নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভীষণ একলা থাকা মানুষ আমি ভীষণ আমার ভেতর থাকি!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর

জীবন জুড়ে থাকা পরাজয়, হয়েছে ম্লান চিরকাল!

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেখানে এগিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৭

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খুলনাতে অবস্থিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র ছাত্ররাজনীতি মুক্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারী গেজেটের মাধ্যমে। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করা হয় এবং ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে আর্কিটেকচার, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল , ব্যবসায় প্রশাসন ও আরবান এন্ড রুরাল প্লানিং (ইউ আর পি) এই ৪ টি ডিসিপ্লিনে ৮০জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট প্রথম ওরিয়েন্টেশন এবং ৩১ আগস্ট ক্লাশ শুরুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়। সেই বছরের ২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। তাই প্রতিবছর ২৫ নভেম্বরকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসাবে পালন করা হয়। ২০০২ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন শুরু হয়।


ছবিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে তোলা ছবি।
চিত্রগ্রাহকঃ এখলাস তূর্য্য


খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬টি স্কুল ও ১টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। ৬টি স্কুলের অধীনে ২৫টি ডিসিপ্লিন এবং চারুকলা ইন্সটিউটের অধীনে ৩টি ডিসিপ্লিন সহ মোট ২৮ টি ডিসিপ্লিন রয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট নামে আরো একটি ইন্সটিটিউট চালু করার প্রস্তাবনা চলছে। স্নাতক, স্নানকোত্তর, ডক্টরাল ও পোষ্ট-ডক্টরাল পর্যায়ে সবমিলিয়ে প্রায় ৬ হাজারের বেশী শিক্ষার্থী রয়েছে , এদের মধ্যে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১২ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষকসংখ্যা ৩৯৮। এ ছাড়া কর্মকর্তা ২৩৯ জন এবং কর্মচারী রয়েছেন দুই শতাধিক।


ছবিঃ অদম্য বাংলা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
চিত্রগ্রাহকঃ কাজী আসাদুল্লাহ আল ইমরান



যে কারণে অনন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ

বিগত ২৬ বছরের মধ্যে দেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যে কারণে অনন্য তার কিছু কারণ নিচে তুলে ধরা হলঃ-

১। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত হলেও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো ইতিহাস নেই। সবুজ ক্যাম্পাসে আজও রক্তের দাগ লাগেনি।
২) বাংলাদেশে প্রথম আরবান এন্ড রুরাল প্লানিং (ইউআরপি) ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়। পরবর্তিতে বুয়েট, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ডিসিপ্লিন চালু করে। বর্তমানে দেশের প্রায় সবগুলো প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউআরপি ডিসিপ্লিন চালু রয়েছে।


ছবিঃ গ্রীন লেক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
চিত্রগ্রাহকঃ কাজী আসাদুল্লাহ আল ইমরান



৩) বাংলাদেশে প্রথম ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়। দেশের প্রথম বিবিএ ডিগ্রীও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদান করা হয়। ৪ বছরের ব্যবসায় প্রশাসন এ স্নাতক ডিগ্রী (ব্যবস্থাপনা) দেবার ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুল বাংলাদেশের মাঝে এক অগ্রদূত । বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ব্যাবস্থাপনা ও পরিচালনা পদ্ধতিগুলির উন্নয়নের জন্য এই স্কুল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রতিশ্রুতি তার ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ফোরামে যেমন AMDIB (Association of Management Development Institutions of Bangladesh) and AMDISA (Association of Management Development Institutions in South Asia) তে সক্রিয় অংশগ্রহণ মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌ কর্মকর্তাদের জন্য নিয়মিত ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ কর্মসূচী থেকে এই প্রতিশ্রুতি আরো মূর্তমান হয়ে উঠে।

৪) বুয়েটের পর প্রথম কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল ডিসিপ্লিন (বাংলাদেশে ২য়) এবং আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন (বাংলাদেশে ২য়) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েই চালু করা হয় (১৯৯১ সালে)।


