নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বই পড়তে আমি খুব ভালোবাসি। এর কোন কারন নেই । কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে কেন পড়েন তখন খুব রাগ লাগে । নতুন কিছু জানতে খুব আগ্রহ আমার ।

রূবাইয়াৎ তৃণা

রূবাইয়াৎ তৃণা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন অসামাজিক "কন্যা" কিংবা "পাত্রী"-র জবানবন্দি

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৫:৩৫

একদিন আগে আমি আবার নতুন করে আরেকবার আমার বাবা, আত্মীয়স্বজন ও "বিশেষ মেহমান"-দের কাছে একজন অতি বেয়াদব ও অত্যন্ত অসামাজিক মেয়ে হিসেবে আবারো গণ্য হলাম | তবে এই অসামাজিকতা করার জন্য আমি একটুও অনুতপ্ত কি লজ্জিত নই | বরং আমি চাই অন্যান্য সকল ভুক্তভোগী মেয়েই আমার মত অসামাজিক ও বেয়াদব হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলুক |
আমাদের দেশের একটা বিশেষ ব্যাপার হল "এরেঞ্জ ম্যারেজ" বা "পারিবারিক বিবাহ/ব্যবস্থা বিবাহ" ও এই এরেঞ্জ ম্যারেজের একটা অন্যতম ব্যাপার হল পাত্রপক্ষদের "কনে" নামক পণ্য দেখতে আসা | পাত্রপক্ষ হচ্ছে সেই অসাধারন ভিনগ্রহের প্রাণীরা যাদের পরিবারে একটি বিবাহযোগ্য প্রাপ্তবয়স্ক পুত্রশিশু আছে | সেই পাত্রপক্ষের সামনে কনেপক্ষের কাজ হল হাত কচলে যাওয়া আর তাদের অত্যন্ত অশালীন অভদ্রোচিত আচরণ সহ্য করে যাওয়া ! জানি অনেকেই দ্বিমত পোষন করবেন কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বেশিরভাগ পরিবারে এখনও এই পরিস্থিতি বিদ্যমান |
ভাগ্যের পরিহাস কি নিয়তির বিড়ম্বনা তা জানিনা তবে আমি এরকম পরিস্থিতিতে একাধিকবার পড়েছি ও প্রথম কয়েকবার অসহায়ভাবে চুপ থেকে নিজেকে লক্ষ্মী মেয়ে প্রমাণিত করলেও পরবর্তীতে রণচন্ডিকা হতে বাধ্য হয়েছি ! কারন দুঃখের সাথে স্বীকার করি যে যতবারই এই পরিস্থিতিতে পড়েছি আমার অভিভাবকেরা পাত্রপক্ষ নামক কুলাঙ্গারদের করা সেসব আচরণের কোন প্রতিবাদ করেননি ! কেন ? এই উত্তর আমার জানা নেই |
অনেকেই বলেন এখন মেয়েদের জীবন বদলেছে কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় আমার তা মনে হয়না | এর কারন হল, পরিস্থিতি ও আমার পারিপার্শ্বিক | আগের দিনে উল্লেখিত ঘটনাগুলোতে কিংবা সাহিত্য যা সমাজের দর্পন তাতেও এই নির্দেশনা দেখি যে সেসব মেয়েদের খুব ভালো বিয়ে হয়েছে যাদের পিতাদের অঢেল ঐশ্বর্য রয়েছে | পিতা তার কন্যাকে দুহাতে ঢেলে দেন তাতে পাত্র অর্থাৎ কনের বর ও তার পরিবারের গ্রাসাচ্ছাদন হয়েও উদবিত্ত থেকে যায় | সেক্ষেত্রে খুবই সুখী কন্যা | বর্তমানেও কিন্তু এই পরিস্থিতির খুব পরিবর্তন হয়েছে বলে আমার মনে হয়না | এর কারনটা আমি আমার ভাষ্যে ব্যাখ্যা করতে চাই | এখন আমার