নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বনমুরগী পোষ মানে না.......
আজকে একটা খবর পড়ে অনেকক্ষন হাসলাম। খবরটা হচ্ছে এই যে, অস্ট্রেলিয়া ডে উদযাপন করতে তেলাপোকার রেস হয়েছে ব্রিসবেনে। এই প্রথমবারের মত না, গত ৩৫ বছর ধরে এই প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। প্রতিযোগিতার নিয়মগুলো অত্যন্ত হাস্যকর। অংশগ্রহনকারীদের নিজের তেলাপোকা নিয়ে আসতে হবে। না পারলে সাড়ে তিন ডলার থেকে পাঁচ ডলারে ভাড়া করার ব্যবস্থা আছে।আরেকটা নিয়ম হচ্ছে, কেউ তাদের তেলাপোকাদের উড়তে দিতে পারবে না।
এখন দ্বিতীয় যে বিষয়টা নিয়ে লিখছি সেটা নিয়ে লিখতে কিন্তু হাসি পাচ্ছে না। যদিও বিষয়টা যথেষ্ট আমোদের। বাসার সবাই টিভিরুমে বসে নাস্তা করছি। চ্যানেল টেপার সময় চোখ গেল । অল্প কতক্ষণ ব্যাপারটা দেখলাম। একেবারে শেষাংশ। হাসি পেলেও যে জিনিসটা হাসির না তাহলো ' সুপারমম বেবি অলিম্পিয়াড'। এক থেকে পাঁচ বছরের বাচ্চাদের অংশগ্রহণে।শেষ যে অংশটা দেখছিলাম, তাতে ছোট ছোট বাচ্চা -একেবারেই দুধের শিশুদের একটা ম্যাটের উপর রেসে অংশ নেয়ার অংশ। একপাশ থেকে অভিভাবকেরা ঠেলছেন। যেহেতু বাচ্চা বোঝেনা জিতলে সে কি পাবে, জেতার কি মাহাত্ন্য সে কেবলই এদিক সেদিক মনের আনন্দে 'দিকভ্রষ্ট' চলে যেতে চাইছে , আর অভিভাবকেরা 'ঠিক পথে' তাকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছেন । প্রতিযোগিতার আরো কিছু অংশ দেখলাম, বাচ্চারা কাঁদছে, হাসছে,গড়াগড়ি দিচ্ছে, একে অপরকে ধরে টানছে।টিভিতে দেখে হাসি আটকাতে পারিনি আমরা কেউ।কিন্তু আসলেই কি জিনিসটা খুব হাসির? এক অভিভাবক প্রতিক্রিয়া জানাতে বলছিলেন, সকাল থেকে অপেক্ষা করছি,ইতস্তত যোগ করলেন, বাচ্চা ছোট তো।
আরেকজন খুব প্রশংসা করতে গিয়ে বললেন, এত ছোট বাচ্চা নিয়ে যে এমন আয়োজন হতে পারে তিনি ভাবতেই পারেন নি, তবে তিনি চান আগের বছর আরো সাফল্যর সাথে এটা হবে।বাচ্চাদের তিলমাত্র কষ্ট হয় এমন কারণে খুব ছোট বাচ্চা নিয়ে অনেক মায়েরা ওদের নিয়ে ঘরের বাইরে যেতে চান না, বিশেষ করে লম্বা সময়ের জন্য অথচ এই প্রতিযোগিতার কারণে তারা কিন্তু তা স্বীকার করে নিয়েছেন।
আমার মনে হয় প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস, মানুষকে এগুবার প্রেরণা দেয় তবে পাশ্চাত্যের তীব্র ভোগবাদী প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস না, সেটা মানুষকে পিছিয়ে নিয়ে যায়। এখন বাচ্চারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই 'জীবনে উন্নতির' বস্তুগত মানে হিসেব করে মাবাবারা চার পাঁচ বছর হলেই বাচ্চাকে প্রাণান্তকর নিরানন্দ মুখস্থ বিদ্যায় লাগিয়ে দেন । ভালো স্কুলে ভর্তি হতে হবে। পরীক্ষায় ফার্স্ট সেকেন্ড হতে হবে। না হলে প্রগ্রেস রিপোর্টের দিন বাচ্চাকে তুলাধুনা করা হয় যে হতে পেরেছে তার সাথে তুলনা করে।