নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পটা হয়তো ফ্রিজের

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৫৩

আমি আর সে। আমরা দুজন। আমাদের অবাক প্রেম নির্বাক হয়ে যখন ফোনের দুপ্রান্তে মুখর হয়ে ওঠে নীরবতা, আমরা তখন স্বপ্নে মাতি। আকাশ-কুসুম কল্পনায় আমরা সংসার সংসার খেলি।
সংসার হলে সেটা সাজাতে হয়। আমারাও সাজাই। সস্তার টোপ গিলিয়ে সে মগজে ঢুকিয়ে দেয় অদৃশ্য আসবাবের তালিকা। সাথে একটা ফ্রিজ। ফ্রিজ হলে নাকি খানাখাদ্যের আশ্রয়ের সাথে অর্থেরও কিছু সাশ্রয় ঘটবে।
সিএফটি’র সাথে টাকার হিসাব মিলাতে গিয়ে স্বপ্নেও আমি প্রমাদ গুনি। কথা ঘোরাবার তালে আমি তাকে বলি, গল্প শুনবে?
-কিসের গল্প?
-বলতে পারো ফ্রিজের গল্প।
-তোমার আবোল-তাবোল গল্পের আমি মাথা-মুণ্ডু খুঁজে পাইনা। ভালো লাগেনা আমার।
-আরে শুনেই দেখনা।
আমি গল্প ফাঁদি একটি ছোট্ট পরিবারের। ধরা যাক, পরিবারটি তিন সদস্যের। কর্তা, গিন্নি আর তাদের ৫ বছরের ছেলে। ছোট সংসার, বাড়িটা তার চেয়েও ছোট।
তাদের ঘরে কোন ফ্রিজ নেই। থাকবে কী করে? ফ্রিজ রাখার জায়গাই যে নেই।
অন্য সময় যেমন তেমন। কিন্তু কোরবানি এলেই বেশ বিপদে পড়ে পরিবারটি। মাথাপিছু গরুর দুটি ভাগ আর একটি খাসি। ভাগ বাটোয়ারা শেষে বাকিটুকু কড়াইয়ে ঝুরো মাংস হতে থাকে।
তবে ছোট্ট একটি পাতিলে কিছু মাংস তোলা থাকে মহররম এর জন্য। ছোট্ট ছেলেটির আবার খিচুড়ি-মাংসের নামে জিভে জল আসে।
হাঁড়িভর্তি রান্না করা মাংস তাই চালান হয় কোন এক বাড়িতে যাদের রয়েছে এক ইয়াব্বড় ফ্রিজ। পাতিলে ঢাকনা দিয়ে, গামছা পেঁচিয়ে সেখানে রেখে আসা হয় মাংস, মহররম এর ১০ তারিখে বমাল সমেত হাঁড়ি ফিরিয়ে আনা হবে এই শর্তে।
এমনই এক মহররম এর দুপুরে ছোট্ট ছেলেটি অপেক্ষায় থাকে মাংসের হাঁড়ির। খিচুড়ি-মাংসের লোভের চেয়েও তার মাঝে কাজ করে সন্ধেবেলায় লাজুক লাজুক মুখ করে পাড়ার বাড়িগুলোতে খিচুড়ি বিলানোর লোভ।
অবশেষে মাংসের হাঁড়ি আসে। বহিঃআবরণ অক্ষত। কিন্তু ঢাকনা সরাতেই বোটকা গন্ধ। মাংস ছেঁয়ে গেছে সাদা ছাতায়।
কারও মুখে রা নেই। ছেলেটির চোখ ঠেলে পানি বেরিয়ে আসে। খিচুড়ি-মাংস থেকে মাংস ছাঁটাই হলো বলে।
ছেলেটির বাবা হঠাৎ বাসা থেকে বের হয়ে যান। ফিরে আসেন ছোটখাটো একটা ফ্রিজ নিয়ে। খেয়ালি লোকটি ভুলেই বসেছে ঘরে ফ্রিজ রাখার জায়গাটাই নেই।
অতঃপর, ফ্রিজকে জায়গা দিতে চেয়ার টেবিল সব বাইরে। গিন্নি শুধান- লোক এলে বসতে দেব কোথায়?
ফ্রিজের গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে কর্তা আনমনে বলেন-দরকার হলে মেহমানদের ফ্রিজের ওপর বসাবো।
বাবার কথা শুনে ছেলেটি হেসে ওঠে খিলখিল করে।
এদিকে আমিও গল্পে খিল লাগিয়ে তাকে বলি- কি, গল্প পছন্দ হলো?
-হুমম, আমাদের মনে হয় আপাতত ১২ সিএফটি হলেই চলবে। তাই না।
...দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি আবার সেই নির্বাক যুগেই ফিরে যাই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০২

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লেগেছে।
+++++

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৫১

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:২৮

চাঁদের অরণ্য বলেছেন: খুব ভাল লেগেছে। শিরোনাম দেখে মজার কিছু মনে হয়েছিল। অপূর্ব।

০৭ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৫২

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.