মনে হয় পাত্রপক্ষের মানসিকতা বদলায়নি, শুধুমাত্র পণপ্রথার পদ্ধতিটা বদলে গেছে | এখন বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্রপক্ষ সবার আগে দেখেন যে মেয়ে চাকরিটা কোথায় করে ও তার বেতন কত ! বিয়ের পাত্রীর ক্ষেত্রে মেয়ের বেতন বর্তমানে মেয়েদের একমাত্র যোগ্যতা অনেক মানুষের কাছে | এর কারন হল যে কর্মজীবী মেয়েটি অনেকগুলো টাকা পারিশ্রমিক পায় তার ভরণপোষণের ব্যয় সীমিত | এবং একজন ভালোমানুষ, একজন অসামান্য কন্যা, একজন চমৎকার স্ত্রী এসব কিছুই নয় তার যোগ্যতা হল সে উপার্জন করে |
আমার খুব পরিচিত একটি পরিবারে যারা আমাদের পারিবারিক বন্ধু তাদের বাড়িতেই একটি ঘটনা দেখি | ভদ্রলোক নির্দ্বিধায় তার ছেলের বয়সে বেশ বড় একজন পাত্রীর সঙ্গেই ছেলের বিয়ে দিলেন | সেই পাত্রী ভদ্রমহিলাটি আমার দেখা ভালোমানুষদের মধ্যে একজন | অনেকেই অনেক কথাই বলল কিন্তু আমাদের সেই ছেলের বাবা নিশ্চুপ | এর কারন হল পুত্রবধূ একটি স্বনামধন্য বিভারেজ কোম্পানিতে কর্মরত ও তার বেতন ছয়অংকের | বছরদুয়েক পর তার পুত্রবধূ একটি কন্যার জন্ম দিলেন ও এরপর আবার মাতৃকালীন ছুটিকাটিয়ে কাজে যোগ দিলেন | কিন্তু বিপদ হুট করেই এলো | একটা সড়ক দুর্ঘটনায় ভদ্রমহিলা আহত হলেন ও বাঁপায়ে প্রচন্ড আঘাত পেলেন | চলতেফিরতে সমস্যা হওয়ায় তিনি চাকরি ছেড়ে দিলেন | আশ্চর্য ব্যাপার হল মহিলার স্বামী কাজ ছেড়ে দেয়ার একবছরের মধ্যে তাকে তালাক দিলেন কারন স্ত্রীর ভরনপোষন তিনি করবেন না ! অর্থাৎ ওই ভদ্রমহিলাকে সে বিয়ে কখনোই করেনি, করেছিল তার চাকরিকে | অর্থাৎ অনেকের কাছেই মেয়েদের বর্তমান যোগ্যতা হল বেতন | তার আমার অভিভাবকও তাই মনে করেন |
বিয়ে নিয়ে ব্যক্তিগত অনেক কদর্য অভিজ্ঞতার জন্য আমি বিয়ে করতে চাইনা | কিন্তু আমাদের সমাজের কিছু মানুষের সমাজরক্ষা বলে মহান দায়িত্ব আছে তাই তারা একটা বাড়িতে কোন প্রাপ্তবয়স্ক অবিবাহিতা মেয়ে দেখলে সেই মেয়েটির ও তার অভিভাবকদের জীবন অতিষ্ঠ করার কোনরকম চেষ্টা করতে পিছপা হননা | আমি নিজের হাজারো অনিচ্ছা ও অনাগ্রহের সত্বেও তখন অভিভাবকের "সম্মান" রক্ষার দায় মাথায় নিয়ে এই সার্কাসে উপস্থিত হই | আমি কর্মজীবী নই তাই আমার বিয়ের বাজারে মূল্য খব কম | আমার খুব ইচ্ছা আমি "রাফায়েল''-এর মত একজন চিত্রশিল্পী ও লেখিকা হব | জানি খুবই হাস্যকর ইচ্ছা কিন্তু অনেকের অনেক কটূক্তি ও নিন্দা এবং সহস্র অপমানের পরেও আমি এই ইচ্ছা ত্যাগ করতে পারিনি আজও | আমি চাকরি নামক খাঁচায় বন্দি হতে চাইনি বলে কখনোই কোন চাকরির পরীক্ষা বা চেষ্টা করিনি | এই অপরাদের গঞ্জনা আমৃত্যু শুনতে হবে জানি | আমার বাবা আমার এই লেখক-চিত্রশিল্পী হবার ইচ্ছা শুনে প্রায়ই আমাকে বলেন যে "তোর কথা