নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেধার তালিকা

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৫

ক্লাশ থ্রি’র রেজাল্ট নেবার দিন। রেজাল্ট কার্ডের সাথে সবাইকে দেয়া হয়েছে একটা করে কমলালেবু। ফলে আমার অরুচি। বিষম সাইজের কমলালেবু নিয়ে তাই পড়লাম বড়ই বিপদে। পকেটে ঢোকানোর চেষ্টা করে বিফল।
একহাতে কমলা আর অন্যহাতে রেজাল্ট কার্ড নিয়ে স্কুল কম্পাউন্ড পার হচ্ছি। কিছুদূর যেতেই এক সহপাঠীর মা’র ডাক।
– তোমার রেজাল্টের এই অবস্থা কেন?
উনার মুখে পৈশাচিক হাসি। আগের দুই টার্মে মেধাতালিকায় ২য় ছিলাম। এবার ধপাস। ৭ম। আমার অবশ্য তাতে থোরাই কেয়ার। আমার চিন্তাজুড়ে তখন কমলালেবু। আপদটিকে হাতছাড়া করারনানান বদবুদ্ধি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
সেই সহপাঠী ৪র্থ স্থান থেকে ২য় স্থানে। ঊর্ধ্বগমনের আনন্দে সে কমলার কোয়া চুষছে আপনমনে।
– ইংলিশে কত পাইসো?
আমি নম্বর বলতেই উনার হাসি উধাও। হঠাৎ উনি ছেলের হাতের কমলা কেড়ে নিয়ে দূরে ছুঁড়ে মারলেন। বেমক্কা আক্রমণে আমি হতবাক। বাকশক্তি ফেরত পাবার আগেই আবার আক্রমণ। এবার আমার হাতের কমলালেবুর ওপর। লক্ষ্যবস্তু সহপাঠীর মুখমণ্ডল।
ছেলে কেঁদে উঠার আগেই মা’র গর্জন- হারামজাদা, ও সপ্তম হয়ে ইংলিশে তোর থেকে বেশি পায় কি করে?
আমি দ্বন্দ্বে পড়ে যাই কমলা উঠাবো নাকি সহপাঠীর কান্না থামাবো।
আমার উপস্থিতি অগ্রাহ্য করেই সেই মা রহস্যের সমাধানে আরো সহিংস হয়ে ওঠেন।
আমি দ্রুত পায়ে কেটে পড়ি। কমলা হারানোর স্বস্তিতে মনে চাঙ্গাভাব চলে এসেছে তবুও মনে ভয় রেজাল্ট কার্ড দর্শনে আমার মা’না আবার কোন রুদ্রদেবীর মূর্তিধারণ করেন।
বাসায় অভ্যর্ত্থনাটা মন্দ হয়নি। মা’র মৃদু ভর্ৎসনার সাথে বাবার সাহস -‘পরেরবার নিশ্চয়ই সবঠিক হয়ে যাবে’।
আমার জীবনে আর কিছুই ঠিক হয়নি। মেধাতালিকা থেকে ছিটকে আমি ঘোরাফেরা করেছি ১১ থেকে ৩০ এর মাঝে।
সেই সহপাঠী আজ ডাক্তার। ইংরেজির নম্বর যেমন তার পথে বাধা হয়নি তেমন আমার মেধাতালিকা হতে নিম্নগমন আমার স্বপ্ন ভাঙতে পারেনি।
বাবা-মা’দের কাছে আবদার সন্তানদের ভালো কিংবা খারাপ ফলগুলো শোকেসে সাজিয়ে না রেখে ঐ কমলালেবুর মত ছুঁড়ে ফেলে দিননা প্লিজ।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১১

সাবরিনা নেওয়াজ বলেছেন: মজার ঘটনা

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৮

সয়ূজ বলেছেন: সেই সহপাঠীকে দেখলেই মনে মনে হেসে উঠি এখনও।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৪

সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন।

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৮

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৮

উপপাদ্য বলেছেন: আল্টিমেটলি আপনার বন্ধুর মায়ের মতো গার্জিয়ানরাই সমস্যা। নিজের সব লোভ লালসা চাপিয়ে দেন সন্তনের উপর। অনেকটা ডিক্টেটরদের মতোনই।

ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৪৩

সয়ূজ বলেছেন: সেই সাথে সন্তানের খারাপ ফল আর তাদের ভবিষ্যতের চিন্তায় মানসিক দূর্দশাগ্রস্থ মা সন্তানদের মেরেও ফেলছেন। কোথায় যেন চলেছি আমরা।

৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৮

কালনী নদী বলেছেন: স্কুলের কথা মনে পড়ে গেল, রাত জাগা মানুষের মধ্যে একটা অন্তমিল আছে।
অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখছেন পড়তে ভালো লাগছে!
সংগ্রহে রাখার মতন।

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৯

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৫৮

রিপি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন ভাই। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার বেপারে অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো খুব দরাকার। অনেক শুভেচ্ছা জানবেন। :)

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ ভোর ৫:৫৫

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:১৬

সায়ান তানভি বলেছেন: নির্মেদ গদ্য লিখেন আপনি, ভাল লাগলো।

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২৬

সয়ূজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই

৭| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৭:৫৩

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: দারুণ লাগল।
অনেক দিন পর ঐতিহাসিক কমলালেবু র কথা মনে করিয়ে দিলেন, আমাদের সময় ও স্কুলে রেজাল্টের দিন কমলালেবু দেয়া হত। আজকাল সে রীতি আছে কিনা জানিনা।

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২৮

সয়ূজ বলেছেন: সে রীতি বোধহয় আর নেই।

৮| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৮

রাজু বলেছেন: নাইচ

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২৮

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ

৯| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১৫

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল লেখাটি।
+++

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২৯

সয়ূজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.