নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেটা নই যেটা আপনি ভাবছেন..!! আমি সেটাই যেটা আপনি ভাবছেন না.!! আমাকে ভাবা যায় না..!! বুঝতে হয়.!!

আর. এন. রাজু

আমি একদিন মারা যাব, এই সত্যটা নিয়ে আমার খুব বেশি আক্ষেপ নেই। তবে, আমার মৃত্যুর পর আরও অসংখ্য অসাধারণ সব বই লেখা হবে, গান সৃষ্ট হবে, চলচিত্র নির্মিত হবে। কিন্তু আমি সে সব পড়তে, শুনতে কিংবা দেখতে পারবো না। এই সত্যটা আমাকে খুব যন্ত্রণা দেয়।

আর. এন. রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

“প্রতিশ্রুতি” - পর্বঃ ০১

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:০৬

“প্রতিশ্রুতি” - পর্বঃ ০১
লিখা- Raju Das Rudro
-
তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন ছিল বুধবার । তিন রাস্তার মোড়ে যখন তুমি রাস্তা পার হতে পারছিলে না, আমি তখন তোমার দিকে লক্ষ্য করছিলাম । তুমি শত চেষ্টা করেও রাস্তা পার হতে পারছিলে না; তোমাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাকে আমার চিন্তা-ভাবনা আমাকে বাধা দিল । তুমি অপরিচিত এক মেয়ে, আগে কখনো তোমাকে দেখিনি, আমার কি ঠিক হবে তোমাকে বলা যে “আমার সাহায্য লাগবে তোমার ?”
আমি এসব ভেবে আমি আর তোমার কাছে যেতে পারিনি । আমি অনেকক্ষণ থেকে তোমাকে লক্ষ্য করেই যাচ্ছিলাম । এতই জ্যাম ছিল যে তিল ফেলবার ঠাঁই নেই । তোমার উদাস মুখ দেখে আমার খুব হাসিও পাচ্ছিল এবং দূঃখও হচ্ছিল ।
-
অনেক কষ্ট করে যখন ট্রাফিক পুলিশ তোমার এই অবস্থা দেখলেন; তখন তিনি নিজে তোমাকে রাস্তা পার করে দিলেন । তুমি আমার সামনে দিয়েই বাড়ি চলে গেলে । তুমি হয়তো সেদিন ঠের পাওনি যে তোমার পিছনে থেকে আমি লক্ষ্য করছি তোমার গন্তব্য । কিন্তু সেদিন আমি তোমার সাথে সাথে পিছু যাইনি । কারণ আমি মেয়েদের পিছু যাওয়ার ছেলে নই ।
সেদিন বুধবার ছিল আমার কাছে অনেক আনন্দের । কারণ তোমার হাটা-চলা আমার খুব ভালো লেগেছে, তোমাকেও আমার ভালো লেগেছিল কিন্তু আমি সেদিন বুঝিনি । আমি সেদিন বুঝিনি এটাকে কি ভালোবাসা বলে ।
-
তুমি স্কুল থেকে যখন বাড়ি ফিরতে তখন আমাদের মধ্যে আবার দ্বিতীয়বার দেখা হয় । আমি ভাবব কি; কল্পনাও করতে পারিনি যে তুমি অচেনা মেয়ে যার সাথে আমার আবার দেখা হবে । তুমি যখন স্কুল থেকে ফিরবে তখন তোমার সাথে তোমার বান্ধবী প্রিয়াংকা ও ছিল । প্রিয়াংকা’কে আমি চিনতাম, ও আমার প্রাইমারী স্কুলের বান্ধবী; ওর সাথে আমার ভালোই বন্ধু্ত্ব ।
তুমি বাড়ির পথে হাঁটছো, আমি সেই আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি সেই প্রথম যেদিন তোমাকে দেখেছিলাম ।
-
আজ ও সেই বুধবার । খুব কৌতূহল হলেও সত্যি যে একই বারে; একই সময়; একই জায়গায় আমাদের দেখা । তোমার পিছনে আমি সেদিন ও যাই নি । তোমার চলে যাওয়া আমি দেখছি । তুমি যাচ্ছ, যাচ্ছ! খুব খুশি তুমি কারণ তুমি ক্লাসে আজ ফাস্ট হয়েছো । তুমি যখন প্রিয়াংকার সাথে কথা বলছিলে তখন এই কথাও বলছিলে তখন আমি শুনেছি । তোমার হাসি মুখ দেখে আমিও মুগ্ধ । তোমার হাসিটা খুব মায়বি, চোখ দুটি মন কেড়ে নেয়, চুল গুলো খোলা । সবকিছু মিলিয়ে ভালোই লাগছে তোমাকে । তোমাকে যতদূর দেখা যাচ্ছে ততটুকুই আমি তোমায় দেখে যাচ্ছি সেই একই জায়গা থেকে । আশেপাশে কি হচ্ছে তার কোনো খেয়াল নেই আমার । এক দৃষ্টিতে চেয়ে দেখলাম তোমার যাওয়া ।
-