শুনলে লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যায় !" আমি আগেই উল্লেখ করেছি আমি একজন সার্থক কন্যা নই কাজেই লেখক-চিত্রশিল্পী হতে চাওয়া মেয়েকে নিয়ে তিনি লজ্জা পেতেই পারেন | আমার নয়, নিজের মান বাঁচাতেই তিনি আমাকে বিয়ে দিতে চান ( বিয়ে দিলে যদি এই দুর্বুদ্ধি থেকে মতি ফেরে আমার ! ) | আমি বাবার অতি আগ্রহেই বাধ্য হয়ে যাই এই সঙনাচে অংশগ্রহন করতে |
অনেক প্রচন্ড অপ্রতিকর অভিজ্ঞতা আছে আমার নিজেকে নিয়ে এই পাত্রপক্ষের কনেদেখার অনুষ্ঠানে | গতকালের ঘটনাটি যেমন একটি !
আমার চাচী আমার বিয়ে নিয়ে খুবই আগ্রহী | তিনি নিজ আগ্রহে তাদের এলাকার একটি ছেলেকে পছন্দ করলেন | আমার চাচী নিরক্ষর একজন মহিলা | কিন্তু মনের দিক থেকে অত্যন্ত ভালোমানুষ হওয়ায় আমি তাকে বেশ পছন্দ করি | নিঃসন্তান এই মহিলাটি সন্তানের মতোই আমাকে সবসময় স্নেহ করেন | আর তাছাড়া কয়েকদিন আগে অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে তার | একারণেই তার আগ্রহের অনিচ্ছাকৃত সম্মান আমাকে করতে হল | তবে ভদ্রতা যে বর্তমানে কতবড় দুর্বলতা তার আরেকটা প্রমাণও পেলাম |
গতকাল আমি মূলত আমার চাচীকে দেখতে যাই যিনি অস্ত্রোপচারের পর তার ভাইয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন | গিয়েই জানলাম আজকেই ছেলেপক্ষ দেখবে আমাকে এবং কোনভাবেই আমার 'না' ছেলেপক্ষের আত্মীয়েরা শুনবেনা | আমি অনেকবার বললাম আমি অপ্রস্তুত আজ কিন্তু শুনলেন না তারা | আমার বাবা সব জানতেন, তিনি কিছুক্ষন পর চাচীর ভাইয়ের বাড়িতে গেলেন | ছেলেপক্ষের কিছু আত্মীয় এসে কোনরকম অনুমতির তোয়াক্কা না করেই পটাপট ছবি তোলা শুরু করল | আমি নিজে অনেকবার নিষেধ করলাম ও এরপর আমার বাবাকে বললাম তুমি বলো কিছু | বাবা কিছুই বললেন না | এরপর তারা প্রায় জোর করেই আমাকে আর আমার বাবাকে টেনে নিয়ে গেলেন ছেলের বাড়িতে যা আমার চাচীর ভাইয়ের বাড়ির পাশেই |
ছেলেদের বাড়ি নিয়ে গিয়ে বসিয়ে তারা প্রথমে আমার পড়াশুনা ও আমার মায়ের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করলেন | এরপর ছেলের এক বৃদ্ধা আত্মীয় এসে কোনকিছু না বলেই আমার মাথার ক্লিপ টানাটানি করে হিঁচড়ে খুলতে লাগলেন |
আমি বাধা দিতে বললেন বৃদ্ধা, "চুল কিমুন লম্বা দেহি !"
আমি ক্লিপ খুলে নিলাম সব সে হাত দিয়ে মেপে দেখে বলল, "কোমরের নিচে আছে | চলব !"
এরপর গালে হাত দিলেন, আমি সরে বসলাম |
বৃদ্ধা বললেন, "মুখে পাউডার দাউনাই !"
আমি শুধু আমার মুখোমুখি বসা আমার বাবার দিকে তাকালাম একবার |