এরপর কি? এর পর কি এই যে, বাচ্চারা মায়ের পেট থেকে পড়তেই তাদেরকে দৌড় অনুশীলন করানো হবে? নাকি আরেকধাপ এগিয়ে গর্ভবতী মায়েদের প্রতিযোগিতা হবে? অ্যাবসার্ড লাগছে নাকি কথাগুলো? দুগ্ধপোষ্য বোধহীন বাচ্চাদের দিয়ে যদি প্রতিযোগিতা হতে পারে একদিন অমন আসাও বিচিত্র কিছু না।
আজকেই তো আরেকটা খবরে পড়লাম, চীনে কয়েকটি খাবারের রেস্টুরেন্টে মেয়েদের শরীর , সৌন্দর্য আর ড্রেসের সংক্ষিপ্ততাকে 'পুরস্কৃত' করা হচ্ছে মূল্যছাড়ের মাধ্যমে। যার পোশাক হাঁটুর যত উপরে তার ছাড় তত বেশী। সেলুকাস! কর্পোরেট দুনিয়ায় কী-না সম্ভব ?
উন্নত বিশ্বের মানুষের ক্রমাগত নতুনত্ব পিয়াসী। আজ যা নতুন তা এমন নিঃশেষে ভোগের উদগ্র আকাঙ্খা, যে তাই কাল সেটা পুরানো হয়ে যায়। তাই তাদের তেলাপোকার রেসের উদ্ভব করতে হয়। তেলাপোকারা 'বুদ্ধিমান' মানুষের মন মত হাঁটেচলে না। এবং বলাইবাহুল্য কখনো কখনো তারা ওড়ে , শুধু মেঝেতে কিলবিল করে না।অথচ তেলাপোকা দৌড়ের নিয়মানুসারে তেলাপোকা উড়তে পারবে না। তাহলে প্রশ্ন জাগে , তাদের কি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সময় ডানা ছেঁটে দেয়া হয়? মানব সন্তানের উড়তে হলে ডানা লাগে না।প্রতিটি শিশু সহজাত আগ্রহ, দক্ষতা, মানসিকতা নিয়ে জন্মায়, সে তার নিজের স্বপ্নের জগতে উড়তে ভালোবাসে। প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: কারণ বলতে পারি না , তবে যেদিকে আমরা যাচ্ছি সেটা ঠিক দিক না।
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৫
মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম বলেছেন: পুরো বিষয়টি আমার কাছে উদ্ভট এবং হাস্যকর ঠেকছে। ' প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?
চিন্তার বিষয়!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: হুম , চিন্তার তো বটেই!
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: রেজওয়ানা আলী তনিমা ,
দ্বিতীয় যে বিষয়টা আমোদের সেটা বলেও যে একটি প্রশ্ন উত্থাপন করলেন , তার উত্তরটা বেশ জটিল এবং অনেক বিশ্লেষণের দাবী রাখে । শুধু ১ম মন্তব্যে দিশেহারা রাজপুত্র যা বলেছেন সেটাই আপনার প্রশ্নে লেগে থাকা আশঙ্কার অনেক উত্তরের একটি ।
এখন তো আর প্রতিভা যাচাইয়ের জন্যে প্রতিযোগিতা হয়না , হয় ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: এসব প্রতিভা যাচাইয়ের জন্য হয় না। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান তো লাভই খুঁজবে। কিন্তু আজব সব নতুনত্ব কারোর মাথায় আসে কেমন করে আর সমাজে গ্রহণযোগ্যতাই বা পাচ্ছে কিভাবে?