ছবিঃ আতশবাজি ও আলোর খেলা, র‍্যাগডে ২০১৬ উদযাপন।
চিত্রগ্রাহকঃ আল হেলাল


৫) বাংলাদেশে প্রথম ফরেষ্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়।

৬) উপমহাদেশের প্রথম বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়।

৭) বাংলাদেশে প্রথম এনভারেনমেন্টাল সাইন্স ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়।

৮) বাংলাদেশে প্রথম ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়। বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করে এই ডিসিপ্লিন।

৯) বাংলাদেশে স্নাতক পর্যায়ে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (এইচআরএম) ডিসিপ্লিন চালু করা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে ব্যাবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রসাশন স্কুলের অধীনে এই স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে বিবিএ ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।

১০) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বুয়েটের পরই ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এখানে কোর্স ক্রেডিট পদ্ধতি চালু করা হয় এবং প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সিজিপিএ সিস্টেম চালু করে।

১১) আন্তঃডিসিপ্লিন ক্রিকেটে বাংলাদেশে প্রথম ভিডিও রেকর্ড করে থার্ড আম্পায়ারের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত দেয়া হয় খুবি তে।


ছবিঃ আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল টূর্নামেন্ট এর একটি দৃশ্য, খেলা শুরুর পূর্বে।
চিত্রগ্রাহকঃ রাকিব জীম



সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহঃ

ছাত্ররাজনীতি না থাকার পরও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে স্ব-গৌরবে নিজেদেরকে প্রকাশ করে চলছে বছরের পর বছর- প্রশ্নটা চলেই আসে।
হ্যা, ঘটনাটা সত্য। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্যে কোন নিজস্ব ছাত্রফোরাম নেই,কোন দলীয় নেতা নেই, কোন দলের স্বার্থনেষী কার্যক্রম নেই, নেই কোন টেন্ডারবাজী, কোন অস্ত্রের ঝংকার, কোন রক্তের বিভীষিকা! তবুও এখানে টিকে আছে নেতৃত্ব, বেঁচে আছে সংগ্রাম ও প্রতিবাদ। এখানকার ছাত্ররা স্বপ্ন দেখে সুন্দর আগামীর, স্বপ্ন দেখায় সুন্দর আগামীর। এরা বিচার করতে পারে নিরপেক্ষভাবে, এরা প্রতিবাদ করতে পারে স্বার্থন্বেষী ভাবনার বাইরে এসে, এক হয়ে।

ছবিঃ সংগঠন সমূহের সাপ্তাহিক মিটিং এর দৃশ্য।
চিত্রগ্রাহকঃ সাজ্জিদ আহমেদ


শিক্ষার্থীদের চিন্তা-ভাবনাগুলোর মুক্ত বিকাশ ও পরিচর্চার জন্যে এখানে আছে ২২টি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সেচ্চাসেবী সংগঠন। এই সংগঠনগুলোই ক্যাম্পাসের প্রাণ। প্রত্যেকটি সংগঠন যেন তাদের সদস্যদের কাছে একটি অনুভূতির নাম। সৃজনশীল চিন্তাধারা আর কার্যক্রম প্রকাশের বর্লীন ক্যানভাস হিসেবে কাজ করে আসছে এক একটি সংগঠন।