এরপর এলো পাত্রের ভগ্নিপতি এলো | সে হল একটা মোবাইল ফোনের দোকানদার | সে এসে বসে আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে পড়ল এবং কেন ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দুটো বিষয়ে মাস্টার্স থাকা সত্বেও আমি কেন চাকরি করিনি এ নিয়ে পড়ল | বলে রাখছি তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি ফেল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তার জ্ঞান হল "ক" "খ" "গ" "ঘ" ইউনিট | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোন ডিপার্টমেন্ট আছে সে তা জানেনা এবং তার ধারণা কোন বিভাগ সেখানে নেই, সব হচ্ছে ক, খ, গ, ঘ !
মোবাইল দোকানদার লোকটি আমাকে বলল, "দাঁড়ান তো দেখি আপনি লম্বা কত !"
আমি দাঁড়ানোর পরেও সে বুঝে আন্দাজ করতে পারল না বলে জিজ্ঞাসা করল "কত আপনার লম্বা ?"
বললাম " ১৫৭ সেমি |"
সে বলল, "বাংলায় বলেন ! কি অদ্ভুত কথা বলেন !"
বললাম "৫'২'' |"
সে তখন বলল "ওহ ঠিক আসে | মেয়েদের সর্বইচো পাস্ ফিট তিন এরচিয়ে বেশি ভালোনা !"
লোকটি বেশি লম্বা নন এমনকি তাকে ছেলে হিসেবে বেঁটে বলা যেতে পারে | লোকটি হঠাৎ এগিয়ে এলেন আমার সামনে এটা মাপতে যে আমি তার চেয়ে কতটা ছোট হতে পারি | আমি সরে বসে পড়লাম |
এই মুহূর্তে আমার বাবা নির্বুদ্ধিতার একটা চমৎকারতোর উদাহরন দিলেন |
ছেলের ভগ্নিপতি মোবাইলের দোকানদার শুনে সে চট করে নিজের ফোনটা বের করে বললেন, "আমার এ ফোনটার ম্যাসেজ অপশনে একটা সমস্যা হইসে দেখেন তো ঠিক করতে পারেন কিনা !"
লোকটি ফোনটা হাতে নিয়েই সেটার ওয়ালপেপারে আমার ছবি দেখে সেই ছবিটা চাইলেন |
আমার বাবা বললেন, "ওটা ওই ফোনেই আছে |"
লোকটা আর তার স্ত্রী ফোন ঘাটাঘাটি করে ছবি বের করে নিলেন | এরপর লোকটা সবার সামনে বারবার আমার ফোন চাইলেন | সবাই তাকিয়ে আমার দিকে |
বাধ্য হয়েই বললাম "ফোন কেন ?"
লোকটা বলল, "দেন দেখবো | আপনার ছবি দেখবো |"
অসামাজিকতার চূড়ান্ত করে লোকটা আমার পার্স থেকে আমার ফোন বের করে নিলেন | এই ঘটনায় আমি সত্যি কিছুসময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে যাই | এরপর তিনি গ্যালারিতে ঘটাঘাটি করে ছবি বের করলেন | আমার ফোনে আমার খরগোশের অনেক ছবি | তিনি সেসব নিয়ে বারবার টিটকিরি করে এককথাই বললেন "খরগোশ পুষে কি হয় ! এ দিয়ে লাভ কি !" এই সার্কাস শেষে তারা জানালেন আমাকে তাদের খুবই পছন্দ !
বেরিয়ে এসে আমি আমার বাবাকে এটাই শুধু বললাম, "সাব্বাস আব্বু !"
আমি গতকাল সারারাত ঘুমাইনি | বারবার তাদের এই ব্যবহারগুলো আর সর্বোপরি আমার বাবার নির্বিকারতা আমাকে কষ্ট দিচ্ছিলো |
আজ বিকেলে আমি আবার চাচীকে দেখতে যাই |
চাচীর ভাইয়ের বৌ বলল, "যা হইসে ভুইল্লা যাও ! না মানে ওরা বারবারই বলসে কিসু যেন মনে না করো তুমি |"
আমি উত্তরে বললাম "মনে করার নয়, হয়রানি মামলা করার মত ঘটনা ঘটেছে ! কিকরে ভুলে যাই |"
