নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একান্ত ব্যক্তিগত কারণে ব্লগে আর পোস্ট দেওয়া হবে না। আপাতত শুধু ব্লগ পড়বো। বিশেষ করে পুরানো পোস্টগুলো। কোন পোস্টে মন্তব্য করবো না বলে ঠিক করেছি। আমি সামহোয়্যারইন ব্লগে আছি এবং থাকবো। ভালো আছি। ভালো থাকুন সকলে।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ অধঃপতন

৩১ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১১

(১)
সীমা পরীক্ষা দিয়ে এসেই জানিয়েছিল,
-পরীক্ষা ভালো হয় নি অযথা আশা করো না দুঃখ পাবে কিন্তু বললেই তো আর আশা করতে কেউ কম করে না।যদি কোনভাবে চান্স হয়ে যায়। বিশেষ করে সীমার মত মেধাবী ছাত্রীর ক্ষেত্রে একটু বেশি প্রত্যাশা অন্যায় হবে না। এস এস সি ও এইচ এস সিতে তার রেজাল্ট চমকে দেবার মত।
আজ যখন ফলাফল প্রকাশিত হলো কৌতুহলবশত খোঁজ নিতেই বাড়িতে খুশির বন্যা বয়ে গেল।
সীমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে! এ সত্যি এক বিরল ঘটনা সোবহান আলীর পরিবারের জন্য।
সোবহান আলীর পরিবারে তেমন কেউ শিক্ষিত সদস্য নেই। টাকা পয়সা বা মেধা বরাবরই তাদের কাছে দূর আকাশের তারার মত ।যা চোখে দেখা যায় কিন্তু ধরা কিম্বা ছোঁয়া যায় না কিছুতেই। স্বাভাবিকভাবে বর্তমান প্রাপ্তিতে বাঁধ ভাঙা খুশির জোয়ারে ভাসতে থাকে মধ্যবিত্ত এই পরিবারটি। মাসিক বাজারের টাকা ভেঙে সাথে সাথে প্রতিবেশি আত্নীয় স্বজনদের মিষ্টিমুখের ব্যবস্থা করলেন সোবহান আলী,খুশিতে তার দুচোখে জল চলে আসছে। এক সময় তার অনেক পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল, সে বারবার চোখের জল মুছছে আর বলছে আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন,ওরে একটু দোয়ায় রাখবেন।কেউ কেউ অবশ্য এসব আদিখেত্যা দেখে বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকেছে।সীমার একমাত্র বড় ভাই আসিফ জানালো সে সবাইকে আজ রাতে "বউমার স্পেশাল বিরিয়ানি" খাওয়াবে। যদিও জোবাইদা খানম মেয়ের সাফল্য উপলক্ষে বাড়িতেই বিরিয়ানি রান্না করতে চেয়েছিলেন তার আবার বাইরের খাবার পছন্দ নয় একেবারেই কিন্তু আসিফ জোর আপত্তি জানিয়ে বলল
- মা, এত গরমে তোমাকে আর খাটা খাটুনি করতে হবে না আর "বউমার বিরিয়ানি" বাড়ির সবাইকে খাওয়ানো ইচ্ছে আমার বহুদিনের।"বউমার বিরিয়নি"র মালিক আমার নিজের লোক।অল্প খরচে সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে । সব সময় হাতে টাকা থাকেও না এই সুযোগটা একটু কাজে লাগাই প্লিজ।
- বাইরের খাবারের যা দাম? তুই কি..।
মায়ের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বেশ একটু রাগ দেখিয়ে আসিফ বলল
- তোমাকে দাম নিয়ে ভাবতে হবে না তো,বাজার তুলনায় বউমার বিরিয়ান দাম যথেষ্ট কম ।তোমাকে বললাম তো "বউমার বিরিয়ানি"র মালিক আমার নিজের লোক আর আমার কাছে যে টাকা আছে তাতে ভালো ভাবে সব আয়োজন হয়ে যাবে তোমাকে অকারণ চিন্তা করতে হবে না। ওরা সময় মত বাড়ি পৌঁছে দেবে।
- তুই বেকার মানুষ। এতগুলো টাকা...
-আবার? বললাম না, তোমাকে ভাবতে হবে না।
আসিফ বেকার হলেও তার প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট আয় আছে। অনির্দিষ্ট হলেও এই আয়টা গত ছমাস ধরে নিয়মিত বলা চলে। সেই সূত্রে গতকাল বেশ কিছু নগদ প্রাপ্তিও হয়েছে।বোনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফলের খবরে তার সত্যি ভীষণ আনন্দ ও গর্ব হচ্ছে। এমন আনন্দের খবর প্রতিদিন আসে না তার নিজের ও লেখাপড়ার অনেক শখ ছিল নানা কারণে সে পথচলা হঠাৎ ই থমকে গেছে। বাড়িতে এত বড় একটা খুশির পরিবেশে একটু বিলাসিতা করাই যায়,হোক না কিছু খরচ।