যেমন: ‘ওংকার-শৃণুতা’ একটি আবৃত্তি সংগঠন। সংগঠনের ছাত্ররা তাদের কন্ঠদিয়ে নতুন দেশ তৈরীর কথা বলছে, নতুন প্রজন্মের কাছে মাটি ও মানুষের কথা বলছে। ‘নৃ-নাট্য’ নামটি বলে দিচ্ছে এর ছাত্ররা মঞ্চে আলো-ছায়ার খেলা করে। এরা অভিনয় দিয়ে মানুষের মনুষ্যত্ব জাগানোর ব্রতনিয়ে আজও নতুনভবে বাচাঁর স্বপ্ন বুনছে। ‘থিয়েটার নিপুণ’ নানবিধ কর্মকান্ডের ভিতর দিয়ে দেশের কথা বলছে, কখনও পুতুল নাচে ভিতর দিয়ে, কখনও যাত্রার মঞ্চে, কখনও নাটকের চরিত্রে, কখনও কবিতায়। ‘৩৫এমএম’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দেশেকে তুলে ধরছে সাধারন মানুষের কাছে, গল্পের ভিতর দিয়ে মানুষের বিবেককে জাগরিত করছে। ‘ভৈরবী’ সুরের ছন্দে মানুষের হৃদয়ে বাজায় সাম্যের গান।


ছবিঃ র‍্যাগডেতে পারফর্ম করছে নগর বাউল জেমস।
চিত্রগ্রাহকঃ খান জাহিদ


লালন আর লোকগানের মধ্যে মানুষের অন্তরাত্মাকে জাগ্রত করার কাজটা করে যাচ্ছে ‘সাধু সংঘ’। মেটালফ্রিক ছেলেটা প্রতিদিন গিটারের সাথে টুংটাং করছে ‘নয়েজ ফ্যাক্টোরির’ আড্ডায়। নিজেদেরকে ফ্যাক্টোরিয়ান হিসেবেই পরিচয় দিতে ভালোবাসে ‘নয়েজ ফ্যাক্টরির’ প্রত্যেকটা সদস্য। ‘ছায়াবৃত্ত’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর ও বাইরের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে যাদের কেউ হয়ত ভ্যান চালায়, কেউ দোকানে কাজ করে, কেউ বা ফেরী করে তাদের মাঝে কী অসম্ভব উৎসাহ আর ভালোবাসা নিয়ে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। ‘রিডার্স ফোরাম’ ছাত্রদের বই পড়ার উৎসাহ দানের পাশাপাশি নিয়মিত আড্ডায় মাতে পরস্পরের ভাবনা আদান-প্রদানের। ‘নৈয়ায়িক’ বির্তকের মঞ্চে প্রতিপক্ষকে শুধু ঘায়েলই করে না তাদেরকে বন্ধুর মত বুকেও টেনে নেয়। ‘রোটারেক্ট ক্লাব’ বিপদে আপদে শুধু মানুষের পাশেই দাড়ায় না বরং স্বপ্নও দেখাতে সাহায্য করছে , ‘বাঁধন’ এর সদস্যরা দিন নেই রাত নেই ছুটে যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, হাসপাতাল থেকে ক্লিনিকে। খুলনা শহরের সবচেয়ে বড় সেচ্চাসেবী রক্তদাতা সংগঠন ও ভরসার জায়গা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ‘ বাঁধন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট’। নাচের সংগঠন ‘স্পার্ক’ আর ‘রিদম’ ছাড়া যেন অনেকটাই অসহায় ক্যাম্পাসের সেন্ট্রাল প্রোগ্রামগুলো। ডিএসএলআর-ওয়ালা নারীপ্রেমি ছেলেটা হটাৎ যেন বদলে গেলো, নিজের ক্যামেরাকে কাজে লাগাচ্ছে দেশ, প্রকৃতি ও জীবনচিত্রের ছবি দিয়ে তুলে ধরার মাধ্যমে। ‘খুলনা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি’ কাজ করছে ফটোগ্রাফী নিয়ে। আর এভাবেই নিজের মনন আর মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রতিষ্টা করে যাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক এক সংগঠন ও তার নিবেদিত প্রাণ সদস্যরা।

ছবিঃ শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
চিত্রগ্রাহকঃ রাকিব জীম