ছেলের আত্মীয় সেই বৃদ্ধা আজও এলেন | আজকে আমার চুল ছাড়াই ছিলো, ইচ্ছাকরেই আজ অনেক সাজগোজ করে গিয়েছিলাম |
মহিলা সামনে এসে বসলে আমি বললাম, "আজকেও চুল দেখবেন ? দেখুন ! শুধু চুলই দেখবেন নাকি আরও কিছু দেখবেন ?"
মহিলা হতবাক হলেন |
আমি বললাম, "আপনার নাকি দুটো ছেলে ?"
মহিলা দম্ভভরে বললেন, "হ | আমার দুই পোলা | আর দুইপোলার ঘরে পাঁচটা নাতি |"
আমি বললাম, "আচ্ছা আপনার ছেলের বৌদের যখন ছেলের বিয়ে দিয়ে আনেন তখন কি এদের চুল আর গায়ের রং পরীক্ষা করে এনেছিলেন ? ছেলের বিয়ের মেয়ে দেখতে গিয়ে কি মেয়ের খোঁপা এমন টেনে খুলে হাতদিয়ে চুল মেপে এনেছিলেন ?"
আমার চাচীর মেজবোনটি যাকে আমি লিজাআন্টি ডাকি সে অত্যন্ত প্রতিবাদী মহিলা তিনি আমার স্বপক্ষে ওই মহিলাকে তৎক্ষনাৎ বললেন, "তোমার বউগোর চুল খুইলা দেখতে গেলে ওরা তোমার শাড়ি খুইল্লা নেংটি পিন্দায়া দিবো ! তুমি ওর চুল খুলছিলা কেলিগা ?"
বৃদ্ধা আমতা আমতা করে বললেন, "পোলার বড়ভাবী কইল |"
লিজাআন্টি বললেন, "কইল গু খাইতে আর তুমি খাবলা খাবলা খাইলা !"
আমি সেই বৃদ্ধাকে বললাম, "আপনাকে দেখে আমি শিক্ষা নিলাম যে বয়স্ক হলেই তাকে সম্মান করা যায়না | কিছু বয়স্ক মানুষ কিছু মুরুব্বি আপনার মত ইতর হয় বদমাইশ হয় ! এই ইতরদের মানুষের মাঝে থাকাই ঠিক না |"
বৃদ্ধা উঠে গেলেন ও কিছুক্ষন পর ফিরে এসে বললেন, "দেখো তুমি রাগ হৈছো কেলিগা তা জানিনা মাগার পোলা খুব ভালা | পোলার পরিবারের দিলটা বড় !"
আমি মেঝেতে পড়ে থাকা একটা বাদাম তুলে বললাম, "আপনার ওই ছেলের পরিবারের মানুষের মন আমার কাছে এই চিনাবাদামের চেয়েও ছোট মনে হল | ছেলেরা একদম নিম্নশ্রেণীর মানুষ | টাকা ওদের হয়েছে হয়ত কিন্তু আরো তিনবার জন্ম নিতে হবে ভদ্রতা শিখতে |"
বৃদ্ধা যাবার একটু পরেই ছেলের মা ও দুইবোন এলো |
তারা ইনিয়ে বিনিয়ে বলল, "দেখো এটা "এসকিডেন্ট" হইয়া গেসে ! কিসু মনে কইরোনা |"
আমি হেসে বললাম, "আপনাদের ঘরেও তিনটা মেয়ে আছে | আল্লাহ না করে যেন আপনাদের মেয়েদের সঙ্গেও এমনটা যেন না হয় ! তবে আমি আপনাদের মত বিবেকহীন না | কোনদিন কোন মেয়েকেই আমি অভিশাপ করি না |"
ছেলের ছোটবোন বলল, "আমার ভাইয়ের মেয়ে পছন্দ হয়না একটাও কিন্তু তোমাকে তার ভালো লাগসে | এখন তুমি যদি এই সামাইন্য কারনে না বলো তো ও রাগ করবো | আচ্ছা আমরা তো কিসু বলি নাই |"
আমি মহিলাকে বললাম, "আপনারা আমার অনুমতি না নিয়ে পটাপট ছবি তুলেছেন নিষেধ করা সত্বেও ! এরপর আমাকে একবার বিছানায় একবার সোফায় বসিয়ে ছবি নিলেন, আমার চুল গায়ের রং পরখ করার জন্য ওই বুড়িকে বললেন এগুলোর কোনটাই সামান্য আচরণ না |"
ছেলের সেই মোবাইল দোকানদার ভগ্নিপতি দেখি দরজায় দাঁড়িয়ে | সে ভেতরে এসে গাল বিস্তৃত করে হেসে বলল, "ম্যাডাম নাকি রাগ করসেন ? আরে ম্যাডাম আমরা তো ফ্রি মাইন্ডে এমন করলাম | রাগ কইরেন না |"
