নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুধু ফঁসকে যায়

১২ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:০০

স’বে চারটে ভাত খেয়ে বিছানায় শুতে গেছেন মামুন সাহেব। কনকনে শীতে জমে যাওয়া গরুর মাংসের তরকারির চেয়েও বিরক্তিকর হলো হাতে লেগে থাকা চর্বি। সেই বিরক্তি মামুন সাহেবের হাতে এবং ঠোঁটে।
বিরক্তি চেপেই খাটে চাপলেন তিনি। কিন্তু দুমিনিট না যেতেই খুট খুট শব্দ। একা মানুষ। দুটো মাত্র ঘর। শব্দের উৎস পাশের ঘর।
মাথা সহ গোটা শরীর লেপে ঢেকেও শব্দ এড়াতে না পেরে শেষমেষ উঠেই পড়লেন। পাশের ঘরে যেতেই আক্কেলগুড়ুম।
ঘরের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে একজন। গোটা ঘর থেকে জড়ো করা জিনিস একটা ব্যাগে ভরছে সে।
- অ্যাই, তুই কি করিস?
- স্যার, চুরি করার ইচ্ছা ছিল।
- ব্যাটা, তোর সাহস তো কম না। রাত কেবল ১১টা। আর তুই এখনি...
- কী করবো স্যার? যেমন শীত। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে পারলে একটু ঘুমানো যেত আরকি!
- হারামজাদা, তুমি বাসায় না এখন জেলে যাবা। চল ব্যাটা থানায়।
- স্যার, এই ঠান্ডায় আপনি কেন কষ্ট করতে যাবেন। আপনি স্যার ঘুমান। আমি-ই থানায় চলে যাচ্ছি। থানায় আমার হেব্বি জানাশোনা। আপনি কষ্ট করে ওসি সাহেবকে ফোনে বলে দেন যে জয়নাল চোরা থানায় যাচ্ছে।
প্রস্তাব মনে ধরে মামুন সাহেবের। জয়নাল থানার দিকে হাঁটা দিলে উনি ফোন দেন ওসি সাহেবকে। সব শুনেওসি সাহেব বলেন, আচ্ছা উজবুক আপনি। বলি, শীতে কি বুদ্ধিশুদ্ধি জমে গেছে নাকি। জয়নাল চোরাকে হাতের মুঠোয় পেয়েও ছেড়ে দিলেন? জানেন, ওর নামে ২ লাখ টাকার হুলিয়া। এরপরে সুযোগ পেলে ওকে বেঁধে রেখে থানায় খবর দেবেন। আমি এসে নিয়ে যাবো শালাকে।
মামুন সাহেব কপাল চাপড়াতে বসলেন। কিন্তু, কপাল বলে কথা। মামুন সাহেবের তা বিঘত খানেক চওড়া। তাই ঠিক পরেরদিনই আবার তার হাতেই ধরা পড়লো জয়নাল।
এবার তিনি চোরকে বাঁধলেন। কোমরে দড়ি পেঁচিয়ে সেই দড়ি খাটের পায়ার সাথে বেঁধে রাখলেন। কিন্তু সমস্যা বাঁধলো ফোন করতে গিয়ে। ঠাণ্ডায় নেটওয়ার্কও জমে গেছে। অগত্যা তিনি নিজেই হাঁটা ধরলেন থানার দিকে।
সব শুনে ওসি সাহেব প্রথম প্রশ্নটিই করলেন, কোমরে দড়ি দিয়েছেন। হাত বেঁধেছেন?
- না তো। কোমর বাঁধতেই দড়ি শেষ।
- ধুর মিঞা। যান বাড়ি যান। দ্বিতীয় সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না।
বাড়ি ফিরে খাটের পায়ার সাথে লেগে থাকা দড়ি দেখে ডুকরে কেঁদে উঠলেন মামুন সাহেব। কিন্তু চওড়া কপাল নিয়ে জন্মেছেন। মাথার চুল উঠতে শুরু করায় কপাল আরো চওড়া। তিনি তৃতীয় সুযোগটা পেলেন ঠিক একক হপ্তা বাদে। আবার সেই জয়নাল।
এবার আর কোন ভুল নয়। মামুন সাহেব প্রথমেই জয়নালের কোমর বাঁধলেন। কিন্তু এবার খাটের পায়ায় দড়ি না লাগিয়ে সেই দড়ি দিয়ে বাঁধলেন জয়নালের দুটো হাত।
আনন্দে এবার থানায় ফোন দিতেও ভুলে গেলেন তিনি। গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে নিজেই থানার পথ ধরলেন। আহা! ২ লক্ষ টাকা বলে কথা।
পরদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় মামুন সাহেবের ছবি সহ সংবাদ : জয়নাল চোরার সহযোগি মামুন গ্রেফতার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৩২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: হায়রে! এবার নিজেই!!!!!!!!!

গল্পটা শীতের দিনে দিলে মজা লাগত সেইরামম!!!!!!!!!!! =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.