মন্তব্যে ধন্যবাদ আহমেদ ভাইয়া।
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০৫
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: কর্পোরেট বাণিজ্যের নিচে চাপা পরে আছে বিবেক।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ঠিক তাই। কিন্তু সুবিবেচনা বলেও তো একটা কথা থাকা উচিত ছিল।
৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৫৯
বৃতি বলেছেন: বিসব্রেনের তেলাপোকার রেস এর পেছনে একটা ছোট গল্প আছে। শুধুমাত্র এন্টারটেইন নয়, কিছু বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েও এ ধরণের কার্যক্রম পরিচালিত হয়- যেটা তাদের ওয়েবসাইটে গেলে হয়ত দেখতে পেতেন, Proudly Supporting youngcare
All Proceeds from entry, racing & the dunking machine are donated to youngcare. https://www.youngcare.com.au/
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: হতে পারে আপু, কিন্তু আমি যে উৎস থেকে জেনেছি সেখানে কিছু বলা ছিল না। তথ্যটা জানানোর জন্য ধন্যবাদ। তবে কথা হলো, যতো মহৎ উদ্দেশ্যই থাকুক তেলাপোকা রেস করে সেটা প্রমোট না করলেও চলতো।আর শুধু যে এই ক্ষেত্রে তা তো না, কারণ ছাড়াও পশ্চিমা দুনিয়ায় অনেক উদ্ভট বিনোদন প্রচলিত আছে।
৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৭
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: আমার এক জুনিয়র সেদিন দেখলাম ফেবুতে পোষ্ট দিয়ে দোয়া চেয়েছে তার ১৩ মাসের বাচ্ছার জন্য। সে জীবনে প্রথম বারের মতো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করতে যাচ্ছে। সেদিনই তার পোষ্টটি দেখে ভাবছিলাম। আসলেই আমরা কোথায় এগিয়ে যাচ্ছি?? বাচ্চাদের নিয়ে আজকাল বাবা মায়ের ফ্যান্টাসিটা চরমে পৌছেছে। জন্মের আগেই কেউ কেউ নামী স্কুলে ডেনেশন দিয়ে রাখছে বলেও শুনছি আজকাল।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: প্যাথেটিক! ছোট ছোট অবোধ বাচ্চাদেরও আমরা রেহাই দিচ্ছি না। এরাও বাবামায়ের জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে গেছে।
৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২৪
সুমন কর বলেছেন: প্রতিটি শিশু সহজাত আগ্রহ, দক্ষতা, মানসিকতা নিয়ে জন্মায়, সে তার নিজের স্বপ্নের জগতে উড়তে ভালোবাসে। প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?
ভালো লিখেছেন। +।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ সুমন ভাই।
৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:১২
আমিই মিসির আলী বলেছেন: +
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: প্লাসের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৩
অগ্নি সারথি বলেছেন: আমার মনে হয় প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস, মানুষকে এগুবার প্রেরণা দেয় তবে পাশ্চাত্যের তীব্র ভোগবাদী প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস না, সেটা মানুষকে পিছিয়ে নিয়ে যায়। - আমারো তাই মনে হয়।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সহমত হবার জন্য অনেক ধন্যবাদ অগ্নি ভাই।
১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৭
কল্লোল পথিক বলেছেন: কর্পোরেটের নিচে চাপা যাাচ্ছে মাানুষের মানবতাও বিবেক।
ধন্যবাদ খবরটি শেয়ার করার জন্য।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৮
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: তা তো ঠিকই , কিন্তু আমাদের নিজেদেরও চেতনাবোধ থাকা উচিত। কাউকে তো প্রতিযোগিতায় জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়নি।আপনাকেও ধন্যবাদ কল্লোল পথিক ভাইয়া।
১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৮
সাহসী সন্তান বলেছেন: ঘোড়া দৌঁড়, নৌকা বাইচ এমন কি মানুষও রেসের মাঠে দৌঁড়ায়! কিন্তু জীবনে এই প্রথম বারের মত তেলাপোকা রেসের কথা শুনলাম। তাও আবার লিখেছেন একজন নারী! আপু আপনার গা, হাত-পা শিরশির করেনি? শুনছি মেয়েরা বাঘ ভাল্লুক ভয় না করলেও তেলাপোকাকে জোমের মত ভয় করে! অথচ আপনি সাহস করে সেইটা নিয়ে লিখেই ফেললেন?