আমি লোকটাকে বললাম, "আপনি কোনদিন কার্জন হলের দরজায় দাঁড়িয়েছেন ? দাঁড়াননি | অথচ আমাকে আপনি কালকে পড়াশোনা জ্ঞান দিচ্ছিলেন ! আপনি নিজে সাড়ে পাঁচফুটেরও কম লম্বায় | নিজে বেঁটে অথচ আমার উচ্চতা মাপছিলেন | ভদ্রতার মাথা খেয়ে আমার সাথে কাঁধমিলিয়ে দাঁড়াতে যাচ্ছিলেন | এরপর আমার বাবার বোকামির সুযোগ নিয়ে আমার ফোন ঘাটাঘাটি করলেন | আমার ঘরে আমার চাচাচাচী, আমার আত্মীয়রা এমনকি আমার বাবার ফোনও আমি কোনদিন ধরিনা | কারন সেলফোন খুব ব্যক্তিগত গ্যাজেট | আর আপনি এক অপরিচিত মেয়ের পার্স খুলে তার ফোন বের করে ঘাটাঘাটি করলেন অভদ্রতার চূড়ান্ত করে | একে ফ্রিমাইন্ড বলে না একে বলে বেহায়াপনা |আপনি একটা অসভ্য, লম্পট আর জঘন্য মানুষ |"
লোকটি আশেপাশে চেয়ে অনেক লোক দেখে ইতস্তত করে বলল, "না মানে মেয়ে দেখতে গেলে......."
বললাম, "মেয়ে দেখা শাড়ি কেনা নয় যে পড়তে পড়তে খুলে দেখতে হবে | এ কোরবানির গরু কেনা নয় যে দাঁত নখ চোখ দেখতে হবে |"
এরপর আমি ছেলের দুই বোনকে বললাম, "আপনারা পাত্রপক্ষ মানলাম | কিন্তু আপনার ভাই দেখতে তো খুব কুৎসিত | কালো , মুখভর্তি দাগ আর মাথায় টাক | লম্বা মাত্র ৫'৩'' | সে পড়াশুনা করেছে এইচএসসি পর্যন্ত | সে টেকনিশিয়ানের ট্রেনিং নিয়ে কন্ট্রাক্টে কাজ করে অর্থ গড়েছে | তার যোগ্যতা শুধুমাত্র এই যে তার টাকা আছে | এছাড়া আর বলারমত কোন গুণই তার নেই | কি নিয়ে এত অহংকার আপনাদের ? আপনারা মেয়েকে কতদামী শাড়ি দেবেন কি কতভরি গহনা দেবেন এর কিছুতেই কোন আগ্রহ আমার নেই | কারন যে মানুষেরা সম্বন্ধ হবার আগেই একটা মেয়ের সাথে এই আচরণ করে তারা বিয়ের পর কত ভয়ংকর হবে সেটা আন্দাজ করতে পাগলেরও কষ্ট হবে না |"
ছেলের মা বললেন, "তুমি তো কালকা কিসু কও নাই ! অহন তো সবে জানে পসন্দ আমাগোর |"
বললাম "আমি ইচ্ছা করেই কাল চুপ ছিলাম | আপনারা যখন ধরেই নেবেন আমি রাজি ঠিক তখনই আমি না বলব |"
ছেলের বোন বলল, "এইটা জানাজানি হইলে তো অপমান হমু আমরা |"
আমি হেসে বললাম "অপমান করার কাজ করলে অপমান তো হবেনই ! আপনারা মানুষ হিসেবে জঘন্য | আর আমি সব পারি কিন্তু নিজের আত্মসম্মানের সাথে সমঝোতা করতে কখনোই পারিনা |"
তারা অনেক চাইলেও আমি আর কোন কথাই তাদের সাথে বলিনি |
ছেলের মাসে প্রায় দুইলাখ টাকা আয় | ছেলের বাড়ি আছে | কাজেই সম্পদশালী ছেলে যদি দেখতে কুৎসিত কদর্য হয় আর তার পরিবার খুব অভদ্র ন্যাক্কারজনক হয় তাও সে যোগ্য পাত্র | এরকম পাত্রের পরিবারের সঙ্গে এমন তর্ক করেছি যেহেতু কাজেই আমি অতি অসামাজিক ও বেয়াদব মেয়ে |
আমি গর্বিত নিজেকে নিয়ে যে আমি বেয়াদব ও অসামাজিক !
( রুবাইয়াৎ তৃণা )

