নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেই বেইমান - শেষ পর্ব

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩০

কে বেইমান - শেষ পর্ব
.

.
আতিক বেডরুমের দিকে গিয়ে দেখে মিমের মা মুমুর্ষ অবস্থায় পরে আছে। আতিক দৌড়ে কাছে গিয়ে বলল
-কি হয়েছে আপনার?
মিমের মা কিছুই বলতে পারলো না। শুধু বলল
-পানি।
.
আবির দৌড়ে ডাইনিং টেবিল থেকে জগ এনে গ্লাসে পানি দিল মিমের মাকে। কিন্তু পানি খাওয়ার পরে মিমের মায়ের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেল। এই অবস্থায় মিমকে ফোন করা উচিৎ।
.
মিমকে ফোনে না পেয়ে নিজেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করলো। গাড়ি ডেকে এনে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মিমের মায়ের মৃত্যু হল।
.
মিমের মায়ের মৃত্যু হল কিন্তু আতিককে জেলে যেতে হল। কারন মিমের মায়ের বিষক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে। আর আতিকের খাওয়ানো পানিতেই মিমের মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
.
আদালতের রায় শেষে আতিকের বিশ বছরের জেল হল। আর সেই মামলাটি মিম করেছিল। আতিক এখানে কিছুই করতে পারলো না। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার কোন প্রমাণ ছিল না।
.
আতিক জেলে থাকা অবস্থায় খবর পেল তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় আতিকের বাবা মারা গেল। কিন্তু আতিক কিছুই করতে পারলো না। শুধু চোখের পানি ফেলে যেতে হল।
.
বাবাকে কবর দিতে পেরেছে এতেও আতিকের শান্তি লাগছে। বাবাকে কবর দিয়ে ভাই আফজালকেও শান্তনা দিতে পারে নি। আবারও তাকে জেলে নিয়ে আসা হয়েছে। আর আতিক বিনা দোষেই জেল খাটতে থাকলো। কোনভাবেই প্রমাণ করতে পারলো না সেদিনের পানিতে বিশ আতিক মিশায়নি।
.

.
মিম এতক্ষণ চুপ করে শুনছিল। এবারে মিম রেগে বলল
-আতিক পানিতে বিশ মিশিয়েছিল।
-কে বলেছে তোমায়?
-আদালতের প্রমাণ বলেছে।
-পানিতে তো আগেই অন্য কেউ বিশ মিশিয়ে রাখতে পারে।
-কেউ মিশায়নি। আতিক বিশ মিশিয়ে জোর করে খেতে বাধ্য করেছে। যাতে খুনটাকে আত্যহত্যা বলে চালিয়ে দিতে পারে। কিন্তু আতিক সেদিন ধরা পরে গিয়েছে।
-তুমি কি সেদিন সেখানে ছিলে?
-না।
-তাহলে কিভাবে জানলে?
-বাপ্পির কাছ থেকে জেনেছি।
-বাপ্পি!! আমি যদি বলি বাপ্পি পানিতে বিশ মিশিয়েছিল।
-কি বলছো তুমি!! বাপ্পি কেন বিশ মিশাতে যাবে?
-এর পিছনে কারন আছে।
-কি কারন?
-তোমাকে পাওয়া।
-আমাকে তো এমনিতেই পেয়েছে। তাহলে ওসব করতে যাবে কেন?
-এত সহজে পেত না। আর তাই তোমার মাকে মেরে আতিক ভাইয়াকে ফাঁসিয়েছে।
-কে বলেছে তোমাকে এসব?
-বাপ্পির বাবা।
-সে তো আত্যহত্যা করে মারা গিয়েছে। তাহলে বলল কিভাবে?
-আত্যহত্যা করে মরে নি। তাকে মেরে আত্যহত্যা বলে চালিয়েছি। কিন্তু তার আগে মুখ থেকে সত্য কথাগুলো জেনে নিয়েছি।
-কি বলছো!!
-আগে শোন তোমার মায়ের হত্যার দিনের কাহিনি।
.

.
সেদিন আতিক যাবে সেটা বাপ্পি আর তার বাবা জানতো। তাই তারা আগেই মিমের বাসায় ঢুকে মিমের মাকে আঘাত দিয়ে মারতে থাকে। আর সবশেষে আতিকের আসার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে পানিতে বিশ মিশায়। তারা জানতো এতে কাজ হতে পারে। আর নাহলেও অন্য ব্যাবস্থা করা ছিল।
.
মিমের মায়ের খুনের মিথ্যা মামলায় আতিককে ফাঁসিয়ে বাপ্পি এবং তার বাবা সস্তির নিশ্বাস ফেলে। কারন আতিক থাকলে আতিকের বাবার সম্পদ অত সহজে ভোগ করতে পারতো না। আর বাপ্পির ভালবাসা মিমকে পেত না।
.
আতিক যখন জেলে বাপ্পি তখন মিমের পাশে দাড়ায়। আতিকের কারনে মিমকে বাপ্পি ভালবাসার কথা বলতে পারে নি। এখন পাশে থেকে মিমের মনে জায়গা করে নেয়। আর বাপ্পি মিমকে বিয়ে করে ফেলে।
.

