিডার East
Martello Museum
এ, যেখানে সে নাবিকের পোষাক পরে,
কোলের মধ্যে একটা সিংহকে নিয়ে বসে আছে চেয়ারের
উপর। আর চালিয়ে যাচ্ছে তার ভৌতিক কর্মকান্ড।

লেখকঃ- আর এন রাজু

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২৩

অনিন্দিতা দাশ বলেছেন: সত্যিই কি ভয়ানক!!
জানতাম না, জানালেন।

২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২৩

আর. এন. রাজু বলেছেন: হ্যা ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৪০

মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম বলেছেন: বেশ ইন্টারেস্টিং পোস্ট। আমি অবশ্য এসবে বিস্বাস করিনা। এই একই রকম কাহিনী নিয়ে অনেক আগে মনেহয় একটা মুভি দেখেছিলাম।
পোস্ট দারুণ হয়েছে।

২৫ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬

আর. এন. রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

৩| ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: মুভি রিভিউ ভেবেছিলাম।

২৫ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬

আর. এন. রাজু বলেছেন: তাই নাকি?

ধন্যবাদ ভাইয়া

৪| ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩

গায়েন রইসউদ্দিন বলেছেন: লেখককে ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য! ভূত বা ভূতের কর্মকান্ড অবিশ্বাসের কিছু নেই। মিউজিয়ামে গিয়ে দেখলেই তো হয়, আগে থেকেই অবিশ্বাস-বার্তা কেন?

২৫ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৮

আর. এন. রাজু বলেছেন: আপনার কথাই বুঝলাম না ভাইয়া।

তবুও আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া

৫| ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

খোলা মনের কথা বলেছেন: ভৌতিক গল্প। ভাল লাগলো তবে রাতে গল্পটি পোষ্ট করলে আরও বেশি মজা পাওয়া যেত

২৫ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৯

আর. এন. রাজু বলেছেন: তাই বুঝি ভাইয়া।
ঠিক আছে পরবর্তীতে এরকম হবে।

ধন্যবাদ ভাইয়া।

৬| ২৫ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০

শায়মা বলেছেন: কি ভয়ংকর!!!!!

আমি জীবনেও এর সাথে ছবি কেনো ওর ছবিও দেখতে চাইনা। চোখ বন করে পালালাম এই পোস্ট থেকে। তবে পুরা পোস্টটাই পড়েছি!

২৫ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:০৭

আর. এন. রাজু বলেছেন: এত ভয় পাইয়েন না!!
এই পোষ্টটি রাতে করলে তো আপনার ঘুম হারাম হত, তাই না!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.