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:২০

আবু তালেব শেখ বলেছেন: অনেক লম্বা লেখা তবু ও মন দিয়ে পড়লাম। যেটা বুঝলাম আপনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন প্রতিবাদী অগ্নিকন্যা(তেল মারছি না) । তবে এই সিস্টেমের প্রথা চলে আসছে বহুকাল থেকে।
বার বার আপনাকে বাবা কে দোষারোপ করা ঠিক হয়নি। ঐ পরিস্হিতিতে ছেলে পক্ষের অসাদাচারন করছে আর আপনার বাবা প্রতিবাদ করেনি এরজন্য ওনার কোন দোষ নাই । পরিস্হিতি মানুষকে নির্বোধ করে দেয়।,,,,

শুধু চুলই দেখবেন নাকি আরও কিছু দেখবেন ?" ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,বুড়িকে মুখের উপর ঝাটা(ঝাড়ু) মাারা ঠিক। একটু হাসিও পেলাম।

,,,
আপনি তাহলে ওদের প্রস্তাবে রাজি হননি??

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৪

রূবাইয়াৎ তৃণা বলেছেন: অগ্নিকন্যা নয়, একজন সাধারণ বেয়াদব কন্যা ! কেন রাজি হতাম কেন ? গহনা, শাড়ি আর ছেলের বাড়ির জন্য ? বিয়ে মানুষের সঙ্গে হয়, শাড়িগহনার সাথে নয় ! যাদের পরিবারে মেয়েদের সম্মান এই তাদের পরিবারে বিয়ে ?

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৩৬

আবু তালেব শেখ বলেছেন: আমার ভাই অনেকগুলো পাত্রী দেখেছে কিন্তু পছন্দ হয়নি একটাও। আপনাকে পছন্দ হয়েছে।
তাহলে আপনি নিশ্চয় অনেক সুন্দরী?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:২৫

রূবাইয়াৎ তৃণা বলেছেন: বাহ্ ! এরকম একটা ঘটনা নিয়েও রসিকতা করলেন ? ভালো !

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৪৬

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: একই প্রশ্ন নিয়ে জনগণের কাতারে...
আবু তালেব শেখ বলেছেন: আমার ভাই অনেকগুলো পাত্রী দেখেছে কিন্তু পছন্দ হয়নি একটাও। আপনাকে পছন্দ হয়েছে।
তাহলে আপনি নিশ্চয় অনেক সুন্দরী?

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:২৪

রূবাইয়াৎ তৃণা বলেছেন: বাহ্ ! এরকম একটা ঘটনা নিয়েও রসিকতা করলেন ? ভালো !

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৫৩

বনসাই বলেছেন: অবাক হলাম! এই সময়েও এমন পরিবার আছে? আপনার মা না থাকায় বাবা একটু টেনশনে থাকেন, তাই তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। আর আপনার তো পড়ালেখা আপাতত শেষ; ক্যারিয়ার নিয়ে ভিন্ন ভাবনা থাকলে অন্য কথা তা না হলে বিয়ে নিয়ে ভাবতে পারেন। এ সমাজ অনেক জটিল জায়গা, আরো কিছু বছর পর নানা বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন।
পাত্রপাত্রী দেখাতে কেউ এখন বাসায় আয়োজন করে না, রেস্টুরেন্ট বা সপিং মল এ যায়। এই সম্বন্ধে যাওয়া ঠিক হয় নি, আত্মীয়ের অনুরোধে আত্মসম্মান বিসর্জন করবেন কেন? কোনোভাবেই এই পরিবার আপনার সমমর্যাদার নয়।

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

কলাবাগান১ বলেছেন: উপরে কমেন্ট করা এক জন 'সজ্জন' 'বলগার' আর সেই অসভ্য ভগ্নীপতির মাঝে কোন তফাৎ দেখতে পারছি না

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯

রাফা বলেছেন: এটা কি বাস্তব নাকি কোন কাহিনি বা গল্প বললেন! আমি পড়ার পরও বিশ্বাস করতে পারছিনা ২০১৮সালে মানুষ এভাবে পাত্রী নির্বাচন করে।অপমানিত হওয়া বা করা দুটোই অন্যায় মনে হয়েছে আপনার লেখাটি পড়ে।কারো ব্যাগ থেকে ফোন নিয়ে দেখা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব এটুকুর পরে আপনার সেখানে অবস্থান করাই উচিত হয়নি।

পয়সাওয়ালা পাত্ররা অশালীন আচরণ করার সুযোগতো পায় মেয়েদের জন্যই।বেকার ছেলে যত শিক্ষিতই হোক কোন মেয়েই হাতটা ধরতে চায়না।পয়সা যোগ্যতার মাপকাঠি হোতে পারছে কিছু মেয়ের জন্যই।

আপনার যোগ্যতা অনুযায়ি পাত্রই যেনো পেয়ে যান এই শুভ-কামনা থাকলো।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:২১