রাতে যথাসময়ে উৎসবের আমেজে খাওয়া দাওয়া পর্বের প্রস্তুতি শুরু হলো।সব বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দিয়ে মোমবাতি জ্বালানো হয়েছে।আলো ছায়ায় ক্যান্ডেল লাইট ডিনার হবে। এটা অবশ্য সীমার বুদ্ধি আয়োজন যথেষ্ট ভালো ছিল কিন্তু বাঁধ সাধলো প্রকৃতি খাওয়ার মাঝপথে বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ দমকা বাতাস শুরু হলো।ঘরের জানালাগুলো যেহেতু খোলাই ছিল ঝড়ো বাতাসে দুম করে মোমগুলো নিভে যেতেই কেমন একটা ভৌতিক পরিবেশ তৈরি হলো।তৎক্ষনাৎ ঝনঝনিয়ে থালাবাটি আছড়ে পড়লো কাছাকাছি কোথাও অদ্ভুতভাবে ঘরময় কি যেন উড়াউড়ি শুরু করলো। আরশোলা কি? কোথায় ছিল কে জানে! সীমা আরশোলায় দারুণ ভয়।সে আতঙ্কে চিৎকার শুরু করলো। কিছুক্ষণ পরে বোঝা গেল ওগুলো বাদুর। ঘরে ঢুকে উদভ্রান্ত হয়ে এ দেয়ালে ও দেয়ালে বাড়ি খেয়ে ওড়াওড়ি করছে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে।অন্যদিকে বাইরে বাতাসের শনশন আওয়াজ।মেঘের গুড়ুম গুড়ুম শব্দ। যেহেতু বিদ্যুৎ বা আলো কোনটাই নেই তাই পরিবেশটা ভীতিকর হয়ে উঠতে সময় নিল না। কথায় বলে আতঙ্ক আর হাসি দ্রুত ছড়ায় এক্ষেত্রে ঠিক তাই হলো।গা ছম ছম ভাবটা সবাইকে হঠাৎ করে গ্রাস করলো ভীষণভাবে।
খেতে খেতে মোবাইলে ডুবে যাওয়া আসিফের একটা বদ অভ্যাস।এদিকে ঘর অন্ধকার ঝড়ের সাথে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাইরে থেকে বৃষ্টির ছিচ ঘরে এসে পৌঁছাচ্ছে জানালা দিয়ে সেই সাথে বিদ্যুৎ ও চমকাচ্ছে! এত কিছুর মধ্যে আসিফ গভীর মনোযোগ দিয়ে মোবাইলে কি যেন দেখছে আর খেয়ে চলেছে ধীর গতিতে ।ঘরের সামগ্রিক পরিবেশ তাকে এখনও স্পর্শ করতে পারে নি বোঝাই যাচ্ছে । মোবাইলের আলোতে আসিফের মুখটা অদ্ভুত দেখাচ্ছে।কেমন যেন চিন্তাক্লিষ্ট ও কিছুটা বিভ্রান্ত।এদিকে প্রাথমিক ভীতি কাটতেই সীমা আবার জোরে চেঁচিয়ে বলল
- মা আলো জ্বালাও আমার ভয় করছে। মা আলো জ্বালাও তাড়াতাড়ি ..।
সোবহান আলী আলো জ্বালাতে গিয়ে বুঝলেন বিদ্যুৎ চলে গেছে।
এমন সময় আসিফ যেন কেমন অদ্ভুত আচরণ শুরু করলো সে টেবিলের সব খাবার ছুড়ে ছুড়ে মেঝেতে ফেলে দিতে লাগলো।পাগলের মত সবার খাবারগুলো কেড়ে নিয়ে মেঝেতে ছড়িয়ে একাকার করলো মুহুর্তে। অন্ধকার পরিবেশে ব্যপারটা বেশ ভীতিকর ও রহস্যময়, হয়ে উঠলো আরও।আসলে এসব কি হচ্ছে? কেউ ঠিক ঠাক বুঝতে পারছে না। অন্যদিকে ঘরের ভিতর বিভৎস অট্ট হাসির আওয়াজ শুরু হলো।
কে? কে ওখানে? কে হাসে? ....হঠাৎ সব চুপচাপ
জোবাইদা খানমের গলা ভেসে এলো এবার।কন্ঠের আওয়াজটা মনে হচ্ছে অনেক দুর থেকে আসছে।
- কিরে তোরা সব এমন করছিস কেন পাগল হলি নাকি?
আসিফ হড়হড়িয়ে বমি শুরু করলো আকষ্মাৎ।ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটলো যে সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। তার মধ্যে সদর দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়বার আওয়াজে পরিস্থিতি আর-ও নাজুক হয়ে উঠলো। কে এলো এত রাতে?এক সাথে এত ঘটনা সব কি কাকতালীয়? না-কি অন্য কিছুর ইঙ্গিত?
(২)