(সবাই অন্যদিকে ফোকাস করছে বলে আমি এই দিকটা তুলে ধরলাম)
চমৎকার পোস্ট! শুভ কামনা জানবেন!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ঘোড়া দৌঁড়, নৌকা বাইচ এমন কি মানুষও রেসের মাঠে দৌঁড়ায়! কিন্তু জীবনে এই প্রথম বারের মত তেলাপোকা রেসের কথা শুনলাম । কালে কালে আরও কত কি শুনবেন!
হা হা দেখতে ভয় লাগে , লিখতে লাগবে কেন?
কমেন্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সাহসী ভাই। ভালো থাকবেন আপনিও।
১২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: উন্নত বিশ্বের মানুষের ক্রমাগত নতুনত্ব পিয়াসী। আজ যা নতুন তা এমন নিঃশেষে ভোগের উদগ্র আকাঙ্খা, যে তাই কাল সেটা পুরানো হয়ে যায়। তাই তাদের তেলাপোকার রেসের উদ্ভব করতে হয়।---------- সহমত
বাংলাদেশেও এখন বাবা মায়েরা সন্তানদের দিয়ে প্রতিযোগিতার রেসে মেতে উঠছে, অথচ বাচ্চারা এর মাথামুন্ড কিছু না বুঝলেও তাদের বাবা মায়েদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ---- সুন্দর পোস্টে ভাললাগা
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আপুনি, মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো। শুভেচ্ছা সতত।
১৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৯
প্রামানিক বলেছেন: তেলাপোকার রেস এবং শিশুদের রেস নিয়ে চমৎকার একটি পোষ্ট উপহার দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যে আমরা আরো কত কি রেস দেখবো।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সেটাই। আরো অনেক কিছু দেখতে হবে।
মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।
১৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: সুমনের একটা গান শুনেছিলাম, "সকাল বেলায় রোদ্দুর"। লিরিকটা দিলাম,
"সকাল বেলা রোদ্দুর যেই মাটিতে পা ফেলেছে
একটা চড়াই অমনি দেখি এক্কা দোক্কা খেলছে।
ছক কেটেছে গাছের ছায়া এবং রোদের ধন্ধ,
সঙ্গে আছে ঘুম ভাঙা সব ঘাসের সোঁদা গন্ধ।
গাছগাছালি হাতগুলোকে আকাশপানে মেলছে
একটা চড়াই অমনি দেখি এক্কা দোক্কা খেলছে।
যে মেয়েটার খেলা দেখে চড়ুই পাখির শেখা
সে মেয়েটাই যাবে স্কুলে রিকশা চেপে একা।
খেলার সময় তার বড়োই কম, পড়াশুনাই মস্ত
ছোট্টো মাথা পড়ার চাপে ভীষণ বিপর্যস্ত।
স্কুলের পড়ার সঙ্গে আছে পাড়ার গানের স্কুল
নিয়ম করে শিখতে হবে রবীন্দ্র নজরুল।
মায়ের ভীষণ ইচ্ছে মেয়ে আঁকার স্কুলেও যাক
বাবার দাবি তারি সঙ্গে কত্থকটাও থাক।
মায়ের প্রশ্ন সাঁতারটাই বাতিল হবে কেনো
ছেলেবেলা থেকেই মেয়ে চৌকস হয় যেন।
চৌকস তো হচ্ছে মেয়ে সকাল সন্ধ্যেবেলা
হয় না এখন আপন মনে এক্কা দোক্কা খেলা।
ছিল যখন সিলেবাসের বাইরে মেয়ের খেলা
একটা চড়াই দেখতো চেয়ে সকাল বিকেলবেলা।
এখন সময় সকাল বিকেল দীর্ঘশ্বাস ফেলে