রূবাইয়াৎ তৃণা বলেছেন: ভাইয়া এটা ২০১৮ সাল কিন্তু হ্যা এখনও এমনটা হয় | তারা বিত্তশালী বলেই এরকম আচরণ করেছে তাও সঠিক | কিন্তু পরিস্থিতির জন্য প্রথমদিন আমাকে চুপ থাকতে হয়েছিল | দ্বিতীয়দিন আমি চুপ থাকিনি | সেজন্যই তো বেয়াদব হয়ে পরিচিত হলাম | আজকে তাদের সম্পূর্ণ এলাকায় কথাটা ছড়িয়ে গেছে যে তারা কি আচরন করেছিল |
শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া |

৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৫৯

নাহিদ০৯ বলেছেন: যাক। খুশি হলাম অন্ততঃ একটা সুস্থ পরিবার তো আছে যারা আপনারা অন্যের বাসায় গিয়ে মেয়েদের কে হেয় করবেন না! এটাই যথেষ্ট দুনিয়া কে বদলে দেওয়ার জন্য। শুভকামনা আপনার জন্য।

৮| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৫

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আপনার বাবার অবস্থা চিন্তা করে খারাপ লাগল। সব বাবাই চান মেয়েকে সুখী দেখতে। বিবাহযোগ্যা কন্যা ঘরে থাকলে বাবাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এটা বাবাদের জন্য এক বিরাট দুশ্চিন্তার বিষয়। তাই আপনার বাবা এতটা অসহায়ের মত সব দেখেও হয়ত প্রতিবাদ করেননি। আর পাত্রপক্ষের এভাবে মেয়েদের যাচাই করে দেখার সিস্টেমটা আজকের নয়, অনেক পুরনো। সবার মনমানসিকতা একরকম নয়। বিশেষ করে যারা শিক্ষার চেয়ে টাকাকেই যোগ্যতার মাপকাঠি মনে করে তাদের বিহেভটা এর চেয়ে ভাল আশা করা যায় না। আপনার এভাবে প্রতিবাদ করাটা হয়ত এক হিসেবে সঠিক কিন্তু আচরণটা অতিরিক্ত মারমুখি হলে আপনার জন্যই ক্ষতিকারক হবে। আপনি যদি সত্যিই বিরক্তি বোধ করে থাকেন তবে ঘটনাস্থলেই ভদ্রোচিত ভাষায় তাদেরকে আপনার অনীহার ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলা উচিত ছিল। এভাবে মেয়ে দেখার সিস্টেমটা কিন্তু অনেকটাই সেকেলে। আর যেহেতু ছেলের পরিবারে শিক্ষার ঘাটতি রয়েছে তারওপর মুরুব্বিদের মনমানসিকতাও সেকেলে তাই হয়ত আপনার সাথে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ। আপনার মনে কষ্ট লাগাটা স্বভাবিক।
আপনার পেশা বেছে নেয়ার ব্যাপারটা শুধুমাত্র আপনার ইচ্ছায়ই হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আপনি আপনার বাবাকে বুঝিয়ে বলতে পারেন।
যাই হোক, আমি ছেলেপক্ষের সাফাই গাইছি না বা আপনাকে উপদেশ দেয়ার ধৃষ্টতাও দেখাচ্ছি না। শুধু বাস্তবতার নিরীখে কথাগুলো বললাম। আশা করি বুঝতে পারবেন।

৯| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: সোনার পুরী আন্ধার করে, যেদিন পাখি যাবে উড়ে-
শূণ্য খাঁচা থাকবে পড়ে- কে করবে আর কার যতন !!

১০| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪

নীল আকাশ বলেছেন: আপু, বাসায় একটা শলার ঝাড়ু রাখবেন। এসব আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়া উচিৎ। আপনি আপনার কাজ গুলি কে ১০০ ভাগ সমর্থন করি। একটা ছেলে হয়েও বলছি, এরা যা করেছে সেটা একেবারে নিন্ম পর্যায়ের। কোনো ভাবেই সমর্থন কার যায় ন। তবে আপু, আপনার বাসা থেকে এসব কিভাবে আ্যালাও করেছে সেটাও খুবই অবাক ব্যাপার। আপনি আপনার বাসার সাথে এসব সমস্যা আগে সমাধান করুন। একজন পূর্ন বয়স্কা মেয়েকে এভাবে নিজের বাসায় বাবা মা অপমান করতে পারে না।

১১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৫

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: বিল্কুল উলটা পুনঃমন্তব্য প্রকাশ করিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.