নতুন যা আসছেঃ

ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. মোর্ত্তূজা আহমেদ স্যারের প্রকাশিত একটি কলাম থেকে জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের পরিকল্পনাগুলো-
স্যার তার কলামে লিখেছেনঃ-
''অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নতুন ১৪টি ডিসিপ্লিন এবং দুটি ইনস্টিটিউট চালুসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনবলের সাংগঠনিক কাঠামো বা অর্গানোগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাভ করেছে, যাতে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি স্কুলের অধীনে আরো ১৪টি নতুন ডিসিপ্লিন এবং দুটি ইনস্টিটিউট খোলার প্রস্তাব রয়েছে। ইতিহাস ও সভ্যতা, সাংবাদিকতা, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট এবং আইন ডিসিপ্লিন এরই মধ্যে চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে চালু হবে এডুকেশন ডিসিপ্লিন, ভেটেরেনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, পাবলিক হেলথ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ড্রামা অ্যান্ড মিউজিক ডিসিপ্লিন এবং দুটি ইনস্টিটিউট ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) এবং ইনস্টিটিউট অব কোস্টাল জোন অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট।

আগামী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে মোট ডিসিপ্লিনের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩২টি। এ সময় বর্তমান পাঁচ হাজার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা থেকে ১১ হাজার ৯৫ জনে উন্নীত হবে এবং শিক্ষক সংখ্যা ৩০০ থেকে বেড়ে হবে ৮২১ জন। অর্গানোগ্রামের ভিশন হিসেবে যুগের চাহিদা উপযোগী ডিসিপ্লিন চালুর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সম্প্রসারণ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ শিক্ষাধারার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে আরো গুণগত মান অর্জন ও উৎকর্ষ সাধনে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আগামী ১০ বছরের জন্য প্রণীত এ অর্গানোগ্রাম বস্তবায়িত হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে এবং দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারবে।''



পুনশ্চঃ

গত ২৫ বছরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যার্থতা যেমন আছে অর্জনও কম নয়। এখানে যে জিনিসটা দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে যে জিনিসটা টিকে আছে তা হলো সিনিয়ার-জুনিয়ার সম্পর্ক। এইখানে সিনিয়ার-জুনিয়াররা বন্ধুর মত। এখানকার গ্রেজুয়েটরা দেশে-বিদেশে সম্মান ও যোগ্যতার সহিত নিজেদের প্রকাশ করে দেশ ও জাতীর উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

ছবিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়া

আজকাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গুগুল কিংবা মাইক্রোসফটে চাকরি পেলে দেশের প্রথম সারীর সবগুলা পত্রিকার হেডলাইনে চলে আসে। অথচ অনেকেই জানেননা বাংলাদেশে গুগলের প্রচার ও প্রসার হয়েছে যার হাত ধরে সে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন গ্রেজুয়েট। গুগল, মাইক্রোসফট, ও ইনটেল এর মত বড় বড় কোম্পানিতে স্ব-গৌরবে কাজ করছে এখানকার সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়াররা। জানা যায়, খুবির অন্তত ২০জন গ্রেজুয়েট আছেন যারা বর্তমানে গুগল ও মাইক্রোসফটে সিনিয়ার সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছে। উপমহাদেশের প্রথম জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেজুয়েট।


ছবিঃ ক্যাম্পাসের ছবি আঁকছেন চারুকলার একজন শিক্ষার্থী।
চিত্রগ্রাহকঃ আল-হেলাল


নিজেদেরকে মেলে ধরার এইরকম হাজার হাজার উদাহরণ আছে খুবি গ্রেজুয়েটদের নিয়ে। এখানকার শিক্ষার মান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি কখনো। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি এতোটা সচ্ছ যে এর বিরুদ্ধে কখনো ভর্তি বানিজ্য কিংবা প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলতে পারেনি কেউ।


আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স মাত্র ছাব্বিশ হলো । এই অল্প-সময়ের পথ যাত্রায় খুবির অর্জন নিঃসন্দেহে অনেক বেশী। এই ছাব্বিশ বছরের যাত্রায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এভাবেই নিজেদেরকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনন্য করে রেখেছে।