বৃহস্পতিবার যখন তুমি স্কুলে আসনি তখন আমার খুব খারাপ লেগেছিল । আমি খুব চিন্তায় পরে গেছিলাম । জানিনা তোমায় নিয়ে কেন চিন্তিত ছিলাম । তখন হঠাৎ দেখতে পেলান যে প্রিয়াঙ্কা স্কুল থেকে একা একা হেঁটে আসছে । একা আসতে দেখে আমি জিজ্ঞাসা করলাম তাকে যে তুমি আজ স্কুলে কেন আসোনি তখন সে উত্তরে বলেছিল তুমি নাকি অসুস্থ্য । শুনে আমার কতটা খারাপ লেগেছিল তখন সেটা বুঝানোর মত না । আমি প্রিয়াঙ্কা কে অনুরোধ করে তোমার বাসার ঠিকানা নিলাম, ও কিছু একটা ভেবে আমাকে তোমার ঠিকানা দিল । আমি তাড়াতাড়ি করে তোমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম । আমার পড়নে তখনো স্কুল ড্রেস ।
তোমার বাসার নাম্বার দেখে দেখে আমি অনেক বাসা দেখে নিলাম কিন্তু পাচ্ছিলাম না । পাগলের মত খোঁজতে লাগলাম । শেষে গলির শেষ মাথায় গিয়ে পেলাম তোমার ঠিকানা, অনন্ত আ/এ ৫৫ । আমি তখন দেখতে পেলাম যে তুমি জানালার দিকে চেয়ার নিয়ে বসে আছো । আমি তোমাকে দেখছি কিন্তু তুমি আমাকে দেখনি । যখন আমার স্কুল টাইম ওভার হল তখনো আমি ঐ জায়গাতেই দাঁড়ানো আছি যেখান থেকে আমি তোমাকে দুচোখ ভরে দেখতে পাচ্ছি । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বিকাল ৫:৫০ বেজে গেছে । তখন তুমি হঠাৎ আমার দিকে তাকালে, কিছুটা বিব্রতভাব দেখলাম তোমার মাঝে । হয়তো তুমি তখন সেটা ভেবেছিলে যে আমি একটা বাজে ছেলে; রাস্তায় দাঁড়িয়ে তোমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছি । কিন্তু না, ওটা তোমার ভুল ধারণা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মেয়েদের দিকে তাকানো এটা আমার অভ্যাস না । তুমি অসুস্থ্য শুনে আমি আর ঠিক থাকতে পারিনি । তাই একপলক দেখার জন্য ছুটে এলাম তোমার বাসার কাছে ।
তুমি অস্বস্তি হয়ে চলে গেলে । আমার খুব খারাপ লাগলো । তবুও নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম যে তোমাকে আমি দেখতে পেরেছি ।
-
পরদিন যখন শুক্রবার; সেদিন স্কুল বন্ধ ছিল আমাদের দুজনের । তুমি অসুস্থ্য তা দেখার জন্য বৃহস্পতিবার এর মত আবারো ছুটে গেলাম তোমার বাসার কাছে, গিয়ে তোমাকে দেখতে পেলাম না । বিকাল ৫ টা বেজে গেল তুমি আসোনি; ৫:৩০, না তখনো আসোনি । ০৬ টা বেজে গেল, দেখলাম তুমি হাতে নিয়ে কিসের যেন একটি বই পড়ছো । আমি দূর থেকে ঠাহর করতে পেরেছিলাম যে সেটা আর কিছু নয় “হুমায়ুন আহমেদ” স্যারের "হিমু সমগ্র" পড়ছো । আমি তোমাকে দেখে যাচ্ছি, কোনো দিকে আমার খেয়াল নেই । কিন্তু তুমি আমাকে দেখতে পাওনি । তখনি হঠাৎ একটা ঘটনা ঘটলো । তোমাদের পাড়ার কিছু ছেলে আমাকে দেখে ফেললো তোমাকে দেখতে । তখন তারা আমাকে অনেক কিছু বললো, আমি ঠের পাচ্ছিলাম যে তুমি সেটা লক্ষ্য করছো । ঐ ছেলেদের সাথে আমি কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি । এক পর্যায়ে এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়ালো যে ঐ ছেলেগুলো আমাকে বাজে ভাষায় গালাগাল এবং মারধর করলো । আমি চশমা পড়তাম, আমার চশমাটা ওরা নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল । আমি চোখে ঝাপসা দেখতে পেলাম । আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল চশমাটা খোঁজতে । ছেলেগুলো আমার সাথে এরকম অমানবিক আচরণ করার পর চলে গেল । চশমাটা অনেক কষ্টে খোঁজে পেলাম তোমাদের বাড়ির বাগানের পাশে । চশমাটা ভেঙে গেছিল তাই কোনো কিছুই আমি পরিষ্কারভাবে দেখতে পাইনি । লজ্জিত হয়ে আমি চলে গেলাম তোমাদের বাসার সামনে থেকে ।