আসিফরা একসময় তালতলা রোডের একটা টিনশেডের বাসায় ভাড়া থাকতো।তখনও সেই এলাকায় এত বহুতল ভবন হয় নি। এলাকার সকলেই শ্রমজীবি।সেই পাড়ায় বিকাল হলে এখানে ওখানে জটলা বেঁধে আড্ডাবাজি চলতো দেদারসে। কোথাও ছেলেদের জটলা আবার কোথাও মেয়েদের আর তৎসংলগ্ন রাস্তায় চলতো বাচ্চাদের ননস্টপ খেলাধুলা হৈ চৈ।রাস্তার মাথায় চটপটি ফুচকা ঝালমুড়ির দোকান বসতো বিকাল হলেই।বলা যায় এক কথায় জমজমাট অবস্থা।
যাহোক একদিন রাত ভর ঝড় বৃষ্টি শেষে ঝকঝকে রৌদ্রময় সকালে স্কুলে বের হবার মুখে বাসার বারান্দায় আসিফ ছোট একটা কুকুর ছানাকে মুমূর্ষু অবস্থায় কাতরাতে দেখতে পায়।নাক মুখ থেতলে যাওয়া বাচ্চাটি ব্যাথায় যন্ত্রণায় কু কু আওয়াজ করছিল।ছানাটিকে এমন কুঁকড়ে মুকরে থাকতে দেখে আসিফের বেশ মায়া হয়। সেদিন আর সে স্কুলে গেল না। ওকে নিয়েই ব্যস্ত রইলো। কোন এক অদ্ভুত কারণে কুকুরছানার প্রতি দারুণ টান অনুভব করছিল। আসিফ ও তার মা মিলে কুকুরছানাটিকে চিকিৎসা পথ্য দিয়ে সুস্থ করে তুলল দুতিন দিনের মধ্যেই ।এত খাতির যত্ন পেয়ে কুকুরছানার সাথে আসিফের ভাব হতে দেরি হলো না।এখন সে আর খেলতে যায় না হুটহাট বাসা থেকে বের হয়ে কারো চিন্তার কারণ হয় না। আসিফের মা ছেলের এই পরিবর্তনে দারুণ খুশি। সে সময় প্রায় ছেলে মেয়ে হারিয়ে যাবার খবর আসতো। মাইকিং হতো তাদের বেশির ভাগই আর পাওয়া যেতো না।এ অবস্থায় আসিফকে বেঁধে ফেলার দারুণ কৌশল আকষ্মাৎ মিলে যাওয়াতে আসিফের মা দারুণ খুশি।যাহোক সেই শুরু....। ওর নাম দেয়া হয়েছিল টমি,সময় গড়ায় টমি বড় হয় তারপর একে একে টনি টমির বান্ধবী লারা ওদের পরিবার সে এক অন্য রকম অবস্থা।দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি পেল দু তিন বছরে ।এক সময় প্রতিবেশিরা বিরক্ত হলে এসব নিয়ে বাসায় কমপ্লেন আসাতে অশান্তিও তৈরি হলো।এদিকে বেচারা টমির ও তার পরিবারে আরও বাড়তে থাকে এবং বাড়তে থাকে নানাবিধ সমস্যা। এরমধ্যে টমি এবং তার ঝাড় বংশ হঠাৎ করে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গেল। কোথায় যে লা পাত্তা হলো কে জানে?পাওয়া গেল না তো গেলই না।
সেই একই সময় আসিফদের পাড়ায় জব্বার নামে একজন রাজমিস্ত্রি থাকতো,মোড়ের মাথায় তার দোকান ছিল।অল্প কদিনের মধ্যে তার সাথে আসিফের একটা চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও তৈরি হয়েছিল।সম্পর্ক সূত্রে আত্নীয়তার কোন বন্ধন না থাকলেও আসিফ তাকে মামা ডাকতো। তো সব চলছিল ভালোই কিন্তু সেই জব্বার মামাও তার পরিবার নিয়ে হঠাৎ উধাও হলো একদিন। কাকতালীয়ভাবে টমির পরিবার আর জব্বারের পরিবার কাছাকাছি সময়ে অন্তর্ধান আসিফের ছোট্ট মনে বিরুপ প্রভাব ফেলল।জব্বার ছিল আসিফের ভীষণ প্রিয়। এদিকে টমিও। কোথায় গেল ওরা সব? কেউ জানে না জব্বারের কথাবলার ধরণটাই ছিল অন্য রকম। সে খুব সহজে মানুষকে মায়ার জালে আবদ্ধ করে ফেলতে পারতো । আসিফ অনেক খুঁজেও জব্বার বা টমি কারো হদিস পেল না। দিন গড়িয়ে চলল।সময় মানুষের সব ক্ষত দূর করে দেয় এক্ষেত্রেও তাই হল।
বেশ অনেক দিন বাদে আসিফরা তখন ওই পাড়া ছেড়ে চলে এসেছে হঠাৎ আবার দেখা সেই জব্বারের সাথে।ততদিনে জব্বারের অবস্থা বেশ ফিরেছে অন্তত বেশভূষা তাই বলে,হাতে গলায় স্বর্ণালংকার পরনে ধোপদুরস্ত পোশাক।কথায় কথায় জানা গেল পেশাও বদলে গেছে তার এখন আর সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে না। নিজস্ব খাবারের দোকান দিয়েছে সে গ্রীন রোডে। জমজমাট ব্যবসা।