ছবিঃ ক্যাম্পাসের ফেরিওয়ালা

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অন্য সব বিশ্ব বিদ্যালয়ের জন্য আদর্শ হতে পারে। পড়ে খুব ভালো লেগেছে। এমন একটা পোষ্ট দেওয়ার জন্য পোষ্ট দাতাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৬

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: ধন্যবাদ ফরিদ ভাই।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি অনুভূতিটা যে কতোটা তীব্র তা সেখানকার ছেলে-পেলে যারা কেউ বুঝবেনা কখনো।
তবে একই সাথে বলে নিই যে পোষ্টের পুরো কৃতিত্ত্বটা আমার নয়।
"সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ" নামক প্যারাটার কয়েকটা লাইন 'সূর্য্যদেব' নামে আমার এক সিনিয়ার থেকে নেয়া। তাই কিছুটা কৃতিত্ব তার উপরও বর্তায়।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৬

তানভীর আলম ৪৯ বলেছেন: ভালো লাগল। 8-|

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: ফেসবুকের চেয়ে ব্লগে বন্ধুর কমেন্ট পড়তে ভাল্লাগে।
ধন্যবাদ তানভীর।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৩

জাহান আমি বলেছেন: আমি গর্বিত আমি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র। শুধু আমি না এই বিশ্বকবদ্যালয় এর সকল ছাত্র গর্ববোধ করে শুধু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র হওয়ায়। খুবি এর ছাত্রছাত্রী তাদের নিজের কর্মক্ষেত্রে অনন্য, প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা রেখে যাচ্ছে সক্ষমতার ছাপ। নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলেছে এক অদৃশ্য আত্মার বন্ধন। সবাই সবার যেন পরম বন্ধু। জুনিয়র-সিনিয়রদের যে সেতু বন্ধন তা অন্য কোথাও যায়না দেখা। জয় হোক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর ।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২৪

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: জয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৮

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: আমি সবসময় KUnique টার্ম টা ব্যবহার করি আমার প্রানের Alma Mater খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দেবার জন্য। সমৃদ্ধ অতীত ওয়ালা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে আছে বেশ কয়েকটা। প্রতিদিনের দৈনিকের ফিচারে আসে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে অনেক।

কিন্তু বাংলাদেশে কে ইউ আছে একটা।

আমাদের ট্র্যাডিশন, ইতিহাস, আচার-ব্যবহার অন্যদের থেকে টোটালি ডিফারেন্ট। এক র‍্যাগ ডে প্রোগ্রাম দিয়েই সারা বাংলাদেশে টেক্কা দিতে পারবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। র‍্যাগ ডে থিম, শ্লোগান, ট্যাগলাইন, টি শার্ট ডিজাইন থেকে শুরু করে পুরো শহরবাসীর প্রানে স্পন্দন তুলে দেয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপার্টমেন্ট ওয়াইজ এই প্রোগ্রাম হয় এবং তাতে শুধু তারাই অংশগ্রহন করে। আর আমরা পুরো শহর নাড়িয়ে ফেলি আমাদের র‍্যাগ ডে দিয়ে। এটা অন্য কোথাও হয় না আমার বিশ্বাস।

জেমস থেকে শুরু করে শিরোনামহীন, ওয়ারফেইয, আর্টসেল, অর্থহীন, ব্ল্যাক আর আর্বোভাইরাস পর্যন্ত স্বীকার করে গেছে এমন ক্রাউড রেসপন্স তারা খুব কম জায়গা থেকেই পেয়েছে।

নয়েজ ফেস্ট এর ষ্টেজ দেখে আমন্ত্রিত আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড গুলা হা করে তাকিয়ে থাকে!!