.
মিমকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল
-কি হল তোমার? আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না?
-এখন কিছুটা বুঝতে পারছি। বাপ্পির সাথে দেখা হওয়ার প্রথম দিনে আমার দিকে তাকিয়ে থাকা, মিমের প্রতি বাপ্পির কেয়ার, আর মাঝে মাঝে আতিকের নামে অনেক ধরনের খারাপ কথা বলা।
-আমিও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারি নি। হোস্টেল থেকে চার বছর পরে আমি যখন চলে এলাম তখন এসে জানতে পারলাম সবকিছু। আমার নামে শিক্ষাবিমা থাকায় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারি।
-এখন কি করো?
-এখন পড়ালেখা বাদ দিয়েছি। বাপ্পি আমাদের সাথে এমন করলো কেন? উপকারের এই প্রতিদান দিল বাবা ছেলে মিলে!!
মিম কিছু বলতেও বলল না। তার মত সে বাসায় চলে গেল।
.

.
মিম বাপ্পির কাছে ফোন করলো। বাপ্পি ফোন ধরে বলল
-আমার মিষ্টি বউটার ফোন হঠাৎ!! কি মনে করে?
-একটু তারাতারি বাসায় আসতে পারবে?
-কেন? জরুরি কিছু?
-হুম। তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
-সারপ্রাইজ!! আমি এখনই আসছি।
.
মিম কিছু বলার আগেই বাপ্পি ফোন কেটে দিল। আর মিম বাপ্পির জন্য অপেক্ষা করতে থাকলো।
.
দরজা খুলে দিয়ে বাপ্পিকে বলল
-দারাও।
-কেন?
-চোখ খুলে গেলে তো সারপ্রাইজ থাকবে না। চোখ কাপড় দিয়ে বেধে দেই আগে।
-কি এমন সারপ্রাইজ?
-গেলেই দেখতে পারবে।
.
বাপ্পিকে সোফায় না বসিয়ে চেয়ারে বসিয়ে চোখের কাপড় খুলে দিল।ততক্ষনে চেয়ারের সাথে বাপ্পির হাত বাধা হয়ে গেছে। বাপ্পি সামনে আফজালকে দেখে বলল
-আরেহ এটা কে!!
-সারপ্রাইজ হলেন ভাই?
-তু তুমি!!
-চিনতে পেরেছেন চার বছর পরেও।
-হুম।
-আপনি আমাদের বিশ্বাস এর জায়গায় কেন কুড়াল মারলেন?
-দেখ। আমি যা করেছি অবস্থার স্বিকার হয়ে। আমাকে মাফ করে দাও।
-মাফ!! কোন ভুলের মাফ করবো??মিমের মাকে খুন,আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, আমার ভাইকে জেলে পাঠানো আরো কত কিছু।
-আমি সব সম্পদ ফিরিয়ে দেব।আমাকে মাফ করে দাও।
-সম্পদ পেলে কি আমি আমার বাবাকে পাব? সুখের সংসার পাবো? নাকি মিম তার মাকে পাবে?
-আমি কিছু জানি না।
-আপনাকে কিছু জানতেও দেওয়া হবে না। শুভ বিদায়।
.
বাপ্পি মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছে। আর বার বার মিমকে বলছে
-আমার সাথে বেইমানি কেন করলে?
মিম অট্টহাসি হেসে বলল
-বেইমানি!!!
.
বাপ্পি নিথর শরির পরে আছে। এখানেই মিমের কাজ শেষ নয়। এখন আতিককে জেল থেকে মুক্ত করতে হবে। কারন মামলা মিম করেছিল। আর হাইকোর্ট এ আপিল করলে হয়তো আতিক মুক্তি পাবে।
.
মিমের মনে একটা প্রশ্ন ঘুরছে। কে বেইমান?
সেদিন মিম আতিককে বলেছিল "তুই আমার মাকে মেরেছিস বেইমান "
সেদিন আতিক বেইমান?
আজ মিম বেইমান? নাকি বাপ্পি আফজালের কাছে বেইমান? নাকি বাপ্পির বাবা সবার কাছে বেইমান? এমন অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। যার উত্তর খুজে পেয়েও যেন পাওয়া যায় না। কিন্তু গল্প শেষ হয়ে যায়।
.
-- Jubaer Hasan Rabby (পাবনার তাঁরছেড়া বালক)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.