মেয়ের খেলা বন্ধ বলে চড়াই পাখি খেলে।
সকাল বেলা রোদ্দুর যেই মাটিতে পা ফেলেছে
একটা চড়াই অমনি দেখি এক্কা দোক্কা খেলছে।"
এই ভোগবাদী সমাজব্যবস্থায় শিশুদের জন্যে সব প্রশংসাই আদতে নৃশংস হয়ে যায়। তেলাপোকা আর শিশুগণ! বেশ ভালো মিল। তেলাপোকার মত তাদেরও টিকে থাকার, কম্পিটিশনে জেতার অনবদ্য ক্ষমতা থাকতে হবে। নইলে পরিবার নামক ব্র্যান্ডটির নাম-সম্মান কিছু থাকবে না।
অনেক ভালো লাগলো আপনার লেখাটা।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৮
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ইস! অনবদ্য গানের লাইন গুলো । শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ হাসান ভাইয়া। আমাদের সমাজটা এত বেশী ফলাফলকেন্দ্রীক হয়ে যাচ্ছে যে কোন কিছু করার আনন্দ থেকে আমরা বঞ্চিত। শিশুদের শৈশব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবখানে রেষারেষি , হিংসা, একে অপরকে পিছনে ফেলার চেষ্টা।
১৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: যতসব অদ্ভুত কারবার। তেলাপোকা রেস হা হা হা । এরা জীবনে ভোগ বিলাসিতায় ভাসিয়ে আর কোন কিছুই হয়ত পায়না আনন্দের জন্য তাই এসব অদ্ভুত খেলায় আনন্দ খুজে।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন যে মা বাবারা ইচ্ছে করলেও সন্তানকে অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দিতে পারেনা।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সত্যি আপু, আজব লাগলো তেলাপোকার রেস হতে পারে জেনে। অদ্ভূত এই দুনিয়া!
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন যে মা বাবারা ইচ্ছে করলেও সন্তানকে অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দিতে পারেনা।
অনেকটা সত্যি, তাহলেও সব বাড়াবাড়িরই সীমা আছে। এত ছোট বাচ্চাকে কি মনে করে এরা প্রতিযোগিতায় নামায়?
১৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৬
বিজন রয় বলেছেন: ভাল বিষয়ের উপস্থাপনা। ++।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বিজন রায় ভাইয়া। ভালো থাকবেন।
১৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৮
নতুন বলেছেন: অন্ধঅনুকরন করে সবাই। নিজের চিন্তার চেয়ে অপরের অনুসরন করা সোজা তাই নিজের ভাল মন্দ না ভেবে মিডিয়া কি বলে তাই বিশ্বাস করে সবাই।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: হুম , ঠিক বলেছেন নতুন।
১৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০১
আমি তুমি আমরা বলেছেন: মানব সন্তানের উড়তে হলে ডানা লাগে না।প্রতিটি শিশু সহজাত আগ্রহ, দক্ষতা, মানসিকতা নিয়ে জন্মায়, সে তার নিজের স্বপ্নের জগতে উড়তে ভালোবাসে। প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?