টেকনিক্যাল দিক থেকে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খুবির পোলাপাইন স্মার্ট এটা ইউজিসি ও স্বীকার করেছে।

I am so proud of being a student of Khulna University

Xulian
AT’12

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩০

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: আমাদের খুবির সংস্কৃতি ও কৃষ্টি নিয়ে লিখবো অন্য কোন পর্বে।

আমাদের এখানে থাকা স্বপ্নের মতো বড় 'অনিকেত প্রান্তর'-ই খুঁজে পাওয়া যাবেনা অন্য কোথাও।
তাই আমাদের অনন্যতা একটু ভিন্ন মাপের, অনেক বিশাল পর্যায়ের।

ধারাবাহিক সিরিজ... চলবে!

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২০

প্রামানিক বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩০

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা।

৬| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩২

অতিকায় অমাবস্যা বলেছেন: খুবি সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারলাম!

৭| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১০

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: খুবির ছাত্র হয়ে সত্যিই গর্বিত। এই পোস্টের আগে থেকেই।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১২

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: খুবি নিয়ে লিখতে পেরে গর্বিত।

৮| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪২

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: ১। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত হলেও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো ইতিহাস নেই। সবুজ ক্যাম্পাসে আজও রক্তের দাগ লাগেনি।"
হতে পারে । তবে কোন এক শিক্ষকের ভুলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১জন ছাত্র ছাত্রীর প্রান গেছে সুন্দর বনে, যাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মৃতি-মিনার আছে । শুনেছি এই শিক্ষকের চাকরী চলে গিয়েছিল । আবার কেউ বলে সে এখন প্রাইভেটে আছে । সত্যি মিথ্যা জানি না ।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৯

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: কটকা ট্রেজিডির কথা বলছেন তো?

এই ট্রেজেডির সাথে কোন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতার কথা আমি কখনো শুনিনি। অভিযোগ থাকলে স্পেসিফিক করুন প্লিজ।

৯| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৭

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: পুরানও কেউ জানলে জানান । ঘটনা যে ঘটেছে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারই তার প্রমান । ছাত্রদের সুন্দরবন ভ্রমন করার কথা শিক্ষকের সাথে । এই ভ্রমন হয়েছিল কোন শিক্ষক ছাড়া । শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া বনবিভাগ ছাত্রদের ভ্রমনের অনুমতি দেয় না । তারা অনুমতিপত্র দেখে তাদের যেতে দেখেছিল । কে অনুমতি দিয়েছিল ? যার অনুমতি ছিল সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে, তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয়েছে । সবই কি এমনি এমনি ?

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: বিপদ কি বলে কয়ে আসে?
হুদাই কাউকে দোষারোপ করা নিরর্থক!

১০| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খুলনাতে অবস্থিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র ছাত্ররাজনীতি মুক্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে এই প্যাগোডার ভূমিকাটা কি? ভেতরে কি বৌদ্ধমুর্তি আছে ?

১১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৬

এম এ মুক্তাদির বলেছেন: ছবিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়া . প্যাগোডাছবিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়া . প্যাগোডা

১২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

[email protected] বলেছেন: এখনও!!!

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২৪

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: চলবে :)

১৩| ১৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:২৭

আনিসা তাসরুবা রিয়া বলেছেন: চিন্তা , মননশীলতা, পড়ালেখা প্রতিটা ক্ষেত্রেই খুবি সত্যি অনন্য। অসাধারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয়।

২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:০৩

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: আমার বিশ্ববিদ্যালয় একটি ভালোবাসা! :)

১৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৮

আরাফ আল মেহেদি বলেছেন: নিজেকে যতটা ভালোবাসি, ততটাই ভালোবাসি এই ক্যাম্পাস, এই বিশ্ববিদ্যালয় কে। ভালোবাসার পরিমান টা বুঝাতে আর কিছু বলতে হবে?

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৭

আহমেদ সাঈফ মুনতাসীর বলেছেন: এইসব অনুভূতি মিছে নয়!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.