নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিবনের গতি

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:১১

আসিফ একবুক হতাশা নিয়ে বেড়িয়ে এল। অবশেষে চাকরিটা চলেই গেল। প্রতিদিন আসতে দেরি হয় বলে ঝারি দেয়। আজকে ঝারি না দিয়েই চাকরিটা চলে গেল।
.
আসিফ ইচ্ছা করে দেরি করে আসে না। প্রতিদিন রাতে কাজ করে এসে ঘুমাতে ঘুমাতে অনেক রাত হয়ে যায়।
.
ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায়। প্রতিদিন চার-পাঁচ ঘন্টা ঘুমিয়ে ক্লান্ত শরির নিয়ে সকালে কাজে যেতে হয়। আর প্রায়ই তার ঘুম ভাঙতে দেরি হয়ে যায়।
.
আসিফ বাইরে এসে বুঝলো ক্ষুধা লেগেছে। সকালে কিছু খাওয়া হয় নি। এই মাসে খাবারের টাকা দিতে পারে নি বলে মেসে খাবার বন্ধ করে দিয়েছে।
তাই না খেয়েই বের হতে হয়েছে। এখন আসিফ খাবারের জন্য ছুটলো।
.
চায়ের দোকানের কাছে গিয়ে দেখলো পকেটে বিশ টাকা আছে। এতেই কোনরকম পেট চালানো যাবে। তাই দোকান থেকে তিনটা রুটি নিয়ে খেতে থাকলো। পানি দিয়ে খেতে খারাপ লাগে না।
.
খালি পেটে খাবার পরেছিল বলে মাথাটা ঘুরে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আসিফ সেখান থেকে চলে আসলো। আর রাস্তায় হাটতে থাকলো।
.
আসিফ রাস্তায় হাটছে আর চাকরির কথা ভাবছে। চাকরি করে প্রায় দুই হাজারের মত টাকা পাওয়া যেত।
এই টাকাগুলো দিয়ে মেসের ভাড়া দিয়ে তিনবেলা ঠিকমত খাবার খেতে পারতো। আর রাতে কাজ করে যা পায় তা লেখাপড়ার জন্য খরচ করতে হয়।
.
আজকের পর থেকে আবারও ঠিকমত খাবার জুটবে না। তবুও আসিফ মানিয়ে নিতে পারবে।
এটা আসিফের জন্য কোন ব্যাপার না। এবারে আসিফকে নতুন কোন কাজ খুঁজতে হবে। নাহলে মেসের ভাড়া জোগাড় করা কঠিন হয়ে যাবে।
.
এইসব কথা ভাবতে ভাবতে আসিফ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ গায়ের কাছ দিয়ে একটা বাইক ভো করে চলে গেল।
.
আসিফ চমকে বাইকের দিকে তাকিয়ে দেখলো রিমি বসে আছে। আর রিমির সেই হাসি হাসি মুখ। যেই মুখটা রিমির খুব প্রিয় ছিল।
.
রিমি! নামটা বলতেই আসিফের পুরাতন স্মৃতি মনে পরে গেল। এই রিমি এক সময় আসিফের প্রেমিকা ছিল।
এখন অন্যজনের প্রেমিকা হয়ে তার বাইকে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রিমি আসিফকে ছেড়ে চলে গিয়েছে।
.
আসিফকে ছেড়ে যাবেই না কেন? প্রেমের বেলায় প্রেমিকরাই প্রেমিকাকে ফোন দেয়। আর এখানে রিমিই ফোন দিত। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই কথা বলতে পারতো না।
কারন আসিফের ফোন সবসময় নষ্ট হয়ে পরে থাকতো। আসিফ ঠিকমত দেখাও করতে পারতো না। আসিফকে ছুটতে হত জিবিকার খোঁজে।
.
রিমি আসিফকে ছেড়ে যাওয়ায় ভাল হয়েছে। রিমি তার মত শান্তিতে আছে। আর আসিফও শান্তিতে আছে।
যার নিজের জিবন চালাতেই হিমশিম খেতে হয় সে অন্যের দায়িত্ব নেয় কিভাবে?
.
রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে আসিফের মাথায় এইসব চিন্তাগুলোই ঘুরছে। ক্ষুধা পেটে মনেহয় সব চিন্তা আরো মনে এসে ভড় করে। এতে ক্ষুধা কিছুটা ভুলা যায়।
.
আসিফের আজ নিজের জিবনের কথা মনে পরে যাচ্ছে। প্রায় পাঁচ ছয় বছর আগে আসিফ বাড়ি ছেড়েছে। নিজের ইচ্ছায় ছাড়ে নি। সৎমায়ের জালায় বাড়ি থেকে বের হতে হয়েছে। কিন্তু মায়ের অত্যাচারে বাবাও সেদিন কিছু বলতে পারে নি।
.
বাড়ি থেকে আসার পরে আসিফের বাবা আসিফকে মাঝেমাঝে কিছু টাকা দিত। কিন্তু গতবছর থেকে তাও দিতে পারে না।
কারন আসিফের বাবা চাকরি থেকে রিটার্ন হয়েছে। আর অফিস থেকে যা পায় তার সৎমা সেটা বুঝে নিয়ে সংসার চালায়।
.
আসিফের এতকিছু হওয়ার পরেও দুঃখ নেই। দুঃখ আসিফকে স্পর্শ করে কাঁদাতে পারে না। কথায় আছে "অল্প শোকে কাতর আর বেশি শোকে পাথর"।
আসিফের বেলায় তার পুরাপুরি ঘটেছে। বেশি শোকে আসিফ পাথর হয়েছে বলে কাঁদে না।
.
সবকিছু মিলিয়ে আসিফের মনেহয় সে সুখেই আছে। কারন এতকিছুর পরেও আসিফ বেঁচে আছে এটাই অনেক।
.
হয়তো পড়ালেখা করার পরে একদিন আসিফের দুঃখ ঘুচবে।টাকার অভাবে সেদিন চাকরি হবে না। কিন্তু তার মত দুঃখ কষ্ট নিয়ে বেচে থাকবে। জিবন চলে যাবে তার আপন গতিতে দুঃখ কষ্ট নিয়ে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

আহলান বলেছেন: ভাই তার পর আসিফের কি হলো ... আলাদিনের চেরাগ হাতে ধরায়া দেন না কেন? .....

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

মিমমা সুলতানা মিতা বলেছেন: যদি গল্পটা বাস্তব হয়। তাহলে আসিফ একদিন অনেক বড় মানুষ হবে

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৫৯

পাবনার তাঁরছেড়া বালক বলেছেন: আল্লাহ সহায় হলে হয়তো একদিন হবে. @মিতা আপু

৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:০৮

পাবনার তাঁরছেড়া বালক বলেছেন: সবাই আলাদিনের চ্যারাগ পায় না ভাই @আহলান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.