তাইতো করছি আমরা। প্রতিযোগিতায় যারা টিকতে পারছে না, সমাজে তাদের কোন মূল্য নেই
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৮
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন:
মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ আমি তুমি আমরা ।
১৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার পোস্টটা পড়ে থ্রি ইডিয়টের একটা গান মনে পড়ছে-
"Give me some sunshine
Give me some rain
Give me another chance
I wanna grow up once again"
ওরা বড় হয়ে এটাই গাইবে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০০
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: রাখাল ভাই, গানটা অনেক প্রিয়। শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ। মন ছুঁয়ে যাওয়া লাইন গুলো কারণ এই বেদনার মধ্যে দিয়েই আমাদের বেড়ে ওঠা।
এর মধ্যে যারা আমির খানের মত শিকল ভেঙে বের হতে পারবে তারা আনন্দ আর সাফল্য দুটিই পাবে।
২০| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৮
রানার ব্লগ বলেছেন: বানিজ্যকরনের মোরকে নিজেদের মুড়িয়ে নিয়েছি। এই ভাবে চলতে থাকলে আর অদ্ভুত দৃশ্য দেখতে হবে আগামি তে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০২
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আসলেই,কে জানে বাণিজ্যের নামে আরও কি কি দেখতে হয়....
২১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬
মহা সমন্বয় বলেছেন: প্রতিযোগিতা ছাড়া জীবন? ইম্পসিবল .... তাই তো আগে থেকেই পিচ্ছিদের প্র্যাকটিস করিয়ে নিচ্ছে। আমি এটাকে খারাপ মনে করি না। কিন্তু প্রতিযোগিতার নামে অকল্যাণকর কিছু যাতে না হয় সে বিষয়ে নাজর রাখতে হবে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১১
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: প্রতিযোগিতার দরকার আছে। কিন্তু তার জন্য সময় আছে। অবোধ শিশুদেরকে কিছু না বোঝার আগেই এতে নামিয়ে দেয়া অনুচিত।এখনকার প্রতিযোগিতায় গুলো অসুস্থ রেষারেষি উন্নতি করার প্রেরণা হবার বদলে শিশুদের শৈশব নষ্ট করা ছাড়া আর বেশী ভূমিকা রাখছে না।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ সমন্বয়।
২২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস, মানুষকে এগুবার প্রেরণা দেয় তবে পাশ্চাত্যের তীব্র ভোগবাদী প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস না, সেটা মানুষকে পিছিয়ে নিয়ে যায়।
খুব ভাল লাগলো , পুরো লিখাটাই !
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৪
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ লিটন ভাইয়া। ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো, অনেক প্রেরণা পেলাম।শুভেচ্ছা।
২৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০১
এহসান সাবির বলেছেন: আসলেই এগিয়ে যাবার নামে আমরা অনেক কিছুই করছি যেগুলো কল্যাণকর নাও হতে পারে।
দারুন শেয়ার।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আসলেই এগিয়ে যাবার নামে আমরা অনেক কিছুই করছি যেগুলো কল্যাণকর নাও হতে পারে।
দুঃখজনক ।
মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ সাবির ভাইয়া।ভালো থাকবেন নিরন্তর।
২৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৩
রাজীব বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন
"মানব সন্তানের উড়তে হলে ডানা লাগে না।প্রতিটি শিশু সহজাত আগ্রহ, দক্ষতা, মানসিকতা নিয়ে জন্মায়, সে তার নিজের স্বপ্নের জগতে উড়তে ভালোবাসে। প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?"