তুমি সেদিন ইতস্ততভাবে আমার দিকে চেয়ে আছো আমি সেটা বুঝতে পারছিলাম এবং তুমি আমায় আজ দ্বিতীয়বার তোমার বাড়ির সামনে দেখে অবাক হয়েছিলে সেটাও বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমার চলে যাওয়া দেখছিলে ।
-
চলবে...

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১২

অনিন্দিতা দাশ বলেছেন: আপনার লেখাটা ভালো লাগলো।
সুন্দর হয়েছে ভাই। :)
শুভ কামনা রইলো আপনার পরের লেখাটা তাড়াতাড়ি দিবেন।

অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো।

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪

আর. এন. রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ বোন আপনার মন্তব্যের জন্য।

আমাকে উৎসাহ দিবার জন্য আবারো ধন্যবাদ।

চেষ্টা করব বাকিটা যত তাড়াতাড়ি দিতে পারি।

২| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: চলুক.............................

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১৫

আর. এন. রাজু বলেছেন: হ্যা আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

গল্পের পৃষ্টে কি আপনার আর কোনো মন্তব্য নেই, দাদা।

৩| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

অনিন্দিতা দাশ বলেছেন: কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে চাই আপনাকে যদি অনুমতি দেন?

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২০

আর. এন. রাজু বলেছেন: অবশ্যই! অনুমতি দেব না কেন।


করুন আপনার প্রশ্ন, উত্তর জানা থাকলে বলব।

৪| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: গল্পে ভালো লাগা
ভালো লাগার জন্যই
চলতে বলা..................

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৬

আর. এন. রাজু বলেছেন: হ্যাঁ ধন্যবাদ!

৫| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: গল্পের অলংকরণে ব্যবহৃত ছবি কি
আপনার আকা? চমৎকার!!

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭

আর. এন. রাজু বলেছেন: জ্বী না দাদা। নেট থেকে সংগৃহীত।

৬| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: অনিন্দিতা দাশ আপনার বড় ফ্যান!!
আপনার সকল গল্পই সে আগ্রহ নিয়ে
পড়ে !! মন্তব্য করে, ব্যক্তিগত প্রশ্ন ও করে!!

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৮

আর. এন. রাজু বলেছেন: হ্যা দাদা, ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

আশা করি আপনি পরবর্তীতে আমার ব্লগে আবার আসবেন। শুভ কামন রইলো দাদা।

৭| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩

শায়মা বলেছেন: ভালো হয়েছে ভাইয়া।:)

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪২

আর. এন. রাজু বলেছেন: Dhonnobadh apu apnake...
apnar mullobar comment er jonno apnake osongkho dhonnobadh

৮| ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯

নীলপরি বলেছেন: বাহ খুব ভালো হয়েছে । স্কেচগুলোও খুব সুন্দর লাগলো ।

শুভকামনা । :)

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

আর. এন. রাজু বলেছেন: Dhonnobadh!!!
r ha sketch gulu internet theke collect korechi...

৯| ২৯ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪

নবিন ব্লগার বলেছেন: খুব ইমোশনাল নিয়ে পড়লাম, ভাল লগলো গল্পটি

২৯ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৯

আর. এন. রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সময় নিয়ে পড়ার জন্য, এবং আবেগিত হয়ে পড়ার জন্য।

নবিন ব্লগার।

১০| ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:৪৭

মিঃ অলিম্পিক বলেছেন: নাইচ, পরেরটা কখন দিবেন...???

২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:২৪

আর. এন. রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

কালকেই দেওয়ার চেষ্টা করব।

এক পোষ্টেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাঠকরা যদি লম্বা পোষ্ট দেখে পড়তে না চায় তাহলে তো ভাই আমার লেখার কোনো মূল্য থাকলো না।

আর হ্যা আরেকটি কথা, আমি চাই যে আমার লেখাতে পোষ্টভিত্তিক মন্তব্য হোক। সেই পোষ্ট ছোট হোক বা বড় হোক, মন্তব্য ৫ টা হোক আর ১০ টাই হোক।

আমি এতেই খুশি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.