পুরানো সম্পর্ক ফিরে আসাতে সম্পর্ক আরও গভীর হয়।ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।একসময় সে আসিফের সাংসারিক হাল ও দুরবস্থা শুনে আসিফকে একটা প্রস্তাব দেয় সে।প্রস্তাবটা আসে পুরানো শখের জানাশোনা সূত্র ধরেই। খাবারের দোকানের পাশাপাশি পার্টটাইম হিসাবে একটা বিদেশী একটা সংস্থার সাথে কাজ করে সে। রাজমিস্ত্রির কাজ আর ক্ষুদ্র ঋণের চক্করে পড়ে সেই সময় দিশেহারা অবস্থা জব্বারের।ঠিক তখনই যেন আশীর্বাদ হিসাবে হাজির হল এক বিদেশি দম্পতি। যারা আসলে পশুপ্রেমি,এদেশে আছে অনেক বছর।অসহায় মালিকানা বিহীন পশুদের সব দেখ ভাল তারাই করে।তাদের কাছে বাইরে থেকে অনেক সাহায্য আসে।তাতেই চলে তাদের প্রতিষ্ঠান । তাদেরকে রাস্তা থেকে কুকুরগুলো ধরে নিয়ে পৌছে দিলেই বেশ পয়সা মিলল।এদিকে আবার কুকুরগুলোরও একটা গতি হলো।
আসিফ যদি তার খোঁজে থাকা কুকুরগুলো তুলে দেয় তবে সে কিছু উপরি আয়ও করতে পারবে।যা দিয়ে নিজের খরচ চালাতে পারবে ভালোভাবে। আর কিছু কুকুরও ভালো থাকবে বিদেশি দম্পতির বদান্যতায়।
আসিফ তখন বেকার ,পড়া লেখাও বন্ধ টাকার অভাবে।ইনকামের পথ খুজে পেয়ে অত সত আর ভাবলো না। তার উপর তার প্রিয় কুকুরগুলোর যদি ভালো একটা গতি হয় তো সমস্যা কি।উপরন্তু বাড়তি ইনকাম। সম্প্রতি সে তখন একটা প্রেমও করছে। প্রেমিকার মন রক্ষার্থে টাকা চাই অথচ বাড়ি থেকে বাড়তি কোন টাকা পাবার সম্ভাবনা নেই। উপরি ইনকামের সুযোগ এসে তার জন্য মুশকিল আসান হলো।
(৩)
সেদিন রাতে সীমার বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া উপলক্ষে যখন বিরিয়ানি খাওয়া চলছিল তখন নিউজ ফিডে কিছু খবর দেখে থমকে গিয়েছিল আসিফ। ক্রল করে করে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে বুঝতে এরমধ্যে ঝড় উঠলো বাতি নিভে গেল সীমার আতঙ্কিত চিৎকার থালাবাটির ঝনঝনে আওয়াজ কোন কিছু কানে গেল না তার কেমন যেন আচ্ছন্ন হয়ে মানসিক রুগির মত আচরণ করতে লাগলো আসিফ খবরটা দেখার পর থেকে।আসলে সে ভীষণ শকড ছিল। সে টেবিল থেকে খাবার ছুড়ে মারতে লাগলো তার এত এত অপরাধবোধ তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলল , হিতাহিত জ্ঞান লুপ্ত হলো।বাড়ির সবাই প্রাকৃতিক দূর্যোগে ও কিছু কাকতালীয় ঘটনার আকষ্মিকতায় ভৌতিক কিছু আশঙ্কা করলো। দূর্বল চিত্তের মানুষ সহজে আক্রান্ত হয় এরকম পরিস্থিতিতে কিন্তু ঘটনা তো ভিন্ন ছিল।একটু সময় পর পরিস্থিতি সামলে উঠলো সকলে ততক্ষণে বিদ্যুৎ চলে এসেছে কিন্তু আসিফ তখনও সমানে বমি করে চলেছে।.... শেষ রাতে আসিফকে হাসপাতালে নেওয়ার কিছু পরে সে মৃত্যু বরণ করল।
জব্বার আসলে তার খাবারের দোকান "বউমার বিরিয়ানি হাউজ" চালায় কুকুরের মাংস দিয়ে আর আসিফ হলো তার সেই মাংসের জোগানদাতা। তার প্রিয়,কুকুরের মাংস দিয়ে তৈরি হয় জব্বারের সুস্বাদু বিরিয়ানি। শুধু আসিফ নয় আরও লোকজন জড়িত এই সুস্বাদু বিরিয়ানি কান্ডে। ঘৃণা থেকে বমি ডিহাইড্রেশন মানসিক অস্হিরতায় সম্ভবত আসিফের মৃত্যুর কারণ। খুশির খবরের হাত ধরে এলো অমানিশার অন্ধকার।
চারপাশে এত এত হোটেল বিরিয়ানির দোকান, কঠিন প্রতিযোগিতা। কে কার থেকে কমে দিতে পারে চলছে তার অসুস্থ প্রতিযোগীতা।কোথায় কি হচ্ছে কে জানে?
সমাপ্ত
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:১৫

জুল ভার্ন বলেছেন: অধঃপতন এর চুড়ান্ত হয়েছে

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: মানুষ নিচে নামতে নামতে কোথায় যে পৌঁছে গেছে তবু তাদের হুশ ফেরে না। সমাজের সব জায়গায় শুধু পচন আর পচন।

শুভকামনা রইলো ভাইয়া।

২| ৩১ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:২৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনেকদিনপর আপনাকে পড়লাম। দারুন লিখেছেন। লেখায় অনেক সময় দিচ্ছেন।

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১২

ইসিয়াক বলেছেন:



লেখালেখিতে একটু সময় দেই তবে আরও ভালো করতে হবে এটাও বিশ্বাস করি। আমি হয়তো সে অর্থে সেভাবে লিখতে পারি না তবু চেষ্টা করি।জানার আছে শেখার আছে অনেক কিছু। আপনাদের ভালো লাগা আমার অনুপ্রেরণা।

৩| ৩১ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:১২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
বেশ বড় গল্প, সময় নিয়ে পড়তে হবে।

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১৩

ইসিয়াক বলেছেন: সময় করে পড়বেন আশা করি। আপনার মুল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম।

৪| ৩১ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৮:৫৯

শেরজা তপন বলেছেন: হুমম আমারতো শুনেই বমি আসছে। B:-)
এমন খবর পাবার পরে বাইরের বিরিয়ানি খাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছি।

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:১৫

ইসিয়াক বলেছেন:


কি একটা অবস্থা! চারদিকে অরাজকতা , কেউ দেখার নেই!





শুভকামনা রইলো।

৫| ০১ লা আগস্ট, ২০২২ রাত ২:২৪

জটিল ভাই বলেছেন:
সাধারণ হয়নি প্রিয় ভাই।

৬| ০১ লা আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:১০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনে আর ওই পাড়ার চৌধুরি, দুইজনেই ভুয়া। একেকটা ধারাবাহিক শুরু করেন, তারপরে শেষ করার নাম নেন না। সেইটা বাদ দিয়া অন্য গল্প লেখা শুরু করেন। কোন মানে নাই!! :D

গল্পে আসি। গল্পের টপিকটা চমৎকার, কিন্তু গল্প হয়েছে আউলা-ঝাউলা। মনে হয়, লেখার সময় তাড়াহুড়া করছেন। আরেকটু গুছায়ে সুস্থিরভাবে লেখা দরকার ছিল; প্রচুর ইনকন্সিসটেন্সি আছে গল্পে। আপনের সমসাময়িক পারফরমেন্সের সাথে গেল না এই গল্পটা।

এতো কথা কইলাম দেইখা আবার মাইন্ড কইরেন না যেন!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.