আপনার এই কথাটি আমি অন্য একটি পোস্টে মন্তব্য হিসেবে দিতে চাই, আপনার অনুমতি পেলে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৪
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: রাজীব ভাইয়া , অনেক অনুপ্রাণিত হলাম মন্তব্যে, অযুত ধন্যবাদ। পোস্টের অংশ নামোল্লেখ করে যেখানে চান দিতে পারেন। ভালো থাকবেন।
২৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৯
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: চমৎকার বলেছেন । যে প্রতিযোগিতা সন্তান নিজ থেকে নেয় না সে প্রতিযোগিতা সন্তানের জন্য জ্ঞানহানীকর । ইচ্ছের বিরুদ্ধ কোন কিছুই কল্যাণ বয়ে আনে না । এই কারণেই তো ওইসব দেশের মা বাবারা বুড়ো হলে তাদের সন্তানকে কাছে পায় না, কারণ সেই ছোট বেলাতেই মা বাবারা তাদের ইচ্ছেগুলোকে মেরে নিজেরদেরগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছে আর সেই যন্ত্রণায় সন্তানরা তাদের ইচ্ছের বিপরীতে আচরণ করে । যেই শিক্ষা সন্তানকে অনুভূতিশূন্য করে দেয়, দূরে ঠেলে দেয় সেই শিক্ষার কী আদৌ কোন মূল্য আছে ! শিক্ষা হতে হবে অমূল্য কিন্তু মূল্যহীন নয় ।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: যে প্রতিযোগিতা সন্তান নিজ থেকে নেয় না সে প্রতিযোগিতা সন্তানের জন্য জ্ঞানহানীকর । ইচ্ছের বিরুদ্ধ কোন কিছুই কল্যাণ বয়ে আনে না । এই কারণেই তো ওইসব দেশের মা বাবারা বুড়ো হলে তাদের সন্তানকে কাছে পায় না, কারণ সেই ছোট বেলাতেই মা বাবারা তাদের ইচ্ছেগুলোকে মেরে নিজেরদেরগুলো ঢুকিয়ে দিয়েছে আর সেই যন্ত্রণায় সন্তানরা তাদের ইচ্ছের বিপরীতে আচরণ করে । যেই শিক্ষা সন্তানকে অনুভূতিশূন্য করে দেয়, দূরে ঠেলে দেয় সেই শিক্ষার কী আদৌ কোন মূল্য আছে ! শিক্ষা হতে হবে অমূল্য কিন্তু মূল্যহীন নয় ।
অসাধারণ একটি মন্তব্য কথা ভাইয়া/ আপু। আপনার বিশাল নামটা একটু ছোট করে নিলাম। আশা করি কিছু মনে করবেন না। অনেক ধন্যবাদ রইলো।
২৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯
ঢাকাবাসী বলেছেন: চমৎকার বলেছেন, তবে এটাই নিয়ম মনে হয়! অনুভুতি টুতি এখন আর আছে কি?
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৭
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: দুঃখজনক বাস্তবতা। সবাই কেমন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ঢাকাবাসী ভাইয়া। শুভেচ্ছা।
২৭| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৪
আবু শাকিল বলেছেন:
প্রতিযোগীতার আরেক নাম বাণিজ্যকরন ।প্রতিযোগীতা ভাল ছিল -প্রতিযোগিতার নামে নীরব বানিজ্য মহামারি আকার ধারন করছে।
মুক্তি কোথায় ।
প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস, মানুষকে এগুবার প্রেরণা দেয় তবে পাশ্চাত্যের তীব্র ভোগবাদী প্রতিযোগিতা খুব ভালো জিনিস না, সেটা মানুষকে পিছিয়ে নিয়ে যায়।
সহমত ।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সহমত হবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ।
২৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৭
-দীপু বলেছেন: প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?
ছেটেই ফেলছি বোধ হয় !
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: হুম ।
২৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫২
শামছুল ইসলাম বলেছেন: খুব চমৎকার গতিতে লেখাটা এগিয়ে গেছে এবং সুন্দর সমাপ্তি টেনেছেনঃ
//প্রতিযোগিতার নামে , এগিয়ে যাবার নামে আমরা তাদের এই কল্যাণকর ইচ্ছেডানাগুলো ছেঁটে ফেলছি নাতো?//
ভাল থাকুন। সবসময়।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ শামসুল ভাইয়া। ভালো থাকবেন আপনিও।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৪
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এগুলোই নয় বরং সামাজিকীকরণে আমাদের যে চিরায়ত জীর্ণ ব্যবস্থা তা ধীরেধীরে গলা টিপে দেয় কোমলমতি শিশুদের ইচ